বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

কার ছবি ( পার্ট ১ )

"ফ্যান্টাসি" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Ridiyah Ridhi (০ পয়েন্ট)

X হাবিব সাহেব ফ্যাল ফ্যাল করে মানুষটার দিকে তাকিয়ে রইলেন। এ তিনি কাকে দেখছেন? যাকে দেখছেন তিনি কি আসলেই তিনি? নাকি ভুল দেখছেন? দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি তো তাঁর? হাবিব সাহেব একটু নড়েচড়ে বসলেন। চোখে মোটা কাচের চশমা। চশমা খুলে পাঞ্জাবির খুঁটে ভালো করে মুছলেন। সেই ফাঁকে চোখ দুটোও একটু কচলে নিলেন। তারপর চশমা পরে আবার তাকালেন। না, ভুল দেখছেন না তো? দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি তো হাবিব সাহেবের? যাকে দেখছেন তিনি আসলেই তিনি। অন্য কেউ না! হাবিব সাহেব একটা ঢোক গিললেন। এটা কী করে সম্ভব? তোফায়েল স্যার চার বছর আগে মারা গেছেন। চার বছর আগে মারা যাওয়া লোক... হাবিব সাহেব মুখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক তাকালেন। লম্বা লাইব্রেরি রুমটায় আর কেউ নেই। ঝকঝকে আলো জ্বলছে প্রত্যেকটা টেবিলের ওপর। তোফায়েল স্যার বসে আছেন লাইব্রেরি রুমের একেবারে শেষ দিককার টেবিলে। আগেও এই টেবিলটাতেই বসতেন তিনি। মাথার ওপর আলো জ্বলছে আর তিনি নিবিষ্টমনে বই পড়ছেন। কোনও দিকে মনোযোগ নেই, কোনও দিকে তাকাচ্ছেন না। পরনে সাদা পাজামা পাঞ্জাবি, চোখে চশমা, পায়ে নরম ধরনের পামসু। মুখটা সেই আগের মতোই গম্ভীর, থমথমে।লাইব্রেরিটা শহরের একটু বাইরের দিকে। বহু পুরনো লাইব্রেরি। সত্তর আশি বছর আগে শহরের সবচাইতে নামকরা ধনী চৌধুরী মোজাম্মেল হক সাহেব করে দিয়েছিলেন। তাঁর নামেই লাইব্রেরি। চৌধুরী মোজাম্মেল হক পাঠাগার। পাঠাগারের সঙ্গে দশবিঘা জমিও দিয়েছিলেন। ফসলের জমি। ওই জমির আয়ে চলবে পাঠাগার। একটা কমিটি করে দিয়েছিলেন, সেই কমিটি পরিচালনা করবে লাইব্রেরি। কেউ কোনও টাকা নেবে না। জমির আয় থেকে দুজন পিয়ন আর একজন লাইব্রেরিয়ানকে বেতন দেয়া হবে। বাকি টাকায় বছর শেষে নতুন নতুন বই কেনা হবে। এখনও সেই একই নিয়মে চলছে লাইব্রেরি। প্রতি দুবছর পর পর নতুন কমিটি তৈরি হয়। তারাই পরিচালনা করে লাইব্রেরি। হাবিব সাহেব লাইব্রেরিয়ান হিসাবে কাজ করছেন আজ প্রায় সাঁইত্রিশ বছর। ষাটের ওপর বয়স হয়েছে। বিয়েশাদি করে সংসারধর্ম করা হয়নি। যুবক বয়সে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলবেন। দেশ গড়তে হলে প্রথমে গড়তে হয় মানুষ। আর মানুষ গড়তে হলে তাদের হাতে তুলে দিতে হয় বই। কোথায় যেন পড়েছিলেন, মানুষের সবচাইতে বড় সম্পদ তার হৃদয়। সেই হৃদয় আলোকিত করে বই। সুতরাং বই পড়িয়ে দেশের মানুষকে আলোকিত করতে চাইলেন তিনি। চৌধুরী মোজাম্মেল হক পাঠাগারের লাইব্রেরিয়ানের দায়িত্ব নিলেন। শহরের এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে ঘুরে একসময় বই পৌঁছে দিতেন মানুষের হাতে। অল্প বয়সি ছেলেমেয়ে, কিশোর কিশোরী, যুবক যুবতী সবাইকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করার কাজ করেছেন। এই করতে করতে কখন যে কোথা দিয়ে চলে গেল এতগুলো বছর, টেরই পেলেন না। বিয়েশাদি করা হলো না, সংসারধর্ম করা হলো না। পড়ে রইলেন অন্য এক জগতের মধ্যে। সেই জগত বইয়ের জগত । থাকতেন বড়বোনের সংসারে। বোন মারা গেছেন বহুবছর। এখন থাকেন ছোট ভাগ্নির বাড়িতে। ভাগ্নির নাম চম্পা। চম্পাই তাঁর সবকিছু। বাবাকে যেভাবে আগলে রাখে মেয়েরা, চম্পা সেইভাবে আগলে রাখে হাবিব সাহেবকে। ভাগ্নি জামাই কুতুব, একমাত্র নাতনি লোপা সবাই তাঁকে খুবই শ্রদ্ধাভক্তি করে, খুবই ভালোবাসে । সকাল দশটায় লাইব্রেরিতে এসে ঢোকেন হাবিব সাহেব, ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে দশটা পৌনে এগারোটা। দুজন পিয়ন আছে লাইব্রেরীতে । চলবে...???? সূত্র : ভূত কত প্রকার ও কি কি‌।১


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২৯৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ কার ছবি পার্ট ২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now