বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আবার একবার পাগলের মত করে শিমুল জড়িয়ে ধরে রিয়া কে।
এবার আর রিয়া দু:খ শোষন করছে না বরং রিয়ার দেহ থেকে উষ্ণতা নিচ্ছে রিয়ার চুলে ঢাকা কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে শিমুল বেশ স্পষ্ট স্বরে বলে,
.
"রিয়া তুমি শুধু আমার।"
শিমুলের কথাগুলো রিয়ার বেশ স্পষ্টভাবেই শুনতে পায়, কথাগুলোর অর্থ সে ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারে। শিমুল যে রিয়া কে দাবি করছে তা রিয়ার বোঝা বাকি নেই।
শিমুল রিয়া কে আরও জোরে জড়িয়ে ধরে।
এই মুহূর্তে রিয়া যেন শিমুলের কাছে পৃথিবীর সবথেকে মূল্যবান বস্তু যা বহুকষ্টে সে অর্জন করেছে আর কোনভাবেই নিজের কাছ থেকে এই মূল্যবান সম্পদ হারাতে চায় না। শিমুলের দ্রুত নি:শ্বাসগুলো যেন, রিয়ার প্রতি তার ভালোবাসার সাক্ষী।
.
রিয়া স্তব্ধ!
সে যেন কোনো গভীর প্রশ্ন সমাধানে ব্যস্ত।
এই প্রশ্নের যেন কোনো উত্তর নেই।
রিয়ার চেহারা স্পষ্ট বলছে,
শিমুলের স্পর্শ সে পেতে চায় কিন্তু তবুও মনের কোন এক অংশ তাকে বাধা দিচ্ছে।
কঠিন কোন এক প্রশ্ন রিয়ার মস্তিষ্কে ক্রমাগত আঘাত হানছে। হয়ত, কাজ গুলো ভুল না সঠিক সেই উত্তর খুঁজতে রিয়া ব্যস্ত। নিজের অনিচ্ছায় মনকে কঠিন করতে বাধ্য হয় রিয়া , শিমুলের হাত দুটো থেকে নিজেকে মুক্ত করে। শিমুল কোন বাধা দেয়নি কেননা এটা ভালোবাসা ছিল, কাম না।
যদি এটা কামবাসনা হত হয়ত রিয়া নিজেকে মুক্ত করতে পারত না, শিমুল ও রিয়া কে মুক্ত হতে দিত না।
.
রিয়ার এ ধরনের রহস্যজনক আচরণ শিমুল কে বেশ কৌতূহলী আর অস্থির করে তোলে।
রিয়া অন্যদিকে তাকিয়ে আছে,
কেন তাকিয়ে আছে তা এক গভীর রহস্য!
শিমুল রিয়া সামনে গিয়ে দাড়ায়,রিয়া মাথা নিচু করে আছে, যেন শিমুলের দিকে সে তাকাতে চায় না।
.
"রিয়া ? "
.
সম্পুর্ন নিশ্চুপ পুতুলের ন্যায় রিয়া দাডিয়ে আছে। শিমুল রিয়া কে হালকা করে চেপে রিয়ার নিচু মুখটা নিজের দিকে তাক করে। শিমুলের এই আচরণে কোনো রাগের ছাপ নেই, আছে শুধু অস্থিরতার ছাপ।
.
"রিয়া , আমি স্পষ্ট উত্তর চাই,
তোমার যেকোন উত্তর আমার কাছে মূল্যবান,
আমি তোমাকে ভালোবাসি, ইয়েস আই লাভ ইউ,
আমি আর মিথ্যা বলতে পারি না,
নিজেকেও আর ধোকা দিতে পারি না।
প্লিজ আমি শুধু একটা উত্তর চাই। "
.
নিজের চোয়ালকে শিমুলের হাত থেকে মুক্ত করে আবারো নিশ্চুপভাবে অন্যদিকে ফিরে তাকায় রিয়া । শিমুলের অস্থিরতার বাধ ভেঙে যায়।
আবারো রিয়া কে সামনে গিয়ে দড়িয়ে তার দুহাতে হালকা ঝাঁকা দেয়।
.
"রিয়া আমি কোন জোর করতে চাই না,
শুধু একটা উত্তর চাই আর কিছু না,
প্লিজ আমি পাগল হয়ে যাব, শুধু একবার, প্লিজ!"
.
রিয়া ও নিজেকে আর স্তব্ধ রাখতে পারে না।
.
"ছাড়ো আমাকে প্লিজ! "
.
"ছাড়ব তবে একবার উত্তর দেও। "
.
"এত সোজা না সবকিছু,ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড।"
.
"আমি কিছু বুঝতে চাই না, শুধু উত্তর চাই। "
.
"দেখ পৃথিবী এত সহজ না।"
.
"আমি এত পেঁচিয়ে উত্তর চাই না সহজভাবে হ্যা বা না উত্তর দেও প্লিজ দ্যাটস অল। "
.
রিয়ার মাথা যেন আর চাপ সহ্য করতে পারছে না, রিয়ার ধৈর্যের বাধ যেন সম্পুর্ন ভেঙে যায়।
.
"না,আই এম রিয়েলি সরি।"
.
উত্তরটা রিয়া মন থেকে দিয়েছে না চাপে দিয়েছে তা বোঝা বেশ মুশকিল।
তবে উত্তরটা শিমুলের হৃদয়কে যে বুলেট দিয়ে আঘাত করেছে তা বোঝা মোটেও মুশকিল না,
একেবারে নিশ্চুপ হয়ে যায় শিমুল যেন সে এক 'জীবন্ত মৃত '।
.
রিয়া চোখের পানিকে আটকাতে পারেনা।
যেন বুলেটটি শুধু শিমুলের হৃদয়কেই আঘাত করেনি করেছে রিয়ার হৃদয়কেও,
যেন প্রচলিত প্রবাদ, "এক তীরে দুই নিশান। "
আজ প্রমাণিত সত্য।
শিমুলের এই সাংঘাতিক আহত অবস্থা রিয়া কোনভাবেই সহ্য করতে পারে না।
.
"শিমুল আই এম রিয়েলি সরি,
আই এম রিয়েলি রিয়েলি সরি,
কিন্তু পৃথিবীটা যতটা সহজ মনেহয় ততটা সহজ না, শুধু ৬-৭ দিন এক বাসায়,
এক ছাদের নিচে থাকলেই ভালোবাসা হয়না,
এটাকে বলে ভালোলাগা, ভালোবাসা একটা হার্ড টপিক, মুহূর্তের ইমোশোন, আবেগ দিয়ে ভালোবাসা হয় না। তোমার এই বয়সে এরকম ভালোলাগা অদ্ভুত কিছু না। "
.
শিমুল রিয়া কে উত্তর দিতে চায় না,
যেন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে শিমুল ।
বহুকষ্টে, বহুশক্তি জুটিয়ে নিজের বাকশক্তিকে পুনরায় উদ্ধার করে বাধ্য হয়ে রিয়া কে উত্তর দেয়,
.
"তাহলে তুমি যে আমাকে সেদিন হঠাৎ কাদতে কাদতে জড়িয়ে ধরেছিলে? যখন তোমাকে সরিয়ে দিয়েছিলাম তোমার কষ্টে শুকিয়ে যাওয়া মুখ নিয়ে যখন বিছানায় শুয়ে পড়েছিলে, সেটা কী আবেগ ছিল?
আজ সকালে যখন আমার গালে চুমা দিয়েছিলা ওটা কী আবেগ ছিল? প্রত্যেকবার নিপা ফোন দিলে যে পাগলের মত কর, সেটাও কী আবেগ? "
.
শিমুলের অভিমানী কথাগুলো যেন রিয়ার মস্তিষ্ককে কঠিন ধাধার মধ্যে ফেলে দেয়, শিমুলের প্রশ্নগুলো প্রচুর কঠিন, এই প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর রিয়ার কাছে নেই, তবে অন্ততপক্ষে শিমুলের সন্তষ্টির জন্য উপস্থিত ভাবে কিছু উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে রিয়া ,
.
"এক ছাদের নিচে একটা ছেলে আর মেয়ে থাকলে অনেক কিছুই হতে পারে, তবে সেটাকে ভালোবাসা বলা যায় না, বেশীজোর, ভালোলাগা বলা যেতে পারে।"
.
রিয়া্র উত্তর শিমুলের সামান্যও পছন্দ হয়না।
বরং রাগ আর ঘৃনা হয়।
কিন্তু বিতর্ক করার ইচ্ছা শিমুলের নেই, সেই ক্ষমতা তার দেহে অবশিষ্ট নেই। চুপচাপ কোন কথা না উচ্চারণ না করেই ঘুমাতে চলে যায়, শিমুলের স্তব্ধতা যেন রিয়া হৃদয়ে আরও জোরে আঘাত হানে।
.
রিয়ার চোখের পানি যেন তার নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে গিয়েছে কোনভাবেই তাকে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হচ্ছে না স্বজোরে বালিশ চেপে শুধুমাত্র দিক পরিবর্তন করতে থাকে, ঘুম তার দুচোখকে কোনোভাবেই স্পর্শ করতে পারছেনা। অনুতাপের আগুন রিয়ার। দেহকে পুড়িয়ে দিচ্ছে। না এটা শুধু অনুতাপ না, বরং অদ্ভুত এক অনুভূতি। যে অনুভূতির ব্যাখা রিয়ার কাছে নেই। মনে শত শত প্রশ্ন, শত শত প্রশ্নের উত্তর খোজার কঠিন প্রয়াস, কিন্তু কোনো প্রশ্নের উত্তর নেই রিয়ার কাছে এই মুহূর্তে। রিয়ার মস্তিষ্ক যেন এক কঠিন পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, যে পরিক্ষায় তার ফেল অনিবার্য
।
.
.
সারারাত দুজনের খুব একটা ঘুম হয়নি।
কালকে রাতের প্রভাব আজকেও দুজনের মধ্যে স্পষ্ট বিদ্যমান
চলবে।।।।।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now