বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
পার্ট ৩
হয়েছে পঞ্চাশ বছর আগে।
রুহান বৃদ্ধ কুরুর সামনে একটা চেয়ারে সোজা হয়ে বসে বলল, “তাহলে? তাহলে তুমি বল, আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পরে কী হবে? যখন কারো কাছে ক্রিস্টাল রিডার থাকবে না, তখন কী হবে? ছোট বাচ্চারা স্কুলে গিয়ে নতুন কিছু
কেমন করে শিখবে।বৃদ্ধ কুরু বিচিত্র একটা দৃষ্টিতে রুহানের দিকে তাকিয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর মাথা নেড়ে বলল, “তুমি ঠিকই বলেছ। আমি এভাবে চিন্তা করি নি। আমরা আমাদের সব তথ্য, সব জ্ঞানের বিনিময়, সব কিছু করি ক্রিস্টাল রিডার দিয়ে। যদি আমাদের ক্রিস্টাল রিডার না থাকে তখন কী হবে আমি জানি না- রুহান উত্তেজিত গলায় বলল, “কিন্তু সবসময় তো ক্রিস্টাল রিডার ছিল।
না। তখন মানুষ কী করত?”
“একসময় কম্পিউটার নামে একটা যন্ত্রে কথা বলত। তার আগে হাত দিয়ে কিছু সুইচে করে তথ্য পাঠাত, তার আগে ছিল কাগজ আর কলম। পাতলা এক ধরনের সেলুলয়েড আর কালি বের হবার এক ধরনের টিউব। তার আগে ছিল গাছের পাতা তার আগে মাটির আস্তরণ
রুহান মাথা নেড়ে বলল, “আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। গাছের পাতা,
মাটির আস্তরণ আর কাগজে কেমন করে তথ্য সংরক্ষণ করত। এগুলো তো যন্ত্র
নয়, এর পরমাণু তো সংঘবদ্ধভাবে সাজানো থাকে না “না না না।" বৃদ্ধ কুরু মাথা নেড়ে বলল, “তখন অন্য একটা ব্যাপার ছিল।সব ভাষার তখন লিখিত রূপ ছিল। অক্ষর ছিল, বর্ণ ছিল সেগুলো দিয়ে মানুষ তাদের কথাকে লিখে রাখত।"
“লিখে রাখত?”
হ্যা। এখন আমরা কিছু বললেই সেটা যেরকম সংরক্ষিত হয়ে যায় আগে সেটা ছিল না। আগে কিছু সংরক্ষণ করতে হলে সেটা বিশেষ বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার করে লিখতে হতো। সেই চিহ্নগুলো মানুষ মনে রাখত, সেটা দেখে তারা বলতে পারত কী লেখা আছে। সব শিশুকেই তার জীবনের শুরুতে লেখা আর পড়া ব্যাপারটা শিখতে হতো। সেটা শেখার পর তারা জ্ঞান অর্জন শুরু করতে পারত।
"কী আশ্চর্য!" রুহান অবাক হয়ে বলল, “কী জটিল একটা প্রক্রিয়া। হ্যা। এখন ক্রিস্টাল রিডারে চাপ দিলেই কথা। ছবি ও ভিডিও বের হয়ে আসে। আগে সেটা ছিল না। আগে যে চিহ্নগুলো দেখে মানুষ পড়তো, সেই চিহ্নগুলোর নাম ছিল বর্ণমালা বা এলফাবেট।”“কী আশ্চর্য!” রুহান মাথা নেড়ে বলল, “তুমি এও কিছু কেমন করে জান।
বৃদ্ধ কুরু হেসে বলল, “আমি বুড়ো মানুষ। আমার তো কোনো কাজকর্ম নেই, আমি তাই বসে বসে আমার ক্রিস্টালগুলো দেখি। প্রাচীনকালে মানুষ কি করত তা আমার জানতে বড় ভালো লাগে।”রুহান একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, “আমারও এগুলো খুব জানার ইচ্ছে করে। এক সময় এসে তোমার ক্রিস্টালগুলো দেখে যাব
“এসব জানার অনেক সময় পাবে রুহান। এখন গণিত, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এসব শেখ। চিকিৎসা বিজ্ঞান শেখ—যখন আমার মতো বুড়ো হবে তখন অন্য বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে পারবে।”
রুহান মাথা নেড়ে বলল, “আমি বুড়ো হতে হতে যদি সব ক্রিস্টাল রিডার নষ্ট হয়ে যায়, তখন?"
বৃদ্ধ কুরু হাত দিয়ে নিজের বুক করে বলল, “দোহাই তোমার। এন্ড্রোমিডার দোহাই, এরকম ভয়ঙ্কর কথা বলো না। আমার ক্রিস্টাল রিভার নষ্ট হবার আগে যেন আমার মৃত্যু ঘটে।”
“তোমার মৃত্যু হলে তুমি বেঁচে যাবে। কিন্তু আমাদের কী হবে?" বৃদ্ধ কুরু মাথা নেড়ে বলল, "এই মন খারাপ আলোচনা থাকুক হন। তার চাইতে বলো তুমি কী থাবে? আমার কাছে খুব ভালো স্নায়ু উত্তেজক একটা পানীয় আছে।” রুহান হেসে বলল, “আমার স্নায়ু এমনিতেই অনেক উত্তেজিও। স্নায়ু শীতল করার কোনো পানীয় থাকলে আমাকে দাও।” বৃদ্ধ কুরু রান্নাঘরের শীতল কক্ষ থেকে একটা পানীয়ের বোতল বের করে। দুটি স্বচ্ছ গ্লাসে সেটা ঢালতে ঢালতে বলল, স্নায়ুকে শীতল করে লাভ নেই। জোয়ান বয়সের ছেলে-মেয়ের স্নায়ু বুড়োদের মতো শীতল হবে কেন? তোমাদের স্নায়ুতে সবসময়েই থাকবে উত্তেজনা। একেবারে টান টান উত্তেজনা।”
রুহান তার গ্লাসটি হাতে নিয়ে একটা চুমুক দিতেই সারা শরীরে একটা আরামদায়ক উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বুকের ভেতর চেপে থাকা দুর্ভাবনাগুলো কেটে মাথার ভেতরে ফুরফুরে এক ধরনের আনন্দ এসে ভরকরে। সে জিব দিয়ে একটা শব্দ করে বলল, “চমৎকার পানীয় কৃষ্ণ প
"হ্যা। খুব চমৎকার। এই পানীয় এমনি এমনি খেতে হয় না। চমৎকার একটা সঙ্গীত শুনতে শুনতে এটি খেতে হয়। প্রাচীন একটা সঙ্গীত - রুহান সোজা হয়ে বসে বলল, “শোনাবে কুরু?”
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now