বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
...তাড়াহুড়ো করে উঠে দাড়ালো ও। "হাই,আমি অফিসার কেন্ট লেভি",হাত বাড়িয়ে দিল ও। হ্যান্ডশেক করল মেয়েটি। ওর কোমল হাতের ছোয়ায় কেমন যেন পুলকিত হলো ও।" বসুন কি সাহায্য করতে পারি?"....আমার বড় বোন আজ দুদিন ধরে নিখোঁজ। ওর বাসায় গিয়েছিলাম, লক দেয়া, কেউ নেই। নিচ তালার বাড়ির মালিক মহিলার দরজার নিচ দিয়ে ও চিঠি দিয়ে গেছে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাইরে যাচ্ছে।"তাহলে তো হয়েই গেল",বলল লেভি।"কিন্তু ও আমাকে বা মা কে জানিয়ে যায় নি।এরকম টা তো হওয়ার কথা নয়। "আচ্ছা চলুন,তাহলে আপনার বোনের বাসায় ঘুরে আসি। রিপোর্ট লিখে নিয়ে ক্যাপ মাথায় চাপালো ও। ইরিনা ও সাথে সাথে আসল। গাড়িতে বসল ও। পেছনের সিটে,না বসে ইরিনা ওর পাশের সিটে বসল। খানিকটা খুশিই হলো ও।মেয়েটাকে কেনো জানি খুব ভালো লেগেছে,এত ফর্সা চেহারা আর আগে দেখেনি ও,যেন পুতুল।
ইরিনার বোনের বাসার দরজা ভাঙতেই হলো শেষমেষ। দুবার ধাক্কা মেরেও ভাঙতে না পেরে ইরিনার সামনে লজ্জা পেয়ে গিয়েছিল ও। ৩য় বার গায়ের জোরে ধাক্কা মেরে দরজা খুলল তো খুলল,কিন্তু তাল সামলাতে না পেরে লেভি চিতপটাং। ছুটে এসে ওকে টেনে তুলল ইরিনা।"ইস!... লাগে নি তো কোথাও? "লেগেছে,কিন্তু সেটা গায়ে নয়,লেভির মনে,আর সেটা ব্যাথা নয়,ভালোবাসার বাতাস!"…মনে মনে বলল ও। রুম ঘুরে দেখল ওরা। ড্রয়ারে কাপড় চোপড় কিছু কম আছে,লাগেজ ব্যাগও গায়েব। হুম,তাহলে বেড়াতেই গেছে তোমার বোন,নাম কি যেন বললে?"... "আনাস্তাশিয়া...কিন্তু জানালো না কেন? হয়তো ভুলে গেছে। চলো বাড়িমালিকের সাথে কথা বলি। নিচে নেমে মালিকের দরজা টোকা দিল ওরা। মালিক মহিলা তেমন কিছু জানাতে পারল না। বলল সকালে ওঠে দেখেছেন দরজার নিচে দিয়ে চিঠি দিয়ে গেছে আনাস্তাশিয়া। লিখেছে বাইরে যাচ্ছে। " "চিঠিটা দেখি বলল লেভি।" চিঠি নিয়ে আসল মহিলা। পড়ল ও। চিঠি না বলে চিরকুট বলতে হয়,মাত্র দুটো লাইন লিখা। "এটা আমার বোনের হাতের লিখা নয়",হঠাৎ বলে উঠল ইরিনা। এটা অন্য কারো। "শিয়োর তুমি?" প্রশ্ন করল লেভি। আমার বোনের লেখা আমি চিনব না?,কান্না কান্না স্বরে বলল ইরিনা। এক মুহুর্ত কি যেন ভাবল লেভি। তারপর দ্রত সিড়ির দিকে পা বাড়ালো। ইরিনা আর বাড়িওয়ালা মহিলাও পিছে পিছে আসল। আনাস্তাশিয়ার ঘরে ঢুকে কিচেনে গেলো ওরা। লেভি একটানে ফ্রিজ খুলে ফেললো। হুম,বলতে খারাপ লাগলেও তোমার বোন কিডন্যাপই হয়েছে,ইরিনা কে বলল লেভি। "কেনো বলছ এ কথা,আমাকে চিঠি দিয়ে গেছে,বাইরে যাচ্ছে,"বিদ্রুপের সুরে বলল বাড়িওয়ালি।কিন্তু তাহলে ফ্রিজ ভর্তি খাবার কেন? তাও আবার আধখাওয়া স্যান্ডউইচ,যেটা পচে যাচ্ছে।কোথাও যেতে হলে এসব খাবার ফ্রিজে রাখত না ও,তাও আবার বলছেন অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য। সিড়ি দিয়ে নামছিল ওরা। এমন সময় একজন লোককে পাশ কাটাতে গিয়ে হঠাৎ কেন যেন লেভির মনে হলো ওকে আগে কোথাও দেখেছে। ঠিক...সেইদিন বারে টেবিলে গল্পকরা লোক গুলোর মধ্যে এ ও ছিল। লোকটাকে দাড়াতে বলল ও । "এই ইরিনা,তোমার বোনের কি বিয়ে হয়েছে?",ইরিনাকে জিজ্ঞাসা করল লেভি।"হ্যা, কিন্তু ডিভোর্স হয়ে গেছে ১০দিন হলো।,কেন কি জন্য?"বলল ইরিনা।"কিছুনা",বলে লোকটার দিকে ফিরল লেভি। মনে পড়েছে ওর এতক্ষণে,এই লোকটিই সেদিন বলছিল তার ভাড়াটিয়ার কথা তার বন্ধুর সাথে। "তুমি সাতদিন আগে গ্রান্ড ডার্বুকা বারে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলে",বলল লেভি। "তোমার এক বন্ধু কে বলছিলে তোমার ডিভোর্সি ভাড়াটিয়া সম্পর্কে। ওর সম্পর্কে কি কি জানো বল? "এমন কিছু মনে পড়ছে না",তেড়ামি স্বরে,বলল লোকটি।" রাগের বসেই হোক,আর ইরিনার সামনে ভাব নেবার চেষ্টাতেই হোক,সোজা লোকটির নাক বরাবর ঘুষি চালালো লেভি। একদম মিথ্যা বলবে না,বল সাথের লোকটি কে ছিল,যে ডিভোর্সি মেয়েদের নিয়ে বাজে কথা বলছিল? "ওর নাম টনি, টনি থম্পসন।...নাম ঠিকানা সব লিখে নিল ও।"
তোমার বোনকে আমি খুজে বের করবই",ইরিনাকে বাসায় নামিয়ে দেবার সময় বলল লেভি। "প্লিজ জলদি কিছু কোরো",লেভির হাত জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করল ইরিনা।
পরদিন টনির ঠিকানা বের করে চিজ্ঞাসা করতে গেলো ও। বাড়ির দরজায় নক করল কয়েকবার। অনেক্ষন পরে চুলে সবুজ রং করা পেশিবহুল সাদা এক লোক দরজা খুলল। "তুমি টনি?"..."হ্যা কি চাই?"।"তোমার সাথে কথা....টনির হাতের দিকে তাকিয়ে আৎকে উঠল লেভি। রক্ত,...হাতে রক্ত লেগে আছে। একটানে হোলস্টার থেকে বন্দুক খুলে নিয়ে টনির কলার চেপে ধরল ও। টেনে ঘরের ভিতরে নিয়ে চলল। "তোর হাতে কার রক্ত? কাকে খুন করেছিস?....ওই মহিলা কোথায়?"..."কোন মহিলা? আমি কোনো মহিলাকে চিনি না? তোমার কাছে কোনো ওয়ারেন্ট নেই বাসায় ঢোকার। কোন অধিকারে আমাকে ধরেছ?"চালিয়াতি স্বরে বলল লোকটি। ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিল লোকটির গালে লেভি। আমাকে আমার কাজ শেখাবে না। লোকটার হাতে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিল ও সারা বাড়িতে তল্লাশি চালাবে। সবে মাত্র ড্রয়িংরুম শেষ করেছে,এমন সময় পুলিশ কারের সাইরেন শুনল ও। দুজন সিনিয়র অফিসার চলে এসেছে। স্যালুট করল ও। "স্যার আমি"... ওকে থামিয়ে দিল মহিলা অফিসার এস্টার সোটো। পাশের বাসা থেকে কম্প্লেন পেয়ে জলদি এলাম।তুমি নাকি এই বাসায় ঢুকে কাকে নির্যাতন করছো?"..."না ম্যাম ও আমার কেসের সাসপেক্ট। ওর হাতে রক্ত লেগে থাকায় ওকে সন্দেহ করি। ও ২জন মহিলাকে কিডন্যাপ করেছে বলে আমি মনে করি।"এমন সময় লেভি দেখল আরেক অফিসার টনির হ্যান্ডকাফ খুলে দিচ্ছে। "আরে কি করছেন স্যার?" চিৎকার করলো ও।" ওর হাতের রক্তের কারণ রান্না ঘরে ভেড়া কাটছিল।" এত বোকা তুমি? ওকে এাবার জিজ্ঞেস করবে না? তা তোমার কাছে ওর সার্চ ওয়ারেন্ট আছে?" "না স্যার,কিন্তু...আবার ওকে থামিয়ে দিল মহিলা অফিসার। ওয়ারেন্ট ছাড়া কারো বাসায় সার্চ করা যায় না জানো না? নতুন নতুন কাজে ঢুকেই খুব বড় অফিসার হয়ে গেছো?এখন যদি এই সিভিলিয়ান হ্যরেসমেন্ট কেস ঠুকে দেয়,চাকরি হারাবে তুমি"। "সরি ম্যাম...আমি বুঝতে পারি নি।তবে ওকে সন্দেহ করার কারণ আছে"।... "পরে ওয়ারেন্ট নিয়ে সব কোরো।" চলো এখন স্টেশনে, ক্যাপ্টেন ওয়েট করছেন তোমার। বেরিয়ে যাবার আগে লাল হওয়া গাল ডলতে থাকা টনির চোখে ক্রোধ স্পষ্ট দেখল লেভি। হঠাৎ রুমের এক কোনায় পরে থাকা মেয়েদের স্কার্টের দিকে চোখ গেল ওর। এরকম ঝলমলে পোষাক তো ড্যান্সার রা পড়ে নাচার সময়। আর কয়দিন আগের কেসটা যেটা ডিটেক্টিভ ওয়েন পাত্তা দেন নি,সেই উধাও হওয়া মহিলা ও তো বেলিড্যান্সার। "কি হলো,চলো,দাড়িয়ে আছো কেন? ডাকল অফিসার ইস্টার।
একটু পর ক্যাপ্টেন জশের রুমে ও। আঙ্কেল জশ এখন অনেক রেগে আছেন। "তোমার বাবার সম্মান রক্ষা করতে হলে তোমাকে আরও সচেতন হতে হবে লেভি। কি মনে করে তুমি এরকম ভুল করতে পারলে?"..."স্যার ওর বিরুদ্ধে আমার কাছে জোরালো প্রমান আছে। ওকে নিজের কানে বলতে শুনেছি ডিভোর্সি মহিলাদের সম্পর্কে বলতে,এও বলতে শুনেছি খুন করতে চায়। তাছাড়া ওর ইরিনার বোনের ঠিকানা খোজার আর কোনো কারণ থাকতে পারে না স্যার। আমার মন বলছে ও এই কেসের সাসপেক্ট"। "তুমি কি শুনেছ সেটায় কিছুই হবে না লেভি। কারণ পুলিশের নিজের কথার কোনো দাম নেই। আর ঠিকানা চাওয়াটা হয়ত এমনি,হয়তো ও ইরিনার বোনের সাথে ডেটে যেতে চায়। আমি চাই তুমি এই কেসে আর কাজ করবে না। কাজটা ডিটেক্টিভ ওয়েন দেখুক"।"কিন্তু স্যার ওয়েন এটাকে পাত্তাই দিবে না, উনি মনে করেন হারানো মহিলারা বেড়াতে যায়। আমি"...."থামো বাছা। এটাতে আর নাক গলালে তুমি ঝামেলায় পড়ে যাবে।আমি তোমাকে বাচানোর চেষ্টা করছি,কেনো বুঝতে চাইছ না।"
গোমড়া মুখ নিয়ে নিজের ডেস্কে বসল। কি যেন ভাবতে ভাবতে কম্পিউটার এলাকার নিখোজ মহিলাদের লিস্ট চেক করল। গত ৩বছরে ১৯মহিলা নিখোজের রিপোর্ট লেখানো হয়েছে। এদের মধ্যে ১ জন বাদে নিকোলা,রাভিলিয়া,রাফায়েলা,লিন্ডা,রোসাডেলা,টায়াস,কারা,লায়লা,লিন,...সহ সবাই ডিভোর্সি। ডিভোর্সি মহিলারা কেন নিখোজ হন? নাকি ওনারা আসলেই সব ছেড়ে নতুন শহড়ে পাড়ি জমান? হচ্ছে টা কি?"...ভাবল ও। এবার দেখি তো টনি থম্পসনের কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায় কিনা? না,একটা ড্রাংকেন কেস বাদে কিছুই নেই ওর নামে। ওয়েট ওয়েট,নাটালে থম্পসন এর নামে কিছু আছে। মার্ডার্ড বাই বেনিয়ামিন থম্পসন। টনির বাবা। নাতালের ডিভোর্সের ১বছর পরের ঘটনা, মহিলা স্ট্রিপক্লাবে কাজ করত। বিয়ের ৮বছর পর ডিভোর্স হয়ে যায়, বিয়ের পর সন্তান টনির জন্ম। নাটালে অশ্লীলতা করতো,স্বামী ছাড়াও অনেক বয়ফ্রেন্ড ছিল।ডিভোর্সের পর
নাটালে অরো উশ্রিঙ্খল হয়ে যায়,বাচ্চা টনির খেয়াল রাখত না।প্রতিদিন বাসায় নতুন নতুন বয়ফ্রেন্ড নিয়ে রাত কাটাতো। কয়েকজন লোক টনিকে এবইউজও করে। পরবর্তিতে ওর জামাই এসব দেখে রাগে ওকে খুন করে। হত্যার সময় টনি সেখানেই ছিল।....এই তাহলে ঘটনা। মনে মনে ভাবল লেভি। কিন্তু স্যার তো কেসটা থেকে আমাকে দূরে থাকতে বলেছে। কি করি এখন এসব ভাবতে ভাবতে অফিস ছাড়ল ও।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now