বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

কুহক-২

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Saniat Ahmed (০ পয়েন্ট)

X #কুহক #দ্বিতীয়_পর্ব #সানিয়াত_আহমেদ_আবির গ্রামের লেখা পড়ার ভাগ শেষ করে আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চলে আসি শহরে । প্রথম প্রথম যখন ঢুকেছিলাম তখন ভিজে বেড়াল হয়ে থাকতাম , গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে শহরের ছেলেরা ওতো বেশি মিশত না, হাসা হাসি ইয়ার্কি ঠাট্টা সবসময় লেগেই থাকতো , আবার তার সঙ্গে সিনিয়রদের অত্যাচার । তাই প্রথম বর্ষটা বিষন্নতার সঙ্গে কাটলেও দ্বিতীয বর্ষে পা দেয়ার সঙ্গে ধীরে ধীরে যখন কিছু বন্ধু জুটলো আর আমাদের একটা দল গঠিত হল তারপর প্রতিবাদ করেছি, কখনও কলমের দ্বারা, কখনও বা গায়ের জোরে। এর ফলে জনপ্রিয়ও হয়েছি অন্যান্য ছাত্রদের মাঝে। এর পর থেকে আর কেউ ইচ্ছা করে আর কেউ ঝামেলা করতে আসতো না ,এমনকি সিনিয়াররাও আমাদের বেশ সমীহ করে চলতো । সেদিন কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে সন্ধ্যাবেলায় আমি পরের দিনের এসাইনমেন্ট গুলো সেরে নিচ্চিলাম । শহরের প্রায় শেষ প্রান্তে একটা নির্জন পাড়ায় একটা ঘর ভাড়া করে আছি আমি। বড় রাস্তার থেকে পাড়াটা যেহেতু অনেকটা ভেতরে, কোলাহলের কোনও রেশ এই অবধি এসে পৌঁছয় না। এলাকাটাও শান্তিপূর্ণ আর বাড়িওয়ালাও অত্যন্ত আমায়িক একজন ব্যাক্তি। আমাকে নিজের ছেলের মত স্নেহ করেন। সুতরাং এই এলাকা ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে থাকবার কথা আমাদের ভাবতে হয়না। ঘড়ির কাঁটা তখন সাতটা পেরিয়ে আটটা বাজবে। হঠাত একটা গাড়ির শব্দ কানে এল, জানলা খুলে উঁকি মেরে দেখলাম, উল্টোদিকের বাড়িটার সামনে একটা গাড়ি এসে থেমেছে। ভেতর থেকে একজন ছেলে নামল তার মালপত্র সাথে করে নিয়ে। যে বাড়ীটার সামনে গাড়িটা দাঁড়িয়ে, তার মালিক হলেন ভূষণ লাহিড়ী । ভদ্রলোক একা দোতলায় থাকেন আর নিচটা ভাড়া দেওয়ার পরিকল্পনায় খালি পড়ে ছিল , এতোদিনে বোধহয় অবশেষে কেউ এল। যে পরিমাণ মালপত্র এনেছে তাতে তাকে ভাড়াটে ছাড়া আর কিছুই মনে করা যাচ্ছে না। রাস্তার আলোগুলো খুব একটা জোরালো নয়,তাই মুখ ভালো করে দেখতে পেলাম না। ইতিমধ্যে ওপর থেকে লাহিড়ী বাবুও নেমে এসেছেন তাঁর নতুন ভাড়াটেকে স্বাগত জানানোর জন্য। খানিকক্ষণ দু’জনের মধ্যে চাপা গলায় কথোপকথন চলল। ব্যাপারটা এমন কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়। বাড়িতে নতুন ভাড়াটে এসেছে এ আর অস্বাভাবিক কি? জানালায় দাঁড়িয়ে অহেতুক সময় ব্যায় না করে আবার আমি নিজের কাজে ব্যাস্ত হলাম। কিন্তু একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটল সেদিন রাত্রে। খাওয়াদাওয়া সেরে ঘরের বাতি বন্ধ করে ঘুমাতে যাবো, হটাৎ কানে এল একটা বীনার শব্দ। বেশ একটু অদ্ভুত সুর তুলছে বাদ্যজন্ত্রটা। মোবাইলে দেখি সময় এখন প্রায় ১২টা। বেশ অনেকদিনই হলো এই এলাকাতে বাস করছি এর আগে এরকম সুর তো আগে শুনিনি কখনো। আমি, “এত রাত্রে বীনা বাজায় কে?” জানলাটা খুলে বাইরে তাকিয়ে এদিক ওদিক তাকাতে থাকি, খানিকক্ষণ পর বুঝতে পারলাম, আওয়াজটা আসছে ওই পাশের বাড়ির থেকে যেখানে আজ নতুন ভাড়াটে এসেছে। "মনে মনে ভাবলাম" নতুন ভাড়াটে তাহলে বীনা বাজায়? কিন্তু এতো রাতে?” সুরটা খুবই মিঠে কিন্তু একটা অদ্ভুত বেদনা রয়েছে তার ভেতর। গোটা এলাকাটায় যেন একটা ঘুমের চাদর বিছিয়ে দিচ্ছে সেই সুর। আমারও চোখের পাতা ভারী হয়ে এল। প্রায় মিনিট দশেক ধরে চলল সেই বাজনা। তারপর মিলিয়ে এলো সেই সুর, কিন্তু তারপর যা ঘটল তাতে বিস্মিত হয়ে পড়লাম। বাজনা থামার কিছুক্ষণের মধ্যে শুনতে পেলাম ঘরটার ভেতর থেকে চাপা স্বরে কথাবার্তার আওয়াজ আসছে। একটা কণ্ঠস্বর আমাদেরই বয়েসি ছেলের, আর আরেকটি কণ্ঠস্বর একজন বৃদ্ধের। -"কিন্তু সন্ধ্যাবেলায় শুধু একজনকে আস্তে দেখেছি তাহলে দ্বিতীয় ব্যাক্তিটি কখন এল? কে তিনি? এত রাত্রে কি হচ্ছে ঘরটাতে? ভালো করে কান পাতলাম কি কথাবার্তা হচ্ছে শুনি কিন্তু কোনো লাভ হলো না। কিন্তু কথোপকথন চলতেই থাকল। একসময় আর জানলার কাছে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না, জানলা বন্ধ করে স্বপ্নের দেশে পাড়ি দিলাম। পরেরদিন আমি কলেজ সেরে একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরছিলাম। মেস্‌বাড়ির প্রায় সামনে চলে এসেছি। হঠাত খেয়াল করলাম পাশের বাড়ি থেকে আমারই বয়েসি একটি ছেলে হাটতে বেরিয়েছে। তাকে এদিকে আসতে দেখে জিয্য়াস করলাম -"কালকে তুমি এই ভাড়াবাড়িতে উঠেছ”! হাসতে হাসতে আমার দিকে এগিয়ে এসে ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বলল, -"হ্যা, আমি ভূষণ লাহিড়ীর বাড়িতে এসেছি। আমার নাম প্রমোদ, প্রমোদ সেন। তারপর আমিও নিজের পরিচয় দিলাম আর জানতে পারলাম যে সেও অন্য একটি কলেজে পড়তে শহরে এসেছে আর ভূষণ লাহিড়ী নাকি তার দূরসম্পর্কের মামা, তাই ভাগ্নের জন্য একতলাটা পুরো ছেড়ে দিয়েছেন। কাল রাতে ঠিক বুঝতে পারিনি কিন্তু আজ ছেলেটির চেহারার বিবরণ না দিলেই নয়। অসম্ভব রোগা, চুলগুলো উস্কোখুস্কো সঙ্গে গালে অনেকদিনের না কামানো দাড়িগোঁফ। কথাবার্তাগুলোও একটু গম্ভীর ধরনের। কিছুক্ষন কথাবার্তার পর আমি বলেই ফেললাম, -"কাল রাতে তোমার ঘর থেকে বীনার আওয়াজ শুনতে পেলাম, নিশ্চয় তুমিই বাজিয়েছিলে, বেশ বাজাও তো বীনাটা। একদিন আমাকে আমন্ত্রণ করো তাহলে একদিন তোমার বাড়ি এসে জমিয়ে বাজনা শোনা যাবে।” আমার কথাটা শুনে কেন জানিনা প্রমোদের মুখের হাসিটা মিলিন হয়ে গেলো। কঠিন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে দু পা এগিয়ে এসে আমার মুখের কাছে মুখ এনে চোখ গুলোকে গোল গোল করে পাকিয়ে, ক্রুর হাসি হেসে বলল, -"আমার বাজনা তোমার জন্য নয়! অভিরূপ-তোমাদের কারুর জন্য নয়! এ বাজনা শুনে তিনি আসেন অনেক দূর থেকে। আমি মনে মনে ভাবলাম ছেলেটা কি পাগল? এরকম প্রলাপ বকছে কেন? বিকেলের পড়ন্ত রোদে জনবিরল গলিটাতে প্রমোদের সান্নিধ্য আমার একেবারেই ভালো লাগছিল না। অবিলম্বে সেই স্থান ত্যাগ করে নিজের বাড়িতে ঢুকে পড়লাম। এরপরেও অনেকবার দেখা হয়েছে প্রমোদের সঙ্গে। প্রতিবারই একটা শুকনো হাসি হেসে ভদ্রতা পালন করেছে সে। কিন্তু আর কখনও দাঁড়িয়ে ভালো করে কথা বলেনি। বেশ বুঝতাম কিছু একটা গোপন করছে ও। তবে আশ্চর্জের ব্যাপার হল এই যে রোজ রাত্রে বীনার মোলায়েম সুরের কোনও ব্যাঘাত ঘটে না। যেদিন থেকে ছেলেটি এই পাড়াতে এসেছে সেইদিন থেকে প্রতিটি মধ্যরাত্রে অদ্ভুত সুর তুলে কেঁদে ওঠে তার বীনা। চলে ওই মিনিট কুড়ি আর তারপরেই থেমে যায়, যার পর শুরু হয় কোনও এক অপরিচিতের সাথে তার কথোপকথন। কলেজে দিনে দুপুরে দাপিয়ে বেড়াই ঠিকই কিন্তু বলতে বাঁধা নেই, রাত দুপুরে ওই বীনার অপার্থিব সুর শুনে সর্বাঙ্গে কাঁটা দিয়ে ওঠে। কি এর রহস্য? কি আছে ওই সুরটাতে? কে আসে প্রমোদের কাছে রোজ রাত্রে? মনের মধ্যে জটলা বাঁধতে থাকে অনেক প্রশ্ন, অনেক রহস্য। আসল ঘটনা ঘটল কয়েকদিন পর। চলবে...?


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৫৩ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • ★ রোদেলা রিদা ★
    User ২ বছর, ৮ মাস পুর্বে
    স্বাগতম ভাইয়া gj

  • Saniat Ahmed
    Golpobuzz ২ বছর, ৮ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ আপু ❤️

  • ★ রোদেলা রিদা ★
    User ২ বছর, ৮ মাস পুর্বে
    hmm onak rohosho!!gj colbe na akdom doerabe!!!gj valo laglo!!gjgj