বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আসলে এটাকে সাইকো গল্প বলা যেতে পারে।
কিন্তু সেরকম কোন অপশন পাইনি, তাই দিতে পারি নি। শেষে উদ্ভট হিসেবে ফ্যান্টাসি সিলেক্ট করলাম। একটু ফানও কন্টেন্ট রয়েছে এতে।
____
________
বিয়ে করেছি মাত্র দুই সপ্তাহ হল। অথচ এরই মধ্যে সাবিহাকে নিয়ে এগারো বার ডক্টরের কাছে যাওয়া হয়ে গেল।
মূলত আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও মায়ের জন্যই সাবিহাকে বিয়ে করতে হয়েছে। মায়ের দু-সম্পর্কের এক কাজিনের মেয়ে সাবিহা। কথাবার্তা কম বলে। সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে নিতে পারে। সারাদিন কোমরে কাপড় বেঁধে রাখে, যেন ঝগড়া বাঁধিয়ে দিবে এখনি। অথচ তার মুখের দিকে তাকালে সেরকম কোন চিহ্নই ফুঁটে ওঠে না। মূলত ও এরকমই। বলতে গেলে একেবারেই ক্ষ্যাত টাইপের একটা মেয়ে ও।
মোটকথা, সাবিহাকে আমার একদমই অপছন্দ। তাই তো ওর উপর আমার এত অত্যাচার। সারাদিন মারতে থাকি।
অবশ্য আমার মারতে ভালোও লাগে। একটু কান্না করে দিলেই বলে দেই ভালোবেসে মেরেছি। ব্যাচ্ হয়ে গেল ডিশমিশ।
কিন্তু এই দুই সপ্তাহের মধ্যে এগারো বার ওকে এত পরিমাণে মেরেছি যে শেষ পর্যন্ত ডক্টরের কাছে নিতে হয়েছে।
সারাদিন শুধু মারতে থাকি। আসতে যেতে মারি। উঠতে বসতে মারি। খাটের পায়া দিয়া মারি, জানালার শিক দিয়ে মারি, স্টিলের চামচ দিয়ে মারি, গরম রড দিয়ে মারি, ফল কাঁটা ছুরি দিয়ে মারি।
শুধু মারি আর বলি হাসো। ও হাসে। তারপর যদি কান্না করে তবে আবার মারি। মারতে মারতে হাসাতে বাধ্য করি।
আজকেও মারতেছি। কিন্তু ও শুরু থেকেই হাসতেছে। চুলি মুঠি ধরে পিয়ানোর সাথে মাথা ঠুকিয়েছি। পিয়ানোর সুরের সাথে ওর হাসি মিলে অদ্ভুত একটা সুর তৈরি হল। দারুণ একটা সুর। আমার শুনতে বেশ ভালোই লাগছিলো।
খেয়াল করে দেখলাম আজকে ওর হাসির মধ্যে কোন ঘাটতি নেই। যত মারি ততই হাসে। হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার উপক্রম।
এখনো হাসতেছে। আমি দৌঁড়ে আমার রুমে চলে আসি। গিটারটা হাতে নিয়ে ওর সামনে গিয়ে
গান ধরি,
“আমি কি তোমার হাসি মুখের আবার কারণ হব।”
গানের
সুরের সাথে ওর হাসির অদ্ভুত একটা মিল খুঁজে পেলাম। দুটোই আমার কাছে বেশ দারুণ লাগছে। কিন্তু কেন জানি আমার আজকে শুধু ওর হাসিই শুনতে ইচ্ছে করছে। গান ছেড়ে দিয়ে গিয়ে গিটার নিয়ে ওকে কতক্ষন পিটালাম। পিটাইতে পিটাইতে গিটারের পার্স-পাতি সব ছুঁটৈ গেল। তারপরও পিটালাম। এরপর দেখি গিটারটা কয়েক খন্ড হয়ে মেঝেতে পরে আছে। আর ও শুধু হাসছে।
এরপর আমি বুকে হাত বেঁধে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে ওর হাসি শুনতে লাগলাম।
সে কি অদ্ভুত হাসি! জীবনে গানের সুরও আমার কাছে অত ভালো লাগেনি। ওর সেই পৈশাচিক অদ্ভুত হাসিতে পুরো রুমটা কাঁপতে শুরু করে দিল। আমি শুধু মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় দাঁড়িয়ে ওর হাসি শুনতে লাগলাম। হাসির শব্দ রুমের মধ্যে প্রতিধ্বনিত হয়ে আমার কানে বাজতে লাগল। সেও এক অদ্ভুত ভালো লাগা। প্রতিটা হাসির শব্দ প্রতিবারই তিনবার করে ইকো দিয়ে আমার কানে বাজতে লাগল।
সেই প্রতিধ্বনিত অদ্ভুত ভালো লাগা হাসির শব্দ শুনতে শুনতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙে গেল। অন্ধকার হাতরে শেল্ফের উপর থেকে ল্যাম্পটা জ্বালালাম। সেই অদ্ভুত হাসির শব্দ এখনো আমার কানে বাজতেছে।
উঠে বসে ভাবতে লাগলাম, এত অদ্ভুত সুন্দরভাবে কেউ হাসতে পারে নাকি! এখনো যেন সেই হাসির শব্দ আমি অনুভব করছি।
মনে মনে ঠিক করে নিলাম, জীবনে যদি বিয়ে করি তবে এরকম কাউকেই বিয়ে করব। তারপর যদি দেখি সে হাসে না, তবে পেপসির বোতল দিয়ে পিটিয়ে তারপরে হাসাবো।
..
✍ মুহাম্মদ আবদুল্লাহ রাফি
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...