বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অনুভবে শুধু তুমি♥
Part:5
writer:Tuba Rubaiyat
♦
কিছুক্ষনের মধ্যেই সবাই নদীর পাড়ে পৌছে গেল।।খুব বাতাস নদীর পাড়ে ।। তোহা, নাফিসা, সিনথিয়া ওরা নেমেই বাচ্চাদের মতো লাফালাফি শুরু করে দিয়েছে।।রোহানের ছবি তোলার শখ আছে,,,রোহান ওদের কয়েকটা ছবি তুলে নেয়,,নাফিসার ও কয়েকটা ছবি তুলে নেয় লুকিয়ে লুকিয়ে।।।
তীব্রর দৃষ্টি তোহার দিকে।।ও গাড়ির সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে হাত বুকে ভাজ করে এক দৃষ্টিতে তোহার দিকে তাকিয়ে আছে।।কাকতালীয় ভাবে আজ তোহা তীব্র দুজনেরই ড্রেস ম্যাচ হয়ে গেছে।।তোহা নেভি ব্লু ড্রেস পড়েছে।।আর তীব্র নেভি ব্লু শার্ট।। রোহান এসে তীব্রর পাশে দাঁড়িয়ে দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে ,,,,,,,
"কি মামা!কুছ কুছ হোতা হ্যায়??"
"ক কি হবে?আমি এমনিতে,,,,,,,,,,,,,
"হয়েছে আর সাফাই দিতে হবেনা,,,তোর কি মনে হয় বেস্টফ্রেন্ড হয়ে তোর চোখ পড়তে পারবোনা??তোকে আমি খুব ভালো করেই চিনি,,,,তবে তুই তো খুন হয়েই গেছিস!!বাট আম সারপ্রাইজড!!যে কিনা আমাদের পুরো ভার্সিটির মোস্ট ওয়ান্টেড হ্যান্ডসাম বয় সে আজ তোহার কাছে হেরে গেল!!!"
"কিছু কিছু মানুষের কাছে হেরে যাওয়াটাও আনন্দের,,,সৌভাগ্যের,,,,!!"(মুচকি হেসে)
"হুম সেটাই,,,,,সী ইজ পার্ফেক্ট ফর ইউ,,,,,খুব ভালো মেয়ে ও,,,,,,বাট দোস্ত তুই তো পেয়ে গেলি আর আমি তো এখনো পেলাম না,,,, আমার কি হবে বলতো,,,,!!!"
রোহান দুঃখী ফেস করে বলল।রোহানের কথা শুনে তীব্র মুচকি হেসে বলল,,,,
"তুই ও সাবধানে থাকিস দোস্ত,দেখিস মিসাইল এসে যেন তোকে আবার উড়িয়ে না নিয়ে যায়!"
রোহানের পিঠ চাপড়ে দিয়ে তীব্র চলে গেল।।তবে রোহান তীব্রর কথার আগামাথা কিছুই বোঝেনি,,,ও ফ্যালফ্যাল করে তীব্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।।।
নাফিসা চোখ বন্ধ করে নদীর একেবারে কিনারায় হাত দুপাশে মেলে দাঁড়িয়ে আছে।।রোহান দূর কর থেকে নাফিসাকে দেখে ওর কাছে এগিয়ে গেল,,,,,ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।।নদীর সো সো বাতাস নাফিসার চোখেমুখে আছড়ে পড়ছে।।।।রোহান কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল নাফিসার মুখের দিকে।।।আজ নাফিসার সাথে রোহানের একবারো ঝগড়া লাগেনি।।।রোহান যে নাফিসার পাশে এসে দাড়িয়েছে সেটা নাফিসা ও বুঝতে পেরেছে, আর রোহান যে ওর দিকে তকিয়ে আছে ওটাও বুঝেছে তবুও চোখ বন্ধ করে আছে।।কেন যেন চোখ খুলতে ইচ্ছে করছেনা!!!
রোহান কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার পর হঠাৎ তীব্রর কথাটা মনে পড়ল,,,,ও বুঝে গেছে তীব্র কিসের ইংগিত করেছে,,,
"নো রোহান!নো!ইট'স ইম্পসিবল!! এমন কিছু হলে তোর নাক, হাত, পা আর ঠিক জায়গায় থাকবেনা,,,,যে মেয়েরে বাবা!!আস্ত মিসাইল একটা!!"(মনে মনে)
রোহান চলে যেতে নিলেই নাফিসা আটকালো,,,,
"কি হলো চলে যাচ্ছেন কেন??"
"তো কি করবো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে??"
"এভাবে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে দেখুন খুব ভালো লাগবে"
"হুম"
********---------***********-**-
তোহা কাশবনের ভেতরে দুষ্টুমি করছে,,,তীব্র এগিয়ে গিয়ে কয়েকটা কাশফুল তুলে নিলো,,,সাদা সাদা ফুল গুলো খুব ভালো লাগে।।তীব্র তোহার কাছে গেল।।তোহা তীব্রর হাতে ফুল দেখেই খুশি হয়ে গেল।।
"ওয়াও! কি সুন্দর লাগছে কাশফুল গুলো!!!কিভাবে নিয়েছেন?"(তোহা)
"যেভাবে নিতে হয় সেভাবে!!"(তীব্র)
"আমি ও চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু নিতে পারিনি!"(ঠোট উলটে মন খারাপ করে)
"এগুলো নেবে??"
"সত্যিইই আপনি এগুলো দেবেন আমাকে??"(খুব খুশি হয়ে)
"হুম এগুলো তো তোমার জন্যই নিয়েছিলাম।।"
"তাইইইই!!থ্যাংক ইউ,,,আপনি খুউউউউউব ভালো!!!"
বলে তীব্র গাল দুটো টেনে দিলো,,,,তারপর ফুলগুলো হাতে নিলো।।তোহা গাল টেনে দেয়ায় তীব্র তো ঝটকা খেয়েছে।।তারপর নিজেই হেসে দিলো,,,,মনে মনে বলল,,,,""মেয়েটা এখনো বাচ্চাই রয়ে গেছে""
সবাই নদীর ওপারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো।।ওপারে যেতে হলে নৌকায় চড়তে হবে।।একটা ছোট নৌকা ঠিক করেছে।।তোহা তো ভীষণ খুশি নৌকায় চড়বে বলে।ওর খুব শখ ছিলো নৌকায় চড়ার।।নাফিসা ও খুব খুশি।।কিন্তু বিপত্তি বাধলো নৌকায় উঠতে গিয়ে।।।নাফিসা লাফাতে লাফাতে নৌকায় উঠতে গিয়ে নৌকা থেকে পড়ে যাচ্ছিলো,,,নাফিসাকে পড়ে যেতে দেখে রোহান দৌড়ে এসে ধরে ফেললো।।।আর একটু হলেই নাফিসা নদীতে পড়ে যেতো।।রোহান খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলো নাফিসাকে পড়ে যেতে দেখে।।
এই কান্ডের পর তীব্র তোহার হাত শক্ত করে ধরে নৌকায় উঠালো,যাতে তোহা আবার না পড়ে যায়।।নৌকায় ও তীব্র তোহার পাশে বসে পেছন থেকে হাত দিয়ে আগলে ধরে রেখেছে যাতে নৌকায় টান পড়লেও যাতে তোহা পেছন দিকে উলটে না পড়ে।।তোহার প্রতি তীব্রর এত কেয়ার দেখে আসিফ আর রোহান মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো।।।
ঘোরাঘুরি করতে করতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে,,,,,,সিনথিয়ার শরীর খারাপ লাগায় সবাই বাড়ি ফিরে আসল।।কিন্তু বাধ সেধেছে তোহা ও কিছুতেই এখন বাড়ি যাবেনা।।এখানে আরো কিছুক্ষন থাকবে।।তোহার জেদ দেখে আসিফ বলল,,,,,,
"দেখ বোন কাল দরকার হলে আবার আসবো।।এখন তোর সাথে এখানে কে থাকবে বলতো???আর তুই তো একা থাকতে পারবিনা।।।"
"নাহ আমি আরো পরে যাবো বাড়িতে।।তোমরা থাকলে থাকো না থাকলে নাই!!"
তীব্র বলল,,,,
" আসিফ আমি থাকছি।।।তুই চলে যা।।আমি তোহাকে নিয়ে আসবো!!"
"আচ্ছা তুই থাকলে থাক।।।আমরা চলে যাচ্ছি। আমরা গাড়ি নিয়ে যাই।।আর আমার বাইক রেখে যাই তোরা বাইকে চলে আসিস।।।(আসিফ আসার সময় বাইক নিয়ে এসেছিল।)
"ওকে বাই ব্রো!"
"হুম তোহার খেয়াল রাখিস!"
"সে টা তুই না বললেও রাখবো,,,,,টেনশন নিস না""
"বাই"
আসিফ সহ বাকিরা চলে গেল।।
তোহা তীব্রর দিকে তাকিয়ে বলল,,
"চলুন সামনে যাই।"
"হুম ম্যাডাম চলুন "
দুজনেই গিয়ে নদীর পানিতে পা ডুবিয়ে বসলো,,,,,,!!দৌড়াদৌড়ি করতে করতে পানির পিপাসা লেগেছে,,,তাই তোহাকে বসিয়ে রেখে তীব্র পানি আনতে পাশের দোকানে গেল।।পানি নিয়ে আসার সময় তীব্র দেখে সামনে একজন ফেরিওয়ালা মেয়েদের বিভিন্ন কসমেটিক্স বিক্রি করছে,,, মেয়েরা চারপাশ থেকে তাকে ঘিরে আছে।।তীব্রর চোখ যায় একমুঠো নীল কাচের চুড়ির দিকে।।চুড়ি গুলো খুব সুন্দর।। তোহার ফর্সা হাতে নিশ্চয়ই খুব মানাবে।।ও গিয়ে চুড়িগুলো কিনে নিলো।।
কিন্তু চুড়ি গুলো কিনে তীব্র পড়েছে বিপাকে।।এগুলো তোহাকে দিবে কিভাবে ।।। আচ্ছা ও যদি কিছু মনে করে??ভাবতে ভাবতে তোহার কাছে গেল।।তীব্র তোহাকে পানি এগিয়ে দিলো।।তীব্রর হাতে চুড়ি দেখে তোহা জিজ্ঞেস করে,,,,,
"চুড়ি কিনে এনেছেন কেন??পড়বেন নাকি???"
"নাহ পড়বো না,,,পড়াবো!!""
"কাকে পড়াবেন??আর চুড়ি কার জন্য কিনেছেন??"
"কারো জন্য না।।। এমনিতে দেখেই ভালো লাগল তাই কিনে নিয়ে এলাম।।"
তীব্র আমতা আমতা করে বলল,,,,
"তোহা!!!"
"হুম্মম্মম্মম!"
"আসলে চুড়ি গুলো তোমার হাতে খুব সুন্দর লাগবে।।তোমার ড্রেসের সাথে মানাবে,,,,,,তাই,,,,,,, ত তুমি কি পড়বে চুড়ি গুলো???না মানে বলছিলাম কি............"
তোহা মুচকি হেসে হাত বাড়িয়ে দিলো,,,,,তারপর বলল,,,,,
"হুম বুঝেছি!!সোজাসুজি বললেই তো হতো যে এগুলো আমার জন্য কিনেছেন।।।এত পেচানোর কি আছে?? "
"না মানে............
"দিন এবার পড়িয়ে দিন হাতে।।।আমি পড়তে পারবোনা"(হাত দুটো বাড়িয়ে দিয়ে)
তীব্র তো যেন আকাশের চাঁদ পেয়ে গেল হাতে।।কাপাকাপা হাতে তোহার হাত দুটো ধরে খুব যত্ন করে চুড়ি গুলো পড়িয়ে দিলো ।।চুড়িগুলো খুব মানিয়েছে তোহার হাতে।।।তারপর তীব্র এক ভয়ানক কান্ড করে বসলো।।তোহার মাথা থেকে চুলের কাঠিটা খুলে দিলো,,,,,সাথে সাথে তোহার ঢেউ খেলানো লম্বা চুলগুলো কোমড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে,,,,তোহা চমকে তীব্রর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো,,,,,,তীব্র নিজেকে সামলে বলল,,,,,
"তোমার চুলগুলো ছাড়া থাকলেই খুব ভালো লাগে।।ছাড়া ই থাক!!!"
.................
(চলবে)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...