বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
পরাজিত হয়ে যায় সে রিয়ার মায়াবী এই চেহারার কাছে, তার কোমল এই হাতের কাছে,
জোরে চেপে ধরে তার কোমল হাতটি আর হালকা তবে স্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করে,"রিয়া "
শিমুলের কন্ঠে,রিয়া ডাক শুনে রিয়া যেন পাগল হয়ে যায়, তার মস্তিষ্ক যেন নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পরে,
এই অদ্ভুত কন্ঠের মধ্যে কি আছে তা সে জানে না তবে এই কন্ঠ যেন তার মস্তিষ্ক দখল করে ফেলেছে,
শিমুল শক্ত হাতের ছোয়া রিয়ার কোমল হাতে যখন লাগে, রিয়া মধ্যে অদ্ভুত এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়,
এই অনুভূতি খুবই ভিন্ন,
রিয়ার এই অনুভূতি সম্পর্কে অজ্ঞ,
জারিফের হাত সে অনেকবার ধরেছে কিন্তু এই অনুভূতি কখনো হয়নি!
.
শিমুল রিয়ার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে রিয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে,
রিয়া ও তাকিয়ে আছে শিমুলের দিকে,
কী দেখছে শিমুল !
হয়ত,চাদের আলোয়, রিয়ার অদ্ভুত সুন্দর চেহারাটা উপভোগ করছে,
শিমুল আরেকটা হাত ধীরে ধীরে রিয়া পাখির পালকের ন্যায় চুল স্পর্শ করতে থাকে,
কী অদ্ভুত নরম চুল!
রিয়া চুলের স্পর্শ যেন শিমুল দেহকে শিহোরিত করতে থাকে! এ যেন চুল নয় বরং স্বর্গে কোনো নরম,পাতলা বিছানার সাথে তার হাতের স্পর্শ হচ্ছে, রিয়া খালি বোবার মতন চেয়ে থাকে,
কোনো কিছু করার শক্তি যেন সে হারিয়ে ফেলে,
তার মস্তিষ্ক যেন শিমুল দখলে চলে গিয়েছে,
শিমুল রিয়ার ঘাড় স্পর্শ করে তার দেহকে হালকা নিচু করে, রিয়া কোনো বাধা দিতে পারে না শুধু চেয়ে থাকে শিমুলের দিকে, শিমুল যেন ক্রমশ এগোতে থাকে রিয়া দিকে, রিয়া বাধা দিতে চায় শিমুল কে কিন্তু পারে না,যেন রিয়া তার সব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে,
একটা জীবন্ত মূর্তিতে পরিনত হয়ে গিয়েছে,
শিমুল ক্রমাগত রিয়ার কাছে যায়।
যেন চন্দ্র সূর্যের দিকে পাতাল আকাশের দিকে ধেয়ে আসছে।
.
না এটাতো সম্পুর্ন অবিশ্বাস্য শিমুলের সিগারেট পুড়ে যাওয়া ঠোট আর রিয়ার গোলাপি ঠোট একত্রে মিলিত হয়েছে, যেন চন্দ্র-সুর্য আর আকাশ- পাতাল মিলিত হয়েছে, রিয়ার চোখ থেকে পানি বেরিয়ে যায়।
কিন্তু তা খুশীর না দু:খের তা বোঝা দু:সাধ্য,
শিমুলের যেন অমৃতের স্বাদ গ্রহণ করছে,
মনে হচ্ছে এটা যেন তার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত, নারী ঠোটের সংস্পর্শে এর পুর্বেও সে এসেছে কিন্তু না এইটা কোনো নারী ঠোট না বরং স্বর্গীয় কোন ফল তার মুখের সংস্পর্শে, কিন্তু রিয়ার পক্ষে আর সম্ভব না হটাৎ যেন সে তার হুশ ফিরে পায় ধাক্কা দিয়ে শিমুল কে সরিয়ে দেয়, চাদের আলোয় রিয়ার মায়াবী চেহারা এখনো স্পষ্ট , কিন্তু এই মায়াবী চেহারায় রিয়াকে প্রচন্ড আঘাত পাওয়ার ছাপ স্পষ্ট,
তার চোখ থেকে পানির যে প্রবাহ, তা যেনো শিমুলের মনে গরম ইস্পাত খন্ড দ্বারা আঘাত করছেরিয়ার চোখের পানিগুলো চাদের আলোর সংস্পর্শে এসে প্রচুর উজ্জ্বল হয়ে গেছে, কাদতে কাদতে রিয়া গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে, শিমুল নিজেকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ অপরাধি মনে হচ্ছে,
না একটু আগেও যে চোখ ঘুমে প্রায় বিভোর ছিল মুহূর্তেই সে ঘুম গায়েব হয়ে যায় বারান্দায় গিয়ে বসে পরে শিমুল , রিয়া কান্নার শব্দ বেশ স্পষ্ট,
রিয়ার কান্নার শব্দ যেন শিমুলের দেহকে শক দিতে থাকে,শিমুল বেশ শক্ত ছেলে,
বড় হওয়ার পর সে খুব কম কেদেছে কিন্তু আজকে আর চোখের পানি থামাতে পারল না,
চোখ থেকে সমানে পানি ঝড়া শুরু করল শিমুল , থামানোর চেষ্টা করল কিন্তু পারলো না,
.
"কেন এমন হল, কী হয়েছে আমার?
আমি তো রিয়াকে ঘৃনা করতাম,!!
আমি কী পাগল হয়ে যাচ্ছি?"
.
নিজেকে সমানে অপমান করতে থাকে শিমুল।
রিয়ার প্রতি ঘৃনা বাড়ানোর চেষ্টা চালাতে থাকে কিন্তু বারবার ব্যর্থ হতে থাকে।
যত বার চোখ যায় খাটে শুয়ে থাকা রিয়ার দেহটার দিকে ততবারই তার সব রাগ, ঘৃনা গলে বাষ্প হয়ে যায়,বারবার নিজের মনের কাছে কীভাবে পরাজিত হতে থাকে শিমুল তা সে জানে না,
যেই শিমুল মেয়েদেরকে কামবস্তু হিসেবে দেখেসে বুঝতে পারে না এইটা কী ধরনের অদ্ভুত অনুভূতি, বারবার নিজেকে জিজ্ঞেস করে, "এম আই এ সাইকো?এম আই বিকামিং ম্যাড,
আমি কী পাগল হয়ে যাচ্ছি?"
টেবিলের উপর থেকে সিগারেটের প্যাকেট আর লাইটার নিয়ে আবার বারান্দায় বসে পরে,
মাত্র ৩-৪ টা আছে,
যাক আপাতত এ দিয়েই কাজ চালাতে হবে,
সিগারেটটা ধরিয়ে টানতে থাকে আর নিজের পাগলামি, মনের দু:খকে ধোয়ায় উড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু কেন জানি ব্যর্থ হয় বার বার।
.
.
এই বারান্দাতেই ঘুমিয়ে পরে শিমুল ,
কখন কোন ফাকে ঘুমিয়ে পরে নিজেও হয়ত টের পায়নি, রিয়ার রাতে খুব একটা ঘুম হয় না,
সারা রাত কাদতে থাকে,
এত কান্না সে শেষ কবে কেঁদেছিল মনে পরে না আজানের পর একটু ঘুমায় কিন্তু ২-৩ ঘন্টার মধ্যেই ঘুম ভেঙে যায়, এখন আর কাদার শক্তি নাই,
কিন্তু চরম লজ্জা আর ঘৃনা সৃষ্টি হয় নিজের উপর গত রাতের কথা মনে পরলেই,
ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে দাত ব্রাশ বার বার বাথরুমের আয়নায় চোখ যায় আর নিজেকে একটা চরিত্রহীন অপরাধি মনে হয়,
বাথরুম থেকে বের হয়ে রিয়া রান্নাঘরের দিকে নাস্তা বানাতে যায় নাস্তা বানানো শেষ,
শিমুল কে ডাক দেয়,
যদিও শিমুল কে ডাকতে ইচ্ছা করে না রিয়ার ঘৃনা লাগে শিমুল কে ডাকতে তবুও বাধ্য হয়ে ডাকে।
হটাৎ খেয়াল হল আজকে শিমুল কে সকাল থেকে দেখেনি, কোথায় সে?
তারাহুড়া করে শিমুল কে খোজে,
বারান্দায় গিয়ে দেখে শিমুল মাথা দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে শুয়ে আছে,
দেখে খুবই রাগ হয় রিয়ার ,
মনে মনে বলে,"পাগল নাকি ছেলেটা?"
কিন্তু ডাকতে ইচ্ছা হয় না,
কালকে রাতে যা হয়েছে তারপর শিমুলের সামনে মুখ দেখাতেও লজ্জা পায় রিয়া কিন্তু নাস্তাগুলা কি ফাও যাবে!
.
"এই, এই শিমুল " রিয়ার ধাক্কাতে শিমুলের ঘুম ভেঙে যায়,সকালে রোদের আলোয় রিয়াকে যেন উজ্জ্বল মনে হয়, শিমুল তারাহুড়া করে উঠে দাড়ায়
.
"এই জায়গা ঘুমিয়েছ কেন?"
.
"এমনি" (শিমুল)
.
"নাস্তা খেতে আসো"
.
"না ইচ্ছা করে না, বাইরে গিয়ে খাবো,(শিমুল)
.
"তো নাস্তাগুলাকি ফেলে দেবো?"
.
আর তর্কে জড়াতে চায় না শিমুল,
চুপচাপ গিয়ে টেবিলে বসে পরে,
দুইজনের মধ্যে কোনো কথা হয় না,
চুপচাপ নাস্তা খেতে থাকে,
একজন আরেকজনের দিকে ফিরেও তাকায় না,
শিমুল মনে মনে রিয়ার কাছে ক্ষমা চাবে সিদ্ধান্ত নেয় কিন্তু
চলবে।।।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...