বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অসুস্থতার কথা যখন পুরোপুরি জানলাম তখন থেকে আঙুলে বছর গণনা শুরু করলাম ।এবং অপেক্ষা করতে লাগলাম চলে যাওয়ার । ডাক্তারদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এবং কবিরাজের ব্যর্থতা আমার আশার আলো নিভিয়ে দিয়েছিল ।
তখন আমার সামনে অনুপ্রেরনা হয়ে আসে এডলফ হিটলার ! প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মৃত প্রায় ব্যাক্তিটি ইচ্ছে শক্তির সাহায্যে সুস্থ হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায় ! কিন্তু আমি কার কারণ হয়ে দাঁড়াবো ? পরিবারের কথা কখনোই মাথাতে আসেনি ।
এমন কিছুর দরকার ছিল যার জন্য আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা বেড়ে যায় । কারণ সুস্থ হবার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে আরো বেশি বেঁচে থাকার মনোবল নিজের মধ্যে তৈরী করা । যদি আমি মনে করি যে আমি সুস্থ হব,তবে আমি সুস্থ হব । আর যদি মনে করি আমি সুস্থ হব না তাহলে কখনোই সুস্থ হব না । আমি একটি সুখী জীবন যাপন করতে চাই এই ভানবা মাথায় আসতে হবে । কিন্ত আমি কার সাথে সুখী জীবন যাপন করবো ?
হঠাৎ একদিন আমার জীবনে একজন মেয়ের আগমন ঘটল । সেই মেয়ের আগমন আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল আশার আলো পুরোপুরি নিভে যায় নি । ফুলকি এখনো আছে সেখানে । ফুলকি আবার জ্বলে উঠলো । আস্তে আস্তে সেটা আগ্নেয়গিরীর রুপ নেওয়ার পায়তারা করতে লাগল ।
বেঁচে থাকার ইচ্ছে বাড়ানোর কারণ খুঁজে পেয়ে গিয়েছিলাম । এখনই কি চলে যাবো ! তার সাথে সুখী জীবন যাপন করতে হবে না ? আমাকে বেঁচে থাকতে হবে । নিজের জন্য না হলেও তার জন্য বেঁচে থাকতে হবে ।
আমি সুস্থ হতে চাচ্ছিলাম কারণ আমি তার সাথে সময় কাটাতে ইচ্ছে করতো । সুস্থ হলে তার হাতে হাত রেখে হাঁটতে ইচ্ছে করত । কখনো এই ইচ্ছে শক্তিগুলো খারাপ দিকেও নিয়ে যেত ! নিজেকে নিজেই গালি দিতাম এমন জীবন নিয়ে জন্মানোর জন্য । নিজেকে জড়বস্তু মনে হতো কখনো কখনো । মেয়েটি জীবনে আসার পরই এসব চিন্তা আসা শুরু করল আমার মস্তিষ্কে । তবে তা অল্প সময়ের জন্য । বেশিভাগ সময়টাই প্রফুল্ল বোধ করতাম ।
আমার যত গল্প,কবিতা,বই সব লেখার মধ্যে যত প্রেম ছিল সবই এই মেয়ের জন্য সম্ভব হয়েছিল । গল্পের নারী চরিত্রে আমার পরিচিত অনেক মেয়ের ছুঁয়া থাকলেও তাদের প্রতি আমার যে প্রেম ফুটিয়ে তুলেছিলাম সবই এই মেয়েটিকে কল্পনা করে । যদি সম্ভব হতো তবে কি কি করতাম সেসবই লেখার চেষ্টা করছিলাম ।
জীবনে কখনো এতোটা সুখি বোধ করিনি যতটা করেছিলাম তার জন্য । প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠলেই মুখে একটা হাসি লেগে থাকতো । মনে মনে বলতাম আমাকে বাঁচতে হবে ! এখনই কি চলে যাবো ? আরো অনেক দূর যেতে হবে । কিন্তু ভাগ্যের লেখা অন্য রকম ছিল ।
কোন মেয়ের সাথে জড়ানোর আগে ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক ঠিক কোন দিকে যাবে তা নিয়ে ভাবা উচিত । পরিবার কিংবা সমাজের সমস্যা হতে পারে কিনা সেটা কল্পনা করা এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করা উচিত । যদি মনে হয় পরিবার কিম্বা সমাজ কোন সমস্যা করবে না তাহলে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ভালো । নয়তো শুরুর আগেই সম্পর্ককে কবর দেওয়া দরকার ।
একজন মানুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলাম ! তার জন্য নতুন করে বাঁচতে চাচ্ছিলাম সেই মানুষ যদি হঠাৎ জীবন থেকে চলে যায় তবে পরিস্থিতি হতে পারে ভয়াবহ ।অবস্থা অনেকটা ক্যান্সারের শেষ ধাপের মতো । এতোদিনে সে আমার শরীরে ছড়িয়ে পরেছিল । হঠাৎ তার এই চলে যাওয়া শরীর মেনে নিতে পারেনি । সুখী অনুভূতি এবং বেঁচে থাকার ইচ্ছে দুটোই মারা যায় তার প্রস্থানে ।
মা-বাবার জন্য বাঁচা যায় না ? এই প্রশ্ন চলে আসতে পারে । হ্যা তাদের জন্য বাঁচা যায় তবে সেটা তাদের ভোজা হয়ে না । যদি তাদের জন্য কিছু করতে পারতাম তবে বাঁচার ইচ্ছে জন্ম নিতো । কিন্ত তাদের জন্য তো কিছুই করতো পারবো না । মা-বাবার কথা মাথায় আসলে আমার এক মুহুর্তও বাঁচতে ইচ্ছে করে না । মনে হয়ে মরে গেলেই তারা মুক্তি পাবে ।
এসব অনেক দিন আগের কথা । তার চলে যাওয়ার ক্ষত আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে প্রতিদিনই । ক্ষত কিছুটা ভালোও হয়ে গেছে । নয়তো এতোদিন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতাম । তার ক্ষত হয়তো একদিন সত্যিই ঠিক হয়ে যাবে । কিন্তু তার শূন্য স্থানের কি হবে ! কে পূর্ণ করবে সেই জায়গা ? প্রকৃতি নাকি শূণ্যস্থান পছন্দ করে । তবে আমার বেলা এতো কেন পছন্দ হচ্ছে !
ইচ্ছে শক্তি দ্বারা আরেকটু বেশি বাঁচতে ইচ্ছে করছে । কিন্তু কাকে আঁকড়ে ধরে সেই ইচ্ছেটাকে আমার জীবন্ত করবো ? সে মানুষটা কোথা,কত দূরে ? আদৌও কি আসবে কখনো ? নাকি আমি নিজেই শূণ্যস্থান হয়ে যাবো ?
অক্টোবর ২,২০২১
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now