বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
লেখকঃ আরব
তাড়াতাড়ি করো মা।তাড়াতাড়ি।ফাস্ট ফাস্ট।
আম্মু:এই একটু চুপ করে দাঁড়াতো।এতো বড় মেয়ে হয়ে গিয়েছিস এখনো শাড়ী পরতে জানিস না।
জান্নাত:কোথায় বড় হলাম?এখনো আমি তোমার সেই জানু বাচ্চাটাই আছি।সুধু দুদু খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।
আম্মু:ওহ তাই বুঝি।এখনো তুই ছোট বুঝি?আর কই দিন পর তোকে বিয়ে দিয়ে শ্বশুড় বাড়ীতে পাঠাবো।
জান্নাত:এ....আমি কারো শ্বশুড় বাড়ী যেতে পারবো না।পারলে তুমি যেও তোমার শ্বশুড় বাড়ী।আর যদি জোর করে পাঠিয়ে দাও,তাহলে ওই শ্বশুরের ছেলেকে আমি খামছিয়ে খেয়ে নেব।
আম্মু:পাগলি মেয়ে একটা।
জান্নাত:আমি পাগলি নয়,তুমি পাগলি তোমার শ্বশুড় পাগলি,তোমার হাসবেন্ড পাগলি,তোমার মেয়ে পাগলি।এই না থুক্কু!তোমার মেয়ে ভালো।
আম্মু:হা হা হা!
জান্নাত:,হি হি হি!দাঁত না ক্যালিয়ে তাড়াতাড়ি করো।আমার বান্ধবীরা সব ওয়েট করছে।
আম্মু:এইতো হয়ে গিয়েছে।
একটু পর,
আম্মু:বাহ!এবার খুব সুন্দর লাগছে আমার পাগলিটাকে।
জান্নাত:থাক আর বলতে হবে না।আমি এখন গেলাম।
আম্মু:সাবধানে যাস।বিয়ে বাড়ীতে গিয়ে আমাকে একবার ফোন দিস।
জান্নাত:ওকে ওকে।বাই বাই আম্মু।
আম্মু:বাই বাই।
বিয়ে বাড়ীতে হেঁটে বেড়াচ্ছে জান্নাত।
একটা বাচ্চাকে চকলেট নিয়ে যেতে দেখলো জান্নাত।
জান্নাত বাচ্চাটার কাছে গেল।
জান্নাত:এই পিচ্চি শোন।
বাচ্চা:হুম বলো আন্টি।
জান্নাত:কি আমি আন্টি?তোর এতো বড় সাহস হলো কি করে তুই আমাকে আন্টি বলে ডাকিস?দাঁড়া তোর আম্মুকে বলে পিটানি দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
বাচ্চা:না প্লিজ আন্টি আম্মুকে বলবেন না।
জান্নাত:আচ্ছা বলবো না।তবে একটা শর্ত আছে।
বাচ্চা:কি শর্ত?
জান্নাত:তোর হাতের ওই চকলেটটা আমাকে দে।
বাচ্চা:প্লিজ আন্টি এই চকলেটটা নেবেন না।আমি অনেক কান্না করে আব্বুর সাথে কিনে নিয়েছি।
জান্নাত:আচ্ছা ঠিক আছে পুরোটা দেওয়া লাগবে না।আমি একটা কামড় নেব।আর বাকিটা তুই খাবি।
বাচ্চা:আচ্ছা ঠিক আছে।
বাচ্চাটা চকলেট টি জান্নাতের দিকে এগিয়ে দিল।জান্নাত পুরো চকলেটটাই একবারে মুখে পুরে দিল।এটা দেখে বাচ্চাটা জোরে কান্না করে দিল।
বাচ্চা:তুমি খুব পচা আন্টি।একবারে পচা।আমি আব্বুকে বলে দেব।
জান্নাত:এখন এখান থেকে পালানোই বেশি ভালো(মনে মনে)।
তারপর জান্নাত ওখান থেকে কেটে পড়লো।আর বাচ্চাটা কান্না করছে বসে বসে।
রিপা:এই জান্নাত এতোক্ষন কোথায়ছিলি?
জান্নাত:এইতো ঘুরে ঘুরে দেখছি তোর বিয়ের আয়োজন কেমন হয়েছে।
রিপা:তা কেমন দেখলি?ভালো না খারাপ?
জান্নাত:হেব্বি একবারে ফাটাফাটি হয়েছে!তবে তোর বিয়েতে এতো আয়োজন এটা মানাচ্ছে না হি হি হি!
রিপা:কিহ!দাঁড়া আজ তোকে কি করি দেখ।
জান্নাত একটা দৌঁড় দিল।
দৌঁড়ানির ফলে শাড়ীর আচলটা পড়ে গিয়েছে।জান্নাত ওটা কোন রকম ঠিক করে নিল।
জান্নাত দেখলো ওর ৩বান্ধবী আরশি,নাদিয়া আর রিয়া এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছে।জান্নাত ওদের কাছে গেল।একটা চেয়ার টেনে বসলো।জান্নাতকে দেখে রিয়া বললো,''কিরে জান্নাত আমাদেরতো ভুলেই গিয়েছিস।
জান্নাত:তোদের আমি ভুলে গিয়েছি নাকি তোরা আমাকে ভুলে গিয়েছিস?
নাদিয়া:এটা তুই সত্যি না বললেও মিথ্যা বলিসনি।
আরশি:কি করবো বল,সারাদিন বি এপ এর সাথে ঘুরি আর টুকটাক পড়াশোনা করি।
জান্নাত:এটা ছাড়া আর পারিস কি তুই?তা রিয়া তোর বি এপ এর কি খবর?
রিয়া:আমার বি এপ তো খুব বিজি।আমার জন্য তার সময় ই হয়না।তবে ও আমাকে খুব ভালোবাসে।মাঝে মাঝে ঘুরতেও নিয়ে যায়।
জান্নাত:হুম বুঝলাম।
রিয়া:কি বুঝলি?
জান্নাত:এই যে তোর বি এপ তোকে কচু ভালোবাসে।হি হি হি!
সবাই হেসে উঠলো।আর রিয়া একটু অভিমান করলো।
জান্নাত:আমি নাদিয়াকে কিছু জিগ্গাসা করবো না।
নাদিয়া:কেন?
জান্নাত:কেন আবার?তোর বি এপ তো সেই দিন কার বাচ্চা।কইদিন আগেই ফিডার খাওয়া ছাড়লো।
আবার সবাই হেসে উঠলো।
আরশি:আচ্ছা জান্নাত তুইতো সবার বি এপ এর খবর নিচ্ছিস।তা তোর কি কপালে বি এপ জুটলো নাকি সারা জীবন সন্যাসি হয়ে কাটিয়ে দিবি?
জান্নাত:আমারতো একা থাকতেই বেশি ভালো লাগে।তবে তারপরও একটা বি এপ দরকার আছে।
নাদিয়া:তা কেমন বি এপ চাই তোর?বল একটু শুনি।
জান্নাত:ছেলেটা হবে লম্বা,সুন্দর মিষ্টি দেখতে হবে,তামিল সিনেমার নাইকের মতো বডি হতে হবে।আর অনেক রুমান্টিক হতে হবে।
রিয়া:তাহলে তুই ভারতে চলে যা।ওখানে গেলেই এমন একটা হাতি মার্কা বি এপ পেয়ে যাবি।
সবাই হেসে উঠলো।
জান্নাত:হাতি হলেও ভালো।তোর বি এপ এর কই দিন আগেইতো নাক দিয়ে মশলা ঝরতো হি হি হি!
নাদিয়া আর আরশি জোরে হেসে উঠলো।
হাসির শব্দ শুনে আশে-পাশের লোকজন ওদের দিকে তাকালো।
ওরা ওদের হাসি থামিয়ে স্বাভাবিক হলো।
জান্নাত:এই রিয়া এখান থেকে চল।
রিয়া:কোথায় যাবি?
জান্নাত:রিপার রুমে।
নাদিয়া:ওখানে গিয়ে কি করবি?
জান্নাত:আরে রিপাকে সাজিতে হবে না।
আরশি:হুম ঠিক বলেছিস।চল।
তারপর ৪বান্ধবীমিলে রিপার রুমে গেল।
রিপা ওদের দেখে বললো,''তোরা এসেছিস?তোরা একটু সাজিয়ে দে তো আমাকে।
জান্নাত:সাজিয়েতো দেব।কিন্তু তোকে সাজিয়ে দিলে আমাদের কি লাভ?
রিপা:তোরা আমার বান্ধবী তোরা না সাজিয়ে দিলে কে সাজিয়প দেবে আমাকে?
জান্নাত:তা বললে তো হবে না খুকি মাল্লু লাগবে।
আরশি:আাচ্ছা এক কাজ করলে হয়না?
জান্নাত:কি কাজ?
আরশি:আমরা এখন রিপাকে সাজিয়ে দিয়।সাজানোর টাকাটা আমরা দুলাভাইয়ের সাথে আদায় করে নেব।
রিয়া:দেবতো?আমি শুনেছি রিপার বর খুব কিপ্টে।
জান্নাত:যদি না দেয়,তাহলে ওর বাসর ঘরের খাটের নিচে বম লাগিয়ে রাখবো।যখনই রিপার বর খাটে উঠবে তখন ই ধম করে ফেটে উঠবে!
সবাই হেসে উঠলো!
রিপা:এখন এইসব ফাজলামু বাদ দিয়ে আমাকে সাজিয়ে দে।
জান্নাত:আজ তোকে এমন করে সাজিয়ে দেব যে,তোর বর যদি একবার তোর দিকে তাকায় তাহলে সুপার গ্লু আটার মতো তোর বরের চোখ আটকিয়ে যাবে।
রিপা:দূর ফাজলামি বাদ দিয়ে সাজানো শুরু কর।ওরা হয়তো এখনিই চলে আসবে।
আরশি:হুম।
তারপর রিপাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিল ৩বান্ধবী মিলে।
বাইরে থেকে গাড়ীর শব্দ শুনা গেল।মনে হয় বর এসেছে।
জান্নাত:এই রিপা তুই এখানে চুপটি করে বসে থাক।তোর বরকে আমরা দেখে আসি।আর যদি তোর একা একা ভয় করে তাহলে তুইও আমাদের সাথে চল।তোর বরকে দেখতে হি হি হি!
রিপা:ধূর।তোরা ভালো করে দেখ গিয়ে।
জান্নাত:আমরা দেখলে তোর আবার হিংসা হবে নাতো
রিপা:এই তোরা এখান থেকে যাবি নাকি লাঠি দিয়ে তাড়া করবো?
জান্নাত:এই চল চল খুকির রাগ হচ্ছে।
তারপর সবাই নিচে চলে এলো বরকে দেখতে।
আসার সময় একটা লোকের কাছ থেকে একটা কলা চুরি করে নিয়ে এসেছে জান্নাত।
বরের গাড়ীর সামনে অনেক ভীড় জমেছে।
পিছন থেকে কয়েকবার ভীড় ঠেলে ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করলো ৪বান্ধবী।কিন্তু ভিতরে ঢুকতে পারলো না।
নাদিয়া:এখন কি করবি?ভিতরেতো ঢুকাই যাচ্ছে না।
জান্নাত:একটা কাজ কর।জোরে ঠেলাদে সবাইকে।
তারপর অনেক ঠেলা পাড়া করে ভিতরে ঢুকলো ৪বান্ধবী।
ভিতরে ঢুকে একজন কে দেখেতো ৪বান্ধবিরই চোখ আটকিয়ে গিয়েছে।
একজন সুঠাম দেহের অধিকারি।সুন্দর দেখতে একটা ছেলে বরের পাশে দাঁড়িয়ে আছে।গায়ে একটা নীল পাঞ্জাবি, পরনে একটা সাধা পায়জামা।বাম হাতে একটা ঘড়ি,আর ডান হাতে সুন্দর দেখতে একটা ব্যাচলেট।
নাদিয়া:ওই দেখ,ছেলটা কত সুন্দর।একবারে হিরোর মতো।
রিয়া:খুব আপসোস হচ্ছে।আজ আমি সিঙ্গেল থাকলে ছেলেটাকে পটাতাম।
আরশি:আমারতো মনে হচ্ছে আমার বি এপ এর সাথে ব্রেকআপ করে ওকে পটানোর কাজে লেগে পড়ি।
জান্নাত:একটা ম্যাজিক দেখবি?
রিয়া:কি ম্যাজিক?
জান্নাত কলাটা খেয়ে কলার খোসাটা বরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার দিকে ছুড়ে ফেললো।
সবাই বরকে নিয়ে ব্যস্ত।
আমিও পায়ের নিচে কি আছে কি নেই ওদিকে তাকায়নি।যখন আমরা সামনে এগিয়ে গেলাম। ঠিক তখন কলার খোসায় পা পিছলিয়ে আমি নিচে পড়ে গেলাম।
এটা দেখে জান্নাত জোরে জোরে হাসতে লাগলো।ওর সাথে ওর বান্ধবী গুলোও হাসছে।আর আমি লজ্জায় উপরের দিকে তাকাতে পারছি না।
চলবে,,,
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now