বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ভালোবাসার আসল মানে...

"ফ্যান্টাসি" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান siam ahmed (০ পয়েন্ট)

X হসপিটালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আমার প্রথম ভালোবাসার মানুষ, আমার অবহেলিতা স্ত্রী মায়া। ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম ওকে। হ্যাঁ, ভালোবেসেই বটে! শুরুটা হয়েছিল ২০১১সালের এপ্রিলে। মায়া সাহিত্যের নবদিগন্ত আলো ছড়িয়ে পথ চলা এক কিংবদন্তি তরুণী। যার লেখা পড়লে যেকোনো যুবক প্রেমে পরার স্বপ্ন দেখবে। মন খারাপের কোনো এক দিনে মায়ার লেখা পড়ে ওর লেখার প্রেমে পরে যাই আমি। আমাদের মধ্যে ভালো একটা ফ্রেন্ডশিপ হয়। তারপর ভালো লাগা, ভালোবাসা। কখনো ভাবিনি, ভালোবাসার ব্যাপারে এত সিরিয়াস হব। এত ভালোবাসব ওকে। কখনো প্রেম করব, এটা মাথায়ই ছিল না। ঝগড়া করা আমার মোটেও ভালো লাগত না। কিন্তু ও ঝগড়া করত বেশি। সামান্য ব্যাপারেও অনেক রাগারাগি করত, অভিমান করত। আমাকে বকা দিত। বিষয়টা আমার খুব বিরক্ত লাগত। ভাবতাম, ব্রেক করব। পরে নিজেই থাকতে পারতাম না। আমাদের রিলেশনের ১বছর অতিবাহিত হয়ে গেল। এর মধ্যে মায়াকে একবারও দেখিনি। এ নিয়ে বন্ধু বান্ধবরা অনেক হাসাহাসি করত। আমার রাগ উঠে যায়। সেদিন সামান্য পিকের জন্য আমি মায়ার সাথে একটু বেশি খারাপ ব্যবহার করে ফেলি। পরিষ্কার বাক্যে জানিয়ে দেই- " হয় পিকচার, না হয় ব্রেকআপ....." সেদিন রাত্রে মায়া আমায় ছবি দেয়। ছবি দেখে আমি তো মুগ্ধ, যতটুকু না ভেবেছি তার থেকেও অনেক বেশী সুন্দরী ছিল ছবির মেয়েটি। আমাদের ভালোবাসাটা ভালোই চলছিল। তারপর এলো সেদিন। যেদিন আমি মায়াকে প্রথম দেখি। সাদা কলেজ ড্রেস পরিহিত মায়া যখন আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে কলেজ গেইট দিয়ে বের হচ্ছিল তখন নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল আমার। আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। মায়ার প্রতি এতদিনের যে বিশ্বাস ছিল তা নিমিষেই ভেঙ্গে চূরমার হয়ে গেল। মায়ার দেয়া সেদিনের সেই ছবির সাথে আজকের এই মায়ার কোনো মিল নেই। মনে কষ্ট পেলাম, কিন্তু প্রকাশ করলাম না। মায়ার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় ফিরলাম। জানি না, কোন সে কারণে সেদিনের পর থেকে মায়ার প্রতি আকর্ষণটা আমার একটু একটু করে কমতে থাকে। যে মায়ার সাথে একমুহূর্ত কথা না বলে থাকতে পারতাম না, সেই মায়াকে একটু একটু করে আমি এড়িয়ে যেতে থাকলাম। কারণে অকারনে মায়ার সাথে রাগ দেখাতাম। মায়া হয়তো বুঝতে পেরেছিল আমার জীবনে ওর প্রয়োজনটা ফুরিয়ে গেছে কিংবা ওর প্রতি আমার কোনো টান নেই। আর সে কারণেই হয়তো প্রায় কল করে চুপচাপ আমার হ্যালো বলাটা শুনতো নতুবা খুব করে কাঁদতো। এভাবে একটু একটু করে আমি মায়ার জীবন থেকে সরে যায়, অনেক দুরে সরে যায়। চেঞ্জ করে ফেলি ফোন নাম্বার, ফেসবুকেও ব্লক করে দেই ওকে। কিন্তু ভাগ্যের লিখন, না যায় খন্ডন। যে মায়াকে মিথ্যে পিকচার দেয়ার জন্য একটু একটু করে এভাবে দুরে সরে আসা, কাকতালীয় ভাবে সেই মায়ার সাথে পারিবারিক ভাবে আমার বিয়ে ঠিক হয়। মায়া দেখতে খুব বেশী মন্দ ছিল না, গায়ের রঙটা চাপা, তবুও এভাবে মিথ্যে পিক দেয়াটা মেনে নিতে পারিনি.... এরপর বেশ কিছুদিন এগিয়েছে। মায়াও বুঝে গিয়েছিল আমার থেকে ভালোবাসা পাওয়ার আশা নেই। সে বিশেষ কিছু বলত না। সকাল সন্ধ্যে রান্না করত, কাজ শেষে বাসায় ফিরলে খাবার এগিয়ে দিত। স্ত্রী হিসেবে এটুকুই ছিল ওর অধিকার। একসাথে শুতাম না, কারণটা ও আমায় মিথ্যে বলেছে। প্রত্যেকটা সকালে আমি যখন চেম্বারের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে যেতাম, তখন ও দৌঁড়ে বারান্দায় যেত। বারান্দার গ্রিল ধরে কেমন যেন উদাস দৃষ্টি মেলে আমার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকত। আমি যখন বাসায় আসতাম তখনো সাথে সাথেই দরজা খুলে দিত, মনে হতো যেত যেন এতক্ষণ আমারই প্রতিক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল। আমি যখন গোসল করে, গায়ে তোয়ালে জড়িয়ে রুমে আসতাম, তখন কেমন যেন ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকত। হয়তো আমার মুখ থেকে অপ্রত্যাশিত কিছু শুনার জন্য'ই এভাবে চেয়ে থাকা। এভাবেই চলছিল দিনগুলো। কোনো এক কারণে একদিন চেম্বার থেকে একটু তাড়াতাড়ি'ই বাসায় ফিরি। দরজাটা খুলায় ছিল। ভিতরে ঢুকলাম। পাশের রুম থেকে একটা চাঁপা কান্নার আওয়াজ আসছিল। কি হচ্ছে দেখার জন্য পা বাড়াতেই দেখলাম আমার মায়া বিছানায় শুয়ে আমার ফ্রেমে বন্দি ছবিটাকে বুকে আঁকড়ে ধরে কান্না করছে আর বলছে___ " আমি চাইনি বাঁধন, আমি চাইনি তোমায় ঠকাতে। আবার নিজের ছবি দেয়ারও সাহস পাইনি। ভয় হচ্ছিল বাঁধন, আমাকে দেখার পর যদি হারিয়ে যায় ভালোবাসার এই তীব্রতাটুকু।" তাই আমি তোমায় মিথ্যে ছবি দিয়েছি। আমায় শাস্তি দাও বাঁধন, কঠিন শাস্তি। তবুও এভাবে দুরে সরিয়ে রেখো না। আমার যে বড্ড কষ্ট হয় বাঁধন। বুকে জায়গা না দাও, অন্তত পায়ের কাছে একটু জায়গা দাও। ছবি বুকে জড়িয়ে করুণ স্বরে আর্তনাদ করছিল মায়া। সেটা দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল, ইচ্ছে হচ্ছিল ওকে জড়িয়ে ধরি। কিন্তু এতদিন যা করিনি, সেদিনও তা আবেগের বশে করতে চাইলাম না। কেটে গেল চার বছর। গতমাসে একবার মায়ার খুব জ্বর হয়। সেদিনই প্রথম ওকে বলেছিলাম রাতে আমার পাশে শুতে। মাথায় জলপট্টিও লাগিয়ে দিয়েছিলাম। ও আমার হাত দুটো জাপটে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছিল। পরদিন মায়াকে ডাক্তারের কাছে নিলাম। ডাক্তারের টেস্টে ধরা পরল মায়ার ব্লাড ক্যানসার হয়েছে। লাস্ট স্টেজ। মায়াকে একটা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করালাম। প্রথমবার আল্লাহর কাছে খুব কেঁদেছিলাম। বলেছিলাম একটা সুযোগ দিতে সব ভুল শুধরে নেবার। হঠাৎ ডাক্তারের ডাকে চমক ভাঙল। এগিয়ে গেলাম মায়ার বেডের দিকে। ওর পাশে বসে মাথায় হাত রাখলাম। মায়া জল ছলছল চোখে আমার হাতটা চেপে ধরে বলল, "ইহকালে না হোক, পরকালে আমায় ভালোবাসবেন তো?" আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। মায়া বুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললাম। বললাম, " ক্ষমা করে দাও মায়া। একটু সুযোগ দাও, খুব ভালোবাসব তোমায়। এভাবে ছেড়ে যেও না।" মায়া কোনো উত্তর দিল না, চোখের পাতাও ফেলল না। শুধু চোখের কোণ দিয়ে দু'ফোঁটা জল গড়িয়ে পরল। এতদিন যে কথাটি সে মুখ ফুটে বলতে পারেনি, আজও পারল না। মায়া হারিয়ে গেল ভালোবাসার চোরাবালিতে। শুধু হারিয়ে যাবার আগে শিখিয়ে গেল ভালোবাসার আসল মানে...


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩১০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • osama islam
    User ২ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    very sad

  • shihab ahmed
    User ২ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    nice

  • নাহার
    User ২ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    Nice.

  • মেহেদী হাসান
    User ২ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    gj

  • ★ রোদেলা রিদা ‎★
    User ২ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    nicegj