বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
রাত হয়ে গেছে,কিন্তু ইরিনার সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছে হল,ওকে কেসের অগ্রগতি জানাবে। গাড়ি ঘুড়িয়ে ওর বাসার দিকে গেল ও। হঠাৎ এক মুহুর্তের জন্য মনে হল পিছনে একটা জীপ ফলো করছে ওকে,কিন্তু পরক্ষনেই আর কিছু দেখতে পেল না। ইরিনার বাসা মেইন রোডের একটু পরে, কয়েক পা হেটে যেতে হবে। গাড়ি থেকে নামল ও নির্জন এলাকা,হঠাৎ কালো কাপড়ে ওকে ঢেকে দিল কেউ।তারপর সারা গায়ে বেসবল ব্যাটের আঘাত অনুভব করল ও।ঠেকানোর জন্য পূর্ণ চেস্টা করছে,কিন্তু কাপড়ের কারণে কিছুই করতে পারছে না। প্রচুর ব্যাথায় শরীর দুর্বল হয়ে যাচ্ছে,এমন সময় মাথায় জোরালো আঘাত পেল ও। টলে উঠল,তারপর পরে গেল,শেষে একদম নিন্তেজ।....
অনেকক্ষণ পর চোখ মেলল ও নিজের গাড়িতে বসে আছে।সারা শরীর রক্তে মাখামাখি। ঘড়ি দেখল। পাক্কা ৪ঘন্ট অচেতন ছিল। গাড়ি থেকে বেড় হয়ে দেখল গাড়িটা গাছের সাথে এক্সিডেন্ট করেছে।খুব ভালো বুদ্ধি! মেরে অচেতন করে গাড়িতে ঢুকিয়ে পিছনের গাড়ি দিয়ে ধাক্কা মেরে দেয়া হয়েছে,যেন মনে হয় এক্সিডেন্ট। হঠাৎ আবার শরীর টলে উঠল। অনেক রক্ত হারিয়েছে। এক পা সামনে বাড়িয়েই বুঝল শরীরে একদম শক্তি নেই। বহু কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে ইরিনার বাড়ির দরজা পর্যন্ত এসে আবার বেহুশ হলো ও। চোখ মেলে দেখল হসপিটালের বেডে ও, ইরিনাকে ওর পাশে বসা দেখতে পেল। ইরিনার চোখমুখ লাল কেন? কেঁদেছিল? কার জন্য? লেভির জন্য?....ভাবতে গিয়ে টের পেল ভালোই লাগছে। "কেমন লাগছে এখন?" ইরিনা জিজ্ঞাস করল।" ভালো,কতদিন এভাবে ছিলাম?"..."১২দিন।আমাদের বাসায় আসছিলে? এক্সিডেন্ট করলে কিভাবে?"..."এক্সিডেন্ট না। আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে কেউ,...সবকিছু খুলে বলল ইরিনা কে। চোখ বড় বড় করে সব শুনল ইরিনা। আমার জন্য তোমার এই অবস্থা, তোমার কিছু হলে,আমি নিজেকে ক্ষমা করকে পারতাম না।"বলল ইরিনা। আরে এসব কিছু না...পুলিশদের এরকম হয়ই। এমন সময় লেভির বোন রোজ আর ওর জামাই ডেভিড এসে ঢুকল। ইরিনা ওর গালে চুমু দিয়ে চুপচাপ চলে গেল। "কি অবস্থা তোমার ভাই!...এমন কিভাবে হল?"। বোনকে ওর হামলার কথা বলল না ও, বললে ওকে আর পুলিশের চাকরি করতে দিবে না। তেমন কিছু না। "বাই দা ওয়ে,মেয়েটা কে হ্যা? কবে পটিয়েছ?"...মজা করল ডেভিড।"কেও না", লজ্জা পেল ও।রাতে ঘুমিয়ে আছে লেভি। এমন সময় ওর ফোন বাজল। শরীর অনেকটাই ভালো,উঠে গিয়ে নিজের ফোন তুলে নিল।"হ্যালো আমি মিসেস শোভেন্কো বলছি,ইরিনা আমার মেয়ে।"...।জী বলুন।...তোমার ওখানে কি ইরিনা আছে? এতরাত হলো বাসায়। ফিরল না মেয়েটা। আন্টি ও তো দুপুরেই চলে গেছে...কি বলছো!....আচ্ছা আন্টি আমি দেখছি। চিন্তায় পড়ে গেলো লেভি। কোথায় গেল মেয়েটা? মাথাটা চালু হচ্ছে ধীরে ধীরে। সেদিন যেই বারে টনি গল্প করছিল,তার সামনে একটা লাল জীপ দাড়িয়েছিল,ভালোই মনে আছে লেভির,কারণ উল্টো করে রাখা গাড়িটার জন্য ওর পুলিশকার পার্ক করতে খুব ঝামেলা হয়ে গিয়েছিল। আবার পরে রাতে ইরিনার বাসায় আসার সময় মনে হচ্ছিল একটা লাল গাড়ি ওকে ফলো করছে। বুঝতে পারল টনিই কিডন্যাপ করেছে। এখন কি পুলিশ ফোর্স নিয়ে টনির বাড়িতে যাবে? উহু,প্রমান ছাড়া ওর মুখের কথায় ফোর্স পাওয়া যাবে না। দ্রুত কিছু করতে হবে। দ্রুত গাড়ি চালিয়ে নিজের বাসায় আসল ও। বাবার ব্যাবহৃত হান্টিং নাইফ আর টর্চ নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল। টনির বাসার এক ব্লক দুড়ে গাড়ি থামালো ও। তারপর নিঃশব্দে দেয়াল টপকে টনির প্রোপার্টিতে ঢুকে পড়ল। জানালা দিয়ে দেখল পুরো বাড়ি অন্ধকার। গ্যারেজের গেট খুলে ঢুকে পড়ল। পুরো বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুজেও কিছু পেল না। তাহলে কি ভুল লোককে সন্দেহ করেছিল ও?বেসমেন্ট! ওহ শিট,বেসমেন্ট এ খোজা হয়নি। দ্রুত নিচে নামল ও। বেসমেন্টে নেমে এক ঘর পেরোতেই ইরিনার দেখা পেল। কিন্তু এ কি অবস্থা ওর!....ওকে বেধে রাখা হয়েছে! সারা গায়ে এক টুকরো কাপড় ও নেই! জলদি নিজের শার্ট খুলে ওকে ঢেকে দিল ও। ইরিনা ইরিনা... সাড়া দিচ্ছেনা ও!... দ্রুত পালস চেক করল...খুবই ধীরে চলছে,এখনই হসপিটালে নিতে হবে। এতকিছুর মাঝেও সেন্স হারায়নি লেভি। ঠিকই অনুভব করল কেউ পা ফেলে ফেলে ওর পিছনে এসে দাড়াচ্ছে। ঠিক টাইমে মাথা নুইয়ে ফেলায় এবার আর বেসবল ব্যাটের বাড়ি খেতে হলো না। সন অফ ডেভিল!....রাগে ফেটে পড়ল লেভি। গায়ের জোরে ঘুষি মারল । কিন্তু একি,কেমন কিছুই হলো না টনির। ওর মাসলযুক্ত শরীরের তুলনায় লেভি কিছুই না। ব্যাট ফেলে দিয়ে খালি হাতে মারামারি শুরু করল ও। লেভি মার্শাল আর্ট শিখেছে পুলিশের ট্রেনিং এ,কিন্তু তাতে তেমন কিছুই হলো না। ও টনিকে ভালই মেরেছে,কিন্তু পারলো না টনির দামড়া শরীরের সাথে। তাছাড়া কয়দিন আগের মারে ওর শরীর এখনও অনেক দুর্বল। বসে পড়ল ও। ওকে ধরে ফেলবে এমন সময় ওর মনে পড়ল কোমড়ে ঝোলানো বাবার হান্টিং নাইফের কথা। এক টানে সেটা খুলে নিয়ে টনির পেটে বসিয়ে দিল ও। বসে পড়ল টনি। রক্তে ভরে গেল ফ্লোর। উঠে বসে পকেট থেকে ফোন বের করে পুলিশ আর এম্বুলেন্স ফোন করল। গোঙ্গাচ্ছে টনি।, এতটাও গভীর করে কাটেনি যে মারা যাবে। পানি এনে ইরিনার চোখে মুখে ঝাপটা দিল,চোখ মেলল ইরিনা। "এই শয়তানটা....ও আমার বোন কে মেরে ফেলেছে। তুমি পাশের ঘরের ফ্রিজটা খুলে দেখো! কাঁদতে শুরু করলো ইরিনা। ওর চোখের পানি মুছে দিল লেভি। ওকে কোলে করে ওপরের বেডরুমে রেখে এলো। নিচের রুমের ফ্রিজ খুলল ও অনেকগুলো মহিলার মৃতদেহ দেখতে পেল। সবাই নগ্ন,শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন সারা গায়ে। সহ্য করতে কষ্ট হলো ওর। ঢাকনা বন্ধ করে পাশের রুমে গেলো এখনও গোঙ্গাচ্ছে টনি থম্পসন নামের অমানুষ টা,তবে মরে নি। হঠাৎ ওর বাবার কথা মনে হল। বাবার নাইফ না ওর পেটে দেখতে পেয়েই হয়তো। বাবা খুব সম্মানিত অফিসার ছিলেন। ওর ৮ম জন্মদিনের আগের দিনের ঘটনা, এক মহিলার কল পেয়ে ছুটে যান স্টেশন থেকে পাশের বাসায় চেঁচামেচির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। উনি তদন্ত করতে গেলে বাধ সাধেন বাসার মালিক মহিলা। জোর করে ঢুকে যান তিনি। গিয়ে দেখেন দুটো লোককে মেরে ফেলেছে সাইকোপ্যাথ কিলার মহিলা, উনি রেডিওতে কন্ট্রোল রুমের সাথে কথা বলতে থাকা অবস্থায় মহিলা হ্যান্ডগান দিয়ে গুলি করেছিল ওনাকে। ওর মনে পড়ল ওর বাবার ছোটবেলায় বলা কথা। "কারণে যে অপরাধ করে,তারচেয়ে বহুগুণ ভয়ঙ্কর যে কারণ ছাড়া অপরাধ করে"....। চুপ করে দাড়িয়ে ভাবল ও এক মুহুর্ত। তারপর পা দিয়ে ছুড়িটা লোকটির পেটে জোরে চেপে,ধরল। বাইরে সাইরেনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। দ্রুত ইরিনার কাছে চলে এলো ও। পুলিশ আর প্যারামেডিক রা ঘরে ঢুকলো....ইরিনাকে নিয়ে এম্বুলেন্সে চেপে বসল ও।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now