বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
কেস অফ ডিভোর্সি কিলিং
-রাহাত জামান খান।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ড্রেস ঠিক করছে লেভি। ব্যাজ লাগিয়েছি,নেম ট্যাগ,বোতাম ঠিকঠাক...ওহ শিট,প্যান্টের জিপার খুলে রেখেছি! "বাবারে বাবা,আরেকটু হলে সব শেষ...প্রথম দিনেই স্টেশনে যদি....চেন খোলা প্যান্ট কলিগ রা দেখত? যখন ক্যাপ্টেনের রুমে এভাবে যেত...উফ! আর ভাবতে পারল না ও। শেষবারের মত নিজের দিকে একবার চোখ বুলিয়েই রুম থেকে বের হয়ে গেল।
সবে মাত্র লিভিং রুমে পা রেখেছে, অমনি ওপর থেকে ঝিকিমিকি আর গ্লিটারের বৃষ্টি হতে লাগল। "ইয়ে...কনগ্রাচুলেশন অন ইয়োর ফার্স্ট ডে,লেভি", পিঠ চাপড়ে দিল ডেভিড। ডেভিড
রোজের হাসবেন্ড,আর রোজ লেভির বড়বোন। "প্রাউড অফ ইউ ব্রাদার,আজকে বাবা তোমাকে এভাবে দেখে কতই না খুশি হতো",পানিতে চোখ চকচক করছে ওর। "উহু, কাদবে না একদম",...রোজের হাতে হাত রাখল লেভি। বাবা মারা যাবার পর এই বড়বোনই ওকে মানুষ করেছে। শুধু বড়বোন না ডেভিড ও ওকে খুবই পছন্দ করে। ওদের মা-বাবার ডিভোর্স যখন হয় লেভি তখন ৮বছরের আর রোজ তখন কলেজে পড়ে। মা কে এর পর আর কখনও দেখেনি ও,শুনেছে ইউরোপে চলে গেছেন। বোনের বিয়ের সময় লেভি হাইস্কুলে ছিল, ওর বাবাও পুলিশ ছিল। বাবার মৃত্যুর পর খুবই অর্থকষ্টে পড়েছিল ওরা। তখনই ডেভিডের সাথে রোজের বিয়ে হয়। "আচ্ছা বাবা যদি তোমাকে এভাবে বাচ্চাদের মত কাঁদতে দেখে তার খারাপ লাগবে না বল?"..."ওহ সরি",চোখ মুছে হাসল রোজ। মন দিয়ে কাজ কোরো ভাই, বাবার সুনাম যেন নষ্ট না হয়",লেভির গালে চুমু দিয়ে চুল ঠিক করে দিল রোজ। "ঠিক আছে,যাই এবার", ওদের দিকে হাত নেড়ে বাইরে বেরিয়ে গেল লেভি।
নিজের পিকাপ ভ্যান চালিয়ে ক্যাম্প রিগান এর পুলিশ স্টেশনের সামনে থামল ও। নামল গাড়ি থেকে। ওয়েল...তোমার জীবনের নতুন একটা অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে,লেভি। নিজেকে মনে মনে বলল ও। ঢুকে পড়ল স্টেশনে।"হাই গুড মর্নিং গাইজ",কর্মরত পুলিস কলিগদের উদ্দেশ্য হাত নাড়ল ও। "গুড মর্নিং,স্যার তোমার ওয়েট করছে। তোমার জায়গায় আমি হলে প্রথমদিনই ১৫মিনিট লেট করতাম না",বলল স্যাম। জলদি যাও এখন। আর ভুলেও স্যারের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বলবে না,স্যার রেগে যান।গুডলাক"। "ওহ গ্রেট!...১৫মিনিট লেট? দ্রুত এপয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে ক্যাপ্টেনের রুমে ঢুকল ও। ৩মিনিট পর যখন স্যারের রুম থেকে বের হলো তখন ওর হাসিমুখ দেখে কলিগরা হা করে তাকিয়ে আছে। মিটিমিটি হেসে নিজের ডেস্কে বসল ও। চেয়ার ঘুড়িয়ে ওর মুখোমুখি হল ডিটেক্টিভ ওয়েন। "তো কি খবর? এত আনন্দ কিসের? ক্যপ্টেন জশের রুম থেকে তো খুব কম মানুষই হাসি মুখে বের হয়।"নাহ,তেমন কিছু না, বলল ও। আসলে ক্যাপ্টেন ওর বাবার পুরোনো বন্ধু আগে জানত না ও। রুমে ঢুকে আঙ্কেল জশকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল। আঙ্কেল খু্বই স্নেহের সাথে ওকে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।" ডেস্কের ফাইল তুলল ও। জীবনের প্রথম কেসটা আজ তার হাতে। দ্রুত প্রথম পাতা পড়ে নিল। মিডল এজড একজন মহিলাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে রিপোর্ট করা হয়েছে। নাম মারিয়া, শহরের পুরোনো এলাকায় থাকেন।পেশায় বেলি ড্যান্সার টিচার। ডিভোর্সি। ছবিও আছে ফাইলে। ওয়েনের দিকে ফিরল ও। কেস লোকেশনে কেউ গিয়েছে? "তোমার কেসে অন্য কেউ ইনভেস্টিগেট করতে যাবে?,উচু সুরে বলল ওয়েন। "হুম বুঝলাম,চলো তাহলে",বলল লেভি। "ঠিক আছে, পেট্রোল কার কিন্তু তুমি চালাবে,আমি পারব না।",অনীহার মত বলল ওয়েন।" নতুন পেয়ে খাটিয়ে নিতে চাইছো তাইনা?"....মনে মনে ভাবলেও মুখে কিছু বলল না লেভি। মারিয়ার বাসায় গিয়ে কেস রিলেটেড তেমন কিছু পেল না। ফাইল থেকে মহিলার স্টুডেন্টস দের ঠিকানা খুজে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেল।সেখানেও তেমন কিছু জানা গেল না। মহিলার সাথে শত্রুতা আছে তেমন কারও নামও উঠে এল না। "এবার কি করব মেট?"....হতাশ হয়ে ওয়েন কে বলল লেভি। "করার আর কি আছে",...হয়ত কোথাও বেড়াতে গিয়েছে। অফিসে গিয়ে হেড কমান্ডে ইনফর্ম করে দিব। কোনো খোজ পাওয়া গেলে ওরাই জানাবে"। এতটুকুতেই কাজ শেষ?...অবাক হয়ে বলল লেভি। কিডন্যাপ ও তো হতে পারে। মার্ডার কেস নয় সেটাই বা বলি কি করে?"..."শোনো এত বেশি বেশি ভাবতে যেও না", ঝাজালো গলায় বলল ওয়েন,জুনিয়র হয়ে বেশি পাকনামি করছে ভাবছে। এরকম কেসে বহু অভিজ্ঞতা আছে আমার। কিডন্যাপ হলে বাসায় কোনো প্রমান পেলাম না কেন? তুমি নতুন তো,তাই বেশি ভাবছ। চলো এখন বারে গিয়ে উইস্কি খেয়ে মাথা ঠান্ডা করবো। "ডিসপ্যাচ...কেস ১০৪৭, সাসপ্যাক্ট নান,ডিসমিস,ওভার",রেডিওতে বলতে থাকল ডিটেক্টিভ।" আসলেই বেশি ভাবছি",নিজেকে প্রশ্ন করল লেভি। ডিটেক্টিভ আমার থেকে অনেক অভিজ্ঞ,উনি ঠিকই বলেছেন,হয়তো কোথাও বেড়াতে গেছে।"চলো এবার রাস্তার উল্টো দিকে ভালো একটা বার আছে।",ওয়েনের কথায় চিন্তার সুতা কেটে গেল লেভির। বারে ঢুকেই কিছু লোকের সাথে গল্প করতে আর মদ খেতে ব্যাস্ত হয়ে গেলো ডিটেক্টিভ ওয়েন। অন ডিউটিতে এলকোহল নেয়া যায়না,কিন্তু সেটা বোধহয় কেউ মানে না। কিন্তু লেভি মানবে,মনে মনে ভাবল ও। এক বোতল সোডা নিয়ে একটা খালি টেবিলে বসে গেলো। নানান বিষয় নিয়ে মনে ভাবনা চলছে। হঠাৎ ডিভোর্সি শব্দটা কানে লাগাতে সজাগ হয়ে উঠল। দু টেবিল দূরে আড্ডা দিচ্ছে কিছু লোক। কান পাতল ও। " হাসবেন্ডের চাহিদা পূরণ করতে না পারলে মেয়েদের আর দরকারটা কি? মাগি গুলো ডিভোর্সের পরে তো ঠিকই রেগুলার ৫-১০ পুরুষকে বিছানায় টানে। ওভাবে চলতে চাইলে বিয়ের দরকারটা কি? "বলছে একজন।..."আমাদের ভাড়াটিয়া মেয়েটার শুনলাম ডিভোর্স হয়ে গেছে।"....আরেকজনের গলা। "ওর ঠিকানাটা দিস তো জোগাড় করে।",বলল আগের জন। "কি করবি? "..."খুন করব ওকে",উত্তর দিল প্রথম জন। "হাহাহাহ"..!টেবিলে হাসির রোল পরল। লোকটার কথাটা শুনে কেনো যেন লেভির মনে হল মজা করছে না সে। এমন সময় পাশে এসে বসল ডিটেক্টিভ। চলো এবার ফেরা যাক... উঠে দরজার দিকে পা বাড়ালো দুজনে। ১সপ্তাহ পার হয়ে গেছে লেভির কাজে যোগ দেবার। নিজের ডেস্কে বসে আছে ও। এই এক সপ্তাহে কতটা কাজ করেছে মনে মনে ভাবছে। এক বৃদ্ধার বাসায় মেডিকেল টিম পাঠিয়েছি,একটা বাচ্চাকে বাড়ি পৌছে দিয়েছি,দুই প্রতিবেশীর ঝগড়া থামিয়েছি। আরও অনেক... ধুর,এসব তো তেমন কোনো কাজই নাহ,হতাশ হলো ও। এমন সময় স্টেশনে এল এক তরুণী। "হাই,আমি ইরিনা...আমি রিপোর্ট করতে এসেছি"।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now