বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

গল্প :সম্পর্ক

"ফ্যান্টাসি" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান ‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎‎ (০ পয়েন্ট)

X গল্পকার : জুনায়েদ অমিত এখনো রাগ করে আছো পাগল? -- নাহ তো। রাগ করবো কেনো? আমি কে রাগ করার? আর কার উপর রাগ রাগ করবো? কে আছে আমার? -- আমি তোমার কেউ না? -- জানিনা। সারাদিন একটা ফোন নাই খবর নাই। তুমি আমার কেমন "কেউ" ? -- ফোন না দিলে বুঝি "কেউ" হওয়া যায় না? নাফিজ চুপ করে আছে। দীর্ঘশ্বাস গোপন করে রিমা শান্তভাবে হাসলো। -- এই নাফিজ এদিকে তাকাও। -- উহু ( অন্য দিকে তাকিয়ে) রিমা নাফিজের আরেকটু কাছে এসে নাফিজের কাঁধে মাথা রেখে চোখ বুজলো। রিমার কাছে পৃথিবীর সব চেয়ে শান্তির মনে হয় নাফিজের কাঁধে মাথা রাখাটা। নাফিজ আর রিমার পাঁচ বছরের রিলেশনশিপ। এখন রিমা অনার্স থার্ড ইয়ারে পরে। আর নাফিজ ফাইনাল ইয়ার। -- -- এই নাফিজ, এইদিকে তাকাও আমার দিকে। ভালো করে মন ভরে দেখো আমাকে। নাফিজ রিমার এই অদ্ভুত কথায় ওর দিকে তাকায়। -- তাকাইছি কি হইছে? -- কিছুনা। ( মুখে হাসি) -- চলো না আমরা অনেক দূরে কোথাও চলে যাই রিমা। -- তা হয় না নাফিজ। আমি বাবা মা কে কষ্ট দিতে পারবো না নাফিজ, সমাজের সবার সামনে ওদের ছোট করতে পারবো না। উনারা অনেক যত্নে আমাকে বড়--- -- ( রিমাকে থামিয়ে দিয়ে) তুমি শুধু নিজের কথাই ভাবছো রিমা? নিজের ফ্যামিলি নিয়েই ভাবছো, এতো স্বার্থপর কিভাবে হতে পারো তুমি? রিমা মুখে হাসি নিয়ে বললো, " খুব ভালোবাসো আমায় নাফিজ? " নাফিজ ক্রুদ্ধ চোখে রিমার দিকে তাকিয়ে বললো, " ঢং করো আমার সাথে? আমার কথার উত্তর দাও তুমি। " রিমা অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। নাফিজ: তিন মাস পর দেখা করলা, আবার কবে দেখা করবা? রিমা: খুব তাড়াতাড়ি ( মুখে হাসি) নাফিজ : তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে রিমা, এই অবস্থাতেও হাসছো কিভাবে? একটুও সিরিয়াস ভাবে কথা বলছো না তুমি। রিমা: পাগল একটা, আমি আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তোমারই থাকবো । এতো চিন্তা করো না। আমার হাত টা ধরো তো একটু। ( হাসি মুখে) নাফিজ: তোমার এইসব ঢংগের কথা একটুও ভালো লাগছে না আমার রিমা। যা ইচ্ছা করো। আমি যাবো এখন। রিমা : যাবা তো আর একটু বসো, সূর্য টা ডুবে যাচ্ছে, আসো একসাথে সূর্যাস্ত দেখি। নাফিজ কিছু বলছে না চোখে রাগ নিয়ে তাকিয়ে আছে রিমার দিকে। রিমা নাফিজকে জড়িয়ে ধরে, খুব শক্ত করে। নাফিজ একটু অপ্রস্তুত হয়ে পরে। রিমার চোখ থেকে পানি পরছে, এই মেয়েটা এতোক্ষন হাসি খুশি ছিলো। এখনই আবার কাঁদছে। সত্যিই মেয়েদের বোঝা মুশকিল। রিমা নাফিজ কে ছেড়ে দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নাফিজ বললো এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? রিমা বলে, কবে দেখা পাবো আর কে জানে? নাফিজ বলে চলো একটা রিকশা তে তুলে দেই। রিমা বলে, তুমি যাও আমি চলে যাবো। নাফিজ জোড় করে না আর। খুব ভেংগে পরেছে ছেলেটা। রিমাকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে ও। নাফিজকে যতোক্ষন দেখা যায় ততোক্ষণ তাকয়ে থাকে রিমা। রিমা বাসায় ফেরে সন্ধ্যা সারে সাতটায়। রিমার মা খুব চিল্লাচিল্লি করে এজন্যে। দুদিন বাদে যার বিয়ে তার এতো বাইরে যাওয়ার কি দরকার? রিমা রাগ করে না আজকে। মায়ের সাথে হাসিমুখে কথা বলে। সবার সাথে বসে রাতের খাবার খায়। তারপর ঘুমাতে যায় রিমা। বাইরে অনেক বৃষ্টি পরছে। রিমার কাছে নাফিজের একটা টি শার্ট আছে, রিমা সেটা পরে নেয়। জানালার পাশে বসে তাকিয়ে থাকে বৃষ্টির দিকে। আর ভাবতে থাকে, এতোদিনের রিলেশন। কতো যত্ন নিয়ে গড়ে তুলেছে ওরা সম্পর্কটা। কতো মান অভিমান, কতো ভালোবাসা কতো স্বপ্ন তাদের। কিন্তু বাসায় যেদিন থেকে জানলো, সব উলটা পালটা হয়ে গেলো। যোগাযোগ বন্ধ করা দিলো। বিয়ে ঠিক করলো অন্য যায়গায়। বড়ির সবাই খারাপ ব্যবহার করা শুরু করলো । মা কথায় কথায় খোঁটা দেন, বাবা তো কথাই বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আর ভাই তো গায়ে হাত পর্যন্ত তুলেছে। দিনের পর দিন মানুষিক চাপে থেকেছে রিমা। তার দোষ হলো সে নাফিজকে ভালোবেসেছে। এই অপরাধের ক্ষমা নেই। কতো বোঝানোর চেষ্টা করেছে রিমা তার বাবা মা কে, যে একবার নাফিজকে দেখুক, একবার সুযোগ দিক ওদের। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। কেউ কথা শুনেনি। পরশু রিমার গায়ে হলুদ। অনেক ভেবেছে রিমা। বাবা মা কে সবার কাছে ছোট করা সম্ভব না। কিন্তু নাফিজ কে ছাড়া কি বাঁচা সম্ভব? না সম্ভব নয়। একদমই নয়। নাফিজ একটা পাগল। পাগলের মতো ভালোবাসে রিমাকে। এখন রিমা যোগাযোগ করতে পারেনা বলে নাফিজের সে কি অভিমান। চশমা পড়া গলু গলু মুখটা কালো করে যখন বসে থাকে নাফিজ, কি অদ্ভুত মায়াবী লাগে ওকে। মুখ টা মনে পরতেই হেসে দেয় রিমা। তারপর কলিজা ফেটে কান্না আসে তার। নাফিজকে এই জীবনে আর পাওয়া হলো না। কতো স্বপ্ন দেখা হয়ে গেছিলো । তার কিছুই পূরণ হলো না। মা বাবা একবার একটা সুযোগ যদি দিতো। নাফিজ টা কিভাবে সামলাবে সবটা? ও তো রিমা কে না হারালে পাগল হয়ে যাবে। রিমা ঘড়ির দিকে তাকালো। রাত দুটা বাজে। রিমা ব্যাগের ভিতর থেকে ঘুমের ঔষধ বের করলো ১৭টা ঘুমের ঔষধ আছে। সব কটা মুখে দিলো রিমা। রিমা ভাবতে লাগলো, কি হইতো যদি বাবা মেনে নিতো আমাদের। না হয় একটু আর্থিক অবস্থাটাই খারাপ হতো। আর যাই হোক, নাফিজ কে ছাড়া বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। খুব খারাপ লাগছে, ছেলেটা পারবে তো নিজেকে সামলাতে? -- খুব ঘুম পাচ্ছে রিমার। শেষ ঘুম এটা ওর। আর কখনো জাগবে না ও। আর কখনো নাফিজের বোকা বোকা চেহারা দেখার সুযোগ হবে না ওর। খুব শুনতে ইচ্ছে করছে নাফিজের গলাটা। রিমা ভাবছে, একটা বার যদি শুনতে পেতাম। শেষ বারের মতো। কিন্তু রিমার কাছে থেকে ফোনও তো কেড়ে নিয়েছে ওর ভাই। চোখ খুলে রাখতে পারছে না রিমা। নাফিজের মুখটা মনে করার চেষ্টা করলো। নাফিজের হাসি মুখটা কল্পনা করে নিলো রিমা। তারপর শেষ বারের মতো চোখ মেলে পৃথিবী দেখলো। তারপর ঘুমিয়ে পরলো। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন রিমা, নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে অনেক দিন পর। ---- পরের দিন, সাদা কাপরে খুব সুন্দর লাগছে রিমাকে। রিমার ঘুম ভাঙেনি। রিমার বাড়ির সবাই খুব কান্নাকাটি করছে। পিছনে দারিয়ে আছে নাফিজ। বোকা বোকা মুখ করে শান্ত ভাবে তাকিয়ে আছে রিমার দিকে। ওর আর রাগ করতে ইচ্ছে করছে না রিমার উপর। আর অভিমান হচ্ছে না। অভিমান করলেও তা ভাংগানোর যে আর কেউ নেই। --- তিন মাস পর, নাফিজ এখন মানসিক হাসপাতালে। রোজ সন্ধ্যে বেলা চশমা পরে বোকা বোকা চোখে চেয়ে থাকে আকাশের দিকে। যখন সন্ধাতারা টা উকি দেয় নাফিজের ঠোটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে। বলে, ওই তো রিমা এসে গেছে। আমার দিকে তাকিয়ে কেমন মিট মিট করে হাসছে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৮৯০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • ইফতেখার হাসান মাহিন
    Golpobuzz ৩ বছর, ৪ মাস পুর্বে
    Valo laglo but sad story gj

  • বকুল রায়
    Golpobuzz ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    সুন্দর

  • Anisha Jannat
    User ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    Sad story gj

  • Rehnuma Ahmed
    Golpobuzz ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বে
    gj