বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

প্রথম যখন চট্টগ্রাম

"ভ্রমণ কাহিনী" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মুজাহিদ মুহাম্মাদ (০ পয়েন্ট)

X রাত তখন ঠিক ১০;১৫মিনিট বাজে।তড়িঘড়ি করে সকলে প্রস্তুত হয়ে সোজা কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনের পথ ধরলাম। সবার চোখেমুখে একধরনের বিষণ্নতার ছাপ ছিলো ঝলমল পূর্ণিমা চাঁদের মতো।ফ্যাকাসে চেহারাগুলো রাতের হলদেটে বাতির ঝাপসা আলোয় আরো ফ্যাকাসে দেখাচ্ছিলো। সাথে থাকা প্রতিজনকে আমি পড়তে লাগলাম। আমারও কষ্ট লাগছিলো ভীষণ। আমি চাইছিলাম না এত দূরের সফরে সবাই মনমরা আর মলিন মুখো থাকি। এলোপাতাড়ি চিন্তা আর একবুক চাপা কষ্ট নিয়ে একসময় এসে হাজির হলাম স্টেশনের প্লাটফর্মে।ভীর প্রচুর ভীর। মানুষের জমায়েত প্রচুর।তাই আগেভাগে আমরা প্লান করলাম রেলের কোথায় অবস্থান নিবো আমরা। বিকট আওয়াজে সাইরেন বাজিয়ে বিজয় এক্সপেক্স রেলটি এসে আমাদের সামনে সোজা দাঁড়িয়ে গেলো। এটা কিশোরগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম আসাযাওয়া করে। গাড়িতে ওঠে পড়লাম। গাদাগাদি অবস্থা, মানুষের ভীর আজ অনেক। সিংহভাগ যাত্রীর গন্তব্য আজ একটাই, হাটহাজারি। রাতের আড়মোড়া ভেঙে গাড়ি চলতে লাগলো আপন গতিতে। রাতের বেলায় এটা আমরা প্রথম সফর। এ এক নতুন অভিজ্ঞতা।রাতের সফরের প্রতিটা ক্ষণ ছিলো রোমাঞ্চকর। সত্যি এ সফর অমর হয়ে থাকবে! রাত তখন ১২টা। গাড়ি ভৈরব স্টেশনের কাছাকাছি। কী করা যায় ভাবতে লাগলাম। ভাবা শেষ। শুরু করে দিলাম আরবি কথোপকথন। আর অবলোকন করতে থাকলাম দূরে অদূরে মিটিমিটি জ্বলতে থাকা পিদিমগুলো।দেখে অনেক ভালো লাগছিলো।চাপা কষ্টের মাঝে সামান্য হলেও প্রশান্তি ফিল হচ্ছিল। রাত ধীরেধীরে সন্তর্পণে তার গভীরে ঢুকতে লাগলো।আমাদের রেলও দ্রুত বেগে বাধাহীন ছুটতে লাগলো পার্বত্য অঞ্চল চট্টগ্রামের প্রতি। অনেকগুলো স্টেশন পেরিয়ে একসময় আমাদের গাড়ি আখাওয়রা এসে হাজির। ওমা কি কান্ড! ওই তো ইন্ডিয়া! রাতের আধারেও অনেকটাই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বোর্ডার।বাংলাদেশ আর ইন্ডিয়ার সীমান্ত জ্বলতে থাকা সীমান্ত বাতিগুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছিল এই বুঝি ছুঁইয়্যে দিবো। নিজেকে তখন অনেক প্রাণবন্ত লাগছিলো। মনের ভীতর রোমাঞ্চকর এক আবেগের উদয় ঘটেছিলো। সত্যি তখন আমার অনেক ভালো লাগছিলো।ইচ্ছে হচ্ছিল ছুটে যায় ওই পাড়ে। দেখে আসি তাদের রীতিনীতি। আর মনে পড়ছিলো সেই শৈশবে আমার সাথে পড়াশোনা করা ছেলেগুলোর কথা। তাদের বাড়ি তো এখানেই, কিন্তু আমি যে তাদের ঠিকানা ছিনা না! বাংলাদেশ থেকেও যে ইন্ডিয়া দেখা যায় কসবা আখাওরা না গেলে বুঝতাম না।গাড়ি কিন্তু থেমে নেই। চলছেই চলছে....। মাঝপথে অপরিচিত এক স্হানে সোজা দাঁড়িয়ে গেলো। ক্রসিং হবে বলে শুনেছি।নেমে পড়লাম,সামান্য পায়চারি করলাম নিকষ কালো রাতের আধারে। এমন সময়ও দেখলাম, পেটের তাগিদে এদিকওদিক ছুটাছুটি করছে কিছু ফেরিওয়ালা। হাঁকডাক ছেড়ে বিক্রি করছে চানাচুর, পানি আর নানাবিধ খাবার।ওই তো হলদে আলো দেখা যাচ্ছে। এখনি মনে হয় ক্রসিং হয়ে যাবে,তাই গাড়িতে ওঠে পড়লাম। অপর দিক থেকে আসা গাড়িটা আমাদের পাশ কেটে লাপাত্তা হয়ে গেলো কিছু সময়ের ভীতর। রাত গভীর হচ্ছে.. গাড়ি দ্রুত ছুটে চলছে...। দরজার পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালাম। যাতে বাহিরের প্রকৃতি দেখে মুগ্ধ হতে পারি। বিবাড়িয়া,কুমিল্লা,লাকসামসহ অনেক স্টেশন পেরিয়া আমাদের গাড়ি এবার কাঙক্ষীত চট্টগ্রা জেলায় ঢুকে পড়েছে।রাতও প্রায় শেষ দিকে ঢলে পরেছে। এবার জুতসই করে দাঁড়ালাম চট্টগ্রামের রূপ দেখবো বলে।অপলক নয়নে তাকিয়ে আছি ওই আকাশের দিকে।যার সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ তালা। আল্লাহু আকবর! সুমধুর আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে বানিজ্যের রাজধানী চট্টগ্রামের মসজিদের উঁচু মিনার থেকে। কি বলবো, বাহিরের সচ্চ বাতাস আর আজানের ধ্বনি আমাকে তখন অন্যরকম সুখের সাগরে ভাসিয়ে ছিলো। ধীরেধীরে রাতের আধার কেটে আলোর বিকাশ ঘটতে লাগলো। চারিপাশ আস্তে আস্তে স্পষ্ট হতে লাগলো। আমিও দেখতে লাগলাম চট্টগ্রামের রূপ। আমাদের ট্রেনটা যেদিক দিয়ে যাচ্ছে তাঁর একপাশে ব্যস্ত শহরের চিত্র, অপর পাশে উঁচু পাহাড়। আমি তাকিয়ে ছিলাম ওই ঝোপঝাড় ভরা পাহারের দিকে। আকাশে তখন রক্তিম আভার উদয়। এটাই প্রভাতের সংবাদ দেয়। চলছে ট্রেন। ছোটো-ছোটো পাহাড়ি ঘর আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করেছে। বাড়ির পাশে ছোটবড়ো কলাগাছগুলো ছিলো দেখার মতো। সবজির কথা কী বলবো? যেদিকে চোখ পড়ে সেদিকেই শুধু নানাবিধ সবজি। সূর্য পূর্বাকাশে উদয় হয়েছে। ধীরেধীরে তার তেজ বেরে চলছে। বিমল প্রকৃতির রূপ দেখে দেখে একসময় হাজির হলাম এক ছোটো স্টেশনে। পুলিশ সিগ্ন্যাল দিলো আমরা এই স্টেশনে নেমে যেতে। নেমে পড়লাম। কাছ থেকে দেখা পেলাম চট্টগ্রামের। ব্রীজের পাশ ঘেঁষে হেঁটে যেতে লাগলাম আমাদের আসল লক্ষ পানে। (অসমাপ্ত)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২১৩ জন


এ জাতীয় গল্প

→ প্রথম যখন চট্টগ্রাম পার্টি 3
→ প্রথম যখন চট্টগ্রাম -পার্ট 2

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now