বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
এই সুযোগ রিয়া মিস করে না।
প্রতিশোধ নেওয়ার এই মোক্ষম সু্যোগ!
ব্যাস বসিয়ে দেয়,
তার গোলাপি ঠোটটা শিমুলের গালে,
রুটি চুলায় তবে শিমুলের ঠোটের স্পর্শে সব ভুলে যায়। যেন স্বপ্ন দেখছে। নাহ! স্বপ্ন কীভাবে?
রিয়ার মুচকি হাসি দেওয়া মুখ একেবারে স্পষ্ট!
রুটি পুড়ে কয়লা কিন্তু সেদিকে কোনো খেয়াল নাই শিমুলের । যেন মূর্তি হয়ে গিয়েছে শিমুল ।
রুটি আর শিমুল দুটা দেখেই রিয়া হাসতে থাকতে। শিমুলের কপালে একটা হালকা টোক্কা দেয় রিয়া ,
ঠিক যেমন কোনো স্প্রিং এর পুতুলে চাবি দেওয়া হয়েছে, হঠাৎ হুশ ফেরত পায় শিমুল ।
কড়াইর দিকে চোখ যেতেই দেখে রুটি পুড়ে কয়লা হয়ে গিয়েছে। ইউটিউব ঘেটে,ঘুম চোখে এত কষ্ট করে রুটি বানানোর চেষ্টা করেছিল।
তবে এখন তা কয়লা।
রিয়া নিজের হাসি থামানোর চেষ্টা করে।
মনেমনে ভাবে,শিমুল হয়ত অনেক কষ্ট পেয়েছে।
.
সান্তনা স্বরে রিয়া বলে,
.
"বিছানায় গিয়ে ঘুমাও সোফায় ঘুমানো লাগবে না। কালকে রাতে আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছ, আজকেও অনেক কষ্ট করেছ সেজন্য ধন্যবাদ।
আমি রান্না করছি। "
.
চুপচাপ ঘুমাতে চলে যায় শিমুল ।
ঘুমে প্রায় অজ্ঞান হওয়ার পালা,
বিছানায় মাথাকে স্পর্শ করার সাথে সাথেই গভীর ঘুমে চলে যায় শিমুল ।
.
রিয়া রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
কয়লা রুটিটা দেখলে এখনো হাসি আসে।
তবে মনে মনে ভাবে,
.
"সারাটা রাত এত কষ্ট করল,
তারপর সকালে উঠে আবার নাস্তাও বানাতে গেল। আসলে অত খারাপ ছেলে না। বরং বেশ ভালোই! "
.
আবার ভাবে,
.
"আচ্ছা আমার হল কী?
সারাদিন ঐ ছেলেটাই আমার মাথায় কেন থাকে? বারবার ওর জন্য নানা উল্টাপাল্টা কাজ আমি কেন করি? " মনে আরও কিছু উদ্ভট কথা ভাসে, কিন্তু সেগুলোকে মুছে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালায়।
.
"না এটা অসম্ভব,
কখনই না,
রিয়া অনলি লাভস জারিফ আর কেউ রিয়ার মনে জায়গা করতে পারবে না।
তাছাড়া ওতো একটা বাচ্চা। "
.
মনেমনে ভাবে জারিফকে ফোন দিবে,
তবে কেন জানি ইচ্ছা করে না বরং রান্নায় মনযোগ দেয়।
.
.
লম্বা সময় রান্না করল,
খিচুরি রান্না করেছে শিমুল বেশ প্রিয় খাবার,
তবে মাত্র ১-১.৫ ঘন্টা হয়েছে শিমুল ঘুমালো এর মধ্যে উঠানো আদৌ ঠিক হবে,
রিয়ার মন বেশ বিতর্কে জড়িয়ে গেল।
ঘুমানোর সময় শিমুলের দিক পরিবর্তন দেখে রিয়া মন যেন আবার বলে, "হাউ কিউট!!!"
.
কিন্তু এই গরম খিচুড়িকে অযথা ঠান্ডা করার ইচ্ছা নেই রিয়ার তাই বাধ্য হয়েই শিমুল কে ঘুম থেকে উঠানোর চেষ্টা চালাতে থাকে।
.
"শিমুল শিমুল "
.
"কী?" বেশ ঘুমের ঘোরেই উত্তর দেয় শিমুল
.
"খিচুড়ি খাবা। "
.
যদিও ঘুমে শিমুলের মাথা ঘুরতে থাকে তবে খিচুড়ি তো খিচুড়ি। খিচুড়ির নাম শুনে ঘুমের কথা ভুলে যায় শিমুল ।এই ঘুমের ঘোরেই উঠে বসে।
.
"হুম খাব"
.
খিচুড়ির প্রতি শিমুল এরকম লোভ দেখে রিয়ার বেশ হাসি আসে। তবে হাসিটাকে চাপিয়ে যায়।
.
"ঠিক আছে উঠে হাত-মুখ পরিষ্কার কর।"
.
খিচুড়ির লোভে শিমুল করুন চেহারা দেখে রিয়া মায়া আর হাসি দুটোই আসে। কত কষ্ট করছে সামান্য এক প্লেট খিচুড়ির জন্য।
.
হাত পা ধুয়ে খিচুড়ি খেতে বসে শিমুল ।
খিচুড়ি প্লেটে দেওয়া মাত্রই প্রায় আলোর গতিতে খিচুড়ি খাওয়া শেষ করে! আহ! কী অসাধারণ খিচুড়ি।
.
আজকে জীবনে প্রথমবার রিয়ার নিজের রান্নার উপর গর্ব হয়।
.
এত মজার খাবার খাওয়ার আসলেই রিয়া ধন্যবাদ প্রাপ্য।যদিও শিমুল বলতে বেশ কষ্ট হয় তবুও বাধ্য হয়েই বলে,
.
"থ্যাঙ্ক ইউ, খাবারটা অনেক ভালো হয়েছে। "
.
শিমুল মুখ থেকে কথাগুলো শুনে রিয়ার আনন্দের আর কোনো সীমা থাকে না।
.
তবে রিয়ার এই আনন্দ যেন ক্ষণিকের।
কিছুক্ষণ পরেই শিমুলের ফোনটা বেজে ওঠে, আর বিগত কয়েকদিনের মত, আজও নিপা ফোন দিয়েছে।
.
"হ্যালো নিপা।"
.
"হ্যালো দোস্ত, কী খবর কেমন আছ?
সকালে নাস্তা করেছ?"
.
"হুম ভালো আছি,নাস্তা করেছি। ফোন দেসো ক্যান? "
.
"দোস্ত আজকে দুপুরে আমাদের বাসায় তোর দাওয়াত। "
.
আসলে প্রতিদিন এরকম অযথা দুপুরে বাইরে যাওয়া শিমুল ভাললাগে না কিন্তু কিছু করার নেই,
বান্ধবীর এত করুন আবদারকে না বলার কোন উপায় নাই। বাধ্য হয়েই শিমুল বলে,
.
"আচ্ছা আসব । "
.
মুহূর্তেই রিয়ার আনন্দ সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়,
আবার তার মাথা আগুনের মত গরম হয়ে যায়। শিমুলের গলা টিপে ধরতে ইচ্ছা করে রিয়ার মুহূর্তেই রিয়া মুখের ভঙ্গিমার এক বিশাল পরিবর্তন।
প্রচন্ড অভিমান, রাগ আর হিংসার ছাপ তার মুখে স্পষ্ট। মনেমনে ভাবে,
.
"একটা আস্তা অসভ্য ছেলে একে নিয়ে অযথা এত মেজাজ গরম করে কী লাভ,
যা ইচ্ছা তা করুক। "
.
নিজের মাথাকে ঠান্ডা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে থাকে রিয়া , বিষয়টাকে পাত্তা না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ায় চেষ্টা করে, তবে যে মুহূর্তে শিমুল বলে,
.
"দুপুরে বাসায় আসব না, বাইরে খাব। "
.
ব্যাস রিয়ার মাথার তাপমাত্রা যেন জ্বলন্ত কয়লা থেকেও কয়েক গুন বৃদ্ধি পায়।
.
"আমি কী তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি?"
.
"না খাবারগুলাতো ফাও যেত, তাই বললাম। "
.
"অসুবিধা কী? কুকুরকে খাওয়াতাম।"
.
কথাটা শুনে শিমুল মেজাজও বেশ গরম হয় তবে কিছু বলে না, মানিব্যাগ আর মোবাইলটা পকেটে ঢুকিয়ে রাগে হনহন করে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
.
রিয়ার চোখ থেকে যেন তার অজান্তেই পানি বের হয়ে যায়। কেন বের হয় রিয়া ও তা জানে না।
যেন রিয়ার দেহ পুড়তেই থাকে,
খুবই অদ্ভুত এই অনুভূতি।
.
আকাশটা বেশ মেঘলা বাইরে খুব একটা রোদ নেই তবে, বৃষ্টি হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই,
যদিও রিয়া চোখের বৃষ্টি যেন থামতেই চায় না।
.
মনকে ঠান্ডা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে রিয়া মনে মনে ভাবে এই সুন্দর আবহাওয়ায় বাইরে যাওয়া উচিত মনটা ভালো হয়ে যাবে একা একা পার্কে গিয়ে বসে থাকতে ইচ্ছা করে রিয়ার হয়ত মনটা ভালো হয়ে যাবে।
.
খুব একটা না সেজেই,
নামমাত্র একটু পোশাকটা পরিবর্তন করেই,
পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিল রিয়া ।
আকাশে রোদের কোনো নাম গন্ধ নেই।
আকাশের এরকম অসাধারণ রুপ রিয়ার মনকে ধীরে ধীরে শান্ত করে তোলে
।
.
.
সেই সাড়ে দশটার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছে শিমুল এখন দেড়টা-দুটা বাজে, বাসায় এক মিনিটের জন্যও যায়নি। বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা,বাইরে ঘোরাঘুরি করেই প্রায় ৪ ঘন্টা কাটিয়ে
চলবে।।।।।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...