বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বাথরুমের দরজা খোলা মাত্রই শিমুলের চোখ যেন পাগল হয়ে যায়,ঠিক যেমন একজন মদখোরকে মদের বোতল দেখালে তার চোখ যেরকম নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে যাবে, রিয়াকে দেখেও শিমুলের একই অবস্থা,
হাতে গামছা হালকা ভেজা রিয়ার দেহ তার নতুন গোলাপি রঙের জামা,
ভেজা চুল যেন শিমুল এই পৃথীবিতে নেই আছে কোনো স্বর্গীয় এলাকায়, চোখকে সরানোর চেষ্টা করলেও চোখ কেন জানি সরতে চায় না,
দেখতে চায় এই স্বর্গীয় হুরকে চিরকাল।
রিয়ার হাটার সময় যে কোমরের আঁকাবাঁকা দিক পরিবর্তন তা যেন শিমুলের চোখের দিক নিয়ন্ত্রন করছে, তার ভেজা চুলগুলো যেন শুধু চুল নয় বরং কোনো গভীর বন যেই বনের মধ্যে শিমুলের মন হারিয়ে গিয়েছে, তার ভেজা চুল থেকে যখন গামছার আঘাতে ফোটা ফোটা পানি ঝড়তে থাকে তা যেন কেবল পানি না বরং অমৃতের ঝর্না থেকে অমৃতের প্রবাহ।
হটাৎ রিয়া শিমুলের এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকাটা লক্ষ্য করে। সামান্য বিব্রতবোধ করে রিয়া
.
"কী ব্যাপার?"
.
ঠিক যেমন গভীর ঘুমে স্বপ্নে বিভোর কোনো ব্যক্তিকে হটাৎ টান দিয়ে ঘুম থেকে উঠালে সে যেরকম অনুভব করবে শিমুল ও একই রকম অনুভাব করছে,
যেন রিয়ার ডাক তাকে গভীর স্বপ্ন থেকে টেনে উঠিয়েছে, হটাৎ যেন হুশ ফেরত পেল শিমুল ।
বেশ লজ্জাও বোধ করছে,
কি হয়েছিল হটাৎ করে তার!
রিয়াকে কোনো জবাব না দিয়ে সোজা টয়লেটে চলে যায়
.
রিয়া এই দিকে রান্নাঘরে বসে নাস্তা বানাতে ব্যস্ত,
মনে মনে বলে, "ছেলেটা আজকে এই রকম উদ্ভট আচরণ করল কেন? ছেলেটা কি অসভ্য প্রকৃতির?" তবে পরক্ষণে রিয়ার মনে পরে, "কালকে রাতে শীতের মধ্যে সে তার নিজের গায়ের কাথা কেন আমার গায়ে দিল ছেলেটা কি আমার প্রতি দুর্বল হচ্ছে, অসম্ভব! " বিষয়টা নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি হচ্ছে ভেবে রিয়া কাজে মনযোগ দেয়
.
আর এদিকে টয়লেট থেকে বের হয়ে শিমুল খাটে শুয়ে পরে মনে মনে ভাবে,আজ তার কি হয়েছিল এইরকম পাগলের মতন আচরণ কেন করলো সে?
সচারচর মেয়েরা শিমুলের কাছে কামবস্তু তবে আজকে সকালে রিয়াকে দেখে তার যে অনুভূতি সৃষ্টি হয় তা মোটেও কাম ছিল না,
এইটা ছিলো যেন অন্য এক অনুভূতি যেই অনুভূতি শিমুল এর আগে কখনো অনুভাব করেনি,
ধীরে ধীরে শিমুল তার মনের ঘৃনা গুলোকে বের করে আনে, মনকে শক্ত করে, মনে মনে বলে, "একটা অসভ্য মেয়ে রিয়া, আমার জীবনের ধ্বংসকারী আমার কিশোর, যৌবন, ভবিষ্যৎ সব কিছুই ধ্বংস হয়েছে এই মেয়ের জন্য,তার প্রতি দুর্বল হওয়া আর সাপের প্রতি দুর্বল হওয়া মধ্যে কি পার্থক্য? "
.
এর মধ্যে রিয়ার ডাক দেয়,
.
"নাস্তা করতে আসো"
.
শিমুলের ক্ষুধাও পেয়েছে প্রচুর তাই সময় নষ্ট না করে নাস্তা করতে গেল।
বেশ ভালোই নাস্তা আলু ভাজিটা অসাধারণ হয়েছে,
.
"কালকে রাতে আমার গায়ে কাথাটা কে দিয়েছিল?"
.
"জানি না'(শিমুল)
.
"তোমার কাথা তুমি জানো না!"
.
"না,ফাও কথা বলার সময় নাই একটু বাইরে থেকে আসি"
.
এক টুকরা বড় রুটি ছিড়ে তার মধ্যে অনেকখানি আলুভাজি ঢুকিয়ে মুখের মধ্যে নিয়ে,
মানিব্যাগটা পকেটে নিয়ে রুটিটা চাবাতে চাবাতে শিমুল বাইরে যায়।
.
রিয়া মনে মনে ভাবে,
"চরম বেয়াদপ ছেলেটা"
.
এরই মধ্যে জারিফের ফোন আসলো,
.
"হ্যালো, কি খবর?"
.
"এইতো ভালো আজকে বাইরে বের হবা"
.
"হব ভাবতেছি"
.
"তাহলে এখনই আসো পার্কের দিকে যাবো"
.
"ঠিক আছে আসতেছি,তুমি ঠিক কোথায় "
.
"এইতো পার্কের সামনেই আছি এসে একটা ফোন দিও"
.
তারাহুড়া করে রিয়া উঠে যায় আজকে অনেকদিন জারিফের সাথে একটু ঘুরবে বাইরে,
তাই একটু ভালোমতন সাজগোজ করা উচিত।
.
স্থানীয় চায়ের দোকানে গিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে সমানে টানছে শিমুল ,পকেটে একগাদা টাকা কোনো প্রব্লেম নাই, হটাৎ মোবাইলটা বেজে উঠলো।
মোবাইলে দেখে এক্স গার্লফ্রেন্ড ফোন দিয়েছে,
মুহূর্তেই নানা কুচিন্তায় ভরে গেলো তার মস্তিষ্ক,
যাক অনেকদিন পর একটু ইয়ার্কি,ফাজলামি করা যাবে,
.
"হ্যালো "....(শিমুল)
.
"কেমন আছো?"
.
"এইতো আছি মোটামুটি আছি, তোমার খবর কি?"...(শিমুল)
.
"এইতো আল্লাহর দয়ায় আছি,
কি আজকে বাইরে যাবা?"
.
"হুম, মনতো চায় আসো দেখি বিএফজিতে,
অনেকদিন রেস্টুরেন্টে খাওয়া হয় না" ...(শিমুল)
.
"ঠিক আছে আধা একঘন্টার মধ্যেই আসতেছি"
এই বলে স্নেহা ফোনটা রেখে দেয়,
সিগারেটটা প্রায় শেষ কিন্তু আরও একটা টানতে ইচ্ছা করছে।
.
"মামা আরেকটা বেনসন দেহি " ...(শিমুল)
সিগারেটটা জ্বালিয়ে হাতে নিয়ে টানা শুরু করে শিমুল আর একসাথে মাথায় প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হয়।
.
"মেয়ে মানেই কি টাকা প্রেমি?
টাকা বাদে কি ওদের মনে আর কোনো চিন্তা নাই? রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা শুনে আধা-একঘন্টার মধ্যে রওনা বাহ! এর নামই তো 'নারী'
আজকে টাকা আছে দেখেই এইরকম মেয়েরা পিছনে ঘোরে,নিজের টাকা খরচ করে ফোন দেয়,
যদি কোনো গরীব পরিবারের ছেলে হতাম এরা আদৌ আমার দিকে রাস্তা দিয়ে হাটার সময় চোখ ফিরিয়ে তাকাতো? বোধ হয় না",
এইরকম নিজেকে প্রশ্নোত্তর করতে থাকে শিমুল , প্রশ্নোত্তর করতে করতে সিগারেটটা শেষ হয়ে যায়, এখন আর সিগারেট খেতে ইচ্ছা করে না,
.
"মামা একটা দুধ চা দেখিতো! "...(শিমুল)
চায়ের কাপ হাতে নিয়ে আবার প্রশ্নোত্তর পর্বে ফিরে যায় শিমুলের
।
.
.
রিয়া জারিফের হাতটা জোরে চেপে ধরে,
জারিফ তার কাছে সব কিছু,
১১ বছর ধরে তাদের রিলেশন।
এইরকম লম্বা সময় ধরে রিলেশন আসলে কয়টা পাওয়া যায়? যদিও রিয়া বিবাহিত,
কিন্তু তাতে তার কিছু যায় আসে না,
কেননা এই বিয়ে তার কাছে মিথ্যা,
এই বিয়ে তার কাছে একটা পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ব্যাতিত কিছুই না, জারিফের কাধে নিজের মাথা লাগিয়ে প্রচুর গল্প করে
.
"রিয়া, বাদাম খাবা?"
.
"না বাদাম খেতে ইচ্ছা করে না একটা আইসক্রিম দেও"
.
"ঠিক আছে "
জারিফ ২ টা আইসক্রিম নিয়ে আসে রিয়ার আর তার জন্য
.
"আইসক্রিম খাওয়া অবস্থায়,
তোমাকে একেবারে পরীর মত দেখায় রিয়া"
.
"বুঝেছি ফাও মাখন দেওয়ার কোনো মানে হয়?"
.
"না কিছু সিরিয়াস কথা বলি "
.
"কী?"
.
"আমার বিয়ার জন্য নাকি পাত্রী খুজে পেয়েছে মা! "
.
"কী?ইয়ার্কি নাকি?"
.
"না কোনো ইয়ার্কি না, সামান্যও না।"
.
"তুমি তোমার মাকে না বল নাই? "
.
"না,কীভাবে বলি??
মা এত মন থেকে বলেছে না বলার কোনো উপায় নাই,পুরা কেদে দিয়ে
চলবে।।।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...