বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

বুকরিভিউ:গ্রেট এক্সপেকটেশন্স

"বুক রিভিউ " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মফিজুল (০ পয়েন্ট)

X বইয়ের নাম:- গ্রেট এক্সপেকটেশন্স লেখক: চার্লস ডিকেন্স রূপান্তর: সিরাজুর রহমান জেনার: কিশোর ক্ল্যাসিক উপন্যাস প্রকাশনী: দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৮৭ পার্সোনাল রেটিং: ৪.৫/৫ বিশ্ববিখ্যাত ঔপন্যাসিক চার্লস ডিকেন্সের অসংখ্য উপন্যাসই বিখ্যাত হয়েছে। যেমন:- 'অলিভার টুইস্ট', 'ডেভিড কপারফিল্ড', 'এ টেল অব টু সিটিজ', 'নিকোলাস নিকোলবি' ইত্যাদি। কিন্তু এসব উপন্যাস থেকে কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী উপন্যাস 'গ্রেট এক্সপেকটেশন্স', যেটাকে ডিকেন্সের শ্রেষ্ঠতম উপন্যাস বললেও ভুল হবে না। নরওয়েজিয়ান বুক ক্লাবস নির্ধারিত বিশ্বসাহিত্য ও সংস্কৃতিতে প্রভাব বিস্তারকারী সর্বকালের সেরা একশো বইয়ের তালিকায় এই বইয়ের নাম রয়েছে। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র পিপের নিজস্ব পারিবারিক সত্ত্বা ও সমাজকে ত্যাগ করে বড়লোক হওয়ার জন্য শহরে যাওয়ার যে উচ্চাশা প্রকাশ পেয়েছে সেটাকেই লেখক ডিকেন্স বিদ্রুপ করে 'গ্রেট এক্সপেকটেশন্স' বলে অভিহিত করেছেন এবং বইয়ের নামও সেটাই রেখেছেন। অনুবাদক সিরাজুর রহমান এই ৮০০+ পৃষ্ঠার উপন্যাসটির নাট্যরূপ দিয়েছেন। যেকারণে উপন্যাসটির মূল ভাব অক্ষুণ্ণ রেখে একে বেশ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। অবশ্য এক শিল্প মাধ্যম থেকে অন্য শিল্প মাধ্যমে রূপান্তরের ক্ষেত্রে কিছুটা সেক্রিফাইজ করতেই হবে। #চরিত্র:- উল্লেখযোগ্য চরিত্রের মধ্যে রয়েছে- পিপ, এস্টেলা, জো, মিসেস জো, বিডি, মিঃ পাম্বলচুক, ম্যাগউইচ, ক্লারা, মিস হ্যাভিশ্যাম, মিঃ জ্যাগার্স, ক্লারা, মিঃ ওয়াপসল, কম্পেইসন, হার্বার্ট, ওয়েমিক, অরলিক, বেন্টলী ড্রামল ইত্যাদি। . #কাহিনী_সংক্ষেপ:- পিপ'রা যেখানে থাকতো সেখানটা এক জলাভূমি। তার পিতা-মাতার কবর ছিল সেখানে। এক সন্ধ্যায় সাত বছরের শিশু পিপের সাথে এক পলাতক আসামীর দেখা হয়। সে পিপকে রেতি আর খাবার নিয়ে পরদিন ভোরে তার সাথে দেখা করতে বলে এবং কাউকে কিছু জানাতে মানা করে। যদি পিপ তার কথার অবাধ্য হয় তাহলে সে পিপের কলিজা টেনে বের করে আনবে বলে হুমকি দেয়। পিপ ভয়ে কাউকে না জানিয়ে সত্যিই তার বোনের রান্নাঘর থেকে খাবার চুরি করে এবং পরদিন সেসব খাবার ঐ পলাতক আসামীকে দেয়। পিপের দুলাভাই ছিল কামার। নাম জো। গায়ে বেশ জোর ছিল। কিন্তু আচরণ ছিল কোমল। অপরদিকে পিপের বড়বোন মিসেস জো ছিল বদমেজাজি এবং পিপকে প্রায়ই মারধর করতো। এক বড়দিনে পিপদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন মিসেস জো'র পাম্বলচুক মামা এবং মিঃ ওয়াপসল। উৎসবের এক পর্যায়ে জো এর বাড়িতে কয়েকজন সিপাহি এবং সার্জেন্ট আসে কামার জো'কে দিয়ে হাতকড়া মেরামত করানোর জন্য। সার্জেন্ট তাদের জানায় যে জলার ধারে পলাতক আসামীর সন্ধান পাওয়া গেছে। তখন জো এবং পাম্বলচুক মামা বায়না ধরলো সার্জেন্টদের সাথে আসামী ধরা দেখতে যাবে। সেখানে সার্জেন্ট ও সিপাহিদের সাথে যায় পিপ, জো এবং পাম্বলচুক। পিপের পূর্ব পরিচিত পলাতক আসামী তখন আরেক আসামীকে মেরে আহত করেছিল। পরে উভয়কেই কারাগারে পাঠানো হলো। একদিন পাম্বলচুক মিসেস জোকে পরামর্শ দেয় পিপকে এক ধনী বয়স্কা মহিলার বাড়িতে পাঠানোর জন্য। সে উক্ত মহিলার কাছে গিয়ে বিভিন্ন খেলাধুলা করে তাঁকে বিনোদন দিবে এবং তাঁর কিছু কাজ করে দিবে। বিনিময়ে সে বখশিশ পাবে। উক্ত ধনী মহিলার নাম মিস হ্যাভিশ্যাম। তো, একদিন মিসেস জো এবং পাম্বলচুকের জোরাজুরিতে পিপ সেই ধনী মহিলা হ্যাভিশ্যামের বাড়িতে যেতে বাধ্য হয়। মিস হ্যাভিশ্যাম ছিলেন চির কুমারী। তিনি এক পুরানো ঘরে বিষণ্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকতেন। তিনি এস্টেলা নামক এক মেয়েকে পোষ্য নেন। এস্টেলা আর পিপ ছিল প্রায় সমবয়সী। পিপ এর আগে এস্টেলার মতো এমন সুন্দরী, অহংকারী এবং নিষ্ঠুর মেয়ে আর দেখেনি। সে পদে পদে পিপকে অপমান করে, মনে আঘাত দেয়, গায়ে হাত তোলে এবং একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে বাড়ির গেইট থেকে বের করে দেয়। পিপ এস্টেলার আচরণে গভীর দুঃখ পেলেও সে কিন্তু প্রথম দেখার পর থেকেই এস্টেলার প্রেমে পড়ে যায়। তার ঐ অদম্য প্রেম কিছুতেই কোনো বাধা মানে না। কিছুদিন পিপ মিস হ্যাভিশ্যামের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। কিন্তু জো'র কামারশালায় শিক্ষানবিশ করার জন্য পিপকে মিস হ্যাভিশ্যামের কাছ থেকে অব্যহতি দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে জো। কামারশালায় জো'র কাজে সাহায্য করার জন্য অরলিক নামের এক যুবককে ঠিক করে জো। অরলিক ছিল কাজে অমনযোগী এবং দুশ্চরিত্রবান। সে পিপকে দেখতে পারতো না। একবার পিপ মিস হ্যাভিশ্যামের বাড়িতে ধন্যবাদ দিতে গিয়ে জানতে পারে এস্টেলা পড়াশুনা করতে অনেক দূরের এক দেশে গিয়েছে। পিপ বাড়িতে ফিরে এসে দেখে বড়বোন মিসেস জো রান্নাঘরে পড়ে আছে। তার মাথা ও মেরুদন্ডে কেউ একজন রেতি দিয়ে আঘাত করেছে। সেই আঘাতের পরেও মিসেস জো অনেক দিন বেঁচে ছিল, তবে মৃতের মতো। মিসেস জো'র দুর্ঘটনার পর থেকে জো'র সংসার অচল হয়ে গেলে তাদের বাড়িতে আসে বিডি। ঐ বিডির কাছেই পিপ লেখাপড়া কিছু শিখেছিল। বিডি অচিরেই সেই সংসারের আশীর্বাদস্বরুপ হয়ে ওঠে। একদিন পিপ বিডির সাথে বাগানে বেড়াতে গিয়ে তার মনের কথা, এস্টেলার প্রতি ভালোবাসার কথা জানায়। সে বিডিকে জানালো যে সে ধনী ও ভদ্রলোক হতে চায়, যাতে করে সে এস্টেলার উপযোগী হতে পারে। কিন্তু বিডি তাতে অমত দেয়। কারণ এটা তাদের সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক হবে। একদিন মিঃ জ্যাগার্স নামের জনৈক উকিল জো'র বাড়িতে আসেন এবং জানান যে, পিপকে এক ব্যক্তি তার উপার্জিত ধনসম্পদের উত্তরাধিকার করেছে। সেই ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জো'কে পিপের উপর থেকে দায়িত্ব ও অধিকার ছেড়ে দিতে বলেন মিঃ জ্যাগার্স, এবং স্বেচ্ছায় পিপের অভিভাবকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি নিজে। এখানে বলে রাখা ভালো যে মিঃ জ্যাগার্স, মিস হ্যাভিশ্যামেরও উকিল ছিলেন। তিনি চুক্তিতে রাজি করিয়ে পিপকে লন্ডনে নিয়ে যান। সেখানে পিপ, হার্বার্ট নামক তার সমবয়সী এক যুবকের বাসায় একসাথে থাকে। লন্ডনে পিপ, হার্বার্টের বাবা মিঃ ম্যাথু পকেটের কাছে শিক্ষা গ্রহণ করতে যায়। সেখানে গিয়ে সে বেন্টলী ড্রামলের সাথে পরিচিত হয়। ড্রামল ছিল বদের হাড্ডি। যাইহোক, এস্টেলা ফিরে এলে তাকে দেখতে যাওয়ার জন্য খবর পাঠান মিস হ্যাভিশ্যাম। জো, বিডির লেখা চিঠি নিয়ে লন্ডনে গিয়ে পিপের হাতে হাতে পৌঁছে দেয়। পিপ বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হওয়ার পর থেকে জো তাকে প্রায়ই 'স্যার' বলে সম্বোধন করতো। যাইহোক, পরদিন পিপ সেখানে গিয়ে দেখে এস্টেলার স্বভাব কিছুটা বদলে গেছে, খানিকটা কমনীয় হয়েছে। এস্টেলা তাকে জানায় যে সে লন্ডনে যাবে। পিপ মনে মনে ঠিক করলো লন্ডনের কোচ স্টেশনে গিয়ে এস্টেলার জন্য নির্দিষ্ট দিনে সে অপেক্ষা করবে। লন্ডনে আসার পরে এস্টেলা পিপকে অনেক অবজ্ঞা করা শুরু করে এবং ধন-দৌলতের লোভে পিপের এক শত্রুর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পিপের রুমমেট হার্বার্ট ছিল গরিব। তার বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়াতে তিনি তাকে তেমন একটা সাহায্য করতে পারতেন না। তাই হার্বার্টের চাকুরি বা কর্মসংস্থান অত্যন্ত জরুরি ছিল। একদিন পিপ চিঠির মাধ্যমে খবর পেল তার বড়বোন মিসেস জো মারা গেছে। পিপ পরদিন জো'র বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। সেখানে পিপ যতক্ষণ ছিল ততক্ষণ অস্বস্তিতে ছিল, কারণ তাকে জো 'স্যার' বলে সম্বোধন করেছিল। তাছাড়া বিডিও আগের মতো পিপের সাথে ঘনিষ্ঠ আচরণ করেনি। যাইহোক, লন্ডনে ফেরার পর এক ঝড়ের রাতে হার্বার্ট ব্যবসার কাজে অন্যত্র থাকে। হঠাৎ এক আগন্তুক আসে পিপের বাড়িতে। অনেক কথার পরে পিপ উক্ত আগন্তুককে চিনতে পারে। তার নাম ম্যাগউইচ। অনেক বছর আগে সে জলার ধারে যে পলাতক আসামীকে দেখেছিল, যে তার কলিজা বের করার হুমকি দিয়েছিল, সেই আসামীই এই আগন্তুক। তখন ক্ষুধার্ত আসামীকে রেতি আর খাবার দিয়ে সাহায্য করেছিল শিশু পিপ, যা কখনও ভুলেনি ম্যাগউইচ। সে পিপকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছে। কথায় কথায় পিপ জানতে পারে যে ম্যাগউইচকে অস্ট্রেলিয়ায় যাবজ্জীবন নির্বাসন দন্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে পিপকে দেখার জন্য লন্ডনে পালিয়ে এসেছে। যাবজ্জীবন নির্বাসন প্রাপ্ত আসামী দীপান্তর করে ধরা পড়লে শাস্তি মৃত্যুদন্ড। তাই তার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মিঃ জ্যাগার্সের সহকারী ওয়েমিকের পরামর্শ নিয়ে হার্বার্ট ও পিপ তাকে হার্বার্টের প্রেমিকা ক্লারার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। একদিন পিপ মিস হ্যাভিশ্যামের বাড়িতে যায়। এস্টেলাও সেখানে উপস্থিত ছিল। সেখানে গিয়ে সে মিস হ্যাভিশ্যামকে অনুরোধ করে যেন তিনি হার্বার্টকে ব্যবসার জন্য কিছু টাকা দান করেন। উল্লেখ্য যে পিপ সাবালক হওয়ার পরে উত্তরাধিকার সূত্রে ৫০০ পাউন্ড পায়, যার অর্ধেকটা সে গোপনে হার্বার্টের ব্যবসার জন্য দান করে। তবুও হ্যাভিশ্যাম কিছু টাকা দিলে হার্বার্টের ব্যবসা পাকাপোক্ত ও চূড়ান্ত হবে। তাই সে মিস হ্যাভিশ্যামের কাছে হার্বার্টের হয়ে কিছু টাকা চায়। সেই সাথে এস্টেলাকে সে তার ভালোবাসার কথা জানায়। সে এতকাল ভেবেছিল মিস হ্যাভিশ্যাম তাকে এস্টেলার সাথে বিয়ে দিতে চান। কিন্তু মিস হ্যাভিশ্যাম পিপের হৃদয়কে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়ে এস্টেলার সাথে পিপের এক শত্রুর বিয়ে ঠিক করেন। যখন পিপ, মিস হ্যাভিশ্যামকে তার এই অমানবিক সিদ্ধান্তের জন্য অনুযোগ করে তখন নিষ্ঠুর এস্টেলা জানায় যে এই বিয়ে তার নিজের ইচ্ছাতেই হচ্ছে। এতে মিস হ্যাভিশ্যামের কোনো দোষ নেই। সে আরও জানায় যে পিপের ভালোবাসা তার হৃদয়কে স্পর্শ করে না বা পিপের জন্য তার কোনো প্রেমানুভূতি নেই। আসলে এস্টেলাকে এমন নিষ্ঠুর আর পাষাণী করে গড়ে তুলেছেন মিস হ্যাভিশ্যাম। তাঁর লক্ষ্য ছিল এস্টেলাকে দিয়ে পৃথিবীর সব প্রেমিক পুরুষের হৃদয় ভেঙে দিয়ে নিজের ব্যর্থতার প্রতিশোধ নিবেন। এই সিদ্ধান্তের পেছনে অবশ্য মিস হ্যাভিশ্যামের জীবনের এক ব্যর্থতার বেদনা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল। যাইহোক, পিপ, এস্টেলার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে লন্ডনে চলে আসে। সিদ্ধান্ত নেয় সে ম্যাগউইচকে নিয়ে লন্ডনের বাইরের দেশে চলে যাবে, যাতে ম্যাগউইচ মৃত্যুদন্ড থেকে বেঁচে যায়। তাই সে একটা নৌকা কেনে এবং একদিন সে হার্বার্ট ও তার এক বন্ধুকে নিয়ে নৌকায় করে রওনা দেয়। ইতঃপূর্বেই তারা ম্যাগউইচকে প্রস্তুত থাকার জন্য বলেছিল। নৌকা চালিয়ে যখন তারা ক্লারাদের বাড়ির জানালার ধারের ঘাটে ভিড়লো, তখন ম্যাগউইচ তার জিনিসপত্র নিয়ে নৌকায় তাদের সাথে যোগ দেয়। এরপরে তারা প্রাণপনে হামবুর্গগামী জাহাজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। যাবজ্জীবন নির্বাসনদন্ড প্রাপ্ত দীপান্তরের আসামী পুলিশের কাছে ধরা পড়লে ফাঁসি অনিবার্য। পিপ কি পারবে ম্যাগউইচকে নিরাপদে হামবুর্গে পৌঁছে দিতে? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া:- একটা উক্তি রবীন্দ্রনাথের নামে প্রচলিত আছে, "মদ খা, গাঁজা খা, পারলে একটা সিগারেটও খা, তবু প্রেম করিস না। কলিজা পঁচে যাক, তবু মনটা তো ভালো থাকলো।" তবে এটা রবীন্দ্রনাথের উক্তি হোক বা না হোক, উক্তিটি কিন্তু মিস হ্যাভিশ্যাম কিংবা পিপ উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। কারণ উভয়েই ভালোবেসে ব্যর্থ হয়েছে। পিপের চারিত্রিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সে এস্টেলার উপযোগী হওয়ার জন্য যে বড়লোক ও ভদ্রলোক হওয়ার আশা করেছিল, তা ছিল মূলত উচ্চাশা। যদিও তার আশা পূরণ হয়েছিল, তবুও একদিন সে বাস্তবতার সম্মুখীন হয়ে তার ভুল বুঝতে পারে। নিজ নিজ সমাজ এবং পরিবারই যে একজন মানুষের আদর্শ ও শেষ আশ্রয়স্থল, সেটা উপন্যাসে পিপের চরিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এস্টেলার চরিত্রের মাধ্যমে সুন্দরী মেয়েদের দেমাকি ও অহংকারী স্বভাবের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে। কথায় আছে, "লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু"। এটা প্রমাণিত হয়েছে তখন যখন এস্টেলা টাকার লোভে পিপকে ছেড়ে আরেকজনকে বিয়ে করেছে। আবার, "অহংকার পতনের মূল" এই উক্তিটির সাথেও এস্টেলার পরিণতির সাদৃশ্য রয়েছে। জো এবং বিডির চরিত্রের মাধ্যমে গ্রামের সরল, সহজ, নির্ভেজাল সাধারণ মানুষের মনস্তাত্ত্বিক দিক ফুটে উঠেছে। সর্বোপরি, লেখক চার্লস ডিকেন্স- পিপের অনাবশ্যক উচ্চাশাকে বিদ্রুপ করে যে উপন্যাসের নাম 'Great Expectations' রেখেছেন তা নির্দ্বিধায় প্রশংসার দাবিদার এবং উপন্যাসের প্লট এই বিদ্রুপাত্মক নামটিকে শিল্পসম্মত সার্থকতা দান করেছে। ____________________________


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫২০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now