বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
মুখ হাঁ করে বসে থাকতে থাকতে কালামের মুখের আশেপাশে ব্যথা করতে শুরু করছে। ব্যাপারটি কী সেটা নিয়ে ভয়টুকু তাকে কাবু করছে আরও বেশি। এটি সত্যি যদি আল্লাহর শাস্তি হয়ে থাকে এবং ধীরে ধীরে হাতপা ভেঙে লুলা হয়ে তাকে যদি সিনেমা হলের সামনে বসে ভিক্ষা করে জীবনটা কাটিয়ে দিতে হয় তখন কী হবে ভেবে সে কোনো কূলকিনারা পাচ্ছিল না।
ভিতরে ভিতরে খানিকটা উদ্বিগ্ন হয়েও মার্থা রোজারিও মুখে হাসি ফুটিয়ে একটু পরে কালামের কাছে ফিরে এলেন, তার হাতে একটা ফর্ম। কালামকে ফর্মটা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “নাও, ফর্মটা ফিলআপ করো। নাম ঠিকানা বয়স, কী সমস্যা লিখে নিচে পড়ে পড়ে ঠিক জায়গায় টিক চিহ্ন দিতে থাকো।”
কালাম বলার চেষ্টা করল, আমি পড়তে পারি না। মুখ পাকাঁপাকি ভোলা থাকায় সেখান থেকে শুধুমাত্র আঁ-আঁ জাতীয় একটা শব্দ বের হল। মার্থা রোজারিও সেটা শুনেই তার কথা বুঝে ফেলার ভান করে বললেন, “কী বললে, কলম নাই? এই নাও কলম।”
কালাম কলম হাতে নিয়ে আবার আকারে ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করল সে পড়তে পারে না, মার্থা রোজারিও আবার বুঝে ফেলার ভান করে বললেন, “হাতের লেখা ভালো না? কোনো সমস্যা নেই। আমি খারাপ হাতের লেখাও পড়তে পারি।”
মার্থা রোজারিও মিষ্টি করে হেসে কালামকে কাগজ-কলম হাতে বসিয়ে রেখে চলে গেলেন। কালাম তার হাতের কাগজের দিকে শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল, কাগজের অর্থহীন আঁকিবুকির মাঝে কী লেখা রয়েছে না জানার জন্যে এই প্রথমবার আফসোস হতে থাকে। মুখ ব্যথায় টনটন করছে, কতক্ষণ তাকে বসে থাকতে হবে এবং তারপর কী হবে চিন্তা করে তার কালঘাম ছুটতে থাকে।
মার্থা রোজারিও কিছুক্ষণের মাঝেই ফিরে এসে অবাক হবার ভান করে বললেন, “সে কী, এখনও কিছু লেখনি?”
কালাম মাথা নাড়ল। মার্থা রোজারিও বললেন, “ঠিক আছে, শুধু নামটা লেখো তা হলেই হবে। তোমার নাম তো কালাম, লেখো সেটা। আমি দেখিয়ে দিই।”
মির্জা মাস্টার প্রায় এক বত্সর চেষ্টা করে যাকে একটা অক্ষর শেখাতে পারেননি মার্থা রোজারিও কয়েক মিনিটে তাকে তার নিজের নাম লিখতে শিখিয়ে দিলেন। তাকে আরও অনেক কিছু শেখানো যেত কিন্তু মার্থা রোজারিও তার চেষ্টা করলেন না, বাচ্চাটির কষ্ট দেখে তার নিজেরও কষ্ট হতে শুরু করেছে। হাতে তোয়ালে পেঁচিয়ে মুখের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে কোথায় জানি চেপে ধরতেই আবার কট করে শব্দ হল এবং সাথে সাথে কালামের চোয়াল দুটি খুলে গিয়ে মুখটি সশব্দে বন্ধ হয়ে গেল।
কালাম তার মুখে হাত বুলাতে বুলাতে কৃতজ্ঞ চোখে মার্থা রোজারিওর দিকে তাকিয়ে বলল, “জানটা বাঁচালেন আপনি। আমি ভাবছিলাম আর মুখ বন্ধ হবে না! কেমন করে করলেন?”
“পড়াশোনা করো, বড় হয়ে ডাক্তার হও তা হলে দেখবে কেমন করে করা যায়। যাও এখন।”
কালাম সাবধানে কয়েকবার মুখ বন্ধ করে এবং খুলে পরীক্ষা করে বলল, “আমাকে শিখিয়ে দেবেন?”
“কেমন করে মুখ আটকে গেলে খুলতে হয়?”
“না।”
“তাহলে কী?”
কালাম দাঁত বের করে হেসে বলল, “কেমন করে মুখ খোলা থাকলে আটকে দিতে হয়।”
“কেন?”
“তা হলে কী মজা হবে! আমি সবার মুখ খুলে আটকে রাখব। হি হি হি –সব মুখ হাঁ করে বসে থাকবে!”
মার্থা রোজারিও চোখ পাকিয়ে বললেন, “দুষ্ট ছেলে! আমি তা হলে তোমাকে দিয়েই শুরু করি! আসো আমার কাছে–”
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now