বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অনুভবে শুধু তুমি♥
part:12
writer:Tuba Rubaiyat
♦♦
তোহা তীব্রকে ফোন করলো।।দুবার রিং হওয়ার পর তীব্র ফোন ধরে।
"হ্যালো তীব্র,,
"হ্যা বলো মিস্টিপাখি,,,
"কোথায় তুমি??এইদুইদিন কোথায় ছিলে??কোন ফোন দাওনি, আমার ফোন ও ধরোনি,,,,,কি হজয়েছে তোমার??"
"তুমি কি এসব বলতে ফোন করেছো??আমি বিজি ছিলাম,,,,এখন বলো কি হয়েছে??"
"আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আজ রাতে এংগেজ মেন্ট। "
"ওহ!ভালোই তো।"
"হোয়াটটট???ওহ মানে??আজ আমার এংগেজমেন্ট আর তুমি,,,,,,
"স্যরি কংগ্রাটস করতে ভুলে গেছি।।কংগ্রাচুলেশনস।। "
"আমি মজা করছিনা তীব্র।আমি সিরিয়াসলি বলছি।।"
"তুমি মজা কেন করতে যাবে??আমিও তো মজা করিনি।তোমার এংগেজমেন্টে আমি কংগ্রাটস করলাম।।"
"তুমি এভাবে কথা বলছো কেন??"(কেদে কেদে)
"উফফ কিভাবে বলবো??আমি এখন বিজি আছি।আর কিছু বলার থাকলে বলো আর না হলে ফোন রাখো!"(ধমকে)
"আমি কি করবো এখন??বাবাকে কিভাবে বোঝাবো??"
"সেটা তোমার ব্যাপার! বাবা-মা বিয়ে ঠিক করেছে বিয়ে করতে ইচ্ছে হলে করবে না ইচ্ছে হলে নেই।এসব আমাকে বলতে আসবে না।আমার এসবে কিছু এসে যায় না।।ফোন রাখো।"
"সত্যিই তোমার কিছু আসে যায়না তীব্র??"
হ্যালো,,হ্যালো তীব্র,,,,,,
তীব্র ফোন রেখে দিয়েছে।। তোহা মেঝেতে বসে পড়লো।সবকিছু তোহার কাছে একটা দুঃস্বপ্নের মতো লাগছে।যেন এখনি ঘুম ভেংগে গেলে দেখবে সব আগের মত।কি হচ্ছে এসব??তীব্র কেন এমন করছে??তীব্রতো এমন নয়!এ কি সেই তীব্র??নাহ! এ তো তোহার তীব্র নয়!ও মিষ্টিপাখির তীব্র হতেই পারেনা।যে ওর কন্ঠ না শুনলে ঘুমাতে পারেনা সে আজ বিরক্ত হয়ে ফোন কেটে দিবে??না তোহার ই কোন ভুল হচ্ছে।হয়তো তীব্র কোন প্রব্লেম এ আছে।ওর তীব্র ধোকাবাজ নয়।ওর তীব্র শুধু ওকেই ভালোবাসে। খুব ভালোবাসে।খুব।।
অন্যদিকে,
তোহার ফোন কেটে দিয়ে তীব্র বলল,,,,,
"সরি মিষ্টিপাখি।"
তারপর সামনে বসে থাকা দের উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
"কেন করছিস এসব??কেন করাচ্ছিস আমাকে দিয়ে এসব??ওর খুব কষ্ট হচ্ছে, আমি সহ্য করতে পারছিনা।।প্লিজ বন্ধ করে দে এসব!!প্লিজ,,,,,,,,,"
বিনিময়ে সামনে বসে থাকা ব্যক্তি রহস্যময় বাকা হাসলো।।তীব্রর দিকে ঝুকে বলল,,,,
"খেলা তো মাত্র শুরু।এখনি এত অধৈর্য হোস না।"
♦♦
"বাবা আসবো?"
তোহার বাবা তার রুমে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন।তোহার গলা শুনে পত্রিকা থেকে মুখ সরিয়ে হাসিমুখে বললেন,,,,,,,,,
"আরে মা আমার ঘরে আসতে অনুমতি নিচ্ছিস কেন??আয় ভেতরে আয়।বোস এখানে,,,,,,,,"
তোহা গিয়ে ওর বাবার পাশে বসলো।
ও কি বলবে বুঝতে পারছেনা।
"কিরে কিছু বলবি,মা??"
"না বাবা,,,,"
"সবকিছু তো তাড়াতাড়ি হয়ে গেল।ছেলেটাকে আমার খুব পছন্দ।খুব ভালো ছেলে।হি ইজ আ গোল্ডেন ওয়ান।আজকাল ওর মত ছেলে পাওয়াই যায়না।আমি সবসময় তোর জন্য এমন কাউকেই খুজছিলাম।আর ওদের ও তোকে ভীষন পছন্দ।আর তাছাড়া তোর আম্মি বলল তুই ও নাকি হ্যা বলে দিয়েছিস।তাই আমিও আর দ্বিমত করিনি।তবে আমি বলেছি যাই হোক তোর পড়ালেখা শেষ হওয়ার পর হবে।কিন্তু ওদের কথা হলো বিয়ে পরে হবে এখন অন্তত এংগেজমেন্ট টা হোক।।তোর কি কোন সমস্যা আছে মা??"
"না বাবা।আমার কোন প্রব্লেম নেই।আচ্ছা আমি এখন যাই!"
"আচ্ছা মা।"
তোহা ওর বাবার রুম থেকে বেরিয়ে আসে। ওর রুমে এসে খাটে বসে পরে।তীব্রর ফোন ও রিসিভ হচ্ছেনা।
"কি করবো আমি??বাবা-মা দুজনেই কত খুশি।এখন আমি কিছু করলে বাবা কষ্ট পাবে।হয়ত মানুষের কাছে অপমানিত ও হবে।তীব্রকে আমি অল্পকিছুদিন ধরে ভালোবাসি, কিন্ত আব্বু-আম্মিকে??তাদের তো আমি ছোটবেলা থেকেই ভালোবাসি।তাদেরকে কিভাবে কষ্ট দিবো?আমার উপর তো তাদের অধিকার সবচেয়ে বেশি।নাহ,পারবোনা আব্বু-আম্মিকে কষ্ট দিতে।আর তীব্র, তুমি এমন কেন করছো??সত্যিই কি আজ আমাকে কোন প্রয়োজন নেই তোমার??আমি তোমাকে বিশ্বাস করি তীব্র।তুমি যা করছো তার পেছনে নিশ্চয়ই কোন কারন আছে।।আজ আমি সবটা ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিলাম।ভাগ্যে যা হয় হবে।।তুমি আমার ভাগ্যে থাকো আর না থাকো তবে আমার অনুভবে শুধু তুমি♥আছো তীব্র।আর আমার অনুভবে শুধু তুমিই থাকবে।।"(মনে মনে)
বিকেলে,,
সারা বাড়ি মেতে আছে।সবাই খুব আনন্দ করছে।কিন্তু তোহার এসব কিছু ভালো লাগছেনা।তোহা খুব আশ্চর্য। কেউ তাকে পাত্তাই দিচ্ছেনা।যেন তোহা কেউ না।
"কি? বরের কথা ভাবা হচ্ছে আপি??"
লাবিবার কথায় তোহার ঘোর ভাংগে।লাবিবা তোহার মামাতো বোন।
"কি হলো মন খারাপ করে বসে আছো কেন??"(লাবিবা)
"এমনিতেই।।তোহা)
"এবার বুঝেছি!তুমি এখন মন খারাপের ভান করছো।তবে মনে মনে তো ঠিকই লাড্ডু ফুটছে,হুম??"
"লাবি তুই এখান থেকে যাবি??নাকি থাপড়িয়ে দাত ফেলে দেব।"
"তবে যাইহোক আমার জিজু তো বেষ্ট ।। আমার জামাই যদি এত কিউট হতো তাহলে তো আমি সারা বাড়ি নেচে বেড়াতাম।আর তুমি এখানে গোমড়ামুখু হয়ে বসে আছো।"
"আরে থাকতে দাও লাবিবা।এখন একটু শোক পালন করতে দাও।।কারন কিছুক্ষন পর তো আনন্দে সারা বাড়ি লাফাবে।"
পেছন থেকে নাফিসা বলতে বলতে ঘরে ঢুকলো।নাফিসার এই গা জ্বলানো কথা শুনে তোহার মাথা আরো গরম হয়ে গেল।।তোহা বলল,,
"নাফিসা!তুই এখানে কেন এসেছিস??বের হ এখান থেকে,,,,,"
"এখনি তাড়িয়ে দিচ্ছিস আমাকে??পরে তো মনেই রাখবি না।"
"প্লিজ যা এখান থেকে। আমার এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা।"
নাফিসা তোহার সামনে কতগুলো ব্যাগ এনে রাখলো।।
"পার্লারের লোক এখনি আসবে।এগুলো তোর ড্রেস।এগুলো পড়ে রেডি হয়ে নিস।"
"এগুলো সরা আমার সামনে থেকে,,,,।"
নাফিসা মুচকি মুচকি হাসছে।তা দেখে তোহা বলল,,
"এখানে হাসির কি হলো??"
"আমি তো হাসিনি!!হয়ত আমার ভুতে হেসেছে।"
"তুই যা এখান থেকে।"
নাফিসা অবস্থা বেগতিক দেখে বেরিয়ে গেল।
একটুপর পার্লার এর মেয়েরা তোহাকে সাজাতে চলে এল।তোহার ইচ্ছে করছে মেয়ে দুটোকে ঘর থেকে বের করে দিতে।।কিন্তু সেটা ও পারছেনা।ওরা নিজেদের মত করে তোহাকে সাজিয়ে দিলো।তোহা নিজের দিকে তাকিয়ে নিজে অবাক।তোহাকে নেভি ব্লু লেহেঙ্গা পড়ানো হয়েছে।তোহার যে টাইপের লেহেঙ্গা পছন্দ সে রকম লেহেঙ্গা। এমনকি তোহাকেও ওর পছন্দ মতই সাজানো হয়েছে।।কিন্তু ওর এই ইচ্ছে গুলোর কথা তো শুধুমাত্র একজনই জানতো।।এসব কি সত্যিই কাকতালীয়??
পার্টি শুরু হয়ে গেছে।।ছেলেপক্ষের লোকেরা ও প্রায় এসে পড়েছে।তোহা সেখানে অভ্রকে দেখে খুব অবাক হলো।অভ্র হলো তীব্রর ছোটভাই।তারপর আবার ভাবলো হয়তো এমনিতেই এসেছে।কিন্তু তীব্রর আরো কয়েকজন ফ্রেন্ড কে দেখে তোহার মনে সন্দেহ হয়।তোহা ভাবতে লাগল,,,
"ওরা এখানে কি করে এল??আর আমার বিয়ে কার সাথেই বা হচ্ছে সেটাও তো জানিনা।এমন নয়তো যে বিয়েটা তীব্রর সাথেই ঠিক হয়েছে।কিন্তু সেটা কি করে সম্ভব??তা হলে তীব্র কি আমাকে বলত না??উফফ কিসসু মাথায় ঢুকছেনা!!"
নাফিসা এসে তোহাকে স্টেজে নিয়ে গেল।স্টেজে যেতেই তোহার সামনে ভেসে উঠলো সেই চিরচেনা মুখ!সেই চিরচেনা হাসি!!!
(চলবে)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...