বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
হোটেল থেকে ভোর চারটার দিকে বের হলাম। টাইগার হিলের উদ্দেশ্যে, সূর্যোদয় দেখার জন্য। দিনটির আবহাওয়া ছিল পরিষ্কার। এক তৃপ্তিময় আশা নিয়ে ছুটে চললাম।
আমরা পৌঁছে দেখলাম অনেকেই এসে ভীড় জমিয়ে দিয়েছে। আমি চালাকি করে সাথে করে কম্পাস নিয়ে গিয়েছিলাম। তাই আমাদের জিজেবাসীকে ভীড় থেকে সরিয়ে নিলাম।
হৃদয়ঃ আনিছ ভাই, এটা কি শুরু করছেন আপনি? ওখানেই তো ভাল ছিলাম।
আমিঃ আমার কাছে কম্পাস আছে। আমি ওখান থেকে দেখেছি যে সূর্যটা উঠলে পাহাড়ের চূঁড়ার জন্য ঢাকা পরবে। তাই এই জায়গা থেকে দেখো সূর্যোদয় পুরোটা দেখা যাবে আর এখান লোক সমাগম কম। তাই এই জায়গাটা বেছে নিয়েছি।
রনিঃ দারুন আইডিয়া!
সাইমন জাফরি ভাইয়াঃ আনিছুর এর কথার লজিক আছে। আমি একমত পোষণ করছি।
তাহিরাঃ Okey Guys. It's all right.
টাইগার হিল দার্জিলিং এর সবচেয়ে উঁচু জায়গা। মূল টাউন থেকে প্রায় ১১ কি.মি দূরে। সূর্যোদয় দেখার জন্য সবাই এখানে আসে। আমরা সূর্যোদয় দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কখন সূর্য উঠবে? সময় অতিবাহিত হচ্ছিল।
হঠাৎ পূর্বদিকে আস্তে আস্তে লাল আভা দেখা যাচ্ছিল। আস্তে আস্তে লাল আভার পরিমাণ বাড়তে লাগলো। এক সময় সূর্যিমামা উঁকি দিলো। সাথে সাথে সবাই চিৎকার করে উঠল। আনন্দ উল্লাস। আসলেই সুন্দর দেখায় সূর্যদয় টাইগার হিল থেকে।
ভোরের সূর্য, রক্তাক্ত ও লাল। এই লালেই ছেঁয়ে গেছে একটি জায়গা। নাম তার কাঞ্চনজঙ্গা। আকাশ পরিষ্কার বিধায় টকটকে লাল সূর্যটাকে দেখলাম থালার মতো পাহাড়ের চূঁড়া হতে উদিত হতে।
সবার ভেতরে এক চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল। সুস্মিতা উত্তেজিত হয়ে মফিকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে উঠল,
সুস্মিতাঃ ওয়াও, কি সুন্দর সূর্যটা! দেখ, দেখ, মফি।
মফিঃ জীবনে মনে হয় সূর্য দেখিস নি। এত জোরে কেউ কি চিৎকার করে উঠে?
সুস্মিতাঃ তুই শুধু আমাকে নিয়ে মরিস। কেন্ বল তো?
মফিঃ কি রে রাগ করলি? তুই কি আজও বুঝস না? আমার এ সবের মাঝে কি আছে?
সুস্মিতাঃ কি আছে?
মফিঃ তোর প্রতি.....
সুস্মিতাঃ আমার প্রতি কি?
মফিঃ ন্যাকামো করিস না। তুই তো সবই বুঝিস।
সুস্মিতাঃ তাও যেন তোর কাছ থেকে শুনতে চাই।
মফিঃ তোকে নিয়ে আর পারি না। তুই কি জানস না, আমি তোকে কত ভালবাসি!
সুস্মিতাঃ তোর মুখ থেকে এ কথা শুনব বলেই তো পাগলামি করি, তুইও কি বুঝস না?
মফিঃ আমি বুঝি রে! আমি ছাড়া আর কে আছে তোকে বুঝে?
****************************************
ইসরাতঃ ঐ টকটকে লাল সূর্যটার মতো আমার গুলুমুলু ইমরান।
ইমরানঃ ইসরাত, সূর্য রাগী হলেও এখন মনে হচ্ছে সূর্যের মনেও ভালবাসা আছে।
ইসরাতঃ তাহলে কি তুমি আমাকে রাগী মনে করছো?
ইমরানঃ না। তা মনে করব কেন? আমি তো উপমা দিলাম।
ইসরাতঃ তাই বলো! তুমি আমাকে কথা দাও, তুমি আমাকে ভুলে যাবে না।
ইমরানঃ কথা দিলাম।আমি সারা জীবন তোমার পাশে থাকব। কখনো ভুলে যাব না।
****************************************
আমিঃ অপরাজিতা, তুমি আকাশ হলে হবো কোমল সূর্যটা, মনের আগুন নেভাব যদি থাকে তোমার উষ্ণ চুম্বনটা।
অপরাজিতাঃ এমন কথা বলো না গো, লাজে মরে যাই, সারা অস্তিত্ব জুড়ে তোমায় খোঁজে পাই।
আমিঃ তুমি আকাশ হলে আমি হব ধ্রুবতারা, তোমার বুকে জ্বালিয়ে দিব আমার প্রেমের ধারা।
অপরাজিতাঃ আমি ফুল হলে তুমি হবে মোর সুবাস, ছড়িয়ে দিব প্রেম করব অবকাশ।
আমিঃ তোমারী পরশে আকুল হয় প্রাণ, উষ্ণ স্পর্শ আর ব্যকুল করা গান।
অপরাজিতাঃ এ জনমে যদি তোমায় না পাই, আশা রাখি পরজনমে পাব তোমায়।
**************************************
সমস্ত কিছুর অসাধারণ দৃশ্য দেখার জন্য ক্যাবল কার দার্জিলিং এ অন্যতম। তাই সাইমন জাফরি ভাইয়া আমাদের জিজে পরিবার এর জন্য ক্যাবল কারের টিকিট কিনে আনলেন। আমরা সবাই একই ক্যাবল কারে উঠলাম। ভারী সুন্দর দার্জিলিং! উপর থেকে না দেখলে বুঝা যায় না। মনোমুগ্ধকর দৃশ্য! আর কাঞ্চনজঙ্ঘার শুভ্র বরফে ঢাকা পাহাড়ি চূঁড়া গুলো আরো সুন্দর দেখাচ্ছিল। আমরা সবাই দারুন উপভোগ করছি।
ঐ দিনই আমরা জাপানিজ টেম্পল ঘুরে দেখেছি। আরো গিয়েছিলাম এখানকার চিড়িয়াখানায়। চিড়িয়াখানা তেমন বড় না। অল্প কিছু প্রাণী। কিন্তু উঁচু নিচু হওয়াতে হাঁটতে ভালোই কষ্ট হলো। চিড়িয়াখানা দেখে এরপর গেলাম চা বাগান দেখতে। যদিও দার্জিলিং এর প্রায় পাহাড়েই চা বাগান। তারপরও কাছে গিয়ে দেখা। যেন মিশে গেলাম সবুজের সাথে। এখানকার তাঁজা পাতার চা খেলাম। এক অন্য রকম অনুভূতি!
তাহিরা আমাদের ভ্রমণের সকল দিক নির্দেশনাই দিচ্ছে। তাহিরা দিক নির্দেশনা অনুযায়ী চলে এলাম বাতাশিয়া লুপে।বাতাসিয়া লুপে কিছু ফুল গাছ সুন্দর করে সাজানো আছে। এটা ছোট রেইল লাইনের একটা রাস্তা বা লুপ। যেটা সুন্দর, তা হচ্ছে বাতাসিয়া লুপ থেকে দার্জিলিং শহরের ভিউ। এখান থেকে দার্জিলিং এর অনেক অংশের অসাধারণ ভিউ দেখা যায়।
দেখতে দেখতে কখন যে যাবার সময় গনিয়ে এল ভাবতেই পারি নি। আমরা জিজে পরিবার খুব আনন্দ করেছি দার্জিলিং এ। তাহিরার গাইড মতো আগামীকাল যে সব দর্শনীয় স্থানগুলো দেখব তার চার্ট করে নিলাম। এগুলো হলোঃ
১. রকেন গার্ডেন,
২. ট্রয় ট্রেন,
৩. সর্বশেষটি হলো ক্যালিম্পং।
সবাই প্রফুল্ল ও সজীবতার ছোঁয়া নিয়ে হোটেলে ফিরে এলাম। তবে সাইম আরাফাত সবকিছুর সৌন্দর্যের বর্ণনা তার ডায়রিতে টুকে নিয়েছে। আমি বেশ কয়েকবার পড়েছি। পড়ে মনে হলো সাইম তার লেখনীতে যেন দার্জিলিং এর অপরূপ সৌন্দর্য্যের কথাই তুলে ধরেছে। এ যেন এক সৌন্দর্যের হাতছানি! সবাইকে যেন দার্জিলিং এর অপরূপ সৌন্দর্য্য ডাকছে।
চলবে.....
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now