বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
লেখক:রোমান্টিক হৃদয়[MH2]
তরীদের বাসা থেকে বের হয়ে দশ মিনিট হাটার পর নিজের বাসায় পৌছে গেল আকাশ।সে বুঝল, নিয়তির টানে হারিয়ে যাওয়া প্রিয় জিনিস সে আজ পেয়েছে। এবার যদিও তরী তার পাশের বাসায় নেই, দূরের বাসায় থাকে, কিন্তু সেই দূরত্বটাও তেমন বেশি দূরত্ব নয়। বাসায় এসে ফ্রেস হলো আকাশ। বারবার তরীর কথা মনে পরছে ওর।চেহারাটাকে ও মনের মাঝে ধরে রেখেছে,যার ফলে বারবার মনে পরছে তরীর কথা।আগে তরী হালকা মোটা ছিল,কিন্তু এখন একদম স্লীম হয়ে গেছে।আর আগের চেয়েও তার হাসিতে আর তার চেহারায় মায়া অনেক বেড়ে গেছে।
তরীর মাঝে আগের সেই চঞ্চল স্বভাবটা আজ আবার ফিরে এসেছে। কারণ প্রিয় মানুষটাকে ফিরে পেয়েছে আজ। আজ সে খুব খুশি। রিহার সাথেও অনেকদিন পর আবার দুষ্টুমি করতে লাগল।তার বারবার আকাশের সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে,তাই দেরী না করে ফেসবুকে ঢুকল তরী।কিন্তু আকাশ ফেসবুকে নাই। বেশ কয়েকটা মেসেজ করল ও,কিন্তু রিপ্লাই পাচ্ছে না।কারণ আকাশ এখনও অনলাইনে নেই। তাই তরী আকাশের প্রোফাইল দেখতে লাগল। আকাশ অনেক সুন্দর সুন্দর কিছু কবিতা পোস্ট করেছিল, সেগুলো পড়তে থাকল তরী।
আকাশ রাতের খাবারটা রান্না করার পর আর দেরী না করে ফেসবুকে ঢুকল।
"একি!!! তরী তো অনেকগুলো মেসেজ করে রেখেছে,আমি তো তখন ছিলামই না।মনে হয় ও রাগ করে ফেলেছে আমার উপর।যা অভিমাণী ওই মেয়ে."
এটা ভাবতে ভাবতে মেসেজের রিপ্লাই করতে লাগল ও।মেসেঞ্জারে প্রচুর মেসেজ পাঠাচ্ছে ও।কিন্তু তরী রিপ্লাই করছে না,কিন্তু তরী তো অনলাইনেই আছে।নোটিফিকেশন চেক করতে গিয়ে দেখল তার প্রতিটা পোস্টে তরী লাইক দিচ্ছে,কমেন্ট করছে। টানা দশ মিনিট পর তরী রিপ্লাই করল।
তরী: এই আকাশ,এতো সুন্দর কবিতা তুমি কী করে লিখ???
আকাশ: আগে বল,মেসেজের রিপ্লাই দাও নি কেন???
তরী:আমিও তো প্রথমে মেসেজ করলাম,তুমি রিপ্লাই করো নি। তারপর কবিতা পড়তে পড়তে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম তাই রিপ্লাই করতে দেরী হলো।
আকাশ: হুমম,সরি।তখন ছিলাম না, রান্না করছিলাম।
তরী:রান্না শেষ হয়েছে???
আকাশ:হ্যা,শেষ।
এরপর অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলতে থাকে ওর।একজন আরেকজনকে কতোটা মিস করেছে, কতো কী হয়েছে এই কয়েকবছরে।এইসব নিয়ে কথা বলতে লাগল। এভাবে রাতের অনেকটা সময় কাটল ওদের। আসলে আমরা মানুষরা যখন কোনো একটা প্রিয় জিনিস হারিয়ে ফেলি,তখন মনে হয় দুঃখের সমুদ্রে ভাসছি,আর সব কিছুতেই কেমন যেন খারাপ লাগে। আবার যখন প্রিয় একটা জিনিস ফিরে পাই তখন কিন্তু মনে হয় খুব সুখে আছি আমরা, মনের সবটা জায়গায় খুশিটা ছড়িয়ে পড়ে তখন। সব কিছু ভালো লাগতে থাকে তখন। আরেকটা বিষয় প্রায় সবার ক্ষেত্রেই হয়, তা হলো প্রিয় মানুষটার সবকিছুই ভালো লাগে।একটা সামান্য কথাকেও অসাধারণ মনে হতে থাকে,যা মানব মনের একটা গভীর দিক,যা সবার জন্য থাকে না,কেবল প্রিয় মানুষটার জন্যই থাকে। আকাশ আর তরীর ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনি হয়েছে।
নিজ নিজ জব শেষে যখন তরীর বাবা মা বাসায় আসল,দেখল তরী আজ খুব বেশি চঞ্চল এবং হাসিখুশি হয়ে আছে,যা তাদের নজর এড়ালো না। তারা তার চাঞ্চল্যের কারণ জানতে চাইল,,,
মিঃ রফিক: তরী মা,আজ এতো খুশি আর চঞ্চল হওয়ার কারণ কী??? আর ফোনে কার সাথে কথা বলছ???
তরীর পক্ষ থেকে রিহা জবাব দিল,
রিহা:আব্বু, আজ আকাশ ভাইয়া এসেছিল বাসায়, আপুর ওনার সাথে কথা বলছিল।
মিসেস মিলি: তাই তো বলি আজ এতো খুশি কেন ও।তা কী করে দেখা হলো তোদের???
তরী তখন সব কথাই খোলে বলল।তরীর বাবা মা আকাশকে নিজের ছেলের মতো দেখে,তাই খুব খুশি হলেন।ছুটির দিনে তাদের সাথে দেখা করতে বললেন।
অন্যদিকে আকাশ রাতে মা বাবার সাথে কথা বলছিল,আকাশের হাসি খুশি কথাবার্তা তার মায়ের নজর এড়ালো না। আকাশের মা মিসেস নিলুফার তার ছেলেকে খুব ভালো করে চিনেন, তার এমন হাসিখুশির পিছনে কোনো কারণ যে আছে তা বুঝতে তার সমস্যা হলো না।কারণ আকাশ তরী চলে যাওয়ার পর থেকেই তেমন একটা হাসে না।
নিলুফার: আকাশ,আজ এতো খুশি কেন??? কী হয়েছে???
আকাশ: সবাই সত্যিই বলে,মায়ের কাছ থেকে কোনোকিছু লুকানো যায় না।
তারপর সবকিছু বলল আকাশ। তার বাবা মা ও নিজের ছেলের অবস্থার পরিবর্তন দেখে খুব খুশি।
পরেরদিন,,,
পরেরদিন বিশ্ববিদ্যালয় এ ক্যাম্পাসে তরীর সাথে দেখা করল আকাশ। তরীর বান্ধবী এলিসাও সেখানে ছিল।
আকাশ:হাই তরী।কেমন আছ??? এই মেয়ে কি তোমার বান্ধবী নাকি???
তরী: আমি ভালো আছি।দাড়াও পরিচয় করে দিচ্ছি।
তারপর পরিচয় করিয়ে দিল তরী,,,
তরী: Elisa, He is my friend,Akash.And Akash, This is my friend Elisa.
Elisa:Hi Akash,Nice to meet you
আকাশ: Hi Elisa,Nice to meet you,too.
Elisa:Turi, Is he just a friend or your boyfriend???
তরী:No,We are just friend.
Elisa:.Hmm.You talk,my boyfriend called me.I have to go.
তরী: Okay, bye
আকাশ: তরী,চলো ক্লাসে যেতে যেতে কথা বলতে থাকি।
তরী: হুমম।
আকাশ: তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে???
তরী: না,আমার বয়ফ্রেন্ড থাকলে কি আমি তোমার সাথে ঘুরতে পারতাম???তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে???
আকাশ: না, কখনও ওইসব করি নি।
তরী:তা এই কয় বছরে কোনো বন্ধু তো বানিয়েছ নাকি???
আকাশ: না,তুমি চলে যাওয়ার পরে আর কোনো ফ্রেন্ড হয় নি আমার।আচ্ছা তরী তুমি কি আমায়,,,???
তরী: তুমি কি আমায়,,, তারপর কী???
আকাশ: মজা করে বললাম।হি হি হি
তরী: হি হি হি
তারপর তারা ক্লাসে চলে গেল। আকাশ বলতে গিয়েও বলছে না তার ভালোবাসার কথা।কারণ সে বুঝতে পারছে না তরী কথাটা কেমন ভাবে নিবে।আর এলিসার সাথে পরিচয়ের সময়ও জাস্ট ফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ওকে।ওর মনে হচ্ছে তরী ওকে জাস্ট ফ্রেন্ড হিসেবেই দেখতে চায়।তার ভালোবাসার কথা জানলে হয়তো বন্ধুত্বটাও নষ্ট হয়ে যাবে।তবে সে অবশ্যই বলবে,তবে একটু সময় নেওয়ার পর অবশ্যই বলবে,তাকে বলতেই হবে।
তরী কিন্তু মন থেকে প্রচুর ভালোবাসে আকাশকে,কিন্তু বাইরে এমন বিহেভ করছে যেন মনে হয় সে ভালোবাসা নিয়ে কিছু ভাবছে না।আসলে সে চায় আকাশ এটার দ্বারা প্রভাবিত হোক আর তাকে প্রপোজ করুক। আকাশ যে বলছে,তুমি কি আমায়,,,??? তারপর কী আছে সেটা তরী খুব ভালো করেই জানে।কিন্তু নিজ থেকে কোনো মেয়েই তার ভালোবাসার কথা বলে না।তরীও বলবে না,এটাই তার সিদ্ধান্ত।দেখা যাক আকাশ কবে তার ভালোবাসার কথাটা বলে।
ক্লাস শেষে যখন তারা বের হলো আকাশ মেঘলা হয়ে আছে।ইংল্যান্ডে আকাশ প্রায় সময়ই মেঘলা থাকে।তবে আজকে মনে হয় বৃষ্টি নামবে।একটু পথ একসাথে দুজন হাটার পরই বৃষ্টি নামল। আকাশ চাইলো কোনো জায়গায় থামতে,কিন্তু তরীর ইচ্ছা সে বৃষ্টিতে ভিজবে। আকাশের মনে হচ্ছে সব মেয়েরাই মনে হয় বৃষ্টিতে ভিজতে ভালোবাসে, কারণ সে সব মেয়ে বলতে শুধু তরীকে বোঝে,আর কোনো মেয়ের সম্পর্কে জানে না ও। আর যেহেতু তরী বৃষ্টিতে ভিজতে চায়,তার মানে সব মেয়েরাই বৃষ্টিতে ভিজতে পছন্দ করে। তরীর সাথে একসাথে বৃষ্টিতে ভিজার সুযোগ সে হারাতে চায় না।তাই দুইজন একসাথে বৃষ্টিতে ভিজতে লাগল। বৃষ্টি থামার আগ পর্যন্ত দুইজন একসাথে বৃষ্টিতে ভিজল।
রাতে আকাশের সাথে ফোনে কথা বলার সময় তরী একটু অস্বাভাবিকতা লক্ষ করল।আকাশের গলাটা কেমন যেন ভারী ভারী লাগছে আর মাঝেমাঝে কথা কেপে উঠছে।
তরী: এই আকাশ,তোমার কী হয়েছে???গলাটা এমন লাগছে কেন???
আকাশ: আরে কিছু হয় নি।একটু ঠান্ডা লেগেছে।
তরী: মিথ্যা বলো না আকাশ।তোমার কিছু একটা নিশ্চয়ই হয়েছে।
বলেই ফোন কেটে দিল তরী।আকাশ কয়েকবার কল দিল।কিন্তু তরী ফোন উঠাচ্ছে না।দরজায় কারও নক করার শব্দ হলো, আকাশ অলস ভঙ্গীতে দরজা খুলল।কে এসেছে দেখতেই চমকে উঠল ও। দরজায় তরী দাড়িয়ে আছে।
তরী: ফোনে তো মিথ্যা বলতে পারছ। দেখি তোমার কী হয়েছে।
তরী আকাশের কপালে হাত দিয়েই বলল,
তরী: একি তোমার এতো জ্বর চলে এসেছে??? ওইসময় বৃষ্টিতে ভিজার ফল।আরে তুমি বলবে তো যে তোমার জ্বর চলে আসে।
আকাশ: আরে সামান্যই জ্বর।এতো অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তরী: সিরিয়াস হবো না বলছ।দাড়াও থার্মোমিটার দিয়ে মেপে দেখি কতো তাপ।কোথায় রেখেছ ওইটা???
আকাশ: টেবিলে আছে।
তরী আকাশের শরীরের তাপ মাপল।
তরী: ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট জ্বর।আর বলছ সামান্য।এ বাসায় কেউ নেই সাহায্য করার চলো, আমাদের বাসায় চলো।
আকাশ: আরে অযথা তোমার বাবা মা কে বিরক্ত করার কোনো মানে হয় নাকি।
তরী: আমি যা বলছি তাই হবে।চলো।
দরজায় তালা লাগিয়ে আকাশকে তাদের বাসায় নিয়ে গেল তরী।
মিঃ রফিক আর মিসেস মিলি বসে টিভি দেখছিলেন।
আকাশ: আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল আন্টি।কেমন আছেন???
রফিক:ওয়ালাইকুুম সালাম। আরে আকাশ।কতোদিন পরে দেখলাম তোমায়।ভালো আছি।তোমায় এমন দেখাচ্চে কেন???
আকাশ: আরে কিছু হয় নি আঙ্কেল।তরী সামান্য জ্বরের কারণেই এখানে নিয়ে চলে আসল আমায়।
তরী: সামান্য জ্বর নয়,আব্বু ওর ১০৩ ডিগ্রি জ্বর।কপাল পুড়ে যাচ্ছে ওর। ওকে আমাদের এখানে নিয়ে এসেছি ওর বাসায় কেউ নেই।
মিসেস মিলি: ভালোই করেছিস।তোর রুমে নিয়ে যা।
তরী আকাশকে নিজের রুমে নিয়ে আসল।পানি এনে মাথায় ঢালল ওর। তারপর জলপট্টি দিয়ে দিল কপালে।রাতের খাবারও খাইয়ে দিল তরী। আকাশের কপালে জলপট্টি বদল করে দিতে লাগল তরী।আকাশ ঘুমিয়ে গেল,কিন্তু সারারাত তরী জেগে রইল। সকাল বেলা গিয়ে ঘুমাতে গেল তরী।
এভাবে টানা তিনদিন তরীর সেবায় সুস্থ হয়ে গেল আকাশ। আকাশ তরীর প্রতি আরও দুর্বল হয়ে গেল। তার ভালোবাসার কথা তরীকে এবার সে বলেই দিবে ঠিক করল।
[কেমন লাগল???সরি,এ পর্বটা দিতে দেরী হয়ে গেল। আর কোনো ভুল নজরে আসলে বলবেন]
বি.দ্র.: আমার প্রোফাইলের সবগুলো গল্প আমার নিজের হাতের লেখা। তাই দয়া করে কপি করবেন না।
আল বিদা,,,
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
হৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেSushMitA
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেShikha
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বেজাহিদ হোসাইন (জয়)
User ৩ বছর, ৮ মাস পুর্বে