বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
|
পিচ্চিটার দেওয়া মেসেজ টা পরেই গাড়িটা আবার চালাতে লাগলাম আপন মনে ।
কেনো জানি না পিচ্চিটার জন্য মনের মধ্যে টান বেড়েই চলেছে ।
খুব ইচ্ছে করছে এখুন্নি ওর কাছে দৌড়ে চলে যাই। কিন্ত কি করবো আমার হাত পা বাধা ।
চাইলেও যেতে পারবো না ।
পিচ্চিটা একটা ইচ্ছে প্রকাশ করছে আর আমি যদি তা পূরন করতে না পারি তাহলে কি করে ওর ভালোবাসা পাবো ।
যতই কষ্ট ই হোক না কেনো আমি আর একটাদিন ওর থেকে দূরে সরে থাকবো ।
আপন মনে ওর কথা ভাবতে ভাবতে গাড়ি চালাচ্ছি ।
প্রথমে ঢাকায় এসে আগে অফিসে গেলাম।
একটু রেস্ট নিলাম। .ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি
প্রায় ১২ টা বেজে গেছে ।
আজ বাদে কাল আমার বিয়ে অথচ কাউকে ইনবাইট করা হয়নি ।
কেউ জানে না যে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে ।
যদি পিচ্চিটা মানা না করতো তাহলে হয়তো এতক্ষনে সবাই জেনে যেতো ।
যাই হোক সেসব নিয়ে ভাবছি না । রাতের মধ্যে আবার গ্রামের বাড়িতে ফিরতে হবে ।
কিন্ত ওদের বাসায় যাওয়া যাবে না ।
নিজেদের বাসায় গিয়ে উঠতে হবে । আর সেখানে একটা রাত একাই কাটাতে হবে ।
অপেক্ষা করছি ...? কখন আর একটা দিন পার হবে ।
অপেক্ষা করা যে কত কষ্টের তা সেই জানে যে মন থেকে কাউকে ভালোবাসতে জানে ।
আর যে ভালোবাসতে জানে সে অপেক্ষা করতেও জানে ।
অফিস থেকে ম্যানেজার সাহেব কে সব কাজ কর্ম বুজিয়ে দিয়ে আমি বেড়িয়ে পরলাম।
শপিং এ যাওয়ার উদ্দেশ্য ।
অফিসের পাশেই খুব বড় একটা শপিং মল ছিলো তাই হেটেই চলে গেলাম।
প্রথমে আগে কাপড়ের শপে ডুকলাম।
খুব সুন্দর সুন্দর শাড়ি দেখতে পাচ্ছিলাম।
শুনেছিলাম মেয়েরা নাকি নিল রং বেশি পছন্দ করে ।
তাই খুব সুন্দর দেখে একটা নীল রঙের শাড়ি কিনলাম।
জানি না ওর পছন্দ হবে কিনা । তবে আমার বেশ ভালো লেগেছে ।
তারপর আরো কিছু কেনা কাটা করলাম।
আম্মুর কথা মতো কিছু সোনার গয়না কিনলাম।
আম্মুর আসার আগে কি কি গয়না লাগবে তা একটা কাগজে লিখে দিয়েছিলেন তাই কিনতে বেশি অসুবিধা হয়নি । কারন আম্মু ভালো করেই জানেন । গয়না গাটি সম্পর্কে আমার তেমন কোনো ধারনা নেই ।
কেনাকাটা শেষ করে শপিংমল থেকে বেড়িয়ে পরলাম।
ঘরির দিকে তাকাতেই চোখ কপালে উঠে গেলো।
শপিং করতে করতে কখন যে দুইটা বেজে গেলো বুজতেই পারলাম না ।
এখন হয়তো মা জননি খায়নি । কারন আমি জানি আমি যতখন দুপুরের খাবার না খাই ততক্ষন পযন্ত একজন না খেয়ে থাকবেই । আর সে হলো আমার মা
আর আবার আজকে থেকে নাকি পিচ্চিটাও না থেকে থাকবে আমার জন্য ।
এমন করলে কি চলে । এক জনের জন্য সবাই না খেয়ে থাকে ।
নিজেকে নিজেই গালা গাল করতে লাগলাম।
আমার ও ক্ষুদা লেগে গেছে ।
তাই প্রথমে গিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ প্রবেশ করলাম।
খাবার অর্ডার দিতেই ফোনটা বেজে উঠলো ।
বুজতে পারলাম । এটা আমার আম্মু ছাড়া কেউ করেনি । তাই তাড়াতাড়ি করে ফোনটা রিসিভ করলাম।
হ্যালো বলতেই আম্মু বলল
-- কিরে বাবা কিছু খেয়েছিস (আম্মু).
-- এইতো আম্মু মাত্র খেতে বসলাম । তুমি খেয়ে নাও । (আমি)
-- আচ্ছা তুই খেয়ে নিস আর সাবধানে আসিস কিন্ত (আম্মু)
-- আচ্ছা .. কিন্ত আমি যে তোমার হাতে ছাড়া খেতে পারি না সেটা কি তুমি জানো না (আমি)
-- এখন তো এটা বলছিস আজ বাদে কাল বউ আসলে তখন মায়ের হাতের খাবার খেতে আর ভালো লাগবে না তখন বউ এর হাতে খেতে ভালো লাগবে (আম্মু)
-- এমন টা কখনো হবে না আমি সব সময় তোমার হাতেই খেতে চাই (আমি)
-- হয়েছে আর বলতে হবে না চুপচাপ খেয়ে নে(আম্মু)
-- ঠিক আছে .....(আমি)
এবার একটু সাহস নিয়ে আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম।
-- আম্মু ও খেয়েছে ,, (আমি)
আম্মু আমার কথা শুনে হাসতে হাসতে বললেন
-- না তোর...ওও... খায়নি । আমাকে বলেছে যতক্ষন তুই না খাবি ততক্ষন ও খাবে না । (আম্মু)
এবার একটু সরম লাগলো তাতে কি হইসে মা ই তো ওনি তো সব কিছু জানেন ই ।
তাই আবার আম্মু কে একটু সাহস নিয়ে বললাম
-- আম্মু তুমি ফোনটা হোল্ড করে ওকে ডেকে বলে খেয়ে নিতে যাতে আমি শুনতে পাই (আমি)
-- বাহ বাহ আমার ছেলেটা দেখছি দু দিনেই বউ পাগলা হয়ে গেছে । (আম্মু)
- ইয়ে মানে আম্মু (আম্মু)
(সরমের ঠেলায় আমতা আমতা শুরু করে দিলাম)
আমার যে এখন সরম লাগছে তা আম্মু খুব ভালো ভাবেই বুজতে পেরেছেন ।
তাই আম্মু বললেন
-- হয়েছে থাক আর লজ্জা পেতে হবে না এখনি বলছি (আম্মু)
-- হুমমমম (আমি)
তারপর আম্মু সোনিয়াকে ডাকতে লাগলেন
-- সোনিয়া .. মা সোনিয়া এদিকে আয় তো ,(আম্মু)(উচুস্বরে)
-- জি আন্টি আসচ্ছি( সোনিয়া)
-- কিরে মা আজ বাদে কাল আমার ছেলের বউ হবি আর এখনো আন্টি বলেই ডাকছিস । মা বলে ডাকতে পারিস না (আম্মু)
-- আচ্ছা আম্মু বলে ডাকবো (সোনিয়া)
-- হমম এখন যা গিয়ে খেয়ে নে (আম্মু)
-- না মানে আম্মু ওনি খেয়েছেন (সোনিয়া)
-- হ্যা ওনি খেয়েছেন এবার যা তুই ও খেয়ে নে তো দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চলল (আম্মু)
-- ওনি এখন কোথায় ..? ওনি ঠিক মতো শহরে পৌছেছেন তো (সোনিয়া)
-- হ্যা ওনি ঠিক মতো পৌছেছে এবার যা তুই খেয়ে নে আর চিন্তা করতে হবে না (আম্মু)
-- আচ্ছা .. আম্মু আপনি খাবেন না ..? আপনি ও তো সেই সকাল থেকে কিচ্ছু খাননি (সোনিয়া)
-- হ্যা তুই যা আমি আসচ্ছি ..(আম্মু)
তারপর সোনিয়া চলে গেলো ।
আর আম্মু আমাকে বলল
-- হয়েছে ..? এবার খুশিতো এবার তুই ও খেয়ে নে আর আসার সময় সাবধানে আসবি (আম্মু)
-- ঠিক আছে আম্মু তাই হবে .????(আমি)
তারপর আম্মু ফোন রেখে দিলো ।
আর আমি খাবার টেবিলে বসে বসে ওর এই মাত্র বলা কথা গুলো আবার শুনছি ।
রেকর্ড করে নিয়েছি এই টুকু কথা গুলো ।
আবার শুনলাম কথা গুলো খুব ভালো লাগছে । .
মনের মধ্যে অজানা খুশির ঝড় বইছে ।
প্রতিবার ই ওর কথা শুনে প্রেমে পড়ে যাচ্ছি । ওর জন্য ভালোবাসা এত টাই বেড়েছে যে এখন প্রতিটা মূহুর্ত ওর কথা মনে পড়ে ।
ওর কথা ভাবতে ভাবতেই খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম ।
তারপর রেস্টুরেন্টের বিল পরিশোধ করে বেড়িয়ে পড়লাম সেখান থেকে ।
অফিসে চলে এলাম।
দুপুরের খাবার খাওয়ার পর সাধারনত আমি সব সময় বাসাই গিয়ে দুইটা ঘন্টা ঘুমিয়ে নিই ।
কিন্ত আজকে আর বাসায় গেলাম না ।
কেবিনে এসে চেয়ারে বসে গা হেলান দিয়ে শুয়ে রইলাম ।
কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম বুজতে পারিনি ।
ম্যানেজার সাহেব এসে ঘুমের ১২ টা বাজিয়ে দিলো ।
তিনি এসেছিলেন একটা ফাইল সই করিয়ে নিতে ।
কি আর করার ঘুম ত্যাগ করলাম। তারপর ফাইলটা দেখে সই করে দিলাম আর ম্যানেজার সাহেব কে বললাম
-- ম্যানেজার সাহেব কয়েকদিনের জন্য আমি গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি তো আমার অবর্তমানে সব কিছু দেখে শুনে রাখবেন আশা করি ।
-- জি স্যার আপনি নিশ্চিন্তে যেতে পারেন !(ম্যানেজার)
তারপর ওনি চলে গেলেন ।
আমি বসে বসে কতক্ষন ফেবু চালালাম।
5 টা বাজতেই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম।
গ্রামের যাওয়ার জন্য ।
যেতে যেতে চারিদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসলো।
সন্ধ্যা হয়ে রাত 9 টায় বাসায় এসে পৌছোলাম ।
তারপর বাসার ভেতরে ডুকে সোফায় বসে পরলাম।
ফোনটা বের করে আম্মুকে ফোন করলাম।.
রিসিভ করার পর বললাম
-- আম্মু আমি বাসায় চলে এসেছি তুমি এগুলো নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো । (আমি)
-- আমি লোক পাটিয়ে দিচ্ছি তুই ওনাদের কাছে সব কিছু বুজিয়ে দিস । আর শোন ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নে তাড়াতারি (আম্মু)
-- আচ্ছা আম্মু (আমি)
তারপর আম্মু ফোন কেটে দিলো । .আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
ফ্রেশ হতে হতে দেখি 10 টা বেজে গেছে প্রচন্ড খুদাও লেগেছে ।
তাই কিচেনে যাচ্ছি এমন সময় দরজার ঘন্টা বাজতে শুরু করলো ।
হয়তো আম্মু লোক পাঠিয়েছে ।
দরজা খুলে দেখলাম। খালামনিদের বাসার দারোয়ান কাকা এসেছে ।
ওনাকে ছোট থেকেই আমরা কাকা বলে ডাকি । অনেকদিন ধরে ওদের বাসায় দারোয়ান এর চাকরি করছে ।
যাই হোক ওনাকে সব কিছু বুজিয়ে দিলাম । তারপর ওনি চলে গেলেন ।
আমি ও কিচেন থেকে ফলমুল যা পারলাম বের করে খেয়ে নিলাম।
তারপর নিজের রুমে চলে এলাম । এসেই বিছানায় গা হেলান দিয়ে সুয়ে রইলাম ।
বাইরের চাদের আলো সোজা জানলা দিয়ে আমার মুখের উপর এসে পরছে ।
চাদের দিকে তাকিয়ে ভাবছি ।
- আচ্ছা আমি যেমন সারাক্ষন ওর চিন্তায় ভিবর থাকি ও কি আমার কথা ভাবে সারাক্ষন । .
হয়তো ভাবে এত ভালোবাসে যখন তখন তো ভাবতেই হবে ।
শুধু একটাই বদ অব্যাশ মনের কথা কাউকে জানতে বা বুজতে দিতে চায়না । মনের কথা মনেই চেপে রাখে ।
আচ্ছা এখন কি ও জেগে আছে । এখন কি আমাার কথা ভাবছে ।
হঠাৎ করেই না খেয়ে থাকার কথাটা মনে পড়ে গেলো
-ইশ ভুলেই গেছিলাম । এই কথাটা ও কে তো জানাতে হবে যে আমি খেয়ে নিছি না হলে তো না খেয়ে রাত পার করবে ।
তারাতারি আম্মুকে ফোন দিলাম।
রিসিভ করার পর আম্মুকে বললাম
-- আম্মু তুমি খেয়েছো (আমি).
-- তুই খেয়েছিস (আম্মু)
-- জি আম্মু আমি খেয়েছি এবার তোমরাও খেয়ে নাও পিল্জ । (আমি).
-- ঠিক আছে এখন তাহলে তুই ঘুমিয়ে পড় (আম্মু).
-- আচ্ছা ( আমি)
কল কেটে দিলো ।
যাক বাবা ভাগ্যিস মনে পরলো না হলে হয়তো আজকে সারারাত দুটি মানুষ না খেয়ে থাকতো ।
তারপর কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম । বুজতে পারি নাই।
ভোরের দিকে মোবাইল টা হঠাৎ টুং টাং করে বাজতে শুরু করলো ।
মনে হয় অফিস থেকে মেসেজ আসচ্ছে । কিছুক্ষন পর মেসেজ আসা বন্ধ হয়ে গেলো ।
কিন্ত ফোন বাজতে শুরু করলো ।
ঘুম ঘুম চোখে ফোন হাতে নিয়ে দেখি সোনিয়ার নাম্বার ।
ফাল মেরে উঠে বিছানায় বসে পরলাম।
দেরি না করে কলটা রিসিভ করলাম ।
হেলো বলার সাথে সাথেই কলটা কেটে দিলো ????
মন চাচ্ছিলো ফোনটাকে আছাড় মারি একটা ।
আবার টুং করে একটা মেসেজ আসলো ।
সিন করলাম । এক টানা চারটা মেসেজ আজছে ।
সে বলেছে :
আসসালামলাইকুম ...
অনেক তো ঘুমিয়েছেন এবার উঠুন
যান গিয়ে নামাজ পরে আসুন । আজ থেকে প্রতিদিন পাচ ওয়াক্ত নামাজ পরবেন । নাহলে বিয়ে করবো বলে দিলাম হু...
শেষ মেসেজ ছিলো ..: ওই আপনি কল রিসিভ করলেন কেনো আমি আপনাকে ফোন দিছি জাগানোর জন্য কথা বলার জন্য নয় যান গিয়ে নামাজ পরে আসুন????
আর নামাজ পরে এসে ঘুমাবেন না । একটু হাটাহাটি করবেন শরিরের ক্লান্তি দুর হবে ।
আর নাস্তা করে নিবেন । আল্লাহ হাফেজ ...!
মেসেজ গুলো পড়েই হাসতে হাসতে পেট বেথা হয়ে গেলো ।
মনে হয় পিচ্চিটা জেনে গেছে যে আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে গেছি । তাই তো বার বার এটা করেন ওটা করেন না হলে বিয়ে করবো না বলে থেড দেয়।
যাক যা বলেছে ভালোর জন্যই বলেছে ।
এমন একজন জিবনসঙ্গী পাওয়া ভাগ্যের বেপার যে সকালে ঘুম থেকে তুলে বলবে যাও গিয়ে নামাজ পরে আসো ।
তারপর আর কিছু না ভেবে হাসি মুখে উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পরতে গেলাম।
নামাজ পড়া শেষে আমাদের বাড়ির পেছনে মাঠে একটু খোলা হাওয়ায় হাটাহাটি করছিলাম
এমন সময় হঠাৎ করে কেউ একজন পেছন থেকে
সালাম দিলো
-- আসসালামলাইকুম .......(______)
চলবে......!!
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now