বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
লেখক সিমল,,,,
- এই যে মিস্টার, আপনার সমস্যা টা কি??
- মানে....???
রুমের দরজা বন্ধ করেই শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুছে দিয়ে একদম রেগে গিয়ে জানতে চাইতেই মেয়েটির দিকে অবাক হয়ে জানতে চাইলাম। অবাক হবো না কেনো???
" মেয়েটির সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে। আজ মেয়েটিকে পরিবারের সাথে দেখতে আসলে অনেক টা জোর করেই পাঠিয়ে দেয় আলাদা কথা বলার জন্য। অনিচ্ছা সত্বেও যখন মেয়েটির পিছু পিছু আসলাম কে জানতো এসেই রুমের দরজা বন্ধ করে অগ্নি রুপ ধারণ করবে। বেশ অবাক আর কিছুটা ভয় নিয়েই মেয়েটির দিকে ভয়ে ভয়ে বললাম। বাহবা, এতো রাগ আর তেজী মেয়ে প্রথম বারই এমন কথা।
- মানে কি আপনাকে বুঝাতে হবে? আপনি কি বুঝতে পারছেন নাহ?
- না মানে আপনার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।
- ন্যাকা, যেনো ভাজা মাছ উল্টো খেতে জানে না।
- মানে....?
- মানে এই বিয়ে হবে না।
" মেয়েটির কথা শুনেই চমকে উঠি। বলে কি? কিছুদিন পর বিয়ে সব ঠিক ঠাক আর এখন বলছে এই বিয়ে হবে না। তাহলে কি মেয়ের কোনো সম্পর্ক আছে কারো সাথে। শহরের মেয়ে থাকতেও পারে। তাই থাকতে না পেরে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলেই ফেললাম.....
- কেনো আপনার কি কোনো প্রেমিকা আছে?
" মেয়েটির কথা শুনে কথা গুলো বলতেই মেয়ে রেগে গিয়ে বললো.....
- একদম বাজে কথা বলবেন না। খুন করে ফেলবো,।আমার কোনো প্রমিক টেমিক নেই। আমি এখন বিয়ে করবো না। আর গ্রামে তো ভুলেও বিয়ে করবো না। তাই এই বিয়ে হবে না। আপনাকে এই বিয়ে ভাঙতে হবে।
" মেয়ের কথা শুনেই কেমন জানি সব গুলিয়ে যেতে থাকলো। এ কেমন মেয়ে রে বাবা? কাকে বিয়ে করতে এসেছিলাম? বিয়ে না হতেই এতো কিছু আর বিয়ে না হলে জানি কার কপালে কি আছে?
মেয়েটির রাগী রাগী মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে আকাশ পাতাল ভাবছি তখনি মেয়ে টি বললো.....
- এই যে, কথা বলছেন নাহ কেনো?
- ভাবছি, এখন কি বলবো?
- কি বলবো মানে?
" আমার কথা শুনে বেশ অবাক হয়ে জানতে চাইলে বেশ স্বাভাবিক ভাবেই বললাম...
- আংকেল কে গিয়ে বলবো,আপনার মেয়ের বিয়ে তে ইচ্ছে নেই। তাই এ বিয়ে হবে না।
- কি? পাগল নাকি? এই কথা ভুল করেও বললে একদম খুন করে ফেলবো।
- তাহলে......???
" মেয়েটির রাগী চোখ দেখে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে জানতে চাইলাম। এমনি তেই এখানে আসার পর থেকে ভয়ে ভয়ে ছিলাম। বন্ধুদের কাছে শুনেছি মেয়ে দেখতে গিয়ে কত রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাদের কথা শুনে কিছুটা ভয়ে ছিলাম আর এখানে এসে তো দেখি আরো ভয়ংকর অবস্থার সম্মুখীন হতে হলো।
" কোনো রকমে এখান থেকে ফিরে যেতেই পারলেই হয়। যে মেয়ে রা বাবা? আর ভূল করেও শহরে মেয়েকে বউ করার ইচ্ছে নেই। এতো শহরের মেয়ে নই যেনো সাক্ষাৎ ডাকাত।
" আমার দিকে রাগে কটমট করে তাকিয়ে বললো....
- বলবেন,আমাকে আপনার পছন্দ হয়নি। তাই এই বিয়ে করতে পারবেন না।
- কিন্তু আমি তো..........
- কিসের কিন্তু যা বলেছি সেটাই।
- জ্বি.....
- ভাইয়া, হবু ভাবিকে নিয়ে আসতে বলেছে।
" মেয়েটির রাগী চোখ দেখে মাথা নেড়ে সম্মতি দিতেই বাহিরে ছোট বোনের ডাক শুনতে পেলাম। মেয়েটির দিকে আরেক নজর তাকিয়ে দরজা খোলে দিতেই ছোট দাঁত বের করে হাসতে থাকে। ওকে দেখেই গা জ্বলে যাচ্ছে। যা কিছু হয়েছে তা সবকিছুর জন্যই দায়ী হারামি টা।
" রুম থেকে বেড়িয়ে সোজা ড্রয়িংরুমে এসে হাজির হলাম। আমার পিছু পিছু মেয়েটিও বেশ ভদ্র ভাবে এসে হাজির। যেনো ভাজা মাছ উল্টো খেতে জানে না।
"এই দিকে আব্বু আম্মু বিয়ান বেইয়ায় ডাকা শুরু করে দিয়েছেন। আব্বু অনেক আগে থেকেই ঈশিতার আব্বু কে চিনেন। শুধু চিনেন বললেও ভূল হবে দুজন দুজনের ভালো বন্ধুও বটে।
ওহ! ঈশিতা হচ্ছে আমার হবু বউ। তবে এখন সেটা হবু বউ হচ্ছে কি-না বলা যাচ্ছে না। কেনো না আব্বু আম্মু অলরেডি বউমা করে ফেললেও ঈশিতার এই বিয়ে তে ইচ্ছে নেই। তাই বিয়ে টা হবে না সেটাও বলা যাচ্ছে। ঈশিতা বেশ কয়েক বার রেগে আমার দিকে তাকালেও আব্বু কে কথাটা বলতে গিয়েও বলতে পারেনি। বাসায় গিয়ে বলবো মনে মনে ঠিক করে রেখেছি।
" একসময় বিদায় নিয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলাম। আম্মু আসার সময় আবার জোর করে ঈশিতার হাতে এক হাজার টাকার নোট গুঁজে দিলো। বেশ কয়েক বার না না করলে আম্মু বলল....
- রাখো, তো! তুমি আমার ছেলের বউ না শুধু আজ থেকে আমাদের বাড়ির মেয়েও।
" আম্মুর কথা শুনে ঈশিতা আড়চোখে আমার দিলে তাকিয়ে টাকা টা রেখে দিলো। আমার এক হাজার টাকা গঞ্জে গেলো। কি দরকার ছিলো এতো আধিখ্যেতা দেখানোর জন্য। আম্মু তো জানে না যে তাদের বাড়ির বউ হয়ে এ মেয়ে যাচ্ছে না। জানলে হয়তো টাকা দিতো না।
" বাসায় আসার পথে রুবি তাঁর হবু ভাবীর গুন গাইতে গাইতে কান জ্বালাপোড়া করে ফেললো। একদিনেই এতো কিছু জেনে ফেললো অথচ বিয়ে হচ্ছে না সেটা জানতে পারলো না। আব্বু আম্মু সাথে থাকায় কিছু বলতেও পারে নি। সব কথা শুনে যাচ্ছি।
" বাসায় পৌঁছে আমার রুমে যাওয়ার আগেই আম্মুকে বললাম...;
- আম্মু আমার রুমে আসো তো....
" আম্মু কে বলতেই। আম্মু আমার রুমে এসে হাজির। কিভাবে কথা টি ঠিক বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। তবে বলতে হবে এটাই জানি। এমন মেয়ে কে আবার কে বিয়ে করবে? বিয়ের পর তো জীবন তেজপাতা করে ফেলবে।
আম্মু তাড়া দিয়ে বললো....
- বল কি জন্য ডেকেছিস?
- আম্মু আমি ওই মেয়ে কে বিয়ে করতে পারবো না।
- কি বলছিস তুই এইসব?
" আমার কথা শুনেই আম্মু বেশ অবাক হয়ে জানতে চাইলো। অবাক হওয়ার কথাই কেনো না কিছুক্ষন আগ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক চললেও এখন মাঝখানে বেঁকে বলসাম।
আম্মুর কথা শুনে বিচলিত না হয়ে বললাম....
- যা বলছি তাই। এই নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না। আমি এই মেয়ে কে বিয়ে করবো না এটাই শেষ কথা।
- অনন্ত শোন......
আম্মু কে কথা গুলো বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে আসলাম। আম্মু বেশ কয়েক বার ডাক দিলেও না শোনার ভান করে চলে আসি। সোজা চলে যায় মাঠের দিকে।
" সারাদিন বাসায় না ফিরলেও রাতের দিকে বাসায় ফিরে আসি। বাসায় এসেই বুঝতে পারি আব্বু রেগে আছেন। কারো মুখে কোনো কথা নেই, সবকিছুই কেমন নীরব হয়ে আছে। আব্বুকে বেশ ভয় পাই তাই চুপিচুপি রুমে চলে আসলেও আব্বুর কথা গুলো শোনা যাচ্ছে।
" তোমার ছেলের মেয়ে পছন্দ হয়নি তো আগে বললো না কেনো? এখন আমি কিভাবে মুখ দেখাবো? আমার মানস্মানের কথা একটুও চিন্তা করলো না?
" সেদিন রাতে আর কারো সাথে দেখা করেনি। আম্মু না আসলেও ছোট বোন মুখ কালো করে বেশ কয়েক বার ডাক দিলো। বিয়ে করবো না সেটা শুনেই বেচারা মন খারাপ করে ফেলেছে। কত আশা ছিলো বিয়েতে। থাক যখন বিয়ে করবো তখন না হয় পূরণ করবে ইচ্ছে গুলো।
" দুদিন চলে গেলেও আব্বুর সামনে একবারো পড়ে নি। আম্মু অনেক বার বুঝাতে চেষ্টা করলো। অনেক বার জানতে চেষ্টা করলো কেনো বিয়ে করবো না। তবে প্রতিবারই বলতে গিয়ে চুপ হয়ে গেছি। বাবা রে বাবা যে মেয়ে যদি ভূল করে বিয়ে করে ফেলি না হয় কি করে বসে??
খুব সকাল বেলায় ঘুম ভেঙে যায় ফোনের শব্দ শুনে। আধোঘুমে ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে উঠলো.....
- এই যে এতো বেলা অব্দি কিসের ঘুম?
" মেয়েলি কন্ঠ শুনে কিছুটা চমকে উঠি। এমন ভাবে তো ডাকার কেউ নেই। আর এতো সুন্দর করে তাও আমাকে? বেশকিছু চুপ হয়ে গেলাম। আবার স্বপ্ন দেখছি না তো। নাহ আমি তো সজাগই আছি।
আমার তন্দ্রা কাটে ওপাশ থেকে ফের কন্ঠ সুর শুনে। ওপাশ থেকে বেশ ঝাঁঝালো কণ্ঠে যেনো বলে উঠলো.....
- আপনার সাথে কিছু কথা আছে?
- কে আপনি? আর আমার সাথেই আপনার কিসের কথা?
- একসাথে এতো প্রশ্ন? আমি আপনার ছোট বোনের হবু ভাবী বলছি।
- কি?
" মেয়েটির কথা শুনেই এক ঝটকায় শোয়া থেকে উঠে বসে পড়লাম। চোখের ঘুম যেনো মূহুর্তের মাঝেই হারিয়ে গেলো। বলে কি এই মেয়ে? আমার নাম্বার কেথায় পেলো? আর হঠাৎ করেই কেনো ফোন করে দেখা করতে বললো?
মনের মাঝে তখনো হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। ঈশিতা তখন মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো....
- জ্বি হে।
- আমার সাথে কেনো দেখা করতে চাচ্ছেন?
- সেটা সময় হলেই জানতে পারবেন। আজ বিকাল চারটায় দেখা হচ্ছে। মনে থাকে যেনো.........
- এই যে শো.......
" কিছু বলার আগেই ফোন কেটে দিলো। ধূর কি হচ্ছে সকাল সকাল কিছুই বুঝতে পারছি না। আবার নাম্বার টায় ডায়াল করেতেই ফোনের সুইচ অফ দেখাচ্ছে। মাথায় তখন যেনো দুঃশ্চিতা ভর করেছে, কিছুই বুঝতে পারছি না।
" শুয়ে শুয়ে ভাবছি কে হতে পারে তখনি আব্বুর ডাক শুনতে পেলাম। অনিচ্ছা সত্বেও উঠে গেলাম। নয়তো সকাল সকাল বকা শুনতে হবে। এতো বেলা অব্দি ঘুমিয়ে থাকিস?
" ওহ! আমি অনন্ত। পড়াশোনা শেষ করেই করেই চাকরির জন্য ছুটবো তখনি বাসায় বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগে। যখন অনেক কষ্ট করেও বুঝাতে পারছি না তখন বাধ্য হয়ে রাজি হতো হলো। আব্বুর একটাই কথা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করতে হবে এমন কোনো কথা? আমার ব্যবসার দেখাশোনা করলেও হবে। আর ঈশিতা হচ্ছে আব্বু বন্ধুর মেয়ে। সবে মাত্র অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করেছে।
" মেয়েটি দেখতে খারাপ নাহ। শ্যামলা গড়ন, মায়াবী চেহারা যেনো। প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ে যায়। যখন রুবির কাছ থেকে ছবি নিয়ে দেখি তখন দেখেই স্বপ্ন বুনতে শুরু করি। কে জানতো স্বপ্ন দেখার আগেই ভেঙে যাবে। মায়াবী চেহারার আড়ালে একটা ডায়নী বসবাস করে।
- স্যার,কিছু লাগবে?
" হঠাৎ করেই ওয়েটার এসে বললো। সেই কখন থেকে অপেক্ষায়। কারো জন্য অপেক্ষা যেনো পৃথিবীর সব থেকে কঠিন কাজ। আর এখন আমি সেই প্রতিক্ষায় প্রতিক্ষণ মান। কিছু না বলে ফিরিয়ে দিলাম।
" সেই কখন থেকে অপেক্ষায় আছি। চার টা বেজে পনের মিনিট এখনো আসার খবর নেই কারো। শুধু মাত্র ফোন পেয়ে দেখা করতে চলে এসেছি এটা যে নেহাত বোকা করে ফেলেছি বুঝতে পারছি।
" বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। সেই কখন থেকে বসা। চলে যাবো তখনি এক সুন্দরী রুমণী এসে বললো....
- আপনি কি মিস্টার অনন্ত....?
- জ্বি,তবে আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারছি না?
" আমার কথা শুনেই মেয়ে টি হাসি মুখে হাত বাড়িয়ে বলল.....
- আমি নীলিমা। ঈশিতার বান্ধবী।
- আমি অনন্ত....
" মেয়েটির কথা শুনেই হাসি মুখে হাত বাড়িয়ে দিলাম। তবে কিছুটা খটকা লাগছে হঠাৎ করেই ঈশিতা না এসে বান্ধবী কেনো আসলো।
ঈশিতার বান্ধবী আমার দিকে তাকিয়ে বললো....
- ঈশিতার মুখে আপনার সম্পর্কে সব জেনেছি। তবে.......
- তবে কি? আর ঈশিতা কোথায়?
" আমার কথা শুনেই মুচকি হেসে বললো...
- ওই যে আপনার ঈশিতা আসছে।
" নীলিমার কথা শুনে তাকাতেই দেখি বেশ হাসি খুশি মনে হেসে হেসে কথা বলে এগিয়ে আসছে ঈশিতা। তবে ঈশিতা একা নয় সাথে একজন ছেলে। খুব সম্ভবত একই বয়স হবে কিংবা একই সাথে পড়াশোনা করে। তাহলে কি ঈশিতার......
" নাহ! নাহ কি ভাবছি সেটা কিমকরে সম্ভব? ঈশিতা তো বলেছে কারো সাথে সম্পর্ক নেই। তাহলে কি মিথ্যা বলেছিলো?
" ঈশিতা কে দেখে ভাবছি তখনি নীলিমা বলে উঠলো......
- কি? এতো..........................
(চলবে)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now