বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বটতরুর তিথি - পর্ব ৬
~~~~~~~~~~~~~
লেখাঃ সাদ আহমেদ
গ্রামের অই সপ্তাহটা আমার কিভাবে কাটলো আমি জানিনা..
কিন্তু আমার জীবনের সোনালী মুহুর্ত ছিলো তিথির সাথে থাকা সময় গুলো..
সারাদিন ওর কথাই ভাবতাম..
কিভাবে যেন একটা গভীর মায়া তৈরি হয়ে গিয়েছিলো তিথির উপর. একটা সেকেন্ড ও ভালো লাগতো না ওকে না দেখলে. ওর প্রতি নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম. ভালোবেসে ফেলেছিলাম.. তিথি ভালোবাসতো কিনা, ভালোবাসা বুঝতো কিনা জানিনা.. তবে আমার চোখের দিকে তাকাতে ভয় পেত প্রথমে, তাকাতোনা চোখের দিকে.. কিন্তু যেদিন চোখে চোখ রেখে কথা বললো সেদেন দেখলাম ওর চোখে রাজ্যর বাকুলতা.
ব্যকুল ভাবে ও একটা কিছু খুজছে. তাই সরল মেয়েটাকে আরো আপন করে নিতে ইচ্ছে করছিলো.. আমি ওর চোখ বিশ্বাস দেখেছি.. আমাকে ও বিশ্বাস করতো.. কথায় কথায় ও বুঝিয়েও দিয়েছিলো যে ও আমাকে কতটা ভালোবাসে.. আমার কাছেই ও শান্তি পায়.. যাক সপ্তাহ গড়িয়ে পরের শনিবার..
মাগরিব পর্যন্ত তিথির সাথে বটতলায় কথা বললাম.. খুব সুন্দর কবিতা বলতে পারে তিথি.. কত কবিতা শুনালো! ওকে আমি এক জোড়া দুল কিনে দিয়েছি আজ.. এত্তখুশি হয়েছে! বলার মতনা.. আজ ওর হাসিটা বাধ ভাঙা সমুদ্রর ঢেউ এর আছরে পরছে..
মাগরিবের আজান দিয়ে দিলো আমারা আবার ফেরত আসছিলাম যে যার বাড়ির দিকে.. আমি বটতলা ছেড়ে প্রথম চাড়(সাকো) এর কাছে আসলাম. দেখি পিছনে তিথিও চলে যাচ্ছে.. প্রতিদিন এভাবেই ও চলে যায়.
চাড়ের মাঝ বরাবর আসতে হঠ্যাত আমার মাথায় একটা চক্কর দিয়ে উঠলো আরেকটু হলেই পচা পানির ভিতরে পরে যাচ্ছিলাম! কোনমতে পার হোলাম.. ওইপারে পৌছাতেই ভয়াবহ ঠান্ডা একটা অনুভুতি আমাকে চেপে ধরলো.. মনে হলো কোন একটা মেঘে আমার শরিলে চেপে বসেছে... তারপরেও হাটতে হাটতে কোন মতে বাড়ি পৌছালাম. নামাজ কালাম পড়ে, কাজ গুলো সেরে.. লুডু খেললাম ভাগ্নাদের সাথে.. ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় ১ টা বাজলো..
রাত ঠিক ৩টা.. হঠ্যাত প্রচন্ড আতংকে ঘুম ভাংলো আমার. হিস্টিরিয়া আক্রান্তদের মত কাপতে লাগলাম. একটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন ঘুম ভাঙার কারন! আজও শপ্নে সেই নীল ফ্রক পড়া তিথিকে দেখলাম. ভয়ংকর চেহারা.. মনে হচ্ছে কি যেনো বলছে আর হাত নারছে..
বটগাছের এক ডাল থেকে আরেক ডালে উড়ে বেড়াচ্ছে.. এত বিচ্ছিরি আর ভয়াবহ চেহারা! বাস্তবের ঠিক উলটা. সারা মুখটা কেমন ঝলসানো. কাছে এসে আমার গলা টিপে ধরলো.ফিস ফিস করে কি জেন বলছে. আমি শ্বাস নিতে পারছিলাম না.. দম বন্ধ হয়ে আসছিলো.. কিন্তু আমি সর্বশক্তি দিও পারছিলাম না.. মনে হচ্ছিলো মারা যাব এমন সময়ই ঘুম ভাংলো.. আর ঘুমাতে পারলাম না. কোন মতে রাত পার হলো..
সকালে ১১ টার দিকে বটতলায় গিয়ে হাজির হলাম.. পুরো শরিলটা ভার ভার লাগছিলো.. আধা ঘন্টা ধরে দারিয়া থাকলাম কিন্তু তিথির দেখা নেই. বসেই থাকলাম কিন্তু তিথি আর আসেই না. মনটাই খারাপ হয়ে গেলো!
নাহ! আর বসে থাকা যায়না.. একবার গিয়ে দেখতে হয়.. আর রাতের সপ্ন টাও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো.. তিথি একবার বলেছিলো.. বটগাছের আড়াআড়ি মেঠোপথ দিয়ে ২০ মিনিট লাগে ওদের বাড়ি যেতে.
হাটা ধরালাম.. চিনিনা. অনুমানের ভিত্তিতে চলতে লাগলাম. ঠিক আঠারো মিনিট অনুমানের ভিত্তিতে চল্ললাম.. এর পরে একটা বড় আমড়া গাছ নজরে পরলো.. এটা হতে পারে.. এত বড় আমড়া গাছ দেখিনি এখনো.. গাছের পাশেই পাচিল দেওয়া একটা বাড়ি..
নিল রঙের টিনশেড.. পিছন দিকে একতলা ছাদ দেওয়া ঘর আছে..আন্দাজে তো আর ডাকা যায়না তাই আসে পাসে ঘুরতে লাগলাম.. মানুষজন আবার চোর ভাবে না বসে.. যদিও মানুষজনই দেখা যাচ্ছেনা.. বাড়ির পিছন দিকে চলে আসলাম যেখানে ছাদ আছে.. উচু পাচিল কিন্তু টপকানো সম্ভব..
কাছাকাছি একটা সিরিস গাছে উঠা যায় সেখান দিয়ে বাড়ির ভিতরে দেখা সম্ভব. উচিত হচ্ছে কিনা বুঝতে পারছিলাম না. কিন্তু তিথির নিস্পাপ মুখটা ভেসে উঠলো মনে. নাহ সব কিছু করতে পারবো তিথির জন্য..
গাছ বেয়ে উঠলাম ভিতরে বাড়ির জালানায় চোখ পারলো,,, আর চমকে উঠলাম. যেটা দেখলাম সেটা সেটা গতকালের স্বপ্ন টার থেকেও ভয়াবহ ছিলো.
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now