বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
দরজা খোলা মাত্রই যেন রিয়ার মুখে এক অশ্রুসিক্ত হাসি, মুহূর্তেই চোখে জমে থাকা সেই শক্ত বরফ খন্ডগুলো গলে যায়,
গলে ঝর্নার ন্যায় পানি প্রবাহ সৃষ্টি করে,
শিমুল কিছু বুঝে ওঠার আগেই, স্বজোরে জড়িয়ে ধরে শিমুল কে, শিমুলের বুকের মধ্যে আশ্রয় নেয় রিয়া , যেন শিমুলের বুকের উষ্ণতা পুড়িয়ে দেয় রিয়ার সব ব্যাথা, শিমুল কিছুই বোঝেনা তাকে জড়িয়ে ধরার সাহস সঞ্চয় করতে পারে না,
তবু সাহস করে নিজের হাতটা রিয়ার পাখির পালকের ন্যায় নরম চুলে বুলিয়ে দেয়।
রিয়ার চোখের পানিতে শিমুলের শার্টটা হালকা ভিজে ওঠে রিয়া কে সরাতেও শিমুলের সাহস হয় না,
রিয়া নিজের চোয়ালটা শিমুলের বুকের সাথে লাগিয়ে শিমুলের দুহাত ধরে তার ছলছল করা চোখ দিয়ে,
এক করুন দৃষ্টিতে শিমুলের র দিকে তাকায়,
যেন শিমুল কে সে অনুরোধ করছে তার সব ব্যাথা শেষ করে দিতে, পৃথিবীর যেকোন পুরুষ এই দৃষ্টিতে পাগল হয়ে যাবে,এই দৃষ্টি যেন যেকোন পুরুষ সে যতই সৎ হোক না কেন তাকে চুম্বকের মত নিজের দিকে আকৃষ্ট করবে। শিমুল যে সৎ কোন পুরুষ তা না,
জীবনে বহু মেয়েকেই উপোভোগ করার অভিজ্ঞতা তার আছে,কিন্তু শিমুল নিজেকে সংযত রাখে,
কিভাবে রাখে তা সে নিজেও জানে না।
যে শিমুল মেয়েদেরকে রামবস্তু হিসেবে দেখে,
সে কিভাবে নিজেকে সংযত রাখে এটা যেন এক গভীর রহস্য। রিয়ার করুন চাহুনিকে উপেক্ষা করে সে অন্যদিকে তাকায় এবং সরিয়ে দেয় রিয়া কে।
নিজেকে চরম অপমানিত মনে করে রিয়া ,
যেন তার কলিজাকে কেউ ছুরি দিয়ে স্বজোরে আঘাত করেছে, যেন শিমুলের এই উপেক্ষা আজব্দি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ অপমান।
শিমুল রিয়ার দিকে ফিরে তাকায়।
তাকিয়ে দেখে,রিয়া তার চোখের পানিগুলো মুছে ফেলে,যেন রিয়ার মুখে শোকের এক বিশাল ছাপ,
আর এই ছাপ খুবই স্পষ্ট।
যেন রিয়া পৃথিবীর সবথেকে, শোকাহত, অপমানিত নারী। শিমুল যেন এক খুনি। যেন রিয়া কে সে খুন করেছে, নিজের জীবনে শিমুল অনেক মেয়েকেই অপমান করেছে, অনেক মেয়ের হৃদয় নিয়েই খেলেছে। কিন্তু এমন অপরাধবোধ কখনই হয়নি,
বরং সবসময় কাজগুলোকে উপভোগ করত,
কিন্তু আজকে আর উপভোগ করে না বরং কঠিন অনুতাপ হয়, যেন শিমুলের হৃদয় পুড়ে যাচ্ছে।
রিয়া শুকিয়ে পাথর হয়ে যাওয়া চোখের পানিগুলো যেন শিমুলের র দেহকে পুড়িয়ে দিচ্ছে।
রিয়া যেন আর অপমান সহ্য করতে পারে না,
চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পড়ে বিছানায়।
অনুতাপের আগুনে শিমুল পুড়তে থাকে,
চোখের সব ঘুম যেন পুড়ে ছাইছাই হয়ে গিয়েছে,
সব কিছু ভেঙে ফেলতে ইচ্ছা করছে শিমুলের ।
সোজা বাসা থেকে বেরিয়ে যায় শিমুল ।
প্রচুর রাগে রাস্তায় হাটতে থাকে,
এই রাগ আর ক্ষোভ তার নিজের উপর।
চায়ের দোকানে গিয়েই একটার পর একটা সিগারেট টানতে থাকে,মনে তার অগনিত প্রশ্ন।
.
"রিয়া এরকম আচরণ কেন করল?
রিয়া কি আমার প্রতি দুর্বল হচ্ছে?
কেন দুর্বল হবে?
আমি তো রিয়া কে আজীবন ঘৃনা করেছি,
রিয়া ও তো কোনো কালে আমাকে ভালোবাসেনি, তাহলে দিন দিন ও এরকম আচরণ করছে কেন?
আমি কী রিয়া কে অনেক কষ্ট দিলাম? "
.
শিমুলের মাথায় একের পর এক প্রশ্ন তৈরী হতেই থাকে, আর প্রচন্ড দ্রুত বেগে সিগারেট খেতে থাকে। যেন শিমুল তার কলিজাকে সর্বোচ্চ আঘাত দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখে।
.
চোখ বন্ধ করে রিয়া এদিক ওদিক ফিরতে থাকে,
কিন্তু কোনভাবেই ঘুম আসে না।
বারবার সেই অপমানজনক দৃশ্য তার মাথা খেতে থাকে। নিজেকে চরম অপমানিত মনেহচ্ছে রিয়ার। শিমুলের প্রতি তার এরকম ঘৃনা যেন আর কখনো সৃষ্টি হয়নি। শিমুলের থেকেও নিজের প্রতি তার আরও বেশী ঘৃনা হয়।
.
"কেন এরকম একটা নষ্ট ছেলের প্রতি আমি দুর্বল হলাম? কী হয়েছিল আমার!
আমি তো প্রতারক থেকে কম না।
জারিফ তো আমাকে কত ভালোবাসে ১১ বছরের সম্পর্ককে বলি দিয়ে একটা নষ্ট ছেলের প্রতি দুর্বল হচ্ছিলাম।ছি! আসলেই আমি একটা প্রতারক!"
.
নিজের উপর ঘৃনা ক্রমেই বাড়তে থাকে রিয়ার ঘুমও আসে না যেন সেই জঘন্য মুহূর্ত খেয়েই চলছে তার মাথাকে
,যদিও এক পর্যায়ে ঘুমের কাছে হার মানতে হয় তাকে
।
.
প্রচুর সিগারেট খেয়ে বাসায় ফেরে শিমুলের বুকেও বেশ ব্যাথা করছে,
রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা হেটেছে এই রাতে বাসায় এসে রিয়া র ঘুমন্ত দেহকে দেখতে পায়,
দেখে যেন শিমুলের নিজের প্রতি ঘৃনা বাড়তেই থাকে। শিমুল জানে না সে রিয়া কে ভালোবাসে নাকি!
তবে এটা জানে,
সে নিশ্চয়ই একটা বড় অপরাধ করেছে।
আর সিগারেট খাওয়ার শক্তি নেই তার মধ্যে,
চুপচাপ সোফায় শুয়ে থাকে।
ঘুম একেবারে কম আসেনি তবুও এই ঘুমে নিভু নিভু চোখে শুধু সেই জঘন্য মুহূর্তগুলো ভাসছে।
.
রাতে বেশ দেরিতে ঘুমিয়েছিল তাই সকালে উঠতেও শিমুলের বেশ দেরী হয়।
রিয়া নাস্তা বানিয়েই তাকে সাধারণত ডাক দেয়,
কিন্তু আজকে দেয়নি টেবিলে নাস্তা পরে আছে,
রিয়া ও বোধ হয় বাসায় নেই।
আজকে আর নাস্তা খেতে ইচ্ছা করে না।
বরং কৌটায় বেশ কয়েকটা বিস্কুট ছিল,
সেখান থেকে ২-৩টা বিস্কুট নিয়ে খায়।
বাইরেও যেতে ইচ্ছা করে না,
ঘরেই থাকতে কেন জানি মন চায়,
চুপচাপ মোবাইলটা হাতে নিয়ে সোফায় শুয়ে পড়ে শিমুল ।
.
.
আজকে জারিফের সাথে পুরো জমিয়ে গল্প করছে রিয়া । জারিফের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। জারিফ যেন এই মুহূর্তে তার কাছে সবকিছু, মনে মনে ভাবে জারিফকে সে প্রতারণা করেছে আর তার এই অপরাধ সে বুঝতে পারে।
সেজন্য, জারিফকে নিজের জীবনের সবথেকে মূল্যবান করতে,জারিফের প্রতি আগের মত ভালোবাসা ফিরিয়ে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখে রিয়া ।
কিন্তু একেবারে মন থেকে কাজটা করতে পারছে না।জারিফের হাত শক্ত করে ধরে পার্কে হাটাহাটি করে, মাঝে মাঝেই একে অপরকে চুমু খায়,
জারিফের একেবারে হাতের মধ্যে ঢুকে থাকে রিয়া । তবে তবুও মনের কোনো এক অংশ অস্থির হয়ে ওঠে রিয়ার ,যেন মনের কোনো এক অংশ রিয়া কে বলতে চায়, "এগুলা সবই কৃত্রিম অভিনয়। "
.
এরকম চিন্তাগুলো মাথায় আসলেই যেন সে জারিফের আরও কাছে যেতে চায়,
লিপস্টিকে তার টকটকে লাল ঠোট জারিফের গালে বসিয়ে দেয়। কিন্তু তবুও মনের কোনো এক অংশ বিদ্রোহ বন্ধ করে না।
এক পর্যায়ে জারিফকে রিয়া বলে,
.
"জারিফ,আমি যদি তোমাকে ছেড়ে কখনো চলে যাই, অথবা কালকে শোনো আমি আর
চলবে।।।।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now