বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
আল্লাহুম্মা আংতাস সালাম ওয়ামিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম।
দুরুদ ও সালাম রহমাতুল্লিল আলামীন, আল্লাহর হাবীব,ঈমানদারের প্রাণের স্পন্দন, আমাদের জান এবং সবকিছুর চাইতেও প্রিয় হাবিবে কিবরিয়া নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রতি।
আল্লাহুম্মা সল্লি আ'লা মুহাম্মাদিন আফদ্বলা সলাতিকা
আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ।আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া হাবীব আল্লাহ।আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রহমাতুল্লিল আলামীন।
মেহেরবান,কোরবান,কলিজার টুকরা পোলাপান, হেয়ার ইজ বিজয়(পিচ্চি হুজুর) এন্ড তোমাদের জন্য নিয়ে আসলাম আরও একটি ব্রেন্ড নিউ রোমাঞ্চকর ভ্রমনমূলক গল্প।
অনেকদিন ধরেই কুরুলুস ওসমান তুর্কি সিরিজটি দেখতেছি তাই তুরস্ক নিয়ে আলাদা ভাবে জানার আগ্রহ ও অনেক। এখন তোমাদের কথায় ইনশাআল্লাহ আমরা সকল জিজেসগণ ঘুরতে যাবো তুরস্কে।শুরুতেই তুরস্ক সম্পর্কে কিছু ধারণা নেয়া যাকঃ-
ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের মিলনস্থল তুরস্ক। টিভি সিরিজ ‘সুলতান সুলেমান’-এ দেশটির তৎকালীন সুলতানকে মাঝে মধ্যে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তিন মহাদেশের বাদশাহ।’ বাইজেন্টাইন ও অটোমান আমলের সেই সমৃদ্ধ ইতিহাসের বাইরে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেও দেশটি গুরুত্বপূর্ণ। আর পুরো তুরস্ক জুড়ে রয়েছে বহু নান্দনিক পর্যটন গন্তব্য।
শুধু ২০১৭ সালেই তুরস্ক ভ্রমণ করেছেন ৩ কোটি ৯৯ লাখ বিদেশি পর্যটক। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ষষ্ঠ পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হয় দেশটি। তুরস্কের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, বিখ্যাত খাবার সামগ্রী ও দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য সব ঐতিহাসিক স্থান সহজেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। আজিয়ান সাগর ও ভূমধ্যসাগরের উপকূল আর পাহাড়ঘেরা সৈকত যেন রোমাঞ্চের আরেক নাম।
তুরস্ক যাওয়া সোজা ব্যাপার না সবার পাসপোর্ট করতে হবে ভিসা নিতে হবে আরও অনেক ঝামেলা।তাইতো তানিম একটা ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে ২৩ টা ভিসা জোগাড় করে ফেলে।
এবারের ভ্রমণে যারা আছেন তারা হল,রিসু হাতুন,নাহার আপি,আরিজা,মোস্তাফিজ,শাহরিয়ার,তানিম,জাঈম,ইকবাল মাহমুদ,বিজয়,হৃদয়,মিশুপু,রিধি,রবিন,তানভীর,অপু,বন্যা,নাতাশা,লুমি ব্রো,শাহজামান ভাইয়া,ইসরাত,আল-আমিন,দিশা,সোহেল।এই নিয়ে ২৩ জন।
ট্রাভেল এজেন্সির অফিস মোহাম্মদপুরে। যথাসময়ে সবাই কে অফিস এ থাকার জন্য বলা হয়।এরপর মাইক্রোবাসে করে সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।আমাদের এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিজনেস ক্লাসের সিট দেয়া হয় সবাইকে।ইমিগ্রেশন শেষ করে সবাই বিমানে উঠে পড়লাম।
আমরা জানালা দিয়ে প্লেনের নিচের দিকে তাকিয়ে আছি উপর থেকে মাটির দিকে তাকালে মনে হয় গুগল ম্যাপ দেখছি, শুধু একটু বেটার ইমেজ কোয়ালিটি, কুইকবার্ড কিংবা আইকোনোস হবে হয়ত। মেঘের উপর দিয়ে যাবার সময় মেঘগুলোকে রাফ একটা সারফেস মনে হয়। মনে হয় এখুনি নেমে ওখানে হাঁটা শুরু করি।
বিমান থেকে নেমেই আমদেরকে আগে থেকে বুকিং করা হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।সবাই হোটেলে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম।আমাদেরকে কোথায় কোথায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হবে এটা নিয়ে একটা লিফলেট সবার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়।
১.হাজিয়া সোফিয়া ২.ব্লু মস্ক ৩.ইফেসাস ৪.কাপাদ্দোসিয়া ৫.কনিয়া।
হোটেলে বিশ্রাম নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়ি হাজিয়া সোফিয়ার উদ্দেশ্যে। এটি সম্ভবত তুরস্কের সবচেয়ে বিখ্যাত পর্যটক আকর্ষণীয় স্থান এবং বিশ্বের প্রাচীনতম ভবনগুলোর একটি। ষষ্ঠ শতকে বাইজেন্টাইন সম্রাট জাস্টিনিয়ান এই ভবনটি মূলত অর্থডক্স গীর্জা হিসেবে নির্মাণ করেন, যা পরবর্তীকালে মসজিদে রুপান্তর করা হয়। বর্তমানে এটি একটি মিউজিয়াম হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। এর অসাধারণ স্থাপত্য এবং বাইজেন্টাইন ও মুসলিম অলংকরণের সাজসজ্জা দর্শনার্থীদের বিমোহিত করে।
মধ্যযুগের বিস্ময়ে তুরস্কের হাজিয়া-সোফিয়া মসজিদ বা গির্জাটি এই বৃহত্তম শহর ইস্তানবুলেই অবস্থিত। হাজিয়া সোফিয়া বলতে বোঝায় পবিত্র জ্ঞান।
হাজিয়া সোফিয়া ধারণ করে আছে হাজার বছরের ঐতিহ্য
মসজিদে রূপান্তরের পর এর দেয়ালে মার্বেল পাথরে অঙ্কিত যীশু খ্রিস্টের অনেক গুলো ছবি মুছে দিলেও ৫০০ বছর পর স্থাপনাটিকে যাদুঘরে রূপান্তরের পর ছবিগুলো পুনরুদ্ধার করা হয়। ফলে যীশুখ্রিস্টের ছবিগুলো অনেকটা অস্পষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু পরবর্তীতে অঙ্কিত দুই ধর্মের ইতিহাস সংরক্ষণের জন্যই স্থাপনায় নতুন নিয়ম প্রবর্তন হয়। বর্তমানে স্থাপনার মূল অংশ বা হলরুম ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ, সেটি মুসলিম অথবা খ্রিস্টান ধর্ম উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।হাজিয়া সোফিয়া থেকে হেটেই চলে আসলাম তুরস্কের আরেকটি মন ভুলানো স্থাপত্য- ব্লু মস্কে। ইস্তাম্বুল শহরের চমৎকার স্থাপত্যশৈলী ও ৬টি মিনারের সুলতান আহমেদ মসজিদ বা নীল মসজিদটি বাইরে থেকেই মুগ্ধতার সৃষ্টি করে। এটি তুরস্কের আরেকটি পর্যটক আকর্ষণের স্থান।
মসজিদের অভ্যন্তরের দেওয়াল নীল রঙের টাইলস দিয়ে সুসজ্জিত বলে এই মসজিদটি ব্লু মস্ক বা নীল মসজিদ নামে পরিচিত। এটি ১৬০৯ থেকে ১৬১৬ সালের মধ্যে উসমানীয় সম্রাজ্যের সুলতান আহমেদ বখতি নির্মাণ করেন।
সুলতান আহমেদ মসজিদ এক ঐতিহাসিক নিদর্শন
এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয় ১৬০৯-১৬১৬ শতকে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠাতার সমাধি রয়েছে। মসজিদের ভেতরের উঁচু সিলিঙে ২০,০০০ বিভিন্ন ধরণের নীল টাইলস লাগানো আছে যার কারণে মসজিদটির নাম নীল মসজিদ হয়েছে।ব্লু মস্ক ঘুরাফেরা শেষে আমরা রওয়ানা দেই তুরস্কের জনপ্রিয় স্থানগুলোর একটি ইফেসাস যা সেলকাকের নিকট অবস্থিত।
ইস্তানবুল বা আনকারা, যেখানেই থাকেন না কেন, আপনার লোকেশন থেকে এটি বেশ দূরে। তাই সরাসরি ফ্লাই করে আসাই ভালো। বিশ্বের সেরা গ্রীক ও রোমান ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ এখানে সংরক্ষিত আছে। প্রাচীন বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি এই ইফেসাস শহরটি যা একসময় আর্টেমিসের মন্দিরের জন্য বিখ্যাত ছিল। মন্দিরটি অসাধারণ স্থাপত্য শিল্পের জন্য সবার সুনাম কেড়ে নেয়। ইফেসাসের কিছু আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে লাইব্রেরী অফ সেলসিয়াস এবং ট্যাম্পল অফ হেড্রিয়ান এবং প্রাচীন থিয়েটার।
বিশ্বের সেরা গ্রীক ও রোমান ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ এখানে সংরক্ষিত আছে। প্রাচীন বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি এই ইফেসাস।
ইফেসাস এর আর্টেমিসের মন্দির বিশ্বের সাতটি প্রাচীন বিস্ময়ের একটি
এখানে আরো রয়েছে প্রাচীন মন্দির আর্টেমিসের মন্দির, পাহাড়ের ওপর ঈসা বে মসজিদ, অটোমান এস্টেট, গ্রান্ড দুর্গ, ভার্জিন মেরির ভবন, আরো অনেক পুরনো ঐতিহাসিক ভবন।
মোসেন সময়কালে ভলকানোর অগ্ন্যোৎপাতে জন্ম নেওয়া প্রাকৃতিক শিলা এবং অনন্য ঐতিহাসিক শিল্পকর্মের জন্য বিখ্যাত। এই ভূগর্ভস্থ শহরটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে বেশ আগেই। কাপাদ্দোসিয়ায় সবচেয়ে বড় পর্যটক আকর্ষণ হলো বেলুন ট্যুর। বাংলাদেশি টাকায় ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু করে আরো দামী বেলুনও আছে। তবে সবগুলোতেই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা কম বেশি একই। খরচ যা-ই হোক, ভূপৃষ্ঠ থেকে হাজার ফুট ওপরে এক-দেড় ঘন্টার জন্য ভেসে বেড়াতে এবং মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখতে কে না ভালোবাসবে?
বড় গ্যাস বেলুনে করে দুষ্টুর দল বিজয়,তানিম,হৃদয়,শাহরিয়ার,তানভীর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাকাশের দিকে উড়ে যেতে থাকে।যা দেখে সবাই ই ভয় পেয়ে গেছিলো,হঠাৎ করেই বেলুনে আগুন ধরে যায়। অবস্থা ব্যাগতিক মেঘের উপর উঠে গেছে বেলুন এখান থেকে পড়লে একজনেরও আস্ত থাকবে না।মানুষ ৫ জন কিন্তু প্যারাসুট মাত্র ৩ টা। তানভীর একাই নেমে যায় একটা প্যারাসুট নিয়ে।তানিম আর হৃদয় একটা দিয়ে নেমে যায়।কিন্তু
বিজয় আর শাহরিয়ার একটা প্যারাসুট দিয়ে নামার চেষ্টা করে কিন্তু ২ জনের ভারে প্যারাসুট ছিড়ে যায়,যার ফলে ঘুরতে ঘুরতে ওরা নিচে পড়তে থাকে প্রবল বেগে। যে স্থানে নামার কথা ওইখান থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গিয়ে গাছের উপর আছড়ে পড়ে ওরা।আল্লাহর অশেষ রহমতে বড় কোন ক্ষতি হয় নাই ওদের।বিজয়ের হাত ছিলে গেছে আর তানিমের পা একটা ডালের সাথে বাড়ি খেয়ে ফুলে গেছে।পরে উদ্ধার কর্মী এসে উচু গাছ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
কাপাদ্দোসিয়ায় সবচেয়ে বড় পর্যটক আকর্ষণ হলো বেলুন ট্যুর। ভূপৃষ্ঠ থেকে হাজার ফুট ওপরে এক-দেড় ঘন্টার জন্য ভেসে বেড়ানো যায় এখানে।
কাপাদ্দোসিয়ার বেলুন ভ্রমণের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে দেশ বিদেশের পর্যটকেরা
বিশ্বের প্রাচীনতম শহরগুলোর মধ্যে কনিয়া একটি। অসাধারণ সেলজুক স্থাপত্য ও ঘূর্ণায়মান সুফি দরবেশদের জন্য এই শহর সুপরিচিত। তুরস্কের মধ্য আনাতোলিয়া অঞ্চলের বড় একটি শহর কনিয়া। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতকে সেলজুক রাজবংশের শাসনামলে রাজধানী শহর হিসাবে স্বীকৃতি পায় কনিয়া। সেই সময়ে স্থাপিত আলাউদ্দীন মসজিদ ও সেলজুক প্যালেস এখনো প্রশংসার দাবি রাখে। ফার্সি ধর্মতত্ত্ববিদ ও সুফি ব্যক্তিত্ব রুমির দরগা কনিয়ার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
সবগুলা দর্শনীয় স্থান ঘুরা শেষে ক্লান্ত শরীরে ফিরে আসি হোটেলে। বিজয় আর তানিমকে ১ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছে।তারপর সবাইকে বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দরে। তারপর সবাই মিলে উড়াল দেই নিজ দেশের উদ্দেশ্যে।
লেখকের কিছু কথাঃ- জিজেবাসী ইনশাআল্লাহ তোমাদের নিয়ে পরের গল্পে কোন জায়গায় বেড়াতে যাবো সেটা অবশ্যই জানাবে।পাঠকের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য আমার মতো অধম,সাধারন,পুচকু লেখককে প্রেরনা জোগাবে ইনশাআল্লাহ। তাই অনুরোধ রইলো আমাকে সুন্দর সুন্দর মন্তব্য উপহার দেওয়ার জন্য।আমি এই গল্পটিতে অতটা কমেডি যোগ করিনি তবে চেষ্টা করেছি তুরস্ক সম্পর্কে ছোট খাটো একটি ধারণা দেয়ার জন্য।অনেকেই ভ্রমণ গল্প লিখতেছো রিসু,শাহরিয়ার তোমাদের প্রতি দোআ রইলো তোমরা আরও এগিয়ে যাও। আমার গল্প গুলা বাস্তবিক করার চেষ্টা করি অতোটা মজাদার না কিন্তু তোমাদের গল্প গুলা সত্যিই অনেক মজাদার বিশেষ করে তানিম ভাইয়ার মন্তব্য গুলা আরও মজার।
ভুল ত্রুটির কাফফারা স্বরুপঃ-
সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লা আনতা আস্তাগফিরুকা ওয়াতুবু ইলাইক।
আলহামদুলিল্লাহ
ভালোবাসা অবিরাম
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now