বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আজ থেকে প্রায় দশ বছর আগের কথা।আমি সুজন তখন তৃতীয় শ্রেণিতে পরতাম।আমার বাসা একটা গ্রামে।আমার বাসার দক্ষিণে আমাদের একটা পুকুর আছে।তো একদিন গ্রীষ্মের এক দুপুরের পর আমি আর আমার এক বন্ধু রাকিব আমাদের পুকুরের কাছে বসে গল্প করছিলাম।বলে রাখি রাকিব আমার পাড়ার বন্ধু।তাছাড়া আমি রাকিব এর থেকে কয়েক বছরের বড় ছিলাম দেখে ওহ আমায় তুমি করে বলতো আর আমি ওরেহ তুই করে বলতাম।আর ওর বাসাও ছিল আমাদের গ্রামে।তো আমরা পুকুরের যেই পাশে বসে গল্প করছিলাম সেটা ছিল পুকুরের উত্তর পাশে এবং সেখানেই আমার বাড়ি ছিল।তারপর গল্প করার একটুপর রাকিব আমায় বললো যে পুকুরের ওই পাশে গিয়ে চলো ঘুরে আসি।তো পুকুরের ওই পাশটা ছিল দক্ষিণ দিকে।আর ওই পাশে অনেক ফলের গাছ সহ অন্যান্য গাছে আছে।এমনকি পুকুরের সাথে একটা কাঁঠাল গাছ আছে এবং তার থেকে একটু দূরে আছে অন্য মানুষের বাড়ি।যাই হোক তারপর আমি আর রাকিব পুকুরের ওই পাশে গেলাম।দুপুর দেখে কেউ ছিল না ওই পাশে।ওই পাশটা তখন পুরো ফাকা ছিলো।তো ওইপাশে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ আমরা দুজন দেখলাম যে পুকুরের সাথে যে কাঁঠাল গাছ আছে তার নিচে পাঁকা কাঁঠাল পড়ে আছে।তাই দেখে আমরা গাছের নিচে গেলাম।তখন ছিল কাঁঠালের মৌসুম।আর গাছ থেকে কাঁঠাল পড়ে ফেঠে গেছে।রসালো পাঁকা কাঁঠাল দেখা যাচ্ছে।কাঁঠাল দেখে তো আমাদের দুজনের জিভে জ্বল চলে আসলো।
এবার রাকিব আমায় বললো যে সুজন চলো কাঁঠাল খাই।ওহ ফ্রি কাঁঠাল খাওয়ার সুযোগ হইছে এই সুযোগ কি আর হারানো যায়।
আমি:-অন্য মানুষের গাছ যে তাই এভাবে না বলে খাওয়া কি ঠিক হবে।
রাকিব:-আরেহ মানুষ কি এখন আছে নাকি।এখন কেউ নাই চলো কাঁঠাল খাই দুজনে প্রাণভরে।
আমি:-আচ্ছা ঠিক আছে চল শুরু করি খাওয়া।
তারপর আমি আর রাকিব দুজনে শুরু করলাম কাঁঠাল খাওয়া।ওরে তাকে দুজন কাঁঠাল খাওয়ার শুরু করেছি।একটা করে কাঁঠালের ষাড় তুলছি বিচি ফেলে দিয়ে তারপর সেটা মুখে পুড়ছি।কাঁঠাল টাও অনেকটাই বড় ছিল।ভিতরে কাঁঠাল ও অনেক এবং কাঁঠালটাও সেই মিষ্টি ছিল।তো এভাবে আমি পাঁচ ছয়টা কাঁঠাল এর ষাড় খাইছি এর মধ্যে আবার কোথায় থেকে আমাদের সামনে একটা কুকুর এসে জুটছে।
আমি আবার কুকুর অনেক ভয় পাই তাই কুকুর দেখে আমি রাকিব কে বললাম ওরেহ কুকুর আসছে আমি দূরে গেলাম আর কাঁঠাল খাওয়া হইছে আমার।
আমার কথা শুনে রাকিব বললো আরেহ কুকুর দেখে ভয় পাওয়ার কি আছে আসো কাঁঠাল খাই।
কিন্তু আমি আগেই দূরে গিয়ে দাড়াইছি।রাকিব তখন ও কাঁঠালের পাশে বসে কাঁঠাল খাচ্ছে।এবার কুকুরটা আস্তে আস্তে কাঁঠালের দিকে যেতে লাগলো।কুকুরের কাঁঠালের দিকে যাওয়া দেখে এবার ভয় পেয়ে রাকিব ও দৌড় মেরে আমার কাছে চলে আসলো।এতক্ষণ সাহস দেখানো ছেলে ভয় পেয়ে শেষমেষ আমার কাছেই আসলো।যাই হোক এবার আমরা দূর থেকে দেখতে লাগলাম কুকুরটি কি করে কাঁঠালের কাছে গিয়ে।আর আমরা দুজন দুজনের মধ্যে এটাও আলোচনা করছিলাম যে কুকুর কি কাঁঠাল খায়?
তারপর আমরা দুজন দেখলাম যে কুকুর কাঁঠালের কাছে গিয়ে কাঁঠাল এর আশপাশ একটু শুকে চলে গেল কিন্তু কাঁঠাল খেলো না।তারপর কুকুর চলে যাওয়ার পর আমরা আবার কাঁঠালের কাছে গেলাম।
এবার আমি রাকিব কে বললাম যে রাকিব আমার আর কাঁঠাল খাওয়ার ইচ্ছে নাই তোর কি মত?
রাকিব:-আমিও আর খাবো না।কিন্তু এখনো অনেক কাঠাল আছে।তাইলে এই বাকি কাঁঠালের করবো টা কি?
আমি:-এই কাঁঠাল এর কথা আমার চাচাঁতো বোনকে গিয়ে জানাই দেখি সে কি বলে।
রাকিব:-ঠিক আছে চল তাই করি।(বলে রাখা ভালো যে আমার বাড়ির পাশেই আমার চাচার বাড়ি)
তো চাচার বাড়িতে গিয়ে আমার চাচাতো বোনকে আমি আর রাকিব সব কথা খুলে বললাম।তারপর আমার চাচাতো বোন আমাদের বললো যে ওই কাঁঠাল বাসায় নিয়ে আসতে কারণ আমার চাচাতো বোন বাসার জন্য কাঁঠালটি রেখে দিতে চায় যাতে বাসার অন্যরা তা খেতে পারে।তারপর আমি আর রাকিব আবার পুকুরের দক্ষিণ পাশে গিয়ে ওই কাঁঠালটি আমার চাচার বাসায় নিয়ে আসলাম এবং আমার চাচাতো বোন কাঁঠালের বাকি সব ষাড় গুলো বের করে নিয়ে একটা বাটিতে রেখে দিলো।
এখন ২০২০ সাল।সেই ঘটনার দশ বছর পার হয়ে গেছে।আমার সেই পাড়ার বন্ধু রাকিব ও আর আমার গ্রামে থাকে না।অন্য এক জায়গায় চলে গেছে।অনেক বছর ধরে তার সাথে আমার আর দেখা বা যোগাযোগ কোনটাই নাই।বাড়ির পাশে সেই পুকুর আর সেই কাঁঠাল গাছ এখনো আছে শুধু নাই আমাদের সেই ছোটবেলা এবং নেই রাকিব।আছে শুধু এখনো আমার মনে গেঁথে দশবছর আগের সেই কাঁঠাল খাওয়ার স্মৃতিটা।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now