বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

সংসার

"সত্য ঘটনা" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান FAHAD (০ পয়েন্ট)

X আমার বিয়ের সাত বছর পরেও সংসারটা আমার শাশুড়ী মায়ের হাতেই ছিলো।এমন কি সকাল থেকে রাত অবধি কি রান্না হবে তাও তিনি ঠিক করতেন।তিনি শুধু এতোটুকুতেও থামেননি আমাকে নিজ হাতে খাবার বেড়ে দিতেন।আমি প্রায়শো দেখতাম মাছের বাটি থেকে সব থেকে ছোট মাছের পিছটি তিনি আমায় দিতেন।আর সাথে একটু ঝোল না দিলে নয় তাই। এভাবেই আমার শ্বশুর বাড়ির জীবন চলছিলো। একদিন আমি আমার বরের কাছে গরুর কলিজা খেতে চাইলে তিনি দুই কেজি কলিজা আনলেন।অবশ্য এটা আমার শাশুড়ী মা জানাতেন । বরাবরই মতো সব কিছু তাঁর কথায় চললো।সব গুছিয়ে রান্না করলাম।অবশেষে খাবার টেবিলে খেতে বসলে তিনিই আমাকে খাবার বেড়ে দিলেন।আমার পাতে দুই টুকরো কলিজা দিয়ে বাকিটা ফ্রিজে রেখে দিলেন।কেন জানি সেদিন চোখের জলটা আটকে রাখতে পারিনি।তাই সবার চোখের আড়ালে চোখের জলটা মুছে খাবার খেয়ে উঠে পরলাম।আমার শাশুড়ী এমন ব্যবহার আমার পরিবার বাদেও পাড়া প্রতিবেশিরাও জানতো।কিন্তু কখনো কেউ কিছু বলেনি।বা আমিও কখনো চাইনি কেউ কিছু বলুক। কিন্তু একদিন আমাদের বাড়ির পাশের এক কাকিমা বললেন। হে রে নিয়া তোর শাশুড়ী তোর সাথে এমন করে তুই কিছু বলিস না। আমি বললাম--কি বলবো। তুই কিছু না বলেই এমন লাই দিয়ে দিছিস।কিছু বললে আর এমন করতো না। তাঁর বিবেক যা বলে তিনি তাই করে এখানে আমার বলার কি আছে। তবুও মাঝে মাঝে বলিস। দেখা যাক সময় কি বলে। এই কথা বলেই আমি সেখান থেকে চলে আসি।সেদিনের পর থেকে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে বেরোতাম না।কারণ নানা মানুষের নানা প্রশ্ন শুনে যদি আমার মনটা বিষে যায়। তারপর কেটে গেছে বারো বছর।শ্বশুর গত হয়েছে প্রায় বছর পাঁচেক। ননদের বিয়ে হয়ে গেছে।এখন ঘরে থাকি বলতে-- আমি আমার বর আমার ছেলে আর শাশুড়ী।শাশুড়ীর গায়ে এখন আর আগের মতো শক্তি নেই।তিনি এখন আর এই সংসার নিয়ে মাথাও ঘামায় না।এখন সব কিছু আমার হাতে।আমার ইচ্ছে মতো রান্না করি খাই,ঘুরি। সব কিছুই এখন আমার হাতে,এমন কি শাশুড়ীর খাওয়ার দায়িত্ব টাও আমার। একদিন আমি ঘরে শুয়ে আছি হঠাৎ দেখি আমার শাশুড়ী গুঁড়ি গুঁড়ি পায়ে আমার ঘরের দরজার সামনে দাঁড়ালেন। আমি দেখে বললাম-- মা আপনি ঘরে আসুন আসলে বউ মা একটা কথা বলার ছিলো। হে মা বলুন কথাটা যে কিভাবে বলবো বুঝতে পারছি না। কোন দ্বিধা ছাড়াই বলুন। আমার অনেক দিন ধরে গরুর কলিজা খেতে ইচ্ছে করছে সাথে গরম গরম আলুর পরোটা। আচ্ছা মা এই কথা।এটা বলতে আপনার এতো ভয়।ঠিক আছে কাল আপনার ছেলেকে বলে সব কিছু আনাবো। আমার কথা শুনে তিনি চলে গেলেন নিজ ঘরে। পরের দিন আমি সব কিছু বাজার থেকে আনলাম। দুই কেজি কলিজা আনালাম।রাতে কলিজা ভুনা আর গরম গরম আলুর পরোটা তাঁকে খেতে দিলাম।এক বাটি কলিজার তরকারি, সাথে ছয়টা আলুর পরোটা দিলাম। আমি তাঁকে বসিয়ে আমিও পাশে বসে বললাম-- নিন খান। তখন কোথা থেকে আমার ছেলে এসে বললো মা আমিও কলিজা দিয়ে আলুর পরোটা খাবো। আমি বললাম। বাবা তোমার দাদি মন ভরে খাওয়ার পর তুমি খাবে।কারণ এগুলো তোমার দাদির খেতে ইচ্ছে করেছে। আমার কথা শুনে আমার ছেলে আর কোন শব্দ করলো না সোজা সে তাঁর রুমে চলে গেলো। তারপর আমি আমার শাশুড়ী মায়ের উদ্দেশ্য বললাম কি হলো মা খান। খাবারটা ঠান্ডা হয়ে যাবে তো? তিনি আমার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে রইলেন। হয়তো তিনি ভাবছেন আমার বউ কালের জীবনটা তিনি কেমন করে নষ্ট করেছিলেন।আমার শখ ইচ্ছে কি করে মাটি করে দিয়েছিলেন।আজ আমি চাইলেই তাঁর ইচ্ছেকে গুরুত্ব না দিতেও পারতাম।চাইলেই তাঁকে নিজের ইচ্ছে মতো তরকারি দিতে পারতাম।কিন্তু করিনি এটা ভেবে হয়তো তিনি নিজের করা পাপের কথা চিন্তা করে কষ্ট পাচ্ছে। আমি তাঁর চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বললাম। মা কোন মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে আসার আগে ভাবে না তাঁরা তাঁর শাশুড়ী, শ্বশুর ,ননদ, দেওয়রকে খারাপ জানবে। পরিস্থিতি তাঁদের বদলে দেয়।আর এর জন্য আপনার মতো কিছু শাশুড়ীরা দায়ী।হে এটা ঠিক আমরা মেয়েরাও খারাপ।কিন্তু মা আমরা বাপের বাড়ি থেকে খারাপ হয়ে আসি না।আপনাদের বাড়ি থেকে খারাপ হই। পরে দোষ হয় আমাদের জাত ভালো না বাবা-মা শিক্ষা দিতে পারেনি। এমন অনেক কথা। কিন্তু গল্পটা এমন না হয়ে যদি উল্টোটা হতো তাহলে না আমরা কখনো খারাপ হতাম আর না কখনো আপনাদের খারাপ ব্যবহার হজম করতাম।বিয়ের দশ বছরই না হয় আপনাদের রাজত্ব কিন্তু বাকি সময়টা কিন্তু আমাদের হাতে। তাই সেই সময়টা ভালো কাজে লাগানো টাই ভালো না।যেন জুয়ান বয়সে করা অন্যায়ের শাস্তি বুড়ো বয়সে পেতে না হয়। এটা সমাজের ঘটে যাওয়া ঘটনা। আমি এমন মেয়ে দেখেছি যাঁরা ফ্যামিলির সার্পোটের জন্য দিনের পর দিন শ্বশুর বাড়িতে অত্যাচারিত হয়েছে। যখনই তাঁরা প্রতিবাদ করেছে।শুনতে হয়েছে নানান কথা।সে যাইহোক অনেকেই বলবে,শুধু শাশুড়ী খারাপ।না ভালো খারাপ মিলিয়েই জীবন। সমুদ্রিত সুমি


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১১৪৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ সংসার
→ বাসের নিচে সংসার পেতেছেন পান্না_লেখকঃ আনিসুল হক
→ আলো আধারের সংসার
→ আলো আধারের সংসার
→ সাজানো গোছানো সংসার (শেষ পর্ব)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব :১৪)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব :১৩)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব : ১২)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব : ১১)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব-১০)
→ সাজানো গোছানো সংসার(পর্ব-০৯)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব :০৮)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব-০৭)
→ সাজানো গোছানো সংসার (পর্ব - ০৬)

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now