বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
স্নেহার সাথে এস.এম.এস এ কথা বলার পর আবার স্নেহাকে অনেকদিন দেখতে পাই নি।এর মধ্যে আমাদের ফাস্ট ইয়ারের অর্ধবার্ষিক পরিক্ষা এসে গেছে।যেহুতু স্নেহা কলেজে খুব কম আসছে তাই কোন বিষয়ে কত অধ্যায় পর্যন্ত পরিক্ষা হবে তা স্নেহা জানতো না তাই আমি সব এস.এম.এস এ জানিয়ে দেই স্নেহা কে।তারপর দেখতে দেখতে পরিক্ষা এসে গেল।পরিক্ষার সময় আবার অনেকদিন পর স্নেহার সাথে দেখা হলো।পরিক্ষা শুরু হওয়ার আগে আমরা আড্ডা দিতাম তারপর পরিক্ষার সময় যে যার রুমে চলে যেতাম।পরিক্ষার পরেও আবার দেখা হতো কথা হতো।এই পরিক্ষার মধ্যেই আবার আমি নতুন একটা ফোন কিনি।দুইদিন এই ফোন আমি পরিক্ষার মধ্যে নিয়ে গেছিলাম।আর পরিক্ষার সময় স্নেহার ব্যাগে আমি ফোন রেখে দেই।তারপর পরিক্ষা শেষে ফোন আবার নিয়ে নিতাম।সত্যি বলতে পরিক্ষার মধ্যে আমাদের দিনগুলা ভালই কেটেছে কারণ এই প্রথম প্রতিদিন স্নেহার সাথে দেখা হচ্ছিল।এই পরিক্ষার মধ্যে একটা চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে।কোন একটা পরিক্ষার শেষে আমি, স্নেহা, আমার আরো দুই বান্ধবী,একটা বন্ধু আমরা নিচে দাঁড়িয়ে আছি।এর মধ্যে একটা বখাটে ছেলে এসে স্নেহাকে প্রপোস করে।স্নেহা আসলে অনেক সুন্দরী তাই ওর ক্রাস লিস্ট কম ছিল না।কিন্তু ওহ কাউকে পাত্তা দিত না।তো ছেলেটি প্রপোস করাতে স্নেহা রাজি হয় না এতে ছেলেটা বলে রাজি হলে না তো তাইলে তোমার কলেজ আসা আমি বার করে দিবো।এই কথা শোনার পর স্নেহা সেই রেগে যায়।কিছুটা কান্না কান্না ভাবে বলে যে তুই কে রে আমার কলেজ এ আসতে বাধা দেওয়ার।এই কথা শোনার পর ছেলেটা দমে যায় আর অনেক ভিড় ও জমে গিয়েছিল তখন।তারপর ছেলেটা চলে যায় স্নেহার সামনে থেকে।আর এই ঘটনা আমি প্রথমে খেয়াল করি নি কারণ আমি অন্যদিকে ঘুরে আমার বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম।তারপর স্নেহার চেচামেচিতে তারপর সব বুঝতে পারি।তো ছেলেটা চলে যাওয়ার পর স্নেহাও কান্না কান্না ভাব হয়ে গেছে আবার মন খারাপ করে আছে তাই আমরা ওকে সান্তনা দিতে থাকি।
আমি বলি দোস্ত এসব বখাটে ছেলের কথা মাথায় নিস না যা হইছে ভূলে যায়।
আমার এই কথা শোনার পর স্নেহা রাগের মাথায় আমায় একটা থাপ্পর মারে ভাগ্য ভালো থাপ্পর টা আমার মাথায় গিয়ে পড়ে যদি গালে গিয়ে পড়তো তাইলে আমার সবার সামনে মান সম্মান যাইতো।পরে কোনো এক সময় এই ঘটনার কথা স্নেহাকে মনে করিয়ে দিলে স্নেহা হেসে হেসে বলে আরেহ দোস্ত তোরে আমি মারতে পারি ওটা রাগের মাথায় একটু হালকা হাত চলে গেছিলো তোর মাথায়।যাই হোক এই ঘটনার পর যেদিন আমাদের শেষ পরিক্ষা ছিল ওইদিন পরিক্ষা শেষ করে স্নেহার রুমের কাছে গিয়ে দেখি স্নেহা নাই।আমার এক বান্ধবী স্নেহার রুমে পরিক্ষা দিচ্ছিল তার থেকে জানতে পারি যে স্নেহা চলে গেছে পরিক্ষা দিয়ে।এই কথা শুনে আমি অনেক কষ্ট পাই।প্রতিদিন পরিক্ষা দিয়ে ওর সাথে দেখা হয় আর আজ আমায় না বলে স্নেহা চলে গেল। তারপর ওইদিন রাতে এস.এম.এস এ স্নেহার সাথে কথা হলে স্নেহা বলে যে একটা জরুরি কাজে ওকে বাসায় চলে যেতে হয়।তাই আমায় বলে যেতে পারে নি।এই জন্য স্নেহা আমায় সরিও বলে।তারপর ওইদিন স্নেহার সাথে আরো কিছুক্ষণ কথা হয়।এরপর আরো কয়েকদিন চলে যায় এরমধ্যে আর স্নেহার সাথে দেখা হয় নি।আরো কয়েকদিন পর একদিন কলেজ এ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন খেয়াল করি একটা মধ্য বয়সি লোক আর একটা মেয়ে রোদে দাঁড়িয়ে আছি।বলে রাখা ভালো তখন শীত কাল চলছিল।তো মেয়েটা জিন্স প্যান্ট তারপর একটা দামী জ্যাকেট পরেছিল দেখতে একেবারে স্নেহার মতই লাগছিল।তো আরো কিছুক্ষণ পর আবার দেখলাম মেয়েটাকে প্রিন্সিপাল এর রুমের সামনে তখন ভাল করে দেখতে পাই যে এই মেয়েটি স্নেহা।আর ওর পাশে ওটা ওর বাবা।ওর বাবা কে আমি পরিক্ষার প্রথম দিন দেখছিলাম তাই চিনি।
যাইহোক আমি স্নেহার কাছে যাই তারপর ওর বাবা কে সালাম দিয়ে ওরে জিজ্ঞেশ করি তুই কি মনে করে কলেজে আসছিস আবার প্রিন্সিপাল এর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?
স্নেহা বলে আমি টিসির ব্যাপারে আসছি আমি অন্য কলেজে চলে যাবো।
আমি বলি কি বলছিস এসব।তুই এই কলেজেই থেকে যা না দুইটা বছর ই তো।
স্নেহা বলে নারে এটা সম্ভব না।
তারপর স্নেহার সাথে আরো কিছু কথা বলে চলে আসি।আসলে স্নেহা চলে যাবে এতে আমি অনেক অবাক হয়েছি কষ্ট পেয়েছি।এভাবে একজন ভালো বন্ধুকে হারিয়ে ফেলবো ভাবতে পারছি না।আর আজ যে স্নেহার সাথে দেখা হলো কথা হলো এটাই যে আমার স্নেহার সাথে শেষ দেখা তা কয়েকদিন পর জানতে পারি।আরো কিছুদিন পর একদিন ফেসবুকে আমার এক বান্ধবীর থেকে জানতে পারি যে স্নেহা কয়দিন আগে কলেজে আসছিল আর আমার সেই বান্ধবী ওরে জিজ্ঞশ করে স্নেহা তুমি কলেজে তখন স্নেহা নাকি বলে যে ভালো থেকো আমি টিসি নিছি এখন অন্য কলেজ এ ভর্তি হব।
এই কথা শুনে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।স্নেহা টিসি নিয়ে চলে গেল আমি জানলাম ই না।আর স্নেহা যেদিন আসছিল ওইদিন আমি কলেজ জাই নি।কেন আমি কলেজ গেলাম না এই জন্য নিজের উপরই এখন রাগ লাগছে।
তারপর আমি স্নেহাকে ম্যাসেজ দি যে সে টিসে নিয়ে চলে গেছে কিন্তু আমাক কিছু জানালো না কেন।
স্নেহা ফিরতি ম্যাসেজে বললো দোস্ত এই কলেজে আমি যতদিন ছিলাম তুই আমায় অনেক সাহায্য করছিস এই জন্য তোকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না।তুই ভাল থাকিস আর তোকে কখনো ভুলবো না।
এই ম্যাসেজ দেখে আমার অনেক ভাল লাগে আমিও ওরে বলি যে তোকেও আমি কখনো ভুলবো না দোস্ত।
এখন ২০২০ সাল।স্নেহার সাথে আমার শেষ দেখা হয় এক বছর ও বেশি সময় আগে প্রিন্সিপাল এর রুমের সামনে।তারপর এতগুলো দিন চলে গেছে আর স্নেহার সাথে দেখা হয় নি।এর মধ্যে শুধু দেড় দুই মাস পর পর ম্যাসেজে আবার ফোনে কথা হয়েছে।
ফোনে ওরেহ জিজ্ঞেশ করছিলাম যে আমার দেওয়া গিফট যত্ন করে রাখছিস তো।
স্নেহা বলে তোর দেওয়া শো পিচটা আমার পড়ার টেবিল এর সামনেই রাখছি।
স্নেহার মুখে এই কথা শুনে সত্যি মনটা খুশিতে ভরে যায়।
আর স্নেহার সাথে আমার কাটানো ছোট ছোট কিছু মূহুর্ত আমার ভালোভাবে মনে নাই আর কিছু মনে থাকলেও বলি নি শুধু গূরুত্বপূর্ণ মুহুর্তগুলো তুলে ধরেছি।
যাইহোক আমি যেখানে থাকি স্নেহা তার পাশের আরেকটা শহরে সেখানে একটা কলেজে ভর্তি হয়েছে।সেই শহরে ওর মা চাকরি করে তাই সেখানেই ভর্তি হয়েছে।তাছাড়া স্নেহার সাথে যখন ফোনে কথা হয় বুঝা যায় ওহ পালটায় নি এখনো আমায় ভালো বন্ধু মনে করে।একবার স্নেহার সাথে দেখা করার জন্য স্নেহা যেই শহরে আছে সেখানে আমার যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু কিছু কারণে আর যাওয়া সম্ভব হয় নি।জানি না আবার কবে দেখা হবে বা আদৌ হবে কি না।তাতে কি স্নেহার সাথে আমার কাটানো মূহুর্তগুলো দেখলে বুঝা যায় অনেক দিন পর পর আমাদের দেখা হতো কথা হতো কিন্তু আমাদের মাঝে ছিল অপেক্ষা।মন থেকে আমরা দূরে নই আছি একে অপরারে পাশেই।তাও একটা কষ্ট এই মনে তা হলো স্নেহার সাথে আমার অপেক্ষা এখন এক বছরের ও বেশি হয়ে গেছে।এমনকি স্নেহার সাথে আমি শেষ কথা বলেছি দুই মাসের ও বেশি সময় আগে।এই জন্য ওরেহ অনেক মিস করছি।আমি জানি না আবার কবে কথা হবে স্নেহার সাথে।ওরেহ ফোন দিলে ঢুকে না এস.এম.এস সেন্ড হয় না জানি না কেন এমন হয়।এরকম অনেকদিন আগে থেকেই হচ্ছে কিন্তু তাও ওর সাথে আমার কথা হতো কিন্তু এবার অপেক্ষা যেন আরো দীর্ঘ হচ্ছে।তাও একটাই সান্তনা দেই নিজেই নিজেকে তা হলো আমাদের মাঝে অনেক অপেক্ষা দূরুত্ব ছিল সেটা এখনও আছে ভবিষ্যৎ এ ও হয়তো থাকবে।কিন্তু আমাদের দুজনের প্রতি দুজনের রয়েছে শ্রদ্ধা,রয়েছে মন থেকে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস তাই দেখা হোক বা না হোক এই বিশ্বাসই আমাদের বন্ধুত্ব সারাজীবন টিকেয়ে রাখেবে।
[শেষ করতে চেয়ে অবশেষে করলাম শেষ।গল্পটি হয়তো ভালোভাবে গুছিয়ে লিখতে পারি নি তাই সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ।]
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now