বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ওরা বাসায় গেলো, সবার সাথে পরিচিত হলো। আম্মু জান্নাতের মায়ের সাথে বিয়ের কথা বলে, যদিও ওর আম্মু রাজি বাট এই মুহূর্তে জান্নাত বিয়ে করবেনা।
তারপর আম্মু জান্নাতের আম্মুকে বলে জান্নাতকে দেখানোর জন্য, বিয়ের কথা না বলে সিস্টেম করে জান্নাতকে দেখে। হাতে কিছু টাকা দিয়ে চলে আসে।
বাসায় এসে ছোট আন্টি আমাকে বলে,,,
--- বাহ! মেয়েতো একটা দারুণ দেখেছিস। এবার চাকরী একটা দেখ। না হলে বিয়ে করে খাওয়াবি কি?
--- আন্টি মাত্র পরীক্ষা শেষ হয়েছে, আর কিছুদিন পর রেজাল্ট দিবে। তারপর না হয় চাকরীর কথা চিন্তা করবো।
--- আচ্ছা ঠিক আছে।
এ কথা বলে আন্টি চলে গেলো। রাতের বেলা আম্মু আমার রুমে আসলো,,,,,
--- কিরে কি করিস? (আম্মু)
--- কিছু না, আমিও ডাইরি লেখা শুরু করছি।
--- কোনো লাভ নেই, যার জন্য ডাইরি লেখছিস সে বিয়ে করবেনা।
--- করবেনা মানে?
--- হুম, ছেলেদের উপর থেকে তার বিশ্বাস চলে গেছে। সে এখন আর বিয়ে করবেনা। করলেও সেটা পরে দেখা যাবে।
মনে মনে ভাবলাম বিয়ে না করে যাবে কোথায়? আজ থেকে যে কদিন বন্ধ আছে সে কদিন ওর পিছে পিছে হাটতে হবে। যদি একটুও ভালো লাগা কাজ করে তাহলে তো কোনো কথাই নাই।
এগুলো ভাবছি এমন সময় অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে কল আসলো...
--- নিজেকে কি মনে করেব, হুম? একদিন দেখলেন আর ভালো লেগে গেলো? তার উপর সোজা বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়ে দিলেন? (মেয়ে)
তারমানে এটা জান্নাত হবে, তারপর আমি বললাম...
--- আচ্ছা আপনি আমার কথাটা শুনুন!
--- কিসের কথা শুনবো? এ বিষয়ে আর কোনো বাড়াবাড়ি করবেন না, যদি করেন তাহলে আপনার খবর করে ছাড়বো। বলে দিলাম,,,
--- কি খবর করবেন?
যাহ বলার আগেই কেটে দিলো, যেমন টা ভেবে ছিলাম তেমন টা না। আমি ভাবছি খুব ভদ্র আর শান্তশিষ্ট হবে এখন দেখি তার উল্টো। জেদি আর রাগি, যাইহোক এতো কিছু ভেবে লাভ নেই। কালকে থেকে ওর পিছে লাগমু।
পরের দিন ওর ক্যাম্পাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু তাকে দেখলাম না, মনে হয় আসেনি। এই ভাবে ২ দিন গেলাম কিন্তু ক্যাম্পাসে আসেনা।
আমিও নাছোড় বান্দা, একদিন না একদিন তো আসবেই।
এরপরের দিন আবার গেলাম। কলেজ ছুটি হয়ে গেলো, দেখলাম উনি আসছেন। মনের মধ্যে তো লাড্ডু ফুটতেছে।
দেখেও না দেখার ভান করে একপাশে দাঁড়িয়ে মোবাইল টিপতেছি...
--- এই যে মি. এখানে কি করেন? (জান্নাত)
--- আরে আপনি! আমি তো একটা ফ্রেন্ডের বাসায় আসলাম। (আমি)
--- ও আচ্ছা।
--- হুম, তো আপনি এখানে কেন?
--- আমি এই ক্যাম্পাসেই পড়ি
মনে মনে বললাম সেটা তো আমি জানি, ওই দিন কফিশপে বলছে যে ভুলে গেছে মনে হয়।
এ কথা গুলো বলে জান্নাত চলে গেলো।
পরেরদিন আবারও গেলাম, ১২.০০ সময় দেখলাম আরো ২টা মেয়ে সহ বাহিরে আসছে, আমি আবারও নিচের দিকে তাকিয়ে মোবাইল টিপতেছি। আমাকে দেখে...
--- কিহ আজকেও কি ফ্রেন্ডের বাসায় আসছেন নাকি মি:?? (জান্নাত)
--- না মানে আজকে এলাকার ছোট ভাই একটার সাথে আসলাম। একটু দরকার ছিলো।
--- আপনার না পড়ালেখা শেষ, বসে আছেন কেন? কোনো জব করতে পারেন না?
--- হুম সব করবো আগে আপনি বিয়েতে রাজি হয়ে যান।
--- দেখুন মিঃ আপনি এখানে কেন আসেন সেটা আমি খুব ভালো করে জানি। শুধু শুধু সময় নষ্ট করছেন আপনার। আমি বিয়ে করছি না।
আর কোনো কথা না বলে ক্যান্টিনের দিকে চলে গেলো, আমি ভাবছি কি করা যায়।
এভাবে আরো ৫ দিন জান্নাতের পিছন পিছন হাটলাম কিন্তু কোনো কাজ হলো না। এর মধ্যে আমার রেজাল্ট দিয়ে দেয়।
খুব একটা খারাপ রেজাল্ট হয়নি আবার বেশি ভালোও না। মামা যেই কোম্পানিতে চাকরি করে ওটাতে আমার জন্য একটা দেখছে। সব গুলো কাগজ মামার কাছে জমা দিয়ে আসলাম।
৩ দিন পর মামা জানালেন যে চাকরির ইন্টার্ভিউ নিবে, আমাকে রেড়ি হয়ে চলে যেতে। আমিও গেলাম। ইন্টার্ভিউ দিয়ে চলে আসলাম।
সারা দিন চাকরীর পিছনে দৌড়াচ্ছি আর সন্ধ্যার সময় জান্নাতদের বাসার সামনে গিয়ে ঘুর ঘুর করি। সেদিন সাদে ছিলো আমাকে দেখে ফেলেছে।
আমিও না দেখার ভান করে মোবাইল চালাতে চালাতে বাসায় চলে আসছি। সেদিন রাতে মামা জানালেন চাকরি হয়ে গেছে।
১ সপ্তাহ পর জয়েন করতে। সব কিছু ঠিকঠাক।
পরেরদিন আবারো তার ক্যাম্পাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। একবার তাকিয়ে ভিতরে চলে গেলো। ধুর এতো কষ্ট করে পিছন পিছন হাটি আর আমাকে পাত্তাই দেয় না।
সেদিন রাতে বাসায় শুয়ে শুয়ে ভাবছি, ৪ দিন আর ওর সামনে যাবো না। দেখি আমাকে মিস করে কিনা? হয়তো করবে না তুবও দেখি।
৪ দিন গেলাম না। কিন্তু কোনো কাজ হলো না। কি মেয়েরে বাবা একটুও দয়া মায়া নেই। এতো জেদি এরো রাগি মানুষও দুনিয়ায় থাকে।
সেদিন রাতে আম্মু রুমে আসলো। আম্মু আবার আমার সব প্লান সম্পর্কে জানে, আমাকে বললো....
--- কিরে কাজ হলো?
--- ধুর আর বলো না, তোমার বৌমা অনেক রাগি আর জেদি।
--- আমি গিয়ে আর একবার ওর মায়ের সাথে কথা বলবো?
--- না দরকার নেই। আরো কিছুদিন যাক তারপর দেখা যাবে।
--- আচ্ছা ঠিক আছে, কালকে না তুই জয়েন করবি? এতো রাত না জেগে ঘুমিয়ে পড়।
--- আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি যাও।
মনে মনে ভাবছি বালিকা বিয়ে করলে তোমাকেই করবো, আমাকে এতো ঘুরানোর ফল বিয়ের পর সুধে আসলে আদায় করবো।
পরের দিন অফিসে গেলাম, ভালোভাবেই দিনটা কাটলো।
এভাবে আরো ৩ দিন অফিস করলাম, জান্নাতের সাথে আর কোনো কথা হয়নি। সেদিন রাতে রুমে শুয়ে আছি আর ভাবছি জান্নাতের সাথে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে, এভাবে আর হবে না।
আমি জান্নাতকে কল দিলাম....
কয়েকবার দিলাম ধরলো না। ৫ম বারের সময় ধরলো...
--- কি বলবেন তাড়াতাড়ি বলেন।
--- আপনার সাথে শেষ বারের মতো কথা বলতে চাই।
--- ওকে, কি বলবেন বলেন।
--- মোবাইলে নয়, সরাসরি বলবো।
--- সরি আমি দেখা করতে পারবো না।
--- কালকে তো শুক্রবার, প্লিজ শেষ বারের জন্য দেখা করেন। ওয়াদা দিলাম আর কখনো আপনাকে বিরক্ত করবো না।
--- আচ্ছা ঠিক আছে কোথায় আসতে হবে বলেন।
--- নাম্বারে sms করে দিচ্ছি।
--- আচ্ছা ঠিক আছে।
পরের দিন বিকালবেলা আমি রেড়ি হয়ে জান্নাতকে দেওতা ঠিকানায় চলে গেলাম। হাতে করে আমার লেখা সেই ডাইরিটা নিয়ে গেলাম। যেটা আমি জান্নাতের জন্য লিখেছিলাম।
প্রায় ৩০ মিনিট পর সে আসলো...
--- কি বলবেন তাড়াতাড়ি বলেন আমার বাসায় কাজ আছে!
--- হুম বলছি। আগে বলেন কি খাবেন?
--- না আমি কিছু খাবো না।
--- আগে খেয়ে নিন, তারপর বলছি।
(এই মামা ২টা পিজ্জা আর ২ টা স্পাইট দেন)
দুজনে খেয়ে নিলাম, বললাম চলেন বাইরে যাই, ওখানে বলবো।
বাইরে এসে রাস্তার পাশে একটা গাছের নিচে বসলাম।
--- এবার বলুন কি বলবেন (জান্নাত)
--- যেদিন আমি আপনার ডাইরিটা পেয়ে ছিলাম সেদিন বাসায় এসে পড়তে শুরু করলাম। আর আপনাকে আমার ভালো লেগে যায়, বিশ্বাস করেন আপনার ছবিটা তখন আমি দেখিনি। অনেক বার আফসোস করলাম ওই সেজান ছেলেটা যদি আমি হতাম কতই না সুন্দর হতো। সেদিন আপনার ডাইরিটা আমার আম্মুকেও পড়ে শুনিয়েছি। আপনার কথা শুনে আম্মুও বলেছে আপনার মতো একজনকে আমার বউ বানাবে। তখন আমরা জানতাম না যে আপনার সাথে সেজান এমন একটা আচরণ করেছে।
ডাইরিটা পড়ার পড় আপনাকে পুরোপুরি আমি ভালোবেসে ফেলি, আপনার ডাইরি আর চশমা নিয়ে আমি ৮ দিন ওই রাস্তার বসে আছিলাম। আপনি আসবেন ভেবে। কিন্তু আসেন নি।
আমিও হাল ছাড়িনি। আমার বন্ধুকে দিয়ে আপনার সিমের সব ডিটেলস বের করি। আপনাকে কল করে আসতে বলি।
যেদিন শুনলাম সেজান আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে, সেদিন আপনার প্রতি আমার ভালোবাসাটা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।
মনে মনে বললাম বিয়ে করলে আপনাকেই করবো, আর কাওকে নয়।
প্রথমে ভাবলাম আপনাকে প্রপোজ করবো, বাট আপনি হয়তো আমাকে আর বিশ্বাস করবেন না, সেজন্য সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। আমার ধারনা ছিলো বিয়েতে আপনার অমত থাকবে না।
কিন্তু আপনি বিয়েটা না করে দিলেন। তবুও আমি হাল ছাড়িনি। আপনার পিছনে লাগা শুরু করলাম।
বেহায়ার মতো দিন নেই রাত নেই আপনার পিছে ঘুরেছি। আমার আম্মুও বলেছে যে আপনার
সাথে সাথে থাকার জন্য। আপনার যত গুলো ভালো লাগা ছিলো সব গুলো আমি করেছি।
আপনার কদমফুল পছন্দ ছিলো, তাই আপনার বাসার নিচে প্রতিদিন কদম ফুল দিয়ে আসতাম আর দূর থেকে দেখতাম আপনি কি করেন।
অনেক রাত পর্যন্ত আপনার বাসার নিচে ঘুরেছি, শুধু একবার আপনাকে দেখার জন্য।
কয়েকদিন হলো আমার চাকরী হয়ে গেছে, তাই এই কয়েকদিন আপনাকে আর জ্বালায় নি।
যেটা বলার জন্য আসছিলাম। এই পৃথিবীর সব গুলো মানুষ খারাপ নয়, জীবন তো একটাই। কেন একজনের জন্য সব সময় মন খারাপ করে বসে থাকবেন।
আমি বলবো না যে আমাকে বিয়ে করেন, অন্য কাওকে হলেও বিয়ে করে জীবনটা নতুন করে শুরু করেন।
এতে আপনার বাবা মা একটু হলেও শান্তি পাবে, দুঃচিন্তা মুক্ত হবে। ওনাকের কথা চিন্তা করে নাহয় জীবনটা শুরু করেন।
আর এতো দিন ডিস্টার্ব করার জন্য সরি। আমি আর আপনার পিছন পিছন ঘুরবো না। যদি কোনো খারাপ কথা বলে থাকি ক্ষমা করে দিবেন। নিজের পছন্দ মতো কাওকে নিয়ে জীবনটা আবার শুরু করেন।
আর কষ্ট করে আসার জন্য ধন্যবাদ। এটা নিন... (ডাইরি টা হাতে দিয়ে)
----- কি এটা? (জান্নাত)
--- একটা ডাইরি। যেদিন থেকে আপনাকে ভালো লাগে সেদিন থেকে আমিও ডাইরি লিখি কিন্তু আমার ভালো লাগায় তো আপনার কিছু আসে যায় না, তাই ভাবলাম আর লিখবো না। ধরেন এটা নিন।
---- (ডাইরি টা নিলো)
--- আমার কথা শেষ, এবার আপনি আসতে পারেন।
জান্নাত আর কিছু না বলে ডাইরিটা হাতে নিয়ে চলে গেলো। আমি তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
১ সপ্তাহ চলে গেলো জান্নাতের কোনো খবর নেই।
আমি রাতে রুমে বসে বসে এনামএর সাথে চ্যাট করতেছি এমন সময় আম্মু আসলো....
--- কিরে কি করিস?
--- কিছু না।
--- একটা খুশির সংবাদ আছে।
--- কি!
--- জান্নাত বিয়েতে রাজি হয়েছে!
--- আরে কি বলছো এসব?
---- হুম, কিন্তু...
--- কিন্তু কি?
--- ও চায় বিয়েটা কালকেই করতে এবং ঘরোয়া পরিবেশে হবে, কয়েকজন রিলেটিভ থাকবে আর কেউ নই। আর ওর স্টাডি শেষ হতে আর কিছু দিন সময় লাগবে। তারপর অনুষ্ঠান করবে।
--- আরে এটা কোনো ব্যাপার না, তুমি শুধু আব্বুকে সিস্টেমে রাজি করিয়ে দাও।
--- আচ্ছা ঠিক আছে।
বাহ! অবশেষে বিয়েটা করতে রাজি হলো। ওই দিনের কথা গুলো কাজ হয়েছে। ইশ! লুঙ্গি ড্যান্স দিতে ইচ্ছা করছে।
পরের দিন ওদের বাসায় বিয়েটা শেষ হলো, আমরা পাশাপাশি বসে আছি। আমি বললাম....
---- ওহে বালিকা! শেষ পর্যন্ত আমাকে বিয়ে করলে?
--- হুম, না করে উপায় আছে? ডাইরিটা পড়ে তো আমি ফিদা হয়ে গেছি।
--- তাহলে এতো দিন যে আমাকে কষ্ট দিলে ওগুলোর প্রতিশোধ নিবো।
--- দেখা যাবে কে কি করে! তার আগে আপনাকে সাইজ করবো।
---- হিহিহি তাই নাকি?
---- হুম তাই। (কানটা একটু টেনে দিয়ে)
#সমাপ্ত
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now