বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা

"শিক্ষা উপকরন" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান ᴍᴅ. ɪǫʙᴀʟ ᴍᴀʜᴍᴜᴅ (০ পয়েন্ট)



X পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা -মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম কানাডা উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর অংশে অবস্থিত একটি দেশ। দশটি প্রদেশ ও তিনটি অধীন অঞ্চল নিয়ে গঠিত এই দেশটি আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর এবং উত্তরে আর্কটিক মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। কানাডার আয়তন ৯৯ লাখ ৮০ হাজার বর্গ কিলোমিটার (৩৮ লাখ ৫০ হাজার বর্গ মাইল)। জনসংখ্যা ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৭১ হাজার ২০ জন। জনসংখ্যার শতকরা ৬৭.২ ভাগ খ্রিষ্টান, ২৩.৯ ভাগ অধার্মিক, ৩.২ ভাগ মুসলিম, ১.৫ ভাগ হিন্দু, ১.৪ ভাগ শিখ, ১.১ ভাগ বৌদ্ধ, ১ ভাগ ইহুদি এবং ০.৬ ভাগ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। জাতিগত গ্রুপের মধ্যে রয়েছে ৭২.৯ ভাগ ইউরোপীয়, ১৭.৭ ভাগ এশীয়, ৪.৯ ভাগ আদিবাসী, ৩.১ ভাগ আফ্রিকান, ১.৩ ভাগ ল্যাটিন আমেরিকান এবং ০.২ ভাগ ওশেনীয়। মোট আয়তনের দিক দিয়ে কানাডা পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এ দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্ত ৮ হাজার ৮৯১ কিলোমিটার (৫,৫২৫ মাইল) পর্যন্ত বিস্তৃত, যা বিশ্বের বৃহত্তম দ্বি-দেশীয় স্থলসীমান্ত। কানাডার রাজধানী অটোয়া এবং এ দেশের তিনটি বৃহত্তম মেট্রোপলিটন এলাকা হলো টরন্টো, মনট্রিল ও ভ্যানকুভার। ইউরোপীয় ঔপনিবেশীকরণের আগে বর্তমান কানাডায় হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠী বাস করতো। ষোড়শ শতাব্দীতে শুরু করে ব্রিটিশ ও ফরাসি অভিযাত্রীরা আটলান্টিক উপকূল আবিষ্কার করে এবং পরে সেখানে বসতি স্থাপন করে। ফ্রান্স দীর্ঘ সাত বছরের যুদ্ধে পরাজয়ের ফলস্বরূপ ১৭৬৩ সালে উত্তর আমেরিকায় তাদের সব উপনিবেশ ইংরেজদের কাছে ছেড়ে দেয়। ১৮৬৭ সালে মৈত্রিতার মধ্য দিয়ে চারটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ নিয়ে দেশ হিসেবে কানাডা গঠন করা হয়। এর ফলে আরো প্রদেশ এবং অঞ্চল সংযোজনের পথ সুগম হয় এবং ইংল্যান্ড থেকে স্বায়ত্তশাসন পাওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ১৯৩১ সালের ওয়েস্টমিনস্টার সংবিধির মাধ্যমে এই বিস্তৃত স্বায়ত্তশাসন লক্ষণীয় হয়ে ওঠে এবং ১৯৮২ সালে কানাডা অ্যাক্ট প্রণীত হয়। আর এর ফলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ওপর কানাডার আইনগত নির্ভরতার অবসান ঘটে। কানাডা এমন এক ফেডারেশন যাতে সংসদীয় গণতন্ত্রভিত্তিক সরকারব্যবস্থা এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্র উভয়ই প্রচলিত। কানাডার সরকার দুই ভাগে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক সরকার। প্রশাসনিক অঞ্চলগুলোর তুলনায় প্রদেশগুলোতে স্বায়ত্তশাসনের পরিমাণ বেশি। দশটি প্রদেশের মধ্যে রয়েছে ওন্টারিও, কিউবেক, নোভা স্কোটিয়া, নিউ ব্রুন্সউইক, মানিটোবা, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, প্রিন্স এডোয়ার্ড আইল্যান্ড, সাসকাটচেওয়ান, আলবারটা এবং নিউফাউন্ডল্যান্ড ও লাবরাডর। তিনটি অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে ইউকোন, নর্থওয়েস্ট টেরিটোরিজ ও নুনাভাট। কানাডার রাষ্ট্রপ্রধান ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। গভর্নর জেনারেল জুলি পায়েত্তে এবং প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডা দ্বিভাষিক এবং বহুকৃষ্টির দেশ। ইংরেজি ও ফরাসি দুটোই এ দেশের সরকারি ভাষা। কানাডার পার্লামেন্ট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট : ৩৩৮ সদস্যের হাউজ অব কমন্স এবং ১০৫ সদস্যের সিনেট। এ দেশের প্রাদেশিক পার্লামেন্টগুলো হাউজ অব কমন্সের মতো এককক্ষবিশিষ্ট। কানাডা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর অন্যতম সদস্য। সরকারি স্বচ্ছতা, নাগরিক স্বাধীনতা, জীবনযাত্রার মান, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও শিক্ষার আন্তর্র্জাতিক পরিমাপে কানাডা বিশ্বে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। এই দেশটি বিশ্বের জাতিগতভাবে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় এবং বহুসাংস্কৃতিক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যান্য বহু দেশ থেকে বড়-আকারের অভিবাসনের ফলে দেশটিতে এই বৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কানাডার দীর্ঘ ও জটিল সম্পর্ক এ দেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির ওপর তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ এবং সু-উন্নত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কের কারণে কানাডা বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও ধনী দেশ। কানাডা বেশ কয়েকটি প্রধান আন্তর্জাতিক ও আন্তঃসরকারি প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপের সদস্য। যেমন জাতিসংঘ, ন্যাটো, জি৭, গ্রুপ অব টেন, জি২০, উত্তর আমেরিকান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা ফোরাম, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) ও জি৮ গ্রুপের সদস্য। অন্যান্য উন্নতদেশগুলোর মতো কানাডার অর্থনীতির বেশির ভাগ সেবামূলক শিল্প নিয়ে গঠিত। প্রায় তিন-চতুর্থাংশ কানাডাবাসী কোন না কোন সেবা শিল্পের সাথে যুক্ত। কাঠ ও খনিজ তেল আহরণ শিল্প কানাডার প্রধানতম দু’টি ভারী শিল্প। এ ছাড়া দক্ষিণ ওন্টারিও-কে কেন্দ্র করে একটি উৎপাদন শিল্পব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে মোটরযান উৎপাদন শিল্প প্রধানতম। এ দেশের মুদ্রার নাম কানাডীয় ডলার। পানি এলাকাসহ মোট আয়তনে কানাডা রাশিয়ার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। এ দেশের পানি এলাকা মোট আয়তনের শতকরা ৮.৯২ ভাগ। আর পানি এলাকা বাদ দিলে শুধুমাত্র ভূমির আয়তনের দিক দিয়ে কানাডা বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। কানাডার তেরোটি প্রদেশ ও অঞ্চলের মধ্যে আটটির সাথেই যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত রয়েছে। শুধুমাত্র দু’টি (আলবার্টা ও সাসকাচেওয়ান) ভূমি পরিবেষ্টিত। অবশিষ্ট আটটি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চলের সীমান্তে রয়েছে তিনটি মহাসাগর। এ দেশের পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তরে আর্কটিক মহাসাগর এবং পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর। উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্বাংশে যে প্রাচীন শিলা গঠিত ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমি অবস্থান করছে তাকে কানাডীয় শিল্ড অঞ্চল বলা হয়। বিরাট এই অঞ্চলটি কানাডার উত্তরাংশে হাডসন উপসাগরকে বেষ্টন করে রয়েছে। পৃথিবীর মোট ১১টি শিল্ড অঞ্চলের মধ্যে এটি বৃহত্তম। ‘শিল্ড’ কথার অর্থ বর্ম বা ঢাল, তবে এ ক্ষেত্রে এর অর্থ শক্ত পাথুরে তরঙ্গায়িত ভূমিরূপ। অপর নাম- লরেন্সীয় মালভূমি। এই এলাকার ৪২ শতাংশ বনভূমি। কানাডায় ২০ লাখ হ্রদ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৫৬৩টি ১০০ বর্গকিলোমিটারের চেয়েও বেশি বড়। এ দেশের পাহাড়-পর্বতে বহু হিমবাহ রয়েছে। কানাডা ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয়। এ দেশে প্রায়ই শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে রয়েছে মাউন্ট মিগার মাসিফ, মাউন্ট গারিবালডি, মাউন্ট কেলি মাসিফ ও মাউন্ট এডজিজা ভলকানিক কমপ্লেক্স। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রায় ৪১ শতাংশ নিয়ে গঠিত কানাডা পৃথিবীর শীতলতম দেশ। এ দেশে ছয়টি সময় অঞ্চল বিদ্যমান। আবহাওয়ায় গ্রীষ্মকালে হালকা ভ্যাপসা ঠাণ্ডা, ভিজা কুয়াশা (কিছু সময়ে গরম রৌদ্রসম্পন্ন), শীতকালে ভীষণ ঠাণ্ডা, বরফাচ্ছন্ন, শুষ্ক এবং তুষারপাত ইত্যাদি হয়ে থাকে। এ দেশে প্রতিদিন আর্কটিক বরফাচ্ছন্নের দ্বারা শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। এই আবহাওয়া কিছুটা রাশিয়ার আবহাওয়ার মত শৈত্যপূর্ণ এবং হিমশীতল। এ দেশের কিছু অংশ ছয় মাস এবং কিছু অংশ সারা বছর বরফাচ্ছাদিত থাকে। শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন গড় তাপমাত্রা অঞ্চলভেদে কমবেশি হয়ে থাকে। গড় তাপমাত্রা শীতপ্রধান অঞ্চলে মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গ্রীষ্মপ্রধান এলাকায় ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ‘কানাডা’ নামটি সম্ভবত এসেছে সেন্ট লরেন্স ইরোকোয়াইয়ান শব্দ ‘কানাটা’ থেকে, যার অর্থ জেলেদের ক্ষুদ্র গ্রাম। ১৫৩৫ সালের দিকে, বর্তমান কিউবেক শহরের বসবাসকারীরা অভিযাত্রী জ্যাক কার্তিয়ারকে স্টেইডাকোনা গ্রামের দিকে পথনির্দেশনার সুবিধার্থে শব্দটি ব্যবহার করেছিল। ১৫৪৫ সাল নাগাদ, ইউরোপের বই এবং মানচিত্রে এই অঞ্চলকে ‘কানাডা’ হিসেবে নির্দেশিত করা শুরু হয়। কানাডায় ফরাসি উপনিবেশকে ‘নব্য ফ্রান্স’ বলা হতো, যার বিস্তৃতি ছিল সেন্ট লরেন্স নদী থেকে গ্রেইট লেইকসের উত্তর উপকূল পর্যন্ত। পরবর্তীতে, ১৮৪১ সাল পর্যন্ত এটি যথাক্রমে উচ্চ কানাডা এবং নিম্ন কানাডা নামক দু’টি ইংরেজ উপনিবেশে বিভক্ত থাকে। কানাডা অ্যাক্ট ১৯৮২ অনুসারে, কানাডাই একমাত্র আইনগত এবং দ্বিভাষিক নাম। ১৯৮২ সালে সরকারি ছুটি ‘ডোমিনিয়ান ডে’কে পরিবর্তন করে ‘কানাডা ডে’ করা হয়। ইংরেজি ভাষা ও ফরাসি ভাষা যৌথভাবে কানাডার সরকারি ভাষা। কানাডার কিউবেক প্রদেশে ফরাসি ভাষা প্রাদেশিক সরকারি ভাষা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাধারণত ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়াও বহু ইউরোপীয় অভিবাসী ভাষার প্রচলন আছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি জার্মান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভাষা হলো হাটারীয়, মেনোনীয় এবং পেনসিলভেনীয়। কানাডার প্রায় দেড় লক্ষ আদিবাসী আমেরিকান ৭০টিরও বেশি ভাষায় কথা বলে। এই স্থানীয় ভাষাগুলোর মধ্যে ব্ল্যাকফুট, চিপেউইয়ান, ক্রে, ডাকোটা, এস্কিমো, ওজিবওয়া উল্লেখযোগ্য। এখানকার স্থানীয় প্রধান প্রধান ভাষা পরিবারের মধ্যে আছে আলগোংকিন, আথাবাস্কান, এস্কিমো-আলেউট, ইরোকোইয়ান, সিউয়ান এবং ওয়াকাশান ভাষা পরিবার। এ ছাড়াও অনেক বিচ্ছিন্ন ভাষাও রয়েছে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২৮৬ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • ★ রোদেলা রিদা ‎★
    User ২ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    welcome

  • MD. IKBAL MAHMUD
    Golpobuzz ২ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Thank you

  • ★ রোদেলা রিদা ‎★
    User ২ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    canada shomporke jane valo laglogj

  • Duaa...
    Golpobuzz ২ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    কানাডা সম্পর্কে জানলাম.. ভালো।