বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ভোরের সূর্য, রক্তাক্ত ও লাল। এই লালে ছেয়ে গেছে দূরের আকাশ। আমার মনের আকাশটা নীলিমায় আচ্ছাদিত। অনেক দিন হলো মনের আকাশে খোশ উচ্ছ্বাসে ঘুড়ি উড়াই নি। আজ উড়াব। তবে আমি একা নই, আমার সাথে আছে জিজের সকল বন্ধুরা। সবাই মিলে মনের আকাশে উড়ে বেড়াব।
কল্পানায় গিয়েছিলাম ডুবে। ঘড়িতে চোখটা পড়তে শিউরে উঠি। সময় তখন ভোর ৫:৩০ মিনিট। আমার মনে হচ্ছে এই বুঝি লেইট হয়ে গেল। ব্যাগটা গুছিয়েছিলাম গত রাতেই। তাই বেশি সময় লাগে নি। পাসপোর্ট চেক করে নিলাম।
ওওও। বলাই তো হয় নি। কেন বা রেডি হলাম? জিজের নায়ক-নায়িকারা মিলে দার্জিলিং এ যাচ্ছি প্রকৃতিকে উপভোগ করার জন্য। আর বেশি কথা বলি না। এমনিতেই অনেক দেরী করে ফেলেছি যে!
জিজের সকল নায়ক-নায়িকারা উপস্থিত। আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইট হতে সাভার হয়ে সকাল ৬ঃ৩০ মিনিটে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে উদ্দেশ্যে রওনা দিব।
প্রথমে পরিচিত হয়ে নিই আমাদের জিজের নায়ক-নায়িকাদের ও কিছু পরিষদ মন্ডলীর।
আমাদের পরিষদ মন্ডলীর প্রধান হলেন সাইমন জাফরি ভাইয়া। যিনি গল্পের ঝুড়ির এডমিন। অমায়িক একজন মানুষ। তার নের্তৃত্বেই আমাদের নায়ক-নায়িকাদের দার্জিলিং ভ্রমণ সম্পন্ন হচ্ছে। আর তাহিরা হলো পরিষদের গল্পবাজ। তিনি আমাদের ভ্রমণ গাইডার হিসেবে গাইডলাইন দিবেন।
এখন আমি জিজের নায়ক-নায়িকাদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিব।
মফি ও সুষমা। একটি জুটি। দুজনই ঝগড়ায় কম যায় না। একে অন্যকে তুই করে ডাকে। ঝগড়া করলেও দিন শেষে এক অকৃত্রিম ভালবাসা ঘিরে থাকে। মফি সুষমাকে কখনো সুস্মিতা বলে ডাকে। দুজনই আমাকেও কম জ্বালায় না। তবে তবে জ্বালানোর মধ্যে এক শ্রদ্ধার ভক্তি লক্ষ্য করি। ওদের ভালবাসায় যেন সুখের কমতি নেই।
ইসরাত ও ইমরান। আরো একটি জুটি। ইমরান ছেলেটা খুব লাজুক। তবে যেদিন থেকে ইসরাতকে দেখেছে সেদিন থেকে কেমন জানি হয়ে গেছে। শুধু ইসরাতকে চায়। আমি ইমরানকে বুঝিয়েছি। তাও কাজে আসে না। যাই হোক, ইসরাত কিন্তু ইমরানকে পছন্দ করে ফেলেছে। খুব ভাল মেয়েটা। তবে জেদি। বলে কি না আমার নায়িকাকেও ডাকাতি করবে। ওর ডাক নাম ইভা। আমি ইসরাতকে ইভা বলেই ডাকি। ও আমাকে তার ভাইয়ের মতো মানে। এটা আমার পরম পাওয়া।
এরপর আমি আর অপরাজিতা। ওকে আমি এক যুগ ধরে ভালবাসি। আমার প্রতিটি অস্তিত্বে অপরাজিতা মিশে আছে। চোখ বুজলে তাকে দেখি, মনের আয়না তাকে দেখি। তাকে ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পাই না। আজ সে নীল শাড়িটি পরেছে। আমি গিফ্ট দিয়েছিলাম। সত্যি যেন নীল পরীর মতো লাগছে। মলয়ে উড়ছে তার শাড়ির আঁচল, তার খোঁপায় বেলী ফুলের মালাটি পরিয়ে দিলাম।
আরো আমাদের সাথে আছে-
রনি, হৃদয়, আরাফাত, শুভ, তুবা, রুবা, রামিশা, তাসমিহা, পুষ্পিতা, সূত্রধর, সাহেদ, ইরা ও অনেকেই।
এদের মধ্যে হৃদয় ও রনি ঝগড়া হয়। একজন আরেক জন্যকে ভিলেন বলে থাকে। তবে তারা দুজনেই এন্টি হিরো চরিত্রটি পছন্দ করে।
তুবা, রুবা, আরো সবাই মিষ্টি মেয়েগুলো নাকি আমাকে এ বছরেই অপরাজিতার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে বলেছে। ওদের মজার সব দুষ্টুমিতে আমি আমি দুষ্ট হয়েছি বটে।
গাড়ি ছেড়ে দিবে। সবাই গাড়িতে গিয়ে বসলাম। তবে সবাই একটু গোমড়ামুখে বসে আছে। আমি বিষয়টি আঁচ করতে পারলাম। এসব তাহিরা করেছে। সামনে সাইমন জাফরি ভাইয়া আছে তাই কিছু বলা হলো না।
কি ভাবছো? কি হয়েছে জানতে চাও?
তাহলে বলেই ফেলি। আমরা ভালবাসার মানুষ নিয়ে দার্জিলিং ভ্রমণে যাচ্ছি অথচ তাহিরা ছেলেমেয়েদের সিট আলাদা করে রেখেছে। তাহিরা আমাদের মুরুব্বি তো!
শাঁ শাঁ করে বাসটা ছুটে চলছে। রাত ১২ঃ০৫ মিনিট। সবাই ঘুমিয়ে। জেগে আছে শুধু তিনটে জুটি। সুযোগের অপেক্ষায়। মফি চলে গেল সুস্মিতার পাশের সিটে। ইসরাত চলে এল ইমরানের কাছে। আমি বসে বসে জিমুচ্ছি। দুষ্ট মেয়েরা আমাকে টেনে নিয়ে গিয়ে অপরাজিতার পাশে বসাল। যে যার যার মতো বসে পড়ল।
সুস্মিতাঃ এত দেরি করলি কেন, মফি?
মফিঃ উপায় ছিল না, দেখলি না।
সুস্মিতাঃ ঘুষি দিব তোকে।
মফিঃ আবার ঝগড়া শুরু করেছিস। আমি কিন্তু চলে যাব।
সুস্মিতাঃ ইস, যেতে দিলে তো!
মফিঃ আচ্ছা, যাব না তোকে ফেলে।
*****************************
ইসরাতঃ মফি যখন চলে এলো। তুমিও তো আমার কাছে আসতে পারতে।
ইমরানঃ আমার ভয় করে। কেউ দেখে ফেলবে তো!
ইসরাতঃ দেখলে দেখুক। কি করছো দেখি?
ইমরানঃ বসে বসে তোমার ছবিটা দেখছি।
ইসরাতঃ ওলে, আমার নায়ক রে। যদি আমাকে না ভালবাসো। তোমাকে ডাকাতি করে তুলে আনব বলে দিলাম।
*****************************
আমিঃ কি করছো অপরাজিতা?
অপরাজিতাঃ তোমার কবিতা পড়ি।
আমিঃ কোন কবিতাখানি?
অপরাজিতাঃ তোমারই অস্তিত্বে মিশে আছি।
আমিঃ তোমার হাতটা ধরি।
অপরাজিতাঃ ধরো, কে মানা করেছে?
আমিঃ আমি যদি না থাকি, তুমি কিভাবে থাকবে।
দুজনের চোখে জল। আমি ও আপরা একে অপরে চোখের জল মুছি। আমি অপরাজিতার কোলে মাথাটা রেখে ঘুমিয়ে পড়ি। এদিকে অন্য জুটিদের একই অবস্থা।
রাত তখন ৩ঃ০০ টা। তাহিরা জেগে ওঠেছে। ওঠে দেখে যে সবাই জুটি করে দিব্যি ঘুমাচ্ছে। আমি তখন জেগে ছিলাম। দেখি তাহিরা মুচকি হেসে নিজের সিটে বসে পড়ল।
রাত চারটার দিকে বাসটা যশোরের বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছালাম। তাহিরা বলল-
- এটা যশোরের বেনাপোল সীমান্ত। এটি যশোরের দিক দিয়ে বর্ডার ,এদিক দিয়ে প্রবেশ করে দার্জিলিং যাওয়াটা ঝামেলার কারণ কলকাতা থেকে পায় ৫৫০ কিমি দুরে শিলিগুড়ি সেক্ষেত্রে বাস বা ট্রেনে প্রায় ৮-১০ ঘন্টার মত সময় লেগে যায় । যাদের কলকাতা এবং দার্জিলিং দুটোই দেখার ইচ্ছা তারা সাধারণত এ বর্ডার ব্যবহার করে থাকে । যারা এদিক দিয়ে যাবে তাদের জন্য বলে দিচ্ছি রাতের দিকে ট্রেন আছে যা শিলিগুড়ি পর্যন্ত যায় এবং সকালেই শিলিগুড়ি নামিয়ে দিবে ,সেখান থেকে অটোতে করে দার্জিলিং সুমো স্ট্যান্ড যাবে ২০/৩০ রুপি লাগবে তারপর সেখান থেকে টাটা সুমোতে লোকালী ১৫০ রুপি আর রিজার্ভ ১৫০০-১৭০০ রুপি পর্যন্ত নিবে দার্জিলিং পর্যন্ত। এয়ারে সরাসরি যাওয়া যায়না এয়ারে যেতে হলে ঢাকা থেকে কলকাতা সেখান থেকে শিলিগুড়ির বাগডোরা এয়ারপোর্ট , এভাবে যেতে হবে । বাগডোরা এয়ারপোর্ট থেকে দার্জিলিং ৩ ঘন্টার রাস্তা।
শিলিগুড়ি শহর থেকে ৭৫ কিমি দূরে দার্জিলিং রিজার্ভ গাড়ী ১৫০০-১৭০০ রুপিতে পাওয়া যায় অথবা শেয়ার করলে প্রতিজন ১৫০ রুপি করে পড়বে। সময় লাগবে আড়াই ঘন্টার মতো শিলিগুড়ি টু দার্জিলিং ।
একেবেকে পাহাড়ী রাস্তার অপরুপ সব দৃশ্য উপভোগ করতে করতে কখন যে দার্জিলিং শহরে পৌছে যাবো বুঝতেই পারবে না।পাহাড়ের কোলে অসম্ভব সুন্দর শহর দার্জিলিং।
-- চলবে
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now