বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

কালরাত্রি

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সারোওয়ারে জুলফিকার (০ পয়েন্ট)

X তখন চলছিল সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। আমরা গভীর রাত পর্যন্ত পড়তাম। একদিন রাতে চায়ের নেশা পেয়ে বসল। কিন্তু সমস্যা হল বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে ভুতের ভয়ে রাতের বেলা কেউ বের হয়না। আমরা তিন জন বন্ধু সেদিন রাতে সাহস করে বেরিয়ে চা খেয়ে ফিরছিলাম। দেখলাম আলীম ভাই চেয়ারে বসে ঝিমুচ্ছে। ওনার কাছে সবার ভুতের ভয়ের কারনটা জানতে চাইতেই উনি ঘটনাটা বলেছিলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পাহাড়ায় থাকা আলীম ভাইয়ের সপ্তাহের রাত কাটত বেশ ভয়ে। যদিও ধীরে ধীরে তার ব্যাপারটা তার অভ্যাসে পরিনত হচ্ছিল। প্রত্যেক বৃহষ্পতিবার রাত ঠিক একটা'য় ঘটনাটা ঘটে। প্রথম দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে গেটের পাশে চেয়ারে বসে রোজকারের মত ঝিমুচ্ছিলেন আলীম ভাই। কুকুরগুলোও আজ যেন একটু বেশি ডাকছিল। হঠাৎ কোথাথেকে যেন একটা কান্নার শব্দে তার ঝিমুনিটা কেটে যায়। ভয়ে শিরশিরিয়ে ওঠে তার শরীর। গেটের ডান পাশেই অডিটরিয়াম। সম্ভবত শব্দটা অডিটরিয়ামের পেছন থেকে আসছে। সাহস করে টর্চ আর লাঠিটা হাতে নিয়ে হাটতে হাটতে অডিটরিয়ামের পেছনে গেলেন। বলে রাখা ভাল অডিটরিয়ামের পেছনে সামন্য একটু ফাকা জায়গা তারপর উচু প্রাচির। পেছনে যেতেই তিনি দেখতে পেলেন সাদা পোশাকে আবৃত একটা মেয়ে একটা গাছের পাশে বসে কাদছে। মেয়েটার চুলগুলো সামনের দিকে ছড়িয়ে দেওয়া। আলীম ভাই সাহস করে বললেন কে ওখানে। আচমকাই মেয়েটার চুলগুলো সরে যায়। মেয়েটাকে আলীম ভাই চেনেন। তিন্নি। বছরখানেক আগে মেয়েদের হোস্টেলের পেছনে একটা গাছে দড়ি দিয়ে ফাস লাগিয়ে আত্নহত্যা করে। আজ তিন্নির গলায় দড়ির দাগটা বেশ গাড় দেখাচ্ছে, চোখে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। মেয়েটা মুখ তুলে একটা কথাই বলল। "আলীম ভাই, আমার অনেক কষ্ট "। এর বেশি আর আলীম ভাইয়ের মনে নেই কারন তার আগেই তিনি জ্ঞান হারিয়েছেন। এরপর বিষয়টা নিয়ে ভিসি স্যারের অফিস পর্যন্ত গড়িয়েছে। এরপর বেশ ক'দিন আলীম ভাইয়ের সাথে ডিউটিতে আরও একজন ছিলেন। প্রায় এক বছর কোন সমস্যা হয় নি। কিন্তু আলীম ভাইয়ের মাঝেই মাঝেই মনে হত তিন্নির বোধহয় কিছু একটা বলার ছিল। তিন্নির ঘটনাটা আলীম ভাইয়ের আজও স্মৃতিতে ভেসে ওঠে। তখন তিন্নি নতুন ছাত্রী। মাস খানেকের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছেলের সাথে প্রেম হয়। মাঝে মাঝেই হল ছেড়ে ছেলেটের সাথে রাত কাটাত তিন্নি। একদিন আলীম ভাই মেয়েটাকে সাবধান করতে চাইলেন। কারন ছেলেটার বাবা ছিল বেশ প্রভাবশালী আর সেই সুযোগের ব্যাবহার করে যাচ্ছে ছেলেটা। আর তিন্নি ছেলেটার জীবনে প্রথম নয়, ছিল আরও অনেকে। কথাগুলো যেন তিন্নি গায়ে লেগে গেল। অন্যের ব্যাপারে নাকগলানোর অপরাধে সেদিন বুড়ো বয়েসে তিন্নির চড় খেয়েছিলেন আলীম ভাই। এরপর থেকে আর কোনদিন কাউকে আটকান নি। প্রায় আরও কয় মাস পর তিন্নি গভির রাতে আলিম ভাইয়ের সাথে দেখা করে। সেদিন তার চোখে পানি ছিল। _আলীম ভাই সেদিনের ঘটনার জন্যে আমি আপনার কাছে মাফ চাইতে এসেছি _কি হয়েছে মা? তুমি কাদছ কেন? _আলীম ভাই আমার পেটে বাচ্চা। হাসান তো এখন স্বীকার করছে না। আমার আর কারও কাছে যাওয়ার জায়গা নেই আলীম ভাই। মেয়েটা এ কথা বলে হলের দিকে হাটা দেয়। সকাল বেলা মেয়েটার ঝুলন্ত লাশ হলের পিছনে পাওয়া যায়। তারপর হাসান তার বাবার প্রভাব খাটিয়ে ঘটনাটা ধামাচাপা দেয়। এরপরই সে অস্ট্রেলিয়া চলে যায়। তারপর বছর পাচ কেটে গেছে। মাঝে মাঝে তিন্নি আসে। আলীম ভাইয়ের টেবিলের পাশে দাঁড়িয়ে এটা ওটা জিজ্ঞেস করে। তারপর হাওয়ায় মিশে যায়। আরও মাস খানেক পর।সেদিন রাত একটা। আজও তিন্নি এসেছে। আলীম ভাইকে আজ সে জিজ্ঞেস করছে একটা নতুন প্রস্ন। -আলীম ভাই, শুনলাম এবার রিইউনিয়নে হাসান আসবে? -হুম। শুনলাম হেই নাকি বিদেশে বড় চাকুরি পাইছে। কাল রাইতে গেস্টরুমে থাইক্কা দিনের বেলা অনুসঠানে যোগ দিবে। কথাগুলো শোনার পরপরই তিন্নি অদৃশ্য হয়ে যায়। আলীম ভাই অবাক হন'না। কারন তিন্নি এরকম প্রতিবারই দু'একটা কথা বলে হুট করেই অদৃশ্য হয়ে গেছে। পরদিন রাতে হাসান আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ আর ভবনগুলো সাড়া রাত ধরে সাজানো হয়। এস এম হলের ছাদে সারা রাত হাসান আর সব ব্যাচের সিনিয়রদের পার্টি চলে। সকাল বেলা পশ্চিমের পুকুরে হাসানের লাশ ভাসতে দেখা যায়। কীভাবে তার মৃত্যু হল কেউ বলতে পারে না। এরপর তিন্নিকে আর কোথাও কখনো কোথাও দেখা যায় নি। আর অদ্ভুতভাবে ঘটনাটা ঘটার পর রাতের বেলা আর কেউ ভুতের ভয়ে বের হয় না। আলীম ভাইয়ের থেকে ঘটনাটা শোনার পর আমাদের গভীর রাতের চা পানের অভ্যাস চিরজীবনের মত ছাড়তে হয়েছিল।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫৬৮ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • হৃদয়
    GJ Writer ৩ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    ভালো লাগল।গল্পেটা একটু বড় করে উপস্থাপন করতে পারতেন।তবে সমস্যা নাই,ধীরেধীরে সবটাই ঠিক হয়ে যাবে।আরও গল্প দিন,,,gjgjgj

  • মেহেদী হাসান
    User ৩ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    ঘটনাটা কি সত্যি??

  • Nobita Nobi
    User ৩ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    ভালোই

  • Rafi Orton
    Golpobuzz ৩ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    আপনি গল্পের আকারে সাজাতে পারেন নি। ন্যারেটিভ স্টোরি হিসেবে ঠিক আছে।