বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
এক যে ছিল টুনি। সে বসে ছিল বেগুনগাছে। হঠাৎ এল বৃষ্টি। তার পালক গেল ভিজে। তারপর রােদ উঠল।
টুনি তার মাথার পালক মুছল। তার মাথার চুলের মাঝখানটা খাড়া হয়ে গেল।
তখন টুনির বন্ধু ঠুনি বলল, এই তােকে দেখতে লাগছে নেইমারের মতাে ।
টুনি বলল, নেইমার, সে আবার কে?
ও মা, নেইমারকে চিনিস না? নেইমার হলাে একজন ফুটবল খেলােয়াড়। সে ব্রাজিলের ছেলে। আর সে খেলে স্পেনের বার্সেলােনা দলের হয়ে।
টুনি বলল, না তাে, চিনি না তাে।
ঠুনি বলল, চিনে রাখ। আচ্ছা তােকে ছবি দেখাব । আমার বাসার আমগাছের নিচে চায়ের দোকান। সেই দোকানের গায়ে একটা পেপার সাঁটা আছে। সেই পেপারে নেইমারের ছবি আছে।
টুনি আর ঠুনি উড়ে গেল আমগাছে। তারপর উড়ে উড়ে দেখতে লাগল নেইমারের ছবি। দোকানের টিনের চালে লাগানাে। নেইমারের চুল মধ্যখানে খাড়া।
তারপর টুনি আর আর ঠুনি গেল একটা পাকা বাড়ির পাশে। সেখানে জানালায় কাচ আছে। সেই কাচে টুনি দেখল নিজের চেহারা। তার মাথার ওপরের পালক সত্যি নেইমারের মতাে হয়ে আছে।
টুনি বলল, ঠুনি, আমাকে তাে দেখতে নেইমারের মতােই লাগছে।
ঠুনি বলল, আজ বিকেলে আমরা ফুটবল খেলব।তুইও আমাদের সঙ্গে খেলবি ।
টুনটুনি পাখিদের দল বিকেলে মাঠের মধ্যে ফুটবল খেলছে। তারা ফুটবল খেলছে একটা বরই দিয়ে তাদের ছােট্ট পা দিয়ে তারা বরইটাকে লাথি দেয়। বরইটা ফুটবলের মতােই গড়াতে থাকে।
টুনি এর আগে ফুটবল খেলেনি কখনাে। ফুটবল খেলার নিয়ম সে জানে না।
গােল কী? সে জানতে চায় ।
তারা বলল, ওই যে দুটো খুঁটি পোঁতা আছে, তার মধ্য দিয়ে এই বলটাকে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে গােল হবে। যে বেশি গােল দেবে, সেই দল জিতে যাবে। সে দল বেশি গােল খাবে, তারা যাবে হেরে।
টুনিও খেলতে নামল। সবাই তাকে উৎসাহ দিচ্ছে,
নেইমার। নেইমার। তাের কপালে নেই মার ।
আরও জোরে জোরে মার। নেইমার নেইমার।
টুনি উৎসাহ পেয়ে নিজের গােলবারের ভেতরেই বল পাঠিয়ে দিল। গােল গােল।
কিন্তু তার দলের সব পাখি এসে তাকে ঘিরে ধরল,আরে বােকা, তুই তাে নিজের গােলে বল পাঠিয়েছিস। এটাকে বলে সেমসাইড, আত্মঘাতী গােল। এবার টুনি বুঝতে পারল, গোল করতে হবে উল্টো
দিকের গােলপােস্টের মধ্য দিয়ে। তখন সে তার ঠোট দিয়ে বইটা ধরে উড়ে গিয়ে গােল দিয়ে দিল ।
সবাই বলল, হ্যান্ডবল। হ্যান্ডবল। টুনি বলল, আমাদের তাে হাত নেই। হ্যান্ডবল হবে কোথেকে?
রেফারি হয়েছিল চড়ুইপাখি। সে বলল, ঠোট দিয়ে বল ধরাই পাখিদের হ্যান্ডবল।
ওদের খেলা ভালােই জমে উঠেছে। এই সময় ওখানে এল একটা মানুষের বাচ্চা। সে বইটা ভুলে নিয়ে জামায় মুছে পুট করে মুখে পুরে ফেলল।
টুনি চিৎকার করে উঠল, গােল খেয়ে ফেলেছে। গোল খেয়ে ফেলেছে।
তারপর মানুষের বাচ্চাটা বরইয়ের বিচিটা মুখ থেকে বের করে দিল। টুনি আরও জোরে চিৎকার করে উঠল, গােল খেয়ে বিচি ফেলে দিয়েছে।
ঠনি খুব লজ্জা পেল তার এই বন্ধুটির কথায়। সে তাকে লেজ দিয়ে বাড়ি দিয়ে বলতে লাগল, এই চুপ চুপ।
তারপর শুরু হলাে বিশ্বকাপ ফুটবল।
টুনির সঙ্গে টুনি চলল ডালিমগাছের ডালে। ওখানে বসে পাশের বাড়ির ভেতরে টেলিভিশনে ফুটবল খেলা দেখা যায়।
তারা খেলা দেখছে। গাছের ডালে আরও নানা ধরনের পাখি বসে আছে। তারাও খেলা দেখছে। খেলা চলছে।
টুনি ফিসফিসিয়ে বলল ঠুনিকে, এই, ওরা তাে শুধু ফুটবলটাকে লাথি মারছে। কিন্তু খাবে কখন?
খাবে মানে?
ওরা গােল খাবে কখন?
গোল হলেই গোল মানে।
গোল গোল, সবাই চিতকার করছে।
টুনি বলল, গােল খেয়েছে?
হা খেয়েছে। কে খেয়েছে?
ওই তাে হন্ডুরাস দল গােল খেল। হরাম গােল খেয়েছে। আচ্ছা। ওই সাদা দলটাই তাে হস্তুরাস, তাই না? ওদের কে গােলটা খেয়েছে? ওই যে গােলকিপারটা।
আচ্ছা আচ্ছা । আমি তাহলে একেই ফলাে করছি। এখনই নিশ্চয় সে গােলের বিচিটা ফেলে দেবে। বিচি ফেলবে মানে? ঠুনি বিশ্মিত কণ্ঠে বলল।
আমাদের খেলার সময় তাে একটা মানুষের বাচ্চা বইটাকে খেয়েই ফেলেছিল। তারপর বিচিটা বের করে দিয়েছিল। এরা যদি গােল খাবেই, তবে বিচি বের করে দিল না কেন? বিচিসমেত খেলে কিন্তু পেটে গাছ হবে...
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now