বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
'সেকালের জন্তু'র কথা বলিলেই একটা কোন কিম্ভুতকিমাকার জানোয়ারের চেহারা মনে আসে। যে-সকল জন্তু এখন দেখিতে পাই না, অথচ যাহার কঙ্কালচিহ্ন দেখিয়া বুঝিতে পারি যে সে এককালে পৃথিবীতে ছিল, তাহার চেহারা ও চালচলন সম্বন্ধে স্বভাবতই কেমন একটা কৌতূহল জাগে। তাহার উপর যদি তাহার মধ্যে কোন অদ্ভুত বিশেষত্বের পরিচয় পাই, তবে ত কথাই নাই। সেকালের 'বাদুড়' লিখিলাম বটে, কিন্তু তাহার চেহারা দেখিলে সবসময় বাদুড় বলিয়া চিনিবে কিনা সন্দেহ। কারণ, সে সময়ের এক একটা জন্তুকে আজকালকার কোন নামে পরিচিত করা অনেক সময়েই অসম্ভব। মনে কর একটা জন্তু, তার সাপের মতো গলা, কচ্ছপের মতো পিঠ, কুমিরের মতো দাঁত, তিমির মতো ডানা আর গিরগিটির মতো মাথা— তখন তাহাকে কি নাম দিবে? সেইজন্য বাদুড় বলিতে খুব সাবধানে বলা দরকার— যেন আজকালকার নিরীহ চামচিকা গোছের কিছু একটা মনে করিয়া না বস।
আজকাল যে-সকল বাদুড় দেখিতে পাও তাহাদের চেহারা ও চালচলনের মধ্যে কত তফাৎ! কোনটার কান খরগোশের মতো লম্বা, কোনটার কান ইঁদুরের মতো গোলপানা, কোনটার মুখে শেয়ালের মতো, কোনটার মুখ ভেংচিকাটা সঙের মতো, কারও নাক পদ্মফুলের মতো ছড়ান, কারও নাক নাই বলিলেও হয়। কিন্তু সেকালের যে জানোয়ারগুলাকে বাদুড় বলিতেছি তাহাদের মধ্যে আরও অদ্ভুত রকমারি দেখা যাইত। এক একটাকে দেখিয়া মনে হয় বাদুড় পাখি আর কুমিরে মিলিয়া খিচুড়ি পাকাইয়াছে। এগুলিকে সাধারণভাবে বলা হয় টেরোড্যাক্টাইল (Pterodactyl) অর্থাৎ যাহার আঙুলে পাখা। পাহাড়ের গায়ে যেসব পাথরের স্তর ঠাকে তাহারা চিরকালই পাথর ছিল না। অনেক পাথর এক সময় মাটির মতন নরম ছিল। সে নরম মাটিতে জানোয়ারের কঙ্কাল জমিয়া অনেক সময়ে একেবারে পাথর হাইয়া থাকে— এইরকম পাথরকে এক কথায় জীবশিলা বলা যাইতে পারে। এক সময় ছিল যখন পৃথিবীতে পাখি বা বাদুড় কিছুই দেখা যায় নাই— তখন সরীসৃপের যুগ ছিল। অদ্ভুত কুমির বা গোসাপ তখন ভয়ংকর মূর্তি ধরিয়া পৃথিবীতে দৌরাত্ম করিত। সেই অতি প্রাচীন যুগের পাথরে এ সকল বাদুড়ের কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না— যা কিছু পাওয়া যায় সবই আরও আধুনিক যুগের। 'আধুনিক' বলাতে মনে করিও না যে মাত্র কয়েক শত বা সহস্র বৎসরের কথা বলিতেছি— সে 'আধুনিক' যুগ কয় লক্ষ বৎসর আগেকার তাহা আমি জানি না।
যতরকম 'বাদুড়' পাওয়া গিয়াছে তাহার মধ্যে সব চাইতে পুরাতনটি যে মাংসাশী ছিলেন, ইঁহার দাঁতের মধ্যে তাহার যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। ইঁহার নাম রাখা হইয়াছে 'ডাইমর্ফোডন' (Dimorphodon) অর্থাৎ দ্বিমূর্তিদন্তী।
সবগুলি বাদুড়ই যে প্রকাণ্ড বড় হইত তাহা নহে, কিন্তু সব চাইতে বড়গুলি যে খুবই বড় তাহাতে সন্দেহ নাই। দক্ষিণ আমেরিকায় যে-সকল বাদুড়ের চিহ্ন পাওয়া গিয়াছে তাহার এক একটি ডানা মিলিলে ২৫ ফুট চওড়া হয়। ইহাদের মাথার উপরে অদ্ভুত এক প্রকাণ্ড শিং ছিল। এই শিংটা তাহার কি কাজে লাগিত তাহা জানি না, কিন্তু ইহাতে তাহার বিদ্ঘুটে চেহারার কোন উন্নতি হইয়াছিল বলিয়া বোধ হয় না। এত বড় জন্তুটা উড়িলে পরে তাহার ডানা ঝাপটাইবার শব্দ নিশ্চয়ই বহুদূর হইতে শোনা যাইত। ইহারা কোনরূপ শব্দ করিত কিনা বলিতে পারি না। কিন্তু আওয়াজ করিলে সেটা খুব সুমিষ্ট হইত কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। ইহাদের মুখে নাকি দাঁত থাকিত না কিন্তু তাহাতেও আশ্বস্ত হইবার বিশেষ কোন কারণ দেখি না, কারণ ইহার যে ঠোঁট ছিল তাহাতে সাংঘাতিক ধার! সুতরাং তাহার ঠোকর দু-একটা খাইলে আর বেশি খাইবার দরকার হইত না। মোট কথা, এ জন্তুটা যে সেকালেই লোপ পাইয়াছে এটা আমাদের পক্ষে সৌভাগ্যের কথা বলিতে হইবে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
TARiN
Golpobuzz ২ বছর, ৮ মাস পুর্বেZAiM
User ২ বছর, ৮ মাস পুর্বে