বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
"আবির যখন নীলাঞ্জনার মাঝে। (সুমু)
।
ছেলেটির নাম আবির। সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে বের হয়েছে।
চাকুরি খুজছে। কিন্তু হচ্ছে না। তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছে যদি হয়ে যায়।
আবির যে বাসাটায় থাকে, তার সামনেই গলিতেই থাকে নীলাঞ্জনা। নীলাঞ্জনা বিবিএ করছে। সবেমাত্র ২য় বর্ষ পার করলো। ফ্যামিলি থেকে বিয়ে দেয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে নীলাঞ্জনার বাবা-মা। অবশেষে নীলাঞ্জনার বিয়েও ঠিক করে ফেলেছেন তার বাবা -মা। ছেলে এসে এনগেজমেণ্ট রিংও পরিয়ে গেছে। সামনের মাসেই বিয়ে। কিন্তু নীলাঞ্জনা এখনই বিয়ে করতে সম্মত নয়। সে আগে পড়াশুনা শেষ করতে চায়। কিন্তু মেয়ে বড় হলে সব বাবা-মা ই চায় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে। আর সেই পথেই হেঁটেছেন তারাও।
একদিন বিকেলে কলোনি দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় আবিরের দৃষ্টিগোছর হলো বাসার বেলকনিতে দাড়িয়ে থাকা নীলাঞ্জনার দিকে। বান্ধবী সীমার সাথে এনগেজমেণ্ট নিয়ে কথা হচ্ছে। হটাৎ কি মনে করে কোন এককথায় দুজনেই হেসে উঠলো। এই হাসি দেখেই আবির অনেকক্ষণ ঠায় দাড়িয়ে নীলাঞ্জনার সেই মিষ্টিমধুর হাসি অবলোকন করেই চলছে। এমন সময় নীলাঞ্জনার চোখ পড়লো আবিরের উপর। আবির এবার একটু লজ্জাই ফেলো। লজ্জার ভঙ্গিতে একটা হাসি দিয়ে আবির সেই স্থান ত্যাগ করলো।
এরপর থেকে আবির নীলাঞ্জনাকে দেখার জন্য প্রতিদিন বিকেলে ওই রাস্তায় দাড়িয়ে থাকে। কখন নীলাঞ্জনা বাসা থেকে বের হয়ে বেলকনিতে এসে দাঁড়াবে। কখন একনজর নীলাঞ্জনাকে দেখবে। কখন নীলাঞ্জনার ভুবনছড়ানো হাসিটা দেখবে। নীলাঞ্জনাকে হাসতে দেখলেই অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করে আবিরের। বলতে গেলে ভালবেসেই ফেলেছে আবির নীলাঞ্জনা কে। প্রায় সময়ই নীলাঞ্জনার ভার্সিটি আসা যাওয়ার পথে ওরে ফলো করে। কিন্তু আবির কোনভাবেই জানাতে পারেনা নীলাঞ্জনাকে তার ভালবাসার কথা। নীলাঞ্জনাও এতদিনে বুঝতে পেড়েছে আবির তাকে ভালবাসে। নীলাঞ্জনাও কিছুটা দুর্বলতা অনুভব করছে আবিরের প্রতি। কিন্তু নীলাঞ্জনা চায় আবিরই তাকে প্রপোজ করে তাকে তার ভালবাসার কথা জানাক। কেউ কাউকে কিছু বলতে পারে না। আর এভাবেই কেটে যেতে লাগলো কয়েকটা দিন।
একদিন খুব মন খারাপ করে বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে নীলাঞ্জনা। হটাৎ এ্নগেজমেণ্ট এর রিংটা বেলকনি থেকে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেয় নীলঞ্জনা। ছুড়ে ফেলে আবার কি মনে করে যেন আবার রিংটা খুজতে বের হয়। কিন্তু খুজে পাচ্ছে না কিছুতেই। হতাত পিছন থেকে " আপনি কি এটা খজছেন?" আবির বলে উঠলো।
নীলাঞ্জনাঃ জী! আপনি এটা কিভাবে পেলেন?
আবিরঃ এইতো - এইদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম হতাত পায়ের কাছে এসে পড়লো।
নীলাঞ্জনাঃ ওহ! আচ্ছা।
আচ্ছা আপনার কি ডায়াবেটিস জাতীয় কোন রোগটোগ আছে নাকি? নীলাঞ্জনা বলে উঠলো।
আবিরঃ নাহ তো ! কেন বলেন তো ?
নীলাঞ্জনাঃ নাহ! এই রাস্তায় সবসময় হাটাহাটি করেন তো। তাই।
আবিরঃ ওহ আচ্ছা। রাস্তাটাই এমন, চাইলেই এড়িয়ে চলতে পারি না।
নীলাঞ্জনাঃ ওহ! তাই না ।
আবিরঃ তো কষ্টটা (রিং) যখন ছুড়েই ফেলেছেন আবার নিতে আসলেন যে?
নীলাঞ্জনাঃ একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে " সব কষ্ট কি চাইলেই ছুড়ে ফেলা যায়?
আবিরঃ যাবে না কেন! একটু সাহস লাগে, এই আর কি।
নীলাঞ্জনাঃ আবারো দীর্ঘশ্বাস নিয়ে " হুম"
আবিরঃ চা খাবেন ?
নীলাঞ্জনাঃ আসলে চা খাওয়ার অভ্যাস আমার নেই।
আবিরঃ সেটা তো আমারও নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে অন্য কোন এক্সকিউজ খুজে পাচ্ছি না। চলেন না , চা খাই।
নীলাঞ্জনাঃ আচ্ছা চলেন।
একটু হেটে গেলেই সামনে একটা ছোট চায়ের দোকান। দুজন গিয়ে সেখানেই বসলো।
আবিরঃ চাচা ! চা হবে?
দোকানদারঃ মামা লিকার তো শেষের দিকে। এক কাপ হবে কোনরকমে।
আবিরঃ আচ্ছা! ওই এককাপই দেন।
এই এইকাপ চা দুজনে ভাগ করে খায়। সেদিন থেকেই আবিরের সাথে ভালো একটা বন্ধুত্ব হয়ে যায় নীলাঞ্জনার। এরপর তারা প্রায়ই চা খেতে বের হয়। একসাথে দুজন ঘুরে বেড়ায় এখান সেখানে। কিন্তু কেউ কাউকে তার মনের কথা বলতে পারে না।
এরমধ্যে একদিন চা খেতে খেতে আবির নীলাঞ্জনাকে -
আবিরঃ তোহ ! এনগেজমেণ্ট তো হয়ে গেলো। বিয়েটা কবে করছো ?
নীলাঞ্জনাঃ জীবনেও না। ওইরকম একটা অচেনা ছেলেকে জীবনেও বিয়ে করবো না।
আবিরঃ হা তা ঠিক। কিন্তু অচেনা ছেলেই তো পরে চেনা হবে।
নীলাঞ্জনাঃ চেনার পরেই প্রেম হবে। বিয়ে করে চিনবো এটা হবে না।
আর তাছাড়া সারাজীবন তো এইরকমই কাউকে চিন্তা করে এসেছি।
নীলাঞ্জনা নানাভাবে বুঝাতে চাচ্ছে, সে কি চায়। কিন্তু আবির যেন কিছুই বুঝতে পারছে না।
কথা বলার ফাকেই আবির নীলাঞ্জনার সাথে তার কাপটা চেঞ্জ করে নেয় নীলাঞ্জনার একটু ঠোটের উষ্ণ ছোঁয়া পেতে। আর এই জিনিসটা আড় চোখে দেখে ফেলে নীলাঞ্জনা। দেখে উলটোদিকে তাকিয়ে একটু হেসে নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়।
এরমধ্যেই নীলাঞ্জনার বিয়ের সময় গড়িয়ে আসে। ২ দিন পরেই নীলাঞ্জনার বিয়ে।
নীলাঞ্জনা আবিরের মুখ থেকে ভালবাসার শব্দটি শুনতে আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে।
কিন্তু আবির যেন নির্বিকার। আবিরের মনে ভয় " যদি নীলাঞ্জনাকে হারিয়ে ফেলে"
২ দিন পর -
আবির বাসার সামনে এসে বেলকনির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে নিলাঞ্জনাকে খুজে।
কিন্তু আবির আর দেখে না সেই বেলকনিতে নীলাঞ্জনাকে সেই চিরচেনা জায়গায় দাড়িয়ে থাকতে।
আবিরের চোখে মুখে হতাশার চাপ। হারিয়ে খুজছে প্রিয় মানুষটিকে। কিন্তু আবির আর নীলাঞ্জনাকে খুজে পায় না। বুকে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছে আবিরের। অনুসুচনার আগুনে জ্বলে যাচ্ছে আবির। এখন আর একা একা চা খেতেও ইচ্ছে করে না।
এরমধ্যে আবিরের একটা চাকুরীর অফার লেটার আসে। চাকুরীর সুবিধার্থে তাকে এই স্থান ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। তল্পিতল্পা ঘুচিয়ে চলে যাবার সময় চা দোকানদারের সাথে দেখা -
দোকানদারঃ ভাইজান কি একবারের জন্য যাইতেছেন ?
আবিরঃ যে যায় সে একবারের জন্যই যায়।
দোকানদারঃ ভালো থাকবেন ভাইজান।
আবির চলে যায়...। কিন্তু সেখানে গিয়েও আবির এক মুহূর্তের জন্যও ভুলে থাকতে পারে না নীলাঞ্জনা কে। সারাক্ষন হারিয়ে খুজে তাকে। নতুন চাকুরী এবং নীলাঞ্জনাকে হারানোর বেদনা নিয়ে কেটে যাচ্ছে আবিরের বিষণ্ণ দিনগুলো।
অবশেষে ৬ মাস পর আবির আবার ফিরে আসে তার আগের জায়গায়। কোনার চা দোকানটাতে গিয়ে-
মামা - এক কাপ চা দেন তো?
দোকানদারঃ বিস্ময় নিয়ে " ভাইজ
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now