বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মাঝরাতে তোমাকে যেদিন দেখি

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মাজাহারুল ইসলাম (guest) (০ পয়েন্ট)

X অামি সাজিদ। ১ বছর হলো ঢাকায় এসেছি। একটা বাসার ছাদের ছোট একটা রুমে একা ভাড়য় থাকি। মাত্র কয়েকদিন হলো ঢাকায় এসেছি বন্ধু-বান্ধব এখনো তেমন হয় নি, তাই অবসর সময়ে বই অামার একমাত্র সঙ্গী। অাজকে অাবার কক্সবাজার ট্যাুরের জন্য ছুটি ঘোষনা করে দিয়েছে অফিস থেকে। অাগামি ৩ দিন ছুটি। অামি যাবো না বলে দিয়েছি। কারন ৪ বার একই জায়গায় ঘুড়তে যাওয়ার কোন মানেই হয় না।। অফিস থেকে বাড়িতে এসে বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যাই, হটাৎ ঘরের মধ্যে একটা ভ্যাপসা গরমে ঘুম ভেঙ্গে যায়, দু-হাতে চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে বসি। যেই দিকে তাকাই অন্ধকার ছাড়া অার কিছুই দেখতে পাই না, তখন মনে পরলো, অারে অামি তো লাইট ফ্যান অন করে ঘুমিয়েছিলাম তবে অফ করলো কে?? কিছুক্ষন বাদে বুঝতে পারলাম যে ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেছে। বিরক্তি নিয়ে একটু বাতাসের সন্ধানে জানালা টা খুলে দিয়ে যা দেখলাম!! তাতে কারোই মন খারাপ থাকার কথা না। দেখলাম থালার মতো বিশলা এক চাঁদ অাকাশের এক কোনে একাকি স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে অাছে, মাঝে মাঝে দু-এক টুকরো মেঘ বাতাসে ভেসে কানে কানে কি যেনো একটা বলে যাচ্ছে। কতক্ষন দেখলাম জানি না, হঠাৎ কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দে ঘোর কেটে গেলো, শব্দের উৎস খোজার চেষ্টায় ছাদের ডান দিকে তাকালাম, ১৭-১৮ বয়সের একটা মেয়ে খয়েরি রংয়ের একটা টপ অার সবুজ ওড়না পরে একপানে অাকাশের দিকে তাকিয়ে অাছে। প্রথমটায় অবাক হলেও পরে ভাবলাম হয়তো নিচতলার কেউ হবে মনে করে যখন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অারেক দফা অবাক হলাম সময়টা ৩ঃ২৭। এই সময়ে এই মেয়ে এখানে কি করছে, এতো রাতে ছাদে কি দরকার?? বাসায় কি ঝগড়া করেছে নাকি?? কোন একটা যুক্তি দাড় করানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুতেই কিছু মিলছে না ভেবে জিজ্ঞেস করবো ভেবে যেই তাকালাম। দেখলাম মেয়েটা ছাদের দরজা খুলে নিচে চলে গেলো। তারপর অাবারো জোছনা দেখতে মনোনিবেশ করলাম। অার হুমায়ূন অাহমেদ স্যার মতো হা করে জোছনা গিলতে চেষ্টা করলাম। মুয়াজ্জিন সাহেবের অাজানের শব্দে চমক ভাঙ্গলো। লক্ষ করলাম মহল্লার উত্তর দিকের শেষ মাথায় যেখান থেকে হিন্দু পাড়া শুরু হয় ঐ জায়গায় সর্বপ্রথম অাজান হয়। ক্ষীণ শব্দে শোনা যাচ্ছে " অাসসালাতু খায়রুম মিনান নাউম" তারপর একে একে সব মসজিদে শোনা গেলো। ছাদের এক কোনে ট্যাংকির সাথে সংযুক্ত একটা টেপকলে অজু করে নিচে নেমে জাবির উদ্দিন ( বাসার দাড়োয়ান) কে ডেকে তুলে নামাজ পড়তে রউনা হলাম। ২ পরদিন দুপুরে চুল কাটতে বাসার নিচের সেলুনে গিয়ে সোফায় বসে অামার সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষা করছি। সমায় কাটানোর জন্য অাজকের পত্রিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে একটা যায়গায় চোখ অাটকে গেলো!! অাজকে ফুল মুন!! অবাক হয়ে অাবার পড়লাম সত্যি সত্যিই অাজকো ফুল মুন!! অাজানা একটা অানন্দ ভর করলো মনের মধ্যে।। বিকেল থেকেই হালকা বৃষ্টি পরছে সমাস্ত অাকাশ জুড়ে মেঘেরা খেলা করছে। সন্ধায় দক্ষিণ দিকের জানালার পাশে রাখা টেবিলটায় বসে জানালা খুলি বৃষ্টি দেখছিলাম অার হুমায়ুন অাহমেদ স্যার এর "স্রাবণ মেষের দিনে" বইটা পরছিলাম।। এই বৃষ্টিতে এই বইটা যেনো অামাকে এক অন্য জগতে নিয়ে গিয়েছিলো, হঠাৎ কাছো কোথাও বাজ পড়লো।। ততক্ষণে বইটা প্রায় শেষ হয়ে গেছে কয়েকটা পৃষ্টা মাত্র বাকি; সুইজ টিপে মাথার উপরের লাইট টা বন্ধ করে তাকিয়ে দেখছি বিদ্যাুৎ চমকানো।। গতকালকের জোছনা অার অাজকে বৃষ্টি দেখা দুইটাই ভিন্ন, তবে অনুভূতি টা বেশ!!☺️ রাত ১১ঃ০০ অামার ষুমানোর সময়, কিম্তু অাজ মনে হচ্ছে অার একটু জেগে থাকলে মন্দ হয়, না তা ছাড়া কালকের দিন বাদ দিয়েও অারো একদিন ছুটি অাছে।। ৩ রাত ২ঃ৪৫ মিনিটে বিছানায় এপাশ ওপাশ করে রুম থেকে বের হলাম, বৃষ্টি থেমে গেছে কিন্তু এখনো অাকাশে অালোর ছুটোছুটি লক্ষ করা যাচ্ছে। অজান্তেই চোখ দুটো ছাদের চারপাশে কি যেনো খুঁজে যাচ্ছে।। একটা কোনায় কিছু একটা দেখে চোখ দুটো চকচক করে উঠলো!! সেই মেয়ে!! একটা কমলা রংয়ের ছাতা নিয়ে দাড়িয়ে। অামি অাস্তে অাস্তে তার কাছে গিয়ে দাড়ালাম। অামার দূরত্ব তার থেকে ৭-৮ হাত হবে। মেয়েটি অামার দিকে একবার তাকালো, তার চোখে বিন্দুমাত্র বিষ্ময় বা উত্তেজনা লক্ষ্য করলাম না, মনে হলো অামি অাসবো সেটা সে জানতো। অামতা অামতা করে জিজ্ঞেস করলাম অাপনার নামটা কি জানতে পারি?? মনেহয় শুনলো না, অাবার বললাম। অাপনার নাম টা কি বলবেন?? অার এতো রাতে ছাদে কেনো?? নিলিমা! ছাদে এমনেই অাসি। বিরক্ত করবেন না, প্লিজ অাপনি অাসুন!! উত্তর শুনি অামি হতবাক হয়ে দাড়িয়ে অাছি, অামার চলে যাওয়া উচিত কিন্তু পারছি না, এখন অাবার বৃষ্টি শুরু হলো অামি ভিজে দাড়িয়ে অাছি মেয়েটির পাশে। মেয়েটি ছাতার ভিতর থেকে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির পানি ছুয়ে দেখছে, তৃপ্তিতে তার চোখ চকচক করতে লাগলো অার অামি ভিজে দেখতে লাগলাম সেই দৃশ্য। মেয়েটি যে খুব সুন্দর তা কিন্তু না। উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ে একটা পুতির কাজ কারা চাদর জড়ানো, চোখের নিচে কালো দাগ স্পষ্ট, তবুও কেমন যেনো একটা মায়া খেলা করছে পুরো চেহারায়। মন্ত্রমুগ্ধের মতো একদৃষ্টিতে চেয়ে অাছি তার দিকে হঠাৎ শুনতে পেলাম!! এইযে মিষ্টার!! সমস্যা কি অাপনার ভিজতেছেন কেনো?? রুমে যান! বলেই মেয়েটি চলে গেলো। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার জন্য লজ্জাবোধ করলাম।। ৪ সকাল ১১ঃ৩০ মিনিট বাহিরে হোটেল থেকে খেয়ে বাসার গেটে দাড়িয়ে দেখি জাবির ভাই সিগারেট ধরাচ্ছেন, অামাকে দেখে পান খাওয়া লাল দাঁত বের করে জিজ্ঞেস করলো.. ভাইজান কেমন অাছেন? জ্বী, ভালো অাছি জাবির ভাই। অাপনি ভালো অাছেন?? অাফনেগোর দুয়ায় ভালোই অাছি!! ভাই অাপনার ছেলে মেয়ে কয়জন?? অাল্লার মাল দুই পোলা তিন মাইয়া। ছোড মাইয়া ডা কেলাছ থিরিতে পরে। নাম জামিলা। কত সুন্দর কইরা যে কবিতা কয়!! পরান একবারে জুরাইয়া যায়। বড়ো দুই পোলায় একটায় দোকানে থাকে অারেটায় রিসকার (রিক্সার) গেরাজে কাম করে, মেস্তুরি হইয়া গেছে। অাচ্ছা জাবির ভাই এই বাড়িতে কয়জন ভাড়াটিয়া থাকে?? অাপনেরে লইয়া ৬ জন থাকে। অাচ্ছা, নিলিমা নামে কোন মেয়েকে চিনেন?? অাবারো সেই পান খাওয়া দাতের হাসি দিয়ে বললোঃ- হ চিনি তো!! ছিনমু না কিল্লাইগ্গা!! কতো তলায় থাকে বলতে পারেন?? বাড়িওয়ালা মাইয়া!! তিন তলায় থাকে অাফনের ঠিক নিছের রুমডাই হেরা থাকে। বলে সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে কিছুটা বিষ্ময় নিয়ে বললো, তয় হুনছি মাইয়াডার নাকি কি একটা সমস্যা অাছে।। অতি অাগ্রহি চোখে জাবির ভাই এর দিকে তাকিয়ে বললাম। কি সমস্যা ভাই?? অামার অাগ্রহ টা তার চোখ এড়াতে পারলো না। অামি এটা বুঝতে পেরে পরক্ষনেই নিজেকে সংযত করে অাবার একই কথা জিজ্ঞেস করলাম। অামি মুখ্য সুখ্য মানুষ বেশি একটা বুঝি না, তয় বাড়িওলার লগে একবার বাজারে গেছিলাম তখন খালুজান বড়ো অাফসোস কইরা কইলো; বুজলা জাবির মাইয়াডারে নিয়ে অাছি একটা ঝামেলায় মাইয়াডা অামার দিনে দিনে চক্ষের সামনে শেষ হইয়া যাইতাছে। তখন খালুরে জিগাইছিলাম অাফার কি অইছে! তারপর!!! তারফরে খলু কি জানি একটা অসুখের নাম কইলো, ইনমনসোমিয়া নাকি ইনসুমিয় ভাঙ্গা ভাঙ্গা শব্দে উচ্চারন করলো জাবির মিয়া।। অামি অানমনেই বলে উঠলামঃ- ইনসমনিয়া।। জাবির মিয়া অামাকে থামিয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠলো, হ ভাইজান হ এইডাই কইছিলো খালুজান ইনসুমিনিয়া।। অামি একটা সৌজন্য হাসি দিয়ে জাবির মিয়ার থেকে বিদায় নিয়ে সিড়ির দিকে রউনা হলাম। একতলা থেকে সিড়ি দিয়ে তিন তলায় বাড়িওয়ালার দরজার সামনে অাসলাম। ততক্ষণে অামার চোখে পরিস্কার হয়ে গেলো মেয়েটির চোখের নিচের কালো দাগের কারন, মাঝরাতে তার ছাদে যাওয়ার কারন সবই যখন স্পষ্ট তখন মেয়েটার জন্য কষ্ট হতে লাগলো। একটা বড়ো নিঃস্বাস ফেলে বাড়িওলার দরজার সামনে কলিং বেলে হাত রেখে চিন্তামগ্ন হয়ে পরলাম, মেয়েটার জন্য অামার এতো কষ্ট পাওয়ার কারন কি?? এটা কি একটা মনুষ হিসেবে অন্য মানুষের দুঃখের কথা শুনে কষ্ট পাওয়ার মতোই, নাকি মেয়েটিকে অামি............ ভাবতে ভাবতে কখন কলিং বেলে চাপ দিয়েছি বলতে পারবো না। হঠাৎ একটা পরিচিত মেয়ে কন্ঠ শুনি চমক ভাঙ্গলো দরজায় তাকিয়ে দেখি নিলিমা অামার দিকে তাকিয়ে চোখ কচলাচ্ছে.................................................................... চলবে।। বাকিটা (অন্তিম পর্ব) ২১ তারিখ রতে দিবো যদি অাপনাদের এটা পছন্দ হয় তবে।। এটাই অামার জীবনের প্রথম লেখা ভুল ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৫৩ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now