বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
শরতের নীল আকাশ রাতের বেলাও নীল। শীত এখনো আসতে ঢের বাকি।তবে বৃষ্টি হলেই শরীরে শীতের কাপন ধরে যায়। দেশের জনগণ লগডাউন কাটিয়ে উঠতে পারে নি। ভাইয়েরা প্রায় ৬ মাস বাসায় থেকে তাদের নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেছে। লগডাউনে গুগল ,WhatsApp, ইউটিউব এগুলো ব্যবহার করতে করতে এতই অভ্যস্ত হয়ে গেছি যার দরুন অনেকটা সাহস করে দুরু দুরু বুকে গল্পের ঝুড়িতে রেজিষ্ট্রেশন করে ফেললাম। দিনটি ছিল অক্টোবরের ৪ তারিখ।অনেক আগে থেকেই ইচ্ছে ছিল আইডি খোলার। কিন্তু ভাইয়েরা ঘরে ছিল বলে আর খোলা হয় নি।
এই বৈচিত্র্যময় জিজেতে যখন আসি তখন জিজে ছিল কাছাঢিলা স্বভাবের।লেখক থাকলে পাঠক থাকত না আর পাঠল থাকলে লেখক থাকতো না। জিজের সোনালি যুগ শেষ হওয়ার পর মরুভূমি যুগের প্রথম দিকের সদস্য আমি।জিজের তখন ছন্নছাড়া অবস্থা।পুরাতনরা আসতো না, আসলেও গল্প লিখতো না ইত্যাদি ইত্যাদি.......
আমি গল্পের ঝুড়িতে এসেছিলাম গল্প লিখতে.... হ্যা গল্প লিখতে। আগে খাতায় লিখতাম।জিজেতে আসার পর ভাবতাম, আমি যদি খাতায় লেখা সবগুলো গল্প জিজেতে লিখে ফেলি তবে পরে লিখব কি? মজার কথা কি জানেন? জিজেতে আসার পর কতগুলো গল্পের প্লট যে মাথায় এসেছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। এসব প্লট ছোট করে আমি একটি খাতায় লিখে রাখি। ক্লাস এইট,পিচ্চিকালের ফাইজলামি, মক্তব,জিজে এন্ড সায়েন্সফিকশন,ছোট মামার কাছ থেকে..... এসব আমার প্রকাশিতব্য সিরিজ গল্প....
জিজেতে এখন পর্যন্ত ৩৫ টিরও উপরে গল্প লিখসি।তার মধ্যে অর্ধেকের চেয়ে বেশি গল্প সময়ে সময়ে অসময়ে ডিলিট দিয়েছিলাম। অঅক্টোবরের ১৭ তারিখ আমি প্রথম লেখা সাবমিট করি।। মনে ছিল ভয় তার সাথে ছিল আনন্দ। আমার গল্পটা অনেকে পড়বে, পড়ে উতসাহ দিবে। এর থেকে আর বড় আনন্দ কি হতে পারে?
আমার লেখা প্রথম গল্পটি "কোথায় গেল সে" (বর্তমানে KaRib) তে প্রথম কমেন্ট করেছিল হৃদয় ভাই। ২য় কমেন্টেও তিনিই করেছিলেন। এটা ছিল আমার জীবনে অনেক অনেক আনন্দের ঘটনা। কিন্তু ঘটনা যে ঘটে গেছে,আমি উনাকে কমেন্টের উত্তরে ধন্যবাদ দেই নাই আসলে আমি ইচ্ছে করে দেই নাই আজ দিব বলে!৷ ধন্যবাদ এন্ড ধন্যবাদ ভাইজান!
কিছু সদস্যকে আজ স্মরণ করতেই হয়। জিজের কিছু সদস্যকে আমি সম্মান করি।তাদের মধ্যে রাফি অরটন ভাই, রেহনুমা আপু, হৃদয় ভাই,রনি ভাই আর তানিম ভাই অন্যতম।
জিজের সমালোচক নামে যদি কোনো পদ থাকতো তবে রাফি ভাই রেহনুমা আপু সেই পদের যোগ্য। আর হৃদয় ভাইকে যতটা না হাবাগোবা মনে করেছিলাম বেচারা তার থেকেও হাবাগোবা। একেবারে অতিচালাক পর্যায়ের
আর তানিম ভাই! একেবারে কাপিয়ে দিয়েছে... যার প্রতিটা কমেন্টে কমেন্টে সবাই হাসতে বাধ্য.... রনি ভাইয়ের কথা কি আর কি বলব। বেচারা রোমান্টিক গল্প লিখে না (ইচ্ছে থাকলেও) মেয়েদের ফটো দেখলে বিরক্তি নিয়ে এড়িয়ে যায়..... তবে পরিবারের ছোট ছেলে বলে আমার মতো অনেক কাজ করতে হয় উনাকে.....
আরেকজনের কথা না বললেই নয়, সে আমার বন্ধু, আমার শত্রু, আমার বড় ভাই.... মাহিন ভাই! যার জন্য গত বছর অক্টোবরে আমি টপ গল্পের ঝুরিয়ান হতে পারি নাই । যার জন্য আমি জিজে ছেড়ে অন্য সাইটে চলে গিয়েছিলাম। সে বেচারা পাছে লোকে কিছু বলবে বলে রোমান্টিক গল্প লিখতে গিয়েও লিখে না..
সমবয়সীদের মধ্যে আরও একজনের সাথে পরিচয় হয়েছে।সে ইমন (শুভ)। বেচারার প্রত্যেক কমেন্টে ভুল! রাফি ভাইয়ের প্যারা খেয়ে সে এখন অফলাইনে...সিয়াম ভাইও আমার সহপাঠী, কিন্তু উনার আচরণ দেইখা আমার মনে হয়, উনি আত্মা জগতের বাসিন্দা নাহয় এরই মধ্যে বিয়ে টিয়ে করে ফেলসেন
জিজেতে আমি অনেককেই চিনি যারা কিনা আমাকে চিনে না ( পরিচিত হয়েও)। তাদের সাথে অনেক কথাও হয়েছে। তাদের মধ্যে আরিজা আপু, রামিশা আপু, মাহমুদ ভাই, মেহেরাজ ভাই, নামিকাআপু, ইশু আপু, সাবিরাসহ অনেকে......
জিজেতে এসে ম্যালা পিচ্চি পাইসি। জানুয়ারির ৭ তারিখ হঠাত জিজেতে ফেরা মফি, ফারহান, সোহান, ( মাহিন!), রিশু, পরবর্তীতে মাহমুদ,রিফাত, তারিন, রিধি সহ আরও অনেকে.....
জিজেতে কিছু মানুষ আছে যাদের সামনে কিছু করা যায় না। যেমন লাকি আপুকে একগাদা ইমুজি দিলে তিনি রেগে যান.....
সাইম ভাই,আনিস ভাই,শুভ ভাই,প্রভা ভাই তাহিরা আপু,রুবাইয়া আপু তাদেরকে সারাজীবন মিসই করে গেলাম.....
সবার মতো আমিও জিজেকে পাই ফ্রি বেসিকসে। তা প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে।তখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়তাম। আর ক্লাস এইটে থাকতে অধিকাংশ রাত আমি জিজেতে কাটিয়েছি। বিচরণ করতাম মজার গল্প, রোমান্টিক, ক্রাইম, গোয়েন্দা আর ইসলামিক শ্রেণিতে।মাঝে মাঝে অন্য শ্রেণিগুলোতেও চোখ বুলাতাম......
জিজেতে নিবন্ধন করার পরে, সেই রাত গড়িয়ে আরেক রাতে পরিনত হল।এভাবে ৩৬৫ টা রাত পার হয়ে গেল.....। যদিও জিজেতে ১ বছর থাকাটা আমার সুখকর ছিল না। পরিবারের কেউই আমার জিজে চালাতে উতসাহ দেই নি।
আমাকে জিজে চালাতে দেখে,
বড় ভাই বলেছিল, "বই কিনে নিয়ে আইবি,গল্পের ঝুড়িতে ঢুকবি না"
মেজো ভাই বলেছিল, " গল্পের ঝুড়িতে আরেকদিন ঢুকসত দেখলে লাত্তি দিমু".
আরেক ভাই বলেছিল," এই গল্পের ঝুড়ি ডিলেট করমু"
আর বোন বলেছিল," তুই কিতা করস গল্পের ঝুড়িতে? তোর অন্য কোনো কাজ নাই?"
" তোর জন্য মোবাইলটা নষ্ট অইসে"
ইত্যাদি ইত্যাদি!.
গল্প লেখার প্রতি আমার কোনো বন্ধু প্রত্যক্ষভাবে আমাকে সাপোর্ট করে নি.......( দুই একজন ছাড়া! যাদের সাথে আমার দেখা হয় না)
জিজেতে অনেক দিন ছিলাম, আছি, কিন্তু ভবিষ্যতে থাকব কি না তা জানি না। জিজের মরুভূমি অবস্থা দেখে মন বলত কিছু একটা করতে। একটা মাত্র প্রশ্ন, "পুরোনোরা আসে না কেন জিজেতে?" সেই প্রশ্নের খোজার জন্য আমি এফডিতে একটা কর্মসূচি চালিয়েছিলাম, চেয়েছিলাম সেই অনুযায়ী গল্প লিখে জিজে এডমিনদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে। চেয়েছিলাম জিজেকে আবার চাঙ্গা করতে।জিজেতে গত কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া খণ্ড প্রলয়ে আমি ওতোপ্রোতো ভাবেই জড়িয়ে ছিলাম। জিজেকে রক্ষার জন্য ৬ দফা দাবি নিয়ে আসতে চাচ্ছিলাম। অতি উৎসাহে জিজেকে নিয়ে সায়েন্স ফকশনও লিখতে চেয়েছিলাম।আমি এখন অনেক ব্যাস্ত। পড়াশোনার চাপ, ঘরের কাজ ইত্যাদি ইত্যাদি।
এখন হয়তো আসলে খুব কম আসব।ইনশাআল্লাহ! ssc 2022 পরীক্ষার পর আবার নতুন করে শুরু করব . দোয়া করবেন আমার জন্য, আমার মায়ের জন্য......
সবাইকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে ধন্যবাদ :
শেষ করতে চাই একটা কবিতা দিয়ে,
এই ধরণীর বুকে,জিজে ছোট্ট একটা দেশ,
আছে গিরি, আছে সিন্ধু,আছে বিদ্যুৎ, পানি গ্যাস
আছে কুঠি, আছে ঝুটি,আছে বড় বড় বিল্ডিং,
তারও সাথে আছে বড় বড় কিং....
আছে শত্রু,আছে বন্ধু,আছে ট্রেন-রিক্সা-বাস,
আছে শত্রুদের গ্রাস।
আছে ফল, আছে জবা, আছে রজনীগন্ধা,আছে হরেক ফুল,
অনেকে আবার ফল মনে করে,
করে ফেলে ভুল।
আছে ভুল,আছে অভিযোগ, আছে স্বপ্ন,
আছে কত যে প্রশ্ন!
আছে সংগ্রাম, আছে বিপ্লব,আছে বিদ্রোহ, আছে রাজাকার,আছে হরেক রকম লক্ষ্য
সকাল বিকেল রাত সবাই দিয়ে যায়, তাদের সাক্ষ্য।
আছে চাওয়ালা,আছে কথা, আছে চাপাবাজ,
এখানে কেউ ঘুরেফেরা করতে নেই কোন লাজ....
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now