বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
মুক্তি
"ছোট গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মাওয়া (০ পয়েন্ট)
X
রাইটার---জান্নাতুল মাওয়া
"নীরু,চা খাবি?" রাত একটায় ভাইয়ার এমন প্রশ্ন শুনে কিছুটা অবাক হলাম।জিজ্ঞেস করলাম,"তুমি বানাবে?"
"হুম" বলেই আমার খাটে এসে বসলো।"এত রাত জেগে পড়াশোনা করিস? নাকি কারো জন্যে প্রেমপত্র লিখে বইয়ের ভাঁজে রেখে দিস?" হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলো ভাইয়া।
অভিমানী সুরে বললাম,"ভাইয়া, আমার কিন্তু এবার খুব রাগ হচ্ছে।এমনিতেই আমার পড়ায় ডিস্টার্ব করছো,এখন আবার এসব বলে আমায় রাগাচ্ছো।"
কিছুক্ষণ চুপ থেকে গম্ভীর মুখে বললো,"ভাগ্যিস মা-বাবা তোকে জন্ম দিয়েছিল, আমি তো জীবনে আর কিছু করতে পারলাম না,এখন তুই ই তাঁদের একমাত্র ভরসা।"
দীর্ঘশ্বাস ফেললো, বুঝতেই পারলাম কতটা অভিমান থেকে বললো কথাটি। এতক্ষণ ভাবছিলাম রাতের ঝড় সে হয়তো ভুলে গিয়েছে।গত দুবছর ধরে দুবেলা ভাত খাওয়ার জন্য কম কথা শুনতে হয়নি তাঁকে।কারণ একটাই,এখনো চাকরি জোগাড় করতে পারেনি।সকালে ঘুম থেকে দেরী করে ওঠার কারণে সকালের নাস্তা ভাইয়াকে দেওয়া হয়না।সন্ধ্যায় রুমেই শুয়ে থাকে থাকে কিন্তু কিছু খায়না। হয়তো বাবার কথা শোনার ভয়ে।তবুও অপমানে তাঁরা কোনো কমতি রাখেন না।আজ রাতে তো বাবা বলেই বসলেন,"তোমার কোনো বন্ধু কি এখনো বাপের টাকায় বসে বসে খায়? দুবছর চেষ্টা করেও একটা চাকরি জোগাড় করতে পারোনি, তোমাকে সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতে আমার লজ্জা হয়। আজ থেকে তুমি আমি আসার আগে খেয়ে নেবে, আমি তোমার মতো অপদার্থের মুখ দেখতে চাই না।" ভাইয়া কিছু বললো না কিংবা বাবার দিকে চোখ তুলে তাকালোও না।প্লেট রেখেও উঠে চলে গেলো না।শুধু প্লেটে হাত নাড়তে থাকলো, হয়তো খাবার মুখে দিতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না।আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম, উনিও কিছু বললেন না বরং স্বামীর কিছু লাগবে কিনা সেদিকেই ব্যস্ত তিনি। মনে মনে ভাইয়ার ধৈর্যের প্রশংসা করলাম। বন্ধুরা কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে ইন্টারভিউর বাহানা দিয়ে ভাইয়া নিস্তব্ধ হয়ে থেকে।জন্মদিন পালনের কথা বললে বলে,"ইসলামে এসব আছে নাকি? আমি বাপু জাহান্নামে জ্বলতে চাই না, তোরা তোদের জন্মদিনে এসব করিস।" ধর্মের দোহাই দিয়ে সেখান থেকেও কোনো ভাবে মুক্তি পায়। আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় গেলে সবাই কথাবার্তার একপর্যায়ে ভাইয়ার চাকরি কেন হচ্ছে না এই প্রসঙ্গই নিয়ে আসে। বড় খালা তো প্রায়ই আম্মুকে বলে, "আমার আসিফের তো সেই কবেই চাকরি হয়ে গেলো, তোর ছেলের হচ্ছে না কেন? ইন্টারভিউতে কিছু পারেনা নাকি?" আম্মা খালার সব কথা সেখানে হজম করলেও বাসায় এসে ভাইয়ার উপর সব রাগ ঝাড়েন।ভাইয়া কখনো কিছু বলে না। প্রতিবারই সে একটি কাজ করে, নিচে যা থাকে তা নিয়ে গবেষণা করে। অধিকাংশ সময় মেঝে আর ডাইনিং টেবিলই তাঁর গবেষণার শিকার হয়। আমার এতদিন ধারণা ছিল ভাইয়া এসব কিছুই মনে রাখেন না। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে প্রতিরাতেই সে হয়তো নিজের উপর প্রচন্ড ক্ষোভ আর অভিমান নিয়ে ঘুমাতে যায়। রসিকতা করতে আমি জানি না, কাজেই পরিস্থিতিও পরিবর্তন করতে পারলাম না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে প্রসঙ্গ পাল্টানোর জন্য বললাম, "চা আনছো না যে"।
আমার কথায় হাসলো সে, মুখে কিছু বললো না। চা আনার কোনো তাড়া দেখালো না, তাঁর সস্তা সিগারেট ধরালো। কিছুটা অভিমান নিয়ে বললাম," সিগারেট ছাড়ো না কেন? কি এমন পাও এটার মধ্যে?"
"আজকে লাস্ট, আর খাবো না।"
"প্রতিবারই তো এটা বলো, কিভাবে বিশ্বাস করি বলো?"
"আজকেই শেষ, আর কখনো তোকে বলার সুযোগই দেবো না, দেখে নিস" বলেই উঠে দাঁড়ালো। দরজা পর্যন্ত গিয়ে হঠাৎ আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বললো, "নীরু, তুই কি জানিস, তোর "নীরু" নামটা আমার দেওয়া?
"উফফফ, জানি তো ভাইয়া, আর কয়বার বলবা?" বিরক্ত হয়ে বললাম আমি। "যাই, মন খারাপ করিস না। তোর পড়ায় ডিস্টার্ব করলাম যে" বলেই রুমে চলে গেলো, আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিলো না।ভাইয়া চলে যাওয়ার পর মনে হলো, ভাইয়ার সাথে এমন আচরণ করা আমার ঠিক হয়নি। সকালে কথা বলবো এই ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালের মিষ্টি রোদে ঘুম ভাঙলো। চোখ খুলতেই দেখি টেবিলল্যাম্পের পাশে একটি চিরকুট রাখা। আশ্চর্য! চিরকুট আসবে কোত্থেকে! আমাকে চিরকুট দেওয়ার তো কোনো মানুষ নেই, আর আমিওতো কখনো কারো থেকে চিরকুট নিই না এসব ভাবতে ভাবতেই চিরকুটটা খুললাম। চিরকুটে লেখা,"নীরু, তুই এতো ভালো কেন রে???? মাঝে মাঝেই যে আমার শার্টের পকেটে টাকা পাই, আমি জানি তা তুইই রেখে দিস। আমার শার্টে টাকা রেখে তুুই হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরিস। জানা সত্ত্বেও আমি তোকে টাকাটা দিতে পারি না। কারণ আমার সত্যিই টাকার দরকার হয়। রাতে তোর রুমে একবার এসেছিলাম।দেখলাম আমার দেওয়া পায়েলটা শক্ত করে ধরে ঘুমাচ্ছিলি।আচ্ছা, তুই কি প্রতিরাতেই পায়েলটা হাতে নিয়ে ঘুমাস? এটা ছিলো, মৃত্যুর পূর্বে আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর একটি দৃশ্য। একবার ভাবলাম, এই অতি মায়াবতী মেয়েটার কথা ভেবেই বেঁচে থাকি, আমাকে বুঝার জন্য এই একটি মানুষ তো আছে। কিন্তু আমি সত্যিই নিতে পারছিলাম না রে....." চিঠি আমার কাছে ঝাপ্সা হয়ে এলো, আর কিছু পড়তে পারলাম না। আমার কি এখন দৌঁড়ে ভাইয়ার রুমে যাওয়া উচিত নাকি মা-বাবার কাছে যাবো, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। ভাইয়ার শীতল দেহখানি দেখতে আমি গেলাম না। তাঁর দেওয়া শেষ চিঠিটা ভাঁজ করতে করতে মনে মনে বললাম, "তবে তুমি মুক্তি পেলে"। রান্নাঘর থেকে টুংটাং আওয়াজ আসছে। নিশ্চয়ই আম্মা উঠে গেছেন। আমার বেশ জানতে ইচ্ছে হলো, আজও কি তিনি এক কাপ চা কম বসিয়েছেন?
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
রিদা
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেরিদা
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেরিদা
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেরিদা
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেFarhan Hossain
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেমাওয়া
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেতানিম
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেমাওয়া
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেমাওয়া
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেঅচিন্দ্র
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেরিদা
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেরিদা
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেFarhan Hossain
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেFarhan Hossain
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেমাওয়া
User ৭ মাস, ২ সপ্তাহ পুর্বেরিদা
User ৭ মাস, ৩ সপ্তাহ পুর্বেমাওয়া
User ৭ মাস, ৩ সপ্তাহ পুর্বেরিদা
User ৭ মাস, ৩ সপ্তাহ পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৫ মাস পুর্বেগুজব হাসান
User ২ বছর, ৫ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেDuaa...
Golpobuzz ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেDuaa...
Golpobuzz ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে★ রোদেলা রিদা ★
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে[তা-নি-ম]
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে[তা-নি-ম]
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে[তা-নি-ম]
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেMustafiz II
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেMustafiz II
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেFarhan
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেSiam 2.0
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেSiam 2.0
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেRadiyah Ridhi
Golpobuzz ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে★ রোদেলা রিদা ★
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেFarhan
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে★ রোদেলা রিদা ★
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে★ রোদেলা রিদা ★
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেFarhan
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বেজান্নাতুল মাওয়া
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে★ রোদেলা রিদা ★
User ২ বছর, ৬ মাস পুর্বে