বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
উপন্যাসের শেষ অংশ
"ক্রাইম" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান হৃদয় (০ পয়েন্ট)
X
লেখক: কাল্পনিক হৃদয়[MH2]
" হ্যালো,মোহন, আমার বাড়িতে এখনি একটু আসতে পারবি???"
" হ্যা,আসতে পারব।কিন্তু কোনো দরকার ছাড়া তো তুই আমায় ডাকিস না।কীরে পরিমল,আজ কোনো দরকার পরল নাকি???"
" হ্যা রে ভাই।একটা বিষয়ে সাহায্য দরকার।কিন্তু দরকার ছাড়া ডাকি না এটা কী করে বললি???"
" আরে মজা করে বললাম।এখন বল কীসের জন্য এতো তাড়া তোর???"
"তুই তো জানিস,আমি একটা ক্রাইম আর থ্রিলার মিসিয়ে একটা উপন্যাস লিখছি।সেটার বিষয়ে একটু দরকার। কোনো কাজ না থাকলে চলে আয়।"
" আচ্ছা,আসছি।"
বলে ফোনটা রেখে দিল মোহনলাল বাবু।তিনি একজন ক্রাইম রিপোর্টার এবং এরকম থ্রিলার, ক্রাইম, রহস্য এসব নিয়ে গল্প উপন্যাস লিখেন।মোটামোটি নাম ডাকও হয়েছে তার গত দুই বছরে। এই বছর তার একটা উপন্যাস " খুনে ডাকাত" মুক্তি পেয়েছে।বেশ ভালো সাড়া ফেলেছে উপন্যাসটা সব বয়সী পাঠকদের কাছে।তার আশা আছে,একদিন নামকড়া বিখ্যাত সাহিত্যিক হবেন তিনি।
ফোনটা যিনি করেছেন মানে পরিমল বাবু বহুকাল আগে থেকেই সাহিত্যিক।মোহনলাল বাবুর ছোট বেলার বন্ধু।এক পাড়াতেই থাকেন তারা। কলকাতা শহরে একই স্কুলে পড়েছেন তারা।আশ্চর্যরকমের মিল দুজনের মাঝে,দুজনেরই সাহিত্য নিয়ে অনেক টান।কোনো লেখা লিখতে গিয়ে কোথাও আটকে গেলে একজন অন্যজনের সাহায্য নেন।মোহনলাল এর ভালোই লাগে বন্ধুকে সাহায্য করতে,আরেকটা জিনিস ভালো লাগে। তার বন্ধু পরিমল বাবু তার সব লেখায় বাস্তবতার চিত্র ফুটিয়ে তোলেন,সকল অনুভূতি এরকম ভাবে ফুটিয়ে তোলেন যা একদম সত্য বলে মনে হয়।মোহনলাল বাবুর কাছে এ বিষয়টা ভালো লাগে।
মোহনলাল বাবু একটা লেখা লিখছিলেন।সেটা রেখে দিলেন, চেয়ারটা টেবিলের সাথে চেপে রেখে ঘর হতে বের হলেন।দরজায় তালা লাগিয়ে বের হলেন।একলা মানুষ। পড়াশোনায় ব্যাস্ত ওনি,বিয়েটা এখনও করা হয় নি ওনার।বন্ধুর বাড়ি রওনা হলেন।পরিমল বাবুর দরজায় এসে কলিং বেল বাজালেন।
দরজার কাছেই বসে ছিলেন পরিমল বাবু, বেল বাজার সাথে সাথেই দরজা খোলে দিলেন।
" মোহন ঘরে আয়।সোফাটায় বস।চা বানিয়ে নিয়ে আসি।"
" আজ তুই চা বানাবি কেন??? তোর কাজের লোক কই???"
" কাজের লোক এক সপ্তাহের ছুটি নিয়েছে।আমিই বানিয়ে আনছি।তুই বোস।"
" আচ্ছা যা"
পরিমল বাবু চা বানাতে গেলেন।মোহন বাবু বসে থাকলেন না।বুকসেল্ফ থেকে শরৎ চন্দ্রের " রামের সুমতি প্রথম খন্ড" বইটা পড়তে লাগলেন। কয়েকটা পৃষ্ঠা পড়তে পড়তেই চা নিয়ে হাজির হলেন পরিমল বাবু।
" মোহন,নে চা নে।জরুরি কথা আছে।"
" কী কথা???"
" জানিস তো, আমি এতোকাল অ্যাডভেঞ্চার, রোমান্টিক, সামাজিক সব উপন্যাসই লিখেছি। এখন তোর মতো ক্রাইম আর থ্রিলার মিশিয়ে উপন্যাস লিখছি। এটার বিষয়ে সাহায্য দরকার।"
" আমার প্রিয় বিষয়টা নিয়ে যখন সাহায্য করার বিষয় আসল,অবশ্যই সাহায্য করব।কোন জায়গায় আটকে গেছিস???"
"আমার উপন্যাসটায় যে প্রধান চরিত্র, সে একটা সিরিয়াল কিলার। সে এখন তার প্রতিপক্ষ এক পুলিশ অফিসারকে তার ঘরে ডেকে এনেছে। চায়ের কাপ দিয়ে চা বানিয়ে দিল, পুলিশটাকে।চায়ে অজ্ঞান করার ঔষুধ মিশানো ছিল,হালকা করে।কিছুক্ষন পর পুলিশটা অজ্ঞান হলো। এখন ওই লোকটা ছুড়ি বসাবে পুলিশটার পেটে। তাহলে অজ্ঞান লোকটা কী করে মরবে???"
" কী করে মরবে মানে কী??? ছুড়ি ঢুকলে তো এমনিতেই মরে যাবে।"
" আমার কথাটা সেটা নয়। আমার কথাটা হলো,প্রায় সব উপন্যাসেই বা সব জায়গায় সজ্ঞানে মানুষ মরার ফিলিংস বলা হয়।যেমন ধরফর করে,বা গোঙ্গাতে গোঙ্গাতে, বা হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ার কথাও বলে।কিন্তু অজ্ঞান লোকটা মরবে কী করে???"
" পরিমল,তুই এই জায়গায় লিখতে পারিস লোকটা খানিকটা ধরফর করে মারা গেল।"
" আরে তুই বাস্তবতাটাই বুঝছিস না।বস্তবতাটায় যা হবে তা তো লিখতে হবে।কারণ তুই বলছিস ধরফর করে মরল।কিন্তু কতোটা ধরফর করবে, নাকি হালকা গোঙ্গানোও আসবে, নাকি অজ্ঞান অবস্থায় উঠে দাড়াবে তাও তো বলতে হবে।"
" আরে ভাই,তুই বোঝার চেষ্টা কর।পাঠক তো শুধু পড়বে,আর খানিকটা বিবেচনা করবে।তুই বরং নিজের কল্পনা থেকে লিখে ফেল।"
" না, কল্পনা থেকে লিখলে সবটা বাস্তব হবে না।"
" কী প্যাঁচাল।ভাই বাস্তবতাটা তোলতে হলে তো কাওকে খুন করে দেখতে হবে।"
" দরকার হলে সেটাও করব।"
" মানে কী বলিস??? তুই খুন করবি??? তাও একটা সামান্য উপন্যাসের জন্য।"
" উপন্যাসটা আমার কাছে সামান্য না।অনেক বড় কিছু।"
" ভাই,আমার মনে হয় তোর মানসিক সমস্যা হচ্ছে।কিছুদিন লেখালেখি থেকে দূরে থাক, ঠিক হয়ে যাবে।"
"আমার কিছু হয় নি।আমি ঠিক আছি।তুই তারমানে বলতে পারলি না কিরকম ফিলিংস হবে???"
বলে পরিমল বাবু খানিকটা ভাবতে লাগলেন।
" দেখ,আমি তো আমার অনুভূতি দিয়ে সাহায্য করলাম।এর চেয়ে ভালো করে কী করে বলব???"
" তুই বলতে পারিস নি,তবে বলবি।একটু পর বলবি।"
" একটু পর বলব,মানে কী??? আর আমার মাথাটায় প্রচন্ড ব্যাথা করছে।কী হলো বুঝছি না."
"আমি বললাম তো তুই বলবি,তোর চায়ে আমি অজ্ঞান করার ঔষুধটা মিশিয়েছি। এরপর দেখি উপায় না পেলে তোকেই হয়তো,,,"
" কী আজেবাজে বকছিস। আমি তোর বাল্যবন্ধু,আমায় মারবি কেন???"
" কী করব ভাই??? আমায় নেশায় পেয়েছে।আমার তো তোকে খুন করতেই হবে।উৎসর্গে না হয় তোর নাম দিয়ে দিব।কারণ তোর কারণেই তো উপন্যাসটা সুন্দর করে লেখা হবে।চিন্তা করিস না,তুই কী করে মরলি তা আমার উপন্যাসে ভালো করে ফুটিয়ে তোলব।"
"তোর পাগলামি বন্ধ কর।আমি চললাম,,,"
বলে সোফা থেকে উঠতে গেলেন মোহনলাল বাবু।কিন্তু শরীর কাপছে তার,সোফাটায় পড়ে গেলেন।শরীরটা প্রচন্ত ঘামছে তার।মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।নড়তেও পারছেন না তিনি।সামনে বসে পরিমল বাবু তার দিকে তাকিয়ে আছে, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মোহনলালের কী হচ্ছে সব দেখছে।মোহনলাল বাবুর চোখের মনি দুটো ছোট হয়ে আসতে লাগল।মানে এখনি অজ্ঞান হবে।আর সময় নষ্ট করল না পরীমল বাবু,হাতে একটা ছুড়ি তোলে হৃৎপিন্ড লক্ষ্য করে ছুড়িটা গেথে দিলেন,যেমন করে উপন্যাসে পুলিশের বুকে ছুড়ি গাথা হবে ঠিক তেমন করে মারলেন ছুড়িটা। শকুনের মতো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মোহনলাল বাবুর কী হচ্ছে সব দেখছেন তিনি।প্রতিটা ধরফর করা সব তিনি মাথায় গেথে নিচ্ছেন,তাকে তো দেখতে হবে,দেখেই যেতে হবে।কারণ এটার উপরই নির্ভর করছে তার উপন্যাসের শেষ অংশ।
সমাপ্ত,,,
[কেমন লাগল??? ঘটনাটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক।আমার লেখা সর্বপ্রথম ক্রাইম বিষয়ক গল্প এটা।তাই ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]
বি.দ্র.: আমি সর্বপ্রথম নিজের হাতে ক্রাইম বিষয়ে লিখলাম।লেখাটা লিখতে সময়, মেধা শ্রম ব্যায় হয়েছে।তাই দয়া করে আমার নাম ছাড়া কপি করবেন না।
আল বিদা,,,
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now