বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
সন্ধ্যা সাতটা বেজে ত্রিশ মিনিট।আজকে শীত একটু কম হলেও আমি এখন দুটো কম্বল জড়িয়েও বেশ কাপছি।বলতে গেলে ভূমিকম্প হওয়ার মত।
গতরাতে হুট করেই শরীরটা গরম হওয়াকে পাত্তা না দিলেও সে ঠিকই সকালের দিকে একদম জেকে বসেছে।উঠতে গিয়েও বেশ কয়েকবার উঠতে পারিনি।শরীরটাও বেশ ব্যাথা হয়ে গেছে।আমি আরও একটু শুয়ে থেকে কম্বল টা গা থেকে সরাতেই কলিংবেলটা বেজে উঠলো।আমার এ কলিংবেলটা এর আগে কবে বেজেছে আমার ঠিক মনে পড়ছে না।আসলে এখানে পরিচিত বলতেও কেও নেই,হয়নি ও এখনও।আমি একটু এগিয়ে গিয়ে দড়জাটা খুলতেই দেখি সুপ্তি দাড়িয়ে।
মেয়েটাকে এখানে এভাবে দেখে আমি মোটেও অবাক হলাম না।আমি অবাক হয়েছি ওর আসার সময়টা দেখে দেখে।ভেবেছিলাম মেয়েটা আরও কিছুক্ষন আগে আসবে।কিন্তু এসেছে তারও বেশ কিছুক্ষন পর।সুপ্তি রুমে ঢুকতে ঢুকতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
-এখন জ্বর কেমন?
আমি আস্তে করে বলি,
-প্রায় চলে গেছে।
আমার কথায় সুপ্তি কিছু বলে না।দড়জা আটকে আমার কপালে হাত রাখে।তারপর গলায়,একটু নিচের দিকে এসে বুকে।ততক্ষনে মেয়েটা আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়েছে।সুপ্তি আরও কিছুক্ষন চুপ থেকে বেশ রাগি গলায় বলে,
- ঠিকঠাক মিথ্যেটাও বলতে পারো না।জ্বর তো আরও বেড়ে গেছে। ওষুধ খেয়েছো?
সুপ্তির কথায় আমি কিছু বলিনা।চুপ করে থাকি।আমি চাই না নতুন করে আবার মিথ্যে বলে ধরা খেতে।আমার চুপ থাকা দেখে সুপ্তি বলে,
-খাওনি, তাই না।দুপুরে খেয়েছিলে কিছু? দেখে তো মনে হচ্ছে সেটাও খাওনি।
সুপ্তি এবার আমার পাশে বসে হাতটা শক্ত করে ধরে বেশ অভিমানী কণ্ঠেই বলে,
-এভাবে না খেয়ে থাকলে চলবে, বলো?
সুপ্তি আমার উত্তরের অপেক্ষা করে না।উঠে দাড়ায়।টেবিলের দিকে এগিয়ে যেতেই বুঝতে পারি মেয়েটা কিছু একটা এনেছে।ওর হাতের ব্যাগটাও আমি খেয়াল করিনি।কখন টেবিলে রাখলো সেটাও বুঝলাম না।তবে ব্যাগ থেকে যখন সবকিছু বের করলো ততক্ষনে এটুকু বুঝলাম যেটা এনেছে সেটা আমার কাছে সুপ্তির মতই পছন্দের।
সুপ্তি প্লেটে বিরিয়ানি বাড়তে বাড়তে বললো,
-অফিস থেকে এসে তোমার এটা রান্না করতে করতেই দেড়ি হয়ে গেলো।নিজে খাবে নাকি খাইয়ে দেবো?
সুপ্তির এমন কথায় আমি কিছু বলি না।মুচকি হাসি।আমার মুচকি হাসি দেখে সুপ্তিও হাসে।মেয়েটা ততক্ষনে বুঝে যায় ওর হাতে খাওয়াটা আমি মিস করতে চাই না।সুপ্তি আর কিছু বলে না।আমার পাশে এসে বসে।আমি তাকিয়ে থাকি মেয়েটার দিকে।একদৃষ্টিতে ই।আমি ওর কাছে আর নতুন করে কিছু খুজি না।পুরোনো গুলোই নতুন করে আবার ফিরে পাই।হ্যা নতুন করে ফিরে পাই।
.
আমি দাড়িয়ে আছি এক সিঙ্গেল ল্যাম্পপোস্টের সামনে।সুপ্তি আমাকে দ্রুত বাসায় যেতে বললেও আমি যাচ্ছি না।মেয়েটা আমাকে ওষুধ খাওয়ানোর পর যখন বের হবে তখন কেন যেন ওকে একা ছাড়তে ইচ্ছে হলো না।বেড়িয়ে পড়লাম।অবশ্য এতে মেয়েটার অনেক রাগ।যেখানে জ্বর নিয়ে উঠতেই পারিনা সেখানে ওর সাথে এই শীতের রাতে বের হওয়াটা সে এখনও মানতে নারাজ।
সুপ্তি আমার দিকে তাকিয়ে আবারও মলিন মুখে বলে,
-যাও এবার।এসে গেছি তো।
সুপ্তির কথায় আমি কিছু বলি না।আশেপাশে তাকাই।মাঝে মাঝে দু একটা গাড়ি দেখা গেলেও লোকজনের দেখা নেই।আমি সুপ্তির দিকে আরও একটু এগিয়ে যাই।মেয়েটা আমাকে হাত বাড়িয়ে ধরে।কিন্তু আমার সেদিকে কোন খেয়াল নেই।আমি তাকিয়ে থাকি সুপ্তির মায়া মাখা মুখটার দিকে।হুট করেই কাছে টেনে নেই।জড়িয়ে ধরি বেশ শক্ত করে।আমার জড়িয়ে ধরাটা সুপ্তির হয়তো খুব একটা পছন্দ হয়নি।মেয়েটা বেশ রাগি গলায় বলে, "এত আস্তে করে সহজ ভাবে কেও জড়িয়ে ধরে!জড়িয়ে ধরতে হয় এভাবে।
কথাটি বলেই সুপ্তি আমাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।মেয়েটার কথায় আমি হাসি।হাসতে হাসতে বলি,
" এ ভালবাসা হারাতে নেই।এই শীতেও না,সামনের গরমেও না।এরকম হাজারটা শীতে আমি জড়িয়ে থাকতে চাই তোমার সাথে।হ্যা তোমার সাথে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now