বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অনুভবে শুধু তুমি♥
part:14
writer:Tuba Rubaiyat
♦♦
দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে আরো কয়েকটা বছর।তোহার পড়ালেখা শেষ।তিনদিন পর তোহা-তীব্র আর রোহান-নাফিসার বিয়ে।রোহান আর নাফিসার বিয়ে পারিবারিক ভাবেই ঠিক হয়েছে।।তোহা-নাফিসার বিয়ে একদিনেই হবে।দুজনের বিয়ে তোহাদের বাসায় হবে।।আত্মিয় স্বজনে বাড়ি ভরপুর।
তীব্র মহাখুশি।এত অপেক্ষার পর তার মিষ্টিপাখিকে নিজের করে পেতে চলেছে সে।
তীব্রর মা রোহানের মাকে বলেছে যে তীব্র-রোহানের বিয়ে একসাথে তীব্রদের বাড়িতেই হবে।রোহানরা ও রাজি হয়ে যায়।।আর তাছাড়া তীব্র আর রোহান ছোটবেলায়ই ঠিক করে রেখেছিল দুই বেস্টফ্রেন্ড একসাথে বিয়ে করবে।।সেটা ও এখন পূরণ হয়ে গেল।
দুটো বিয়ে একসাথে হচ্ছে তাই প্রস্তুতি ও বেশি।পুরো বাড়ি আলোয় আলোয় ঝলমল করছে।।
তীব্র বসে মোবাইল চাপছে।আর রোহান তীব্রর পাশে গোমড়ামুখু হয়ে বসে দাত দিয়ে আংুলের নখ কাটছে।তীব্র জিজ্ঞেস করল,,
"চুপ করে এভাবে বসে আছিস কেন??আরে ভাই আমাদের বিয়ে কোথায় আনন্দে নাচানাচি করবি তা না করে চুপ করে বসে আছিস।।আমার তো এখন লাফাতে ইচ্ছে করছে।।"
"বসে আছি টেনশনে।"
"তোর আবার কিসের টেনশন??"
"নাকের,,,,,,,,"
"হোয়াট??নাকের টেনশন মানে??"
"মানে হলো ওই মিসাইলের সাথে আমাকে সারাজীবন কাটাতে হবে।"
"তো?এর সাথে নাকের কি সম্পর্ক?? "
রোহান উত্তর দিল,,
"এবার তো কিছুর থেকে কিছু হলেই ও আমার নিষ্পাপ নাকের উপর আক্রমণ চালাবে।"
"হা হা না রে ভাই!বিয়ে হলে আর ঘুসি মারবেনা।আদর করবে।"
"তুই ওই মেয়েকে চিনিসই না। ও বিয়ের পর আরো বেশি করে নাক ফাটাবে।কিছু বললে বলবে, আমার বরের নাক আমি ফাটাচ্ছি, তোমার কি?তুমি চুপ থাকো!!"
রোহানের কথা শুনে তীব্র হুহা করে হেসে দিলো।।তারপর বলল,,,,
"মামা মন খারাপ করিস না।মাঝে মাঝে বউয়ের কিল ঘুসি খাওয়াটা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।।"
তীব্রর পরামর্শ রোহানের পছন্দ হলো কিনা বোঝা গেল না।সে কোন কথা না বলে আবার নতুন উদ্যমে দাত দিয়ে নখ কাটতে শুরু করে দিয়েছে।।
♦♦
তোহা -তীব্র,রোহান -নাফিসার বিয়ে ঠিকঠাক মত হয়ে গেল।এবার বিদায়ের পালা।এই সময়টা প্রতিটা মেয়ের জীবনেই আসে।জীবনের আনন্দঘন মূহূর্ত গুলো যাদের সাথে কাটিয়েছে তাদের ছেড়ে যেতে হবে।এটাই নিয়তি।
তোহা আর নাফিসা ওদের পরিবারের সবাইকে ধরে কাঁদছে।।তীব্র তোহার হাত শক্ত করে ধরে রেখেছে।কান্নাকাটি পর্ব শেষ করে ওরা গাড়িতে গিয়ে বসল।।তীব্র সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসল।
তোহা এখনো কাঁদছে। আজকের পর থেকে এই বাড়িটা আর নিজের থাকবেনা।
তীব্র তোহার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,,,,,,
"মিষ্টিপাখি এত কাদছো কেন তুমি??মানুষ দেখলে ভাববে আমি তোমাকে চুরি করে নিয়ে এসেছি।"
তোহা তীব্রর কথা শুনে অবাক হয়ে তীব্রর দিকে তাকালো।।তোহাকে তাকাতে দেখে তীব্র বলল,,,,
"কি হলো চুপ হয়ে গেলে কেন??আরে আমি তো এমনি বললাম।।ভয় পেওনা। তুমি কাঁদো সমস্যা নেই।যদি কেউ বলে যে আমি তোমায় চুরি করেছি তাহলে আমি আমাদের কাবিন নামার কাগজ দেখিয়ে দেব
তাহলে আর সমস্যা হবেনা।তুমি কাঁদো। "
তোহা এবার রাগী চোখে তীব্রর দিকে তাকালো।সবাইকে ছেড়ে যাচ্ছে তাই ওর কতটা কষ্ট হচ্ছে ওর।আর এই ছেলেটা ওকে নিয়ে মজা উড়াচ্ছে।ইচ্ছে করছে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখতে।কিন্তু সেটাও পারছেনা।একমাত্র জামাই বলে কথা।
তীব্র:"কি হলো বউ কি ভাবছো??কাদা শেষ?? আমি তো ভেবেছি সারা রাস্তা তুমি কেদেই যাবে।আচ্ছা তুমি কি ভয় পেয়েছো নাকি??তুমি ভয় পেয়োনা তোমার ইচ্ছে হলে তুমি কাঁদো কেউ কিছুই বলবেনা।"
তোহা এবার রেগে গিয়ে তীব্রর পিঠে কয়েকটা কিল বসিয়ে দিলো।
"আহ মরে যাবো তো! কি করছো বউ?আল্লাহ এই কোন দাজ্জালের সাথে বিয়ে হলো গো আমার।সবাই ঠিকই বলে। বিয়ে হতে না হতে বউ আমার দাজ্জালনি হয়ে গেছে।আল্লাহ বাচাও আমাকে।কে কোথায় আছো!ও শশুরফাদার,শাশুরি মাদার, ও আম্মি তোমার ছেলেকে আর দেখতে পাবেনা।আমার হবু বাচ্চারা দেখে যা তোদের হবু মা তোদের হবু বাবাকে মেরে ফেলছে।"(তীব্র)
তোহার মুখ এবার অটোমেটিকলি হা হয়ে গেছে।ও মারা রেখে তীব্রর মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।বলে কি ছেলেটা।।ও তো মোটেও জোরে মারেনি যে তীব্র একেবারে মরে যাবে।।ও ভেবেই পাচ্ছেনা তীব্রর মত একটা শান্ত ছেলে কি করে আজ এতটা পাজি হয়ে গেল?
তোহা বলল,,,
"কি বলছো কি আমাকে??আমি কি দাজ্জালনি??"
"তা নয়ত কি?আমাকে কিভাবে মেরেছো,,একেতো তোমাকে দেখেই আমি মরছি আর এখন তো মারা শুরু করেছো,,,,
"তুমি প্লিজ চুপ করবে।আমার ভালো লাগছেনা।"
তীব্র মুচকি হেসে তোহার হাতে হাত রেখে শক্ত করে ধরে বসল।তারপর ফিসফিস করে বলল,
"তোমাকে কাদলে খুব কিউট লাগে।কোন মানুষকে কাঁদলে যে এত কিউট লাগে সেটা তো আগে জানতাম না!"
তোহা কিছু বলল না।চুপ করে রইল।
তীব্রদের বাড়িতে পৌছতেই সবাই ওদেরকে বরন করে নিল। তীব্রর মা এসে তোহাকে জড়িয়ে ধরল।তোহার কপালে চুমু দিয়ে বলল,,
"আমার মিষ্টি মেয়ে।"
তারপর নাফিসাকেও জড়িয়ে ধরে বললেন,,
"রোহান ও আমার ছেলে।আজ থেকে আমার দুই বউমা।। "
তীব্র পাশ থেকে বলল,,
"হুম এখন তো বৌমা ই সব কিছু।আমি তো কিছুই না।আমি তো এখন কুড়িয়ে পাওয়া ছেলে।"
"হিংসুটে ছেলে একটা।শোন এখন থেকে আমার বৌমা রা ই সব।।শোনো তোহা মা ও যদি তোমাকে বেশি জ্বালায় কিংবা কিছু বলে তাহলে সোজা আমাকে বলবে।।তারপর আমরা বউ শাশুড়ি মিলে শিক্ষা দেব। হুম!!"(তীব্রর মা)
"এতো দেখি শাশুড়ি বউ একজোট।"
তীব্র বলল।।
পাশ থেকে তীব্রর বাবা বলল,,,
"হ্যা রে বাবা এবার বুঝবি বউ কি জিনিস?"
তীব্রর মা বলল,,
"কি বললে তুমি??আমি কি??"
"দেখলি? এখনি রেগে আছে "(তীব্রর বাবা)
রোহান এগিয়ে এসে বলল,,,
"সমস্যা নেই আংকেল আমরা ও দেখিয়ে দেব যে আমরা ও কম নই,,,,,
নাফিসা রোহানের দিকে তাকাতেই রোহান নাক চেপে বলে উঠল,,,
"আজ এই বিয়ের দিন আমার নাকের উপর আক্রমণ করবে না বলে দিলাম কিন্তু,,,,,
রোহানের কথা শুনে সবাই হেসে উঠল।।।।।।।।
৯বছর পর,,,,
(চলবে)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...