বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

নীল সাগরের দেশ মালদ্বীপে জিজেসগণ।(শেষ পর্ব)

"ভ্রমণ কাহিনী" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান চিন্তার চুম্বক (০ পয়েন্ট)

X বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। loveআল্লাহুম্মা সল্লি আ'লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন আদাদা মাফি ঈলমিল্লাহ সলাতান্ দাঈমাতান বিদাওয়ামি মুলকিল্লাহlove হেল্লু কাছের মানুষজন ব্রেন্ড নিউ মালদ্বীপ ভ্রমণ গল্পের ৫ম বা শেষ পর্বে আপনাকে স্বাগতম।wow সাগরের কল্লোল ধ্বনি, মৃদুমন্দ বাতাস, সাগরের নীল পানিতে চাঁদের ঝিকিমিকি খেলা, মাথার ওপর আকাশের লাখো কোটি তারার মেলা এমন পরিবেশে প্লেটে সুস্বাদু খাবার আর হাতে পানীয় নিয়ে বসে আমরা সবাই সাগরপাড়ের এক কোনায়। কারও মুখে কোনো কথা নেই, কথা যেটুকু হচ্ছে তা শুধু চোখের ভাষায়। কিন্তু কার মনে কী তুফান চলছে কেউ জানি না। আমরা কি মনের কোনো এক গহিনে জীবনের কোনো স্বপ্নের অপমৃত্যু দেখছি অতীতে গিয়ে? জীবনের কোনো অপ্রাপ্তিকে অতীতে গিয়ে কি আমরা নতুন করে উপলব্ধি করছি? জোর করে কি কোনো অশ্রু লুকোচ্ছি আধা আলো আঁধারে? হারিয়ে যাওয়া কোনো মুখ কোনো স্মৃতি কি মনে পড়ছে বারবার? হবে হয়তো। মানবহৃদয় বড় জটিল। হৃদয়ের কোন কোটরে কি লুকায়িত থাকে তা অপর =জনের জানা হয়ে উঠে না দীর্ঘদিন একই ছাদের নিচে একই বিছানায় হরিহর আত্মা হয়ে জীবন যাপন করার পরও। আমরা মুক্ত মন, মুক্ত হৃদয়ের কথা বলি কিন্তু বেদনাহীন, দুঃখহীন, ক্ষতহীন হৃদয় কি মানুষের হয়? আজাইরা কাব্যিক কথা বাদ দিই, স্বপ্নের জগৎ থেকে ফিরে এলাম বাস্তবে। এক সুন্দরী এলেন গান করতে। আধুনিক ইংরেজি গান গেয়ে চললেন। রাত সাড়ে ১১টায় আমরা ফিরলাম হোটেলে। হোটেলে ফিরে সামান্য সময় বিশ্রাম নিয়েই আমাদের রুম থেকে সামান্য দূরের বিচের বেঞ্চিতে পা এলিয়ে দিয়ে নিস্তব্ধ এক প্রাকৃতিক পরিবেশে তারায় ভরা আকাশ দেখছি আর আড্ডা দিচ্ছি। মিশুপু,রিয়াদা আন্টি,বন্যা,নাতাশা,আরিজাপু,রিদাপু,লিমা,তারিন আপু সহ সবাই একসাথে ক্যাম্প ফায়ার করে বীচেই আড্ডা দিচ্ছিলো আর গানের কলি খেলছিলো। ঘণ্টা দুয়েক এভাবে সময় কাটিয়ে রুমে ফিরে গেলাম সবাই।আর তলিয়ে গেলাম অতল ঘুমের সাগরে। সকালে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে আবার দ্বীপের কিছু অংশ ঘুরে ফিরে দেখলাম। আমরা দুষ্টুর দল সুইমিং পুলে খানিকটা সময় সাঁতার কাটলাম। এরপর আমরা রুমে গিয়ে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে রওনা দিলাম হুলহুলমালের হোটেলে ফেরার জন্য স্পিডবোটে ঘাটের দিকে। যথারীতি হুডখোলা গাড়ি এলে লাগেজসহ গাড়িতে উঠলাম। স্পিডবোট ছেড়ে দিল। ২০ থেকে ২৫ মিনিটেই স্পিডবোট বিমানবন্দর জেটি ঘাটে নামিয়ে দিল। সেখান থেকে আমরা ৩ টি ট্যাক্সি নিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম। হোটেলে লাগেজ রেখে আশপাশের মার্কেট থেকে টুকটাক কেনাকাটা করে আমরা খানিকটা সময় কাটালাম। বিকেলবেলাটা বের হলাম পায়ে হেঁটে রাজধানী মালে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। হুলহুলমালে থেকে মালে যাওয়ার ব্যবস্থা দুটি। একটি ফেরিতে করে যাওয়া অন্যটি হলো ট্যাক্সি করে যাওয়া। ট্যাক্সিতে সাধারণত ভাড়া নেয় ৬০ থেকে ৭৫ মালদ্বীপের রুপি সমপরিমাণ বাংলাদেশি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। যেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। আর ফেরিতে যাওয়া যায় মাত্র ১০ রুপিতে সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ মিনিট। আমরা দ্বিতীয় পথই বেছে নিলাম। ভিন্ন রুটে নৌভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন এবং অর্থ সাশ্রয় উভয় দিক বিবেচনায় আমরা এ পথ বেছে নিই। আমাদের হোটেল এক্সপ্রেস ইন থেকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হেঁটে ফেরিঘাটে গেলাম। পথে লোকজনের সংখ্যা অত্যন্ত কম। পথে যতজনের দেখা পাই, বেশির ভাগই বাঙালি। সাগরপাড়ের এদিকটায় বেশ বিশাল বিশাল ভবন তৈরি হচ্ছে। হাঁটাপথে একটা পার্ক দেখতে পেলাম। বিশাল পার্ক কিন্তু এখানে–ওখানে দু– চারজন মানুষ বসে আছে, গুটিকয়েক ছেলেপেলে খেলাধুলা করছে। কোথাও সামান্যতম ময়লা–আবর্জনার লেশ মাত্র নেই। একটা জায়গায় রাস্তায় গাড়ি প্রবেশ ঠেকানোর জন্য ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে ফুলের টপ দিয়ে। আমাদের দেশের মতো কাঁটাতারের বেড়া কোথাও দেখতে পেলাম না। আমরা সবাই টিকিট কেটে এসি ফেরিতে উঠলাম। ফেরি চলতে শুরু করল। হাজারো বিভিন্ন আকৃতির জলযান সাগরে ভাসমান দেখলাম। ছোট, বড়, মাঝারি, একতলা, দুইতলা থেকে শুরু করে আট-দশতলায় লাক্সারি জাহাজ সাগরে অবস্থান করছে। আমাদের সড়কপথের বাস, ট্রাক, লরি, ছোট গাড়ির মতোই এদের জলযান। এরা জলপথকেই সড়ক পথের মতো কাছে, দূরে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করছে। কারণ প্রায় ১ হাজার ২০০ দ্বীপে যাওয়ার জন্য নৌপথ আর সি-প্লেন ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনো পথ নেই। আমরা পৌঁছে গেলাম রাজধানী মালেতে। ফেরি থেকে নেমে হাঁটা শুরু করলাম। ফেরিঘাটের সন্নিকটে একটা ছোট শিশুপার্ক। শিশুপার্কটি পার হয়ে এগিয়ে চলতেই বিশাল আকৃতির মসজিদ। সংস্কারকাজ চলমান থাকায় আমরা মসজিদে প্রবেশ করতে পারলাম না। এ মসজিদটি মেল হুকুরি মিসকি নামে পরিচিত। ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সংস্থা মসজিদটিকে ২০০৮ সালে Sea culture Architecure স্বীকৃতি দিয়েছে। মূলত, ১১৫৩ সালে মালদ্বীপের প্রথম মুসলিম সুলতান মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর যে মসজিদ তৈরি করেন, তার ওপর ভিত্তি করে ১৬৫৮ সালে সুলতান ইব্রাহিম ইসকান্দার এ মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদের মিনার বহু দূর থেকে দেখা যায়। এ মসজিদে একসঙ্গে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে পারে। এটা গ্র্যান্ড ফ্রাইডে মসজিদ নামেও পরিচিত। মসজিদের পাশেই চীন-মালদ্বীপ ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ। এটা সাগরের মধ্যে তৈরি একটি ব্রিজ বা হুলহুলমালে দ্বীপও রাজধানী মালেকে সংযুক্ত করেছে। ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট এটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সন্ধ্যার সময় বিজলি বাতির আলোয় এ ব্রিজের সৌন্দর্য অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর হয়ে ওঠে। অনেক পর্যটক এ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সাগরের পাড়ে সমবেত হয়। এ ব্রিজ ধরে মালে থেকে হুলহুলমালে যাতায়াতের সময় দুপাশে সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। জেটিঘাট থেকে মালে শহরে চারদিকে চক্রাকারে পথ আমরা প্রায় দেড় ঘণ্টা ঘুরে মালে শহর পরিভ্রমণ শেষ করলাম। আবার জেটিঘাটে এসে ফেরিতে উঠলাম। হুলহুলমালেতে হোটেল ফেরার জন্য হাঁটা পথে প্রায় সব জায়গায় অনেক বাঙালির দেখা পেলাম। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানলাম মালদ্বীপে তারা মোটামুটি ভালো আছেন। ফেরিতেও প্রায় সবাই বাংলাদেশি। এরা খরচ বাঁচানোর জন্য রাজধানী মালেতে কাজ করে আর বসবাস করেন হুলহুলমালেতে। ফেরি থেকে নেমে হোটেলের পথে হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম এক জায়গায় ১০ থেকে ১৫ জন তরুণী আমাদের দেশের গোল্লাছুটের মতো একধরনের খেলায় মেতে উঠেছে। রাত ১০টা নাগাদ এ দৃশ্য বলে দিল নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই রাস্তায়। হোটেলে ফেরার পথেই এক বাঙালি হোটেল থেকে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম সবাই। হোটেলে ফিরে সবকিছু গোছগাছ করে নিলাম,তারপর সি বিচে গেলাম সবাই সাগরের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য। একই সাগরের পানি পাশাপাশি দুই ধরনের বর্ণ ধারণ করে অবস্থান করছে। এক জায়গায় নীল আরেক জায়গায় গাঢ় নীল। বহুদূর থেকেও পানির এ ভিন্ন ভিন্ন রং চোখে পড়ে। পরের দিন সকালে ফ্লাইট ধরার জন্য সকাল ছয়টায় বিমানবন্দরে রওনা দিতে হবে সবাইকে। ঘণ্টাখানেক সাগরপাড়ে অবস্থান করেই হোটেল কক্ষে ফিরে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম সবাই। পরদিন সকালে ফ্রেস হয়ে সময় মতো ট্যাক্সি নিয়ে রওনা হলাম বিমানবন্দরের দিকে। চেকইন, ইমিগ্রেশন শেষ করে বিমানবন্দরে বুক স্টল আছে কি না, খোঁজ করলাম কিন্তু কোনো বুক স্টল পেলাম না। অবাক হলাম। যে বিমানবন্দর দিয়ে বছরে ১৫ লাখ পর্যটক যাতায়াত করেন অথচ কোনো বুকস্টল নেই, অবাক করল আমাদের। আমাদের ফ্লাইট প্রায় ২ ঘণ্টা বিলম্ব ছিল। বোর্ডিং শেষে শুরু হলো নিজ দেশে ফেরার ক্ষণগণনা। একপর্যায়ে বিমানের ভোঁ–দৌড়ের মাধ্যমে মাটির সঙ্গে আমাদের বন্ধন ছিন্ন হলো। শেষ হলো দ্বীপের দেশে, নীল সাগরের দেশ মালদ্বীপ ভ্রমণ। হৃদয়ের তন্ত্রীতে আনন্দের আর নীল সাগরের ছবি নিয়ে ফিরে চলা শুরু হলো প্রিয় বাংলাদেশে। হ্যাঁ, দেশের মাটিতে ফিরে আসাটাই তো চরম সত্য। বিদেশের রং আর চাকচিক্য তো ক্ষণিকের।কিন্তু নিজ দেশ এর মাটি, আলো, বাতাসেই আমাদের বেড়ে ওঠা, বেঁচে থাকা এবং মৃত্যুও এর কোলে। সেই চিরকালের নাড়ির বন্ধনে জড়ানো নিজ দেশে ফিরে আসাতেই শান্তি আর স্বস্তি। শুধু পিছে পড়ে থাকে সুন্দর স্মৃতি, আনন্দময় মুহূর্তের ছবি। লেখকের শেষকথাঃ প্রিয় জিজেবাসি তোমাদের অনুরোধে এবার চলে গেলাম মালদ্বীপে।আমার আরও একটা রাত কেটে ভোর হল গল্প লিখতে গিয়ে। এই গল্পের ৫ টি পর্বই একরাতে লেখা।যেহেতু আমি কখনো মালদ্বীপ যাই নাই তবুও তোমাদের অনুরোধে ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে ইনফরমেশন জোগাড় করে তারপর লিখছি আলহামদুলিল্লাহ। সামনের গল্প গুলো কোন বিষয় নিয়ে লিখবো অবশ্যই জানাবেন।ইনশাআল্লাহ সবসময় চেষ্টা থাকে গল্পে কাল্পনিক থেকে বাস্তবিক রূপ দেওয়ার যাতে আমার প্রিয় পাঠকবৃন্দগণ গল্প গুলো খুব সহজেই হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন।তোমাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্যই আমার মতো পুচকু,অধম,সাধারণ লেখককে আরও গল্প লিখার প্রেরণা জোগাবে ইনশাআল্লাহ। ভুল ত্রুটির কাফফারা স্বরুপঃ- সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লা আনতা আস্তাগফিরুকা ওয়াতুবু ইলাইক। আলহামদুলিল্লাহ loveভালোবাসা অবিরামlove


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭২৮ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now