বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
- কি ভেবেছিস? আমি তোকে এইসব বলে দূরে সরিয়ে দিবো? ভূলেও এমন চিন্তা ভাবনা মাথায় আনবি না।
- মানে? আর তুই তুই করে কেনো বলছেন??
" ঈশিতার কথা শুনে অবাক আর কিছুটা ভয় নিয়ে জানতে চাইলাম। বলছে কি মেয়ে টা? পাগল হয়ে গেলো নাকি? আবার কখন কি করে বসে ঠিক নেই।
" আমার কথা শুনেই ঈশিতা আমার দিকে তেড়ে আসলো। ঈশিতার চোখের চাহনী আর আমার দিকে এগিয়ে আসা দেখে পিছিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
" ঈশিতা প্রথম বার পাঞ্জাবির কলার ছেড়ে দিলেও ফের দ্বিতীয় বার এসে ধরে ফেলে। শুধু ধরে ফেললেও ভূল হবে। একদম কাছাকাছি এসে চোখে চোখ রেখে বললো......
- ন্যাকা, যেনো কিছুই বুঝে না। বিয়ে করেছি বরের কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য নই। আমার সবটুকু অধিকার নিয়েই থাকবো। শা** আমার বর কে একটু বাজিয়ে দেখতে গেলাম আর সে কি-না আমার সাথেই গেইম খেলে দিলো।
- কি?
- আনার কি না? একটু বাজিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম। আর আপনি যে তো সুন্দর অভিনয় করেন জানা ছিলো না। প্রথমে ভয় পেয়ে গেলাম।
" ঈশিতার কথা শুনেই হাসতে শুরু করে দিলাম। এই রাগী মেয়ে টিও তাহলে ভয় পায়। আমার হাসি দেখেই বললো....
- দাঁত বের করে হাসবি না। পরের বার যদি এমন ভয় দেখাস খুন করে ফেলবো।
" ঈশিতার কথা শুনেই হাসি বন্ধ হয়ে গেলো। কথা বাড়িয়ে লাভ নেই চুপ থাকাই ভালো। এতোদিনের টেনশনে ঘুম হয়নি। আজ বড্ড বেশি ঘুম পাচ্ছে। তাই কথা এড়িয়ে জন্য বললাম.....
- আমার ঘুম পাচ্ছে। আমি ঘুমাবো......
" কথা গুলো বলেই কোল বালিশ আর কাথা নিয়ে সোফায় ঘুমাতে চলে গেলাম। এ রকম পেত্নীর সাথে এখন ঝগড়ার ইচ্ছে নেই। আর ঝগড়া করার ইচ্ছে টাই আসবে কোথা থেকে??
" ঈশিতা যে রাগী মেয়ে আবার কি না করে বসে। শেষে বিয়ের প্রথম রাতেই মধুর রাত হয়ে যাবে বিষের রাত।
" ঈশিতার কাছ থেকে সরে গিয়ে কোলবালিশ নিয়ে শোফায় আসতেই ফের হুংকার দিয়ে ঈশিতা বললো....
- কোল বালিশ নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস? তরে না বলছি আমার সাথে ঘুমাতে? আর আজ থেকে কোনো কোলবালিশ থাকবে না। মাত্র একটা বালিশ থাকবে।
- একটা বালিশ থাকবে মানে? আমি কোথায় ঘুমাবো?
- তুই বালিশে ঘুমাবি আর আমি তোর বুকের মাঝে মাথা রেখে প্রতিদিন ঘুমাবো এখন বুঝছিস??
- আমি পারবো না এমন ভাবে ঘুমাতে।
" আমার কথা শুনেই হাতের কাছে থাকা কলম দানি হাতের কাছে নিয়ে বললো.....
- পারবি না মানে কি?
" ঈশিতা কে দেখেই ভয়ে ভয়ে বললাম....
- না, পারবো পারবো....
- এই তো লক্ষী ছেলের কথা। এখন যাও বাবু আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
" ঈশিতাকে কথা গুলো বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেলো। সেই কখন থেকেই বিয়ের সাজে বসে ছিলো।
" ঈশিতার কথা শুনে মাথা ঘুরতে শুরু করলো। এ কেমন মেয়ে বিয়ে করলাম রে। এখনি এই দশা,আরো তো বাকী জীবন পরে আছে। বন্ধুদের মুখের শুনেছি বিয়ের প্রথম রাত নাকি মধুর হয় আর আমার তো দেখি পুরাই উল্টো।
" ঈশিতার সাথে কথা না বাড়িয়ে বাধ্য ছেলের মতো উপরে এসে ঘুমালাম। যদিও কোল বালিশ নিয়ে ঘুমানোর ইচ্ছে ছিলো তবে ঈশিতার জন্য সেটা বাদ দিতে হলো। আমার আবার কোল বালিশ ছাড়া ঘুম আসে না।
" বিছানায় একপাশে শুয়ে কথা গুলো ভাবছি তখন বুঝতে পারি ঈশিতা বিছানায় আসলো। ইচ্ছে থাকলে অনিচ্ছায় অন্যদিকে ফিরে শুয়ে রইলাম। কি জানি যদি আবার.......
" হঠাৎ করেই ঈশিতা জড়িয়ে ধরে বললো....
- এই যে মিস্টার কি ভাবছেন??
" ঈশিতার জড়িয়ে ধরা দেখে চমকে উঠি। তাড়াতাড়ি নিজেকে সরিয়ে নিতে চেষ্টা করলেও ঈশিতা যেনো আরো ঝাপ্টে ধরে।
- এ কি করেছেন? ছাড়েন আমাকে আপনার লজ্জা করে না।
" আমার কথা শুনেই ঈশিতা হেসে উঠে বললো...
- বাহ রে! আমার বরকে জড়িয়ে ধরবো আর এতে লজ্জার কি আছে?
- তাই বলে....
- তাই বলে কি? দাঁড়াও দেখাছি......
" ঈশিতা কথা গুলো বলেই ঠোঁট গুলো নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলো। তারপর............ না থাক! এতো কিছু জানার দরকার নেই......????
- এই যে উঠেন, আযান হচ্ছে নামাজ পড়তে হবে।
" ঈশিতার ঘুম ডাক শুনেই ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখি ঈশিতা ফ্রেশ হয়ে একদম অপ্সরীর মতো সেজে সামনে দাড়িয়ে আছে।যদিও এই মূহুর্তে কোনো অপ্সরী দেখার ইচ্ছে নেই। কেন না অনেক ঘুম পাচ্ছে আমি আবার একটু ঘুম পাগল। এই জন্য কত কি হয়েছে।
" ঈশিতাকে একনজর দেখেই পাশে ফিরে শুয়ে বললাম.....
- বিরক্ত করো না তো। একটু ঘুমাবো....
- ঘুমাবেন মানে? নামায কে পড়বে?
- পরে পড়ে নিবো...
- কি?? এখন মানে এখন,নয়তো মাথায় পানি ঢেলে দিবো।
" ঈশিতার কথা শুনেই লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়ি। চোখ বড় করে ঈশিতার দিকে তাকিয়ে বললাম....
- কি মেয়ে রে বাবা? এমন কথা তো জীবনেও শুনে নি?
- কি শুনেন নি? আমি তো আপনার মতো মানুষ জীবনেও দেখি নি যে এতো সুন্দর ঘুমাতে পারে। সামনে সুন্দরী বউ দেখেও....
- হু, সুন্দরী না একটা পেত.....
- কি বললি....?
- না কিছু না। নামাজ পড়বো সেটা বললাম....
" আমার সাধের ঘুম হারিয়ে গেলো। আগে জানলে এমন বিয়ে জীবনেও করতাম। সারাজীবন অবিবাহিতের কাতারে নাম লেখিয়ে রাখতাম। অনিচ্ছা সত্বেও বাধ্য ছেলের মতো উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়তে চলে গেলাম। কথা বাড়িয়ে লাভ নেই আর যদি পেত্নী টাও বলে ফেলি তাহলেই হয়েছে।
" নামাজ পড়ে আবার ঘুমাতে চলে গেলাম। যদিও এবার নিজের ইচ্ছেতেই ঈশিতা কাছে টেনে নিলাম। ঈশিতা বুকের মাঝে আগলে ঝাপিয়ে পড়ে। ঈশিতাকে বুকের মাঝে আগলে নিলাম।
" কতক্ষণ ঘুমিয়েছিলাম জানা নেই। হঠাৎ করেই ঈশিতার ডাকে ঘুম ভাঙে। সকালের নাস্তা খাওয়ার জন্য যেতে বললো। ঈশিতা কে দেখে কাছে নিতে চাইলে সেটা বুঝতে পেরেই বুকের মাঝে আলতো কিল দিয়ে পালিয়ে গেলো। পিছন থেকে ধরতে গিয়েও ধরতে পারেনি।
- এখন তো পালিয়ে গেলে পরের বার প্রতিশোধ টা নিবো।
" ঈশিতাকে কথা গুলো বলতেই দরজা আড়ালে থেকে মুখ ভেংচি কেটে চলে গেলো।
" সবার সাথে নাস্তা খেতে বসলেও ঈশিতা উল্টো দিকে বসলো। সবাই একসাথে তাই ইচ্ছে থাকলেও ঈশিতার পাশে গিয়ে বসতে পারেনি। ঈশিতা দিকে তাকালেই মুখ ভেংচি কেটে দেয় সবার চোখের আড়ালে। খাওয়া রেখে ভাবছি ঈশিতাকে কিভাবে টাচ করা যায়।
হঠাৎ করেই আব্বু ধমক দিয়ে বলে উঠলো....
- খাওয়া রেখে কি ভাবছিস? কি বলে কথা কানে যায় না।
" আব্বুর ধমক শুনেই সাথে সাথে বলে উঠি....
- হ্যা....
- কি হ্যা, এতোক্ষণ ধরে কি বলছি?
- না মানে কিছু বুঝি নি।
- বুঝবা কি করে? এখন.......
" আব্বু আর কিছু বলার আগেই আম্মু থামিয়ে দিয়ে বললো....
- চুপ করো তো। তখন শুনতে পাই নি এখন আবার বললেই হয়।
" আম্মুর কথা শুনেই আব্বু কিছুটা শান্ত হলো। মাঝে মাঝেই আম্মুর কথা শুনে একদম শান্ত ছেলে হয়ে যায়। যেনো কিছুই বুঝে না। তখন সেটা দেখে অনেক হাসি পায়।
" অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে রাখি। আব্বু নরম গলায় বললো.....
- সবাই মিলে একসাথে ঘুরতে যাবো। তোমার কোনো আপত্তি আছে?
" আব্বুর কথা শুনেই ঈশিতার দিকে আড়চোখে একবার তাকালাম। দেখি খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিতে বৃথা চেষ্টা করছে।
তখনই আব্বুকে বলে উঠি.....
- না না আমার কোনো আপত্তি নেই। কবে যাবেন.....??
- পরশু যাবো। আজকাল কের মাঝেই সব ঠিকঠাক করে ফেলবো।
- জ্বি আব্বু। আপনি যা বলেন..
" চুপচাপ খাওয়া শেষ করে ঈশিতাকে ডাকলেও আসে নি। কাজের অজুহাত দেখিয়ে থেকে যায়।ঈশিতার প্রতি অনেক রাগ হলেও আম্মু থাকায় চুপচাপ রুমে চলে আসি। রুমে ভালো না থাকায় ড্রয়িং রুমে গিয়ে টিভি অন করে টিভি দেখতে শুরু করলে তখনি রিতা এসে হাজির।
" রিতাকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠি। সেই যে রুমের ভিতর আবদ্ধ হয়েছিলাম তারপর থেকে রিতার সাথে দেখা নেই। হবে কি করে? আমি যে আজই রুম থেকে বের হলাম।
" রিতাকে দেখেই বললাম..
- কি রে তুই কোথায় ছিলি দেখি নি যে??
" আমার কথা শুনেই রিতা মুখ ভেংচি কেটে বললো.....
- দেখবি কি করে? এখন তো সুন্দরী ভাবী কে পেয়েছিস। আমাদের বোনকে কি এখন চোখে দেখবি?
- দেখ,বাজে বকবি না। যা কিছু হয়েছে সব তোর আর ঈশিতার জন্য। তো বিয়ের সময় কোথায় লুকিয়ে ছিলি?
- কোথায় নাহ। তুই তো চোখ বুজে ছিলি দেখবি কি করে? বয়রা ছিলি নাকি যে কনের নামটাও শুনিস নি।
- আরে রিতা আপু যে। কখন আসলি......??
" আমাদের কথার মাঝেই হঠাৎ রুবি এসে হাজির। রুবি এসেই আমার পাশে বসে কথা বলতে শুরু করলো। তারা দুজনে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেই রুবি আমার দিকে ফিরে বললো.....
- ভাইয়া, পাঁচশ টাকা দে তো।
" রুবির কথা শুনেই চমকে উঠে বলি....
- পাঁচশ টাকা! কিসের টাকা? কেনো দিবো....?
" আমার কথা শুনেই রুবি বললো....
- আমার যে ট্রিট পাওনা ছিলো তার থেকে কিছু দে।
- ট্রিট? আর আমি কেনো টাকা দিবো?
- দেখ, ভাইয়া তোর জন্য এতো কিছু করলাম আর তুই এখন জানতে চাচ্ছিস?
" রুবির কথা শুনেই বললাম...
- কি করছিস?
- ঈশিতাকে পাইয়ে দিলাম সেটা ভুলে গেছিস?
- তুই পাইয়ে দিলি কই? আর না পেলেই ভালো হতো! যা কোনো টাকা নেই...
" আমার কথা শুনেই রুবি রেগে গিয়ে বললো....
- টাকা নেই মানে? খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।
- যা কি করবি করিস।
" তখনি ঈশিতা এসে হাজির। রিতাকে দেখেই বললো.....
- রিতা,তোমার এখন বুঝি সময় হলো? আর রুবি কি নিয়ে তোমরা দুই ভাই বোন তর্ক করছো??
" ঈশিতার কথা শুনেই রিতা বলতে লাগলো.....
- ভাবি, ভাইয়া ভাইয়া আবার নাকি
রিতাকে.......................
(চলবে)
.
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now