বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
কলেজ হোস্টেলে ভাল ভাল ছাত্ররা থাকে। হোস্টেল পরিচালনায় দায়িত্ব থাকে কলেজের প্রভাষকবৃন্দ তাই লেখা-পড়ার নিয়ম শৃঙ্খলা চলে কঠোর ভাবে। হোস্টেল কোন রকম অনিয়ম করা যায় না। স্যারেরা রাতে হোস্টেলের ছাত্রদের পড়া লক্ষ্য করে। প্রতিদিন সকাল, বিকেল ও রাতে স্যারের হোস্টেলে আসে। কিছু নৌট সংগ্রহ করতে হবে তাই শুভ কলেজ হোস্টেল যাবে।
শুভ সকালে হোস্টেলে এসেই দেখে কয়েকজনের শরীরে স্যালাইন চলতেছে। বাকী যারা আছে তারাও সবাই দূর্বল কঙালসার চেহেরা। কী কারণ? গতকাল রাতে হোস্টেলের খাবারের ডালে জামাল-গোটা ছিল। রাত এগারটা থেকে সবাই পায়খানায় যাতায়ত শুরু হয়ছে। প্রথমে একের পর এক পরে কয়েকজন এস সাথে পরে পাশের আরো টয়লেট খুলে যেতে হয়েছে। প্রথম দিকে ছাত্র কিছুটা হাসা হাসি করলেও পরে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েছে কারণ সবার শরীর দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। রাত দুটার দিকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ম্যাডিকেল অফিসারকে ডেকে তুলে আনা হয়েছে। ডাক্তর সাহবে ছাত্রদের ফুড পয়জনের কথা শুনে দ্রুত চিকিৎসার প্রাথমিক জিনিসপ্ত্র নিয়ে আসলেন। এসে দেখেন ছাত্রসংখ্যা অনেক। ডাক্তার এসে তাজ্জব বলে গেলেন। তিনি দ্রুত প্রেসক্রিপশন লিখে বললেন, ওষুধ আনতে হবে। ছাত্রদের পাশের স্যারদের হোস্টেল। স্যারেরাও এসে পড়লেন ছাত্রদের হোস্টেলে। দুজন ছাত্রের ভাল অবস্থান ছিল। তারা সম্ভবত রাতের খাবার খায়নি। এদের একজন হলে মোখলেছুর রহমান পলাশ আরেকজন হলেন রনি। এই রনিই সম্ভবত এই অকাজটি করেছেন। অন্যরা পায়খানা যাতায়নে ব্যস্ত এবং রনি আর পলাশ ডাক্তার এবং ওষুধপত্র আনায় ব্যস্ত। ছাত্রদের দূরাবস্থা এবং স্যারদের রাগান্তিত অবস্থা দেখে পলাশ ও রনি ভয় পেয়েছে। রনি,পলাশ এবং স্যারের মিলে বাজারের ওষুদের দোকানে অনেক ডাকাডাকি করে ওষুদের দোকান খুলে ওষুধ আনলেন। সবাইকে ডাক্তার নিজের হাতে ওষুধ খাওয়াইলেন। ডাক্তার যাবার আগে সবাইকে ওষুধ এবং নিয়ম কানুন বুঝিয়ে দিলেন।
শুভ নৌট নিবে দুরের কথা হোস্টেলের ছাত্রদের অবস্থা দেখে মন খারাপ হয়ে গেল। শুভ সবার শরীরের অবস্থা জানলেন। নৌটের কোন কথাই বলেন না।শুভ চুপচাপ বাসায় এসে কলেজে গেলেন। কলেজের অন্যান্য স্যারের হোস্টেলের কথা শুনে অসুস্থ্য ছাত্রদের দেখতে হোস্টেলে আসলেন। কলেজের আজ সব ঘন্টা ঠিকমত হয়নি। সবার মুখে হোস্টেলের কাহিনী।
হোস্টেলের বন্ধুদের অবস্থা দেখে শুভরও মন খারাপ হয়ে গেল। বিকেলে আবার হোস্টেলে গেল। বিকেলে হোস্টেলের বন্ধুরা আগের চেয়ে উৎফুল্ল। দু একজন বাড়ি চলে গেছে। বাকীরা সবাই আছে এবং ভাল আছে।
রাতে শুভ মিনু চাকমার চিঠিটা আবার পড়লেন। পড়ে মনে হলো মেয়েটি শুভ ভালবাসে। আজ সর্বপ্রথম চিঠিতে চুমো দিয়েছে। যদি না ভালবাসতো তাহলে কি চুমো দিতো! এই চুমো নিয়ে মনে চলছে মন বিশ্লেষণ। চুমোর কথা মনে হলেই শরীর রোমাঞ্চিত হয়। এই রোমাঞ্চিত অবস্থায় মিনু চাকমাকে লিখতে শুরু করলো।
প্রিয়তমা,
গতকাল তোমার চিঠি পেয়েছি। চিঠির শেষ লাইনে কি যাদু দিলে তাই বার বার পড়ি। যতই পড়ি তাতই ভাল লাগে।
আমি কি তোমার হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজতে পারি? আমি তোমার হাত ধরিনি, তোমাকে চুমো খাইনি তবুও তোমাকে ভালবাসী। তুমি আমার জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন। তোমাকে আমি দেখেনি তবুও আমার কল্পনার বনলতা সেন।
হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে আরো দূর অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকার বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদন্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের ’পর
হাল ভেঙ্গে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনই দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতোদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে চাওয়া নাটোরের বনলতা সেন।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছেফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ মুছে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন,
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল।
সব পাখি ঘরে আসে — সব নদী; ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন ;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
তুমি আমার বাস্তব জীবনে আসবে কবে? তোমার প্রতীক্ষায়
ইতি
তোমারই
সৈকত।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now