বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
কোন এক অঞ্চলে একটি ছোট্ট গ্রাম ছিল। সেখানে বাস করত এক বুড়োবুড়ি দম্পতি। তাদের কোন ছেলেমেয়ে ছিল না। আত্মীয় স্বজন দূরসম্পৰ্কীয় বলতে কেউ নেই। বৃদ্ধের বয়স হয়েছে তাই তার শরীরের চামড়াও কুচকুচে কালো হয়ে পড়েছে। লাঠি ভর দিয়ে হাঁটতে হয়। যতই দিন যাচ্ছিল তার ভবিষ্যতের চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়ল। ছেলেমেয়ে কেউ নেই বিধায় কাদের উপর তারা নির্ভর করবে। তাদের জমানো সম্পদও পড়ে রইবে অবহেলায়। একদিন বুড়ো বুড়িকে ডেকে বলল, ও বুড়ি, তোমার এখনও ছেলেমেয়ে সন্তান পাবার আশা মিটল না । তাই তোমার জন্য একটা কন্যা সন্তান এনেছি। ঐ যে ঝুড়িটা দেখছ এরই মধ্যেই রয়েছে। ঝুড়ির ঢাকনা খুলে দেখ সুন্দর একটা কন্যারত্ন যত্ন করে রেখেছি। বুড়ি বলল, তুমি আমার সাথে ঠাট্টা করছ। বুড়োকে গালমন্দ কথা বলে সে উপর থেকে ঝুড়িটা নামাল। ঝুড়ির ঢাকনা খুলে দেখল, এর মধ্যে একটি ছোট্ট ইঁদুরের বাচ্চা নড়াচড়া করছে। ছোট্ট ইঁদুর ছানাটাকে দেখতে মানুষের শিশুর মতেই মনে হয়। বুড়োকে ডেকে জিজ্ঞেস করল, ও বুড়ো মানুষের শিশু কি এরকম হয়? হ্যা, দেখতে এরকমই। দেখবে, একদিন বড় হয়ে ভিন দেশের কোন রাজার সাথে বিয়ে দিব। বুড়ো বলল। ইঁদুরের বাচ্চাটি দিন দিন বড় হয়ে উঠল। লেজ গুটিয়ে ধানের গোলার উপরে, চালের পাত্র বা চেক্ষুর নিকটে, কোন গর্তের ভিতরে এভাবে দৌড়াদৌড়ি করতে লাগল। চিরিক চিরিক ডাক দিয়ে ইঁদুর ছানা ঘরের কোণে গর্তের দিকে হেঁটে যাচ্ছে দেখে বুড়ো বুড়ি একপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। তাদের মনে তৃপ্তির আনন্দ জুড়ে যায়। এটা তো তাদের সন্তানতুল্য। আদর দিয়ে, খাইয়ে তারা একে বড় করতে লাগল। নিজে কাঁটা খেয়ে ইঁদুরের বাচ্চাটিকে মাছের টুকরো খাইয়ে তারা বড় করে তুললো। কাছের ঝর্ণায় কিংবা পুকুরে স্নান করিয়ে আনত। ইঁদুরের বাচ্চাটি মানুষের মত ঘর দুয়ার পরিষ্কার করে ঝাড়ু দিয়ে রাখতে পারে। ঘরে কোন কাগজের টুকরো, ময়লা আৰ্বজনা পড়লে এগুলো সব কোথায় নিয়ে যেন ফেলে দেয়। এভাবে প্রতিদিন ঘরটা পরিষ্কার করে রাখত। ইঁদুরের বাচ্চাটি বড় হল। একদিন বুড়ো ডোল দিয়ে বাজনা বাজিয়ে ঘোষণা করল আমার মেয়েকে কোন রাজ রাজেশ্বর পেলে বিয়ে দিব। আমার মেয়ে কোন যুবরাজের কাছে বিয়ে দিয়ে রাজমহিষী হবার উপযুক্ত। একদিন দূর দেশের এক রাজা তার ছেলের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিল। বুড়ো রাজী হল। দিন তারিখ ঠিক হল। হাতি, ঘোড়া আর পালকিতে চড়ে রাজকুমার বিয়ে করতে এলো। গ্রামের মণ্ডপে বরের সঙ্গী যাত্রীরা ও কনের জন্য যারা উপহার নিয়ে এসেছে তারা সারি সারি বসল। মৃদঙ্গ করতাল বাজতে শুরু করল। সঙ্গে গান। কনের সাতচক্করে ঘোরার তাল বাজল। তাল বাজছে, মৃদঙ্গ-করতাল, সংগীত বাজল কিন্তু মধ্যখানে আসনে বসা বর কনেকে কোথাও দেখতে পেল না। প্রচণ্ড রেগে বর আসন থেকে উঠে দাঁড়াল। এটা কি হচ্ছে আমি বিয়ে করব না। বর বলল। বরের পিতা বৃদ্ধ রাজা পুত্রকে বুঝালেন, বললেন পুত্র আমি যে কথা দিয়ে ফেলেছি। পিতৃবাক্য অলঙ্ঘনীয়। কনে যেই হোক তাকেই বিয়ে করে বরণ করে নিতে হবে। পিতার বাক্যশ্রবণে রাজকুমার দাঁতে দাঁত চেপে রাগ সংবরণ করে বিয়ের পিঁড়িতে চুপ করে বসে রইল। বিয়ে শেষ হল। ইঁদুর কন্যার জন্য ছোট্ট একটি কাছার পানিপাত্র, পরনের ছোট্ট কাপড় চোপড়, ছোট্ট বালিশ একত্র করে বেঁধে বান্ডিল বা ফিওম করে একটি ঝিনুকের পাতে সাজিয়ে রাজপ্ৰসাদে উপহার সামগ্ৰীসহ নিয়ে যাওয়া হল। রাজপুত্ৰ ভাবল, ইঁদুর কন্যার সঙ্গে বাসর ঘরে গিয়ে কি হবে! প্রতিদিন ঐ ঘরে গিয়ে দেখে তার কক্ষ পরিষ্কার পরিপাটি, কাপড়াচোপড়ও সুন্দর ভাবে সাজানো গোছানো। রাজকুমার যখন কক্ষে বসে তখন ইঁদুর কন্যা লেজ দিয়ে পরিষ্কার করে চৌকির নিচে বাহিরে দৌড়ে বেড়ায়। গ্রাম গঞ্জে কানাঘুষা শুরু হল, আহা আমাদের রাজকুমার একটা ইঁদুর কন্যাকে বিয়ে করে আনল। তার পিতার বাক্যপালন করতে গিয়ে এমনটি হল। লাজে অপমানে এসব কথা রাজকুমারকে হজম করতে হল। বাসর ঘর কে যেন লেপন করে মুছে পরিষ্কার করে রাখে অনুমান করা কঠিন হল। রাজার পাইক পেয়াদাকে জিজ্ঞেস করে ও এর উত্তর পাওয়া গেল না। একদিন রাজকুমার বাহিরে যাবার ছল করে আত্মগোপন করে রইল। দেখল, ইঁদুর কন্যা গায়ের চামড়ার খোলস বদল করে অগোচরে রাণীর বেশ ধারন করছে। তার উজ্জ্বল মুখখানি সমস্ত কক্ষে ঝলমলে করে উঠল। রাজকুমার তা দেখে মাথা ঘুরিয়ে গেল। তৎক্ষণাৎ সে মাটিতে পড়ে গেল। তা দেখে রাণী আবার ইদুর হল। প্রাসাদের আয়ুৰ্বেদী ডাক্তার ডেকে রাজকুমারকে চিকিৎসা করে সুস্থ করা হল। পরদিন আবার রাজকুমার লুকিয়ে রইল। ইঁদুরকন্যা তার গায়ের চামড়া বদল করে রাণী সাজল। রাজকুমার ইঁদুরের চামড়াটি পুড়িয়ে দিল এবং রাজকন্যাকে আবেগে ভালবাসায় জড়িয়ে ধরল। আ হা হা! একি করলে রাজকুমার! আমি এক ঋষির অভিশাপে ইঁদুর কন্যা হয়ে আছি। আর মাত্র দুদিন হলেই আমার অভিশাপের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। আর আমি পূর্ণ মানবী রাজকুমারী হতে পারতাম। আমি নিজে থেকে আপন রূপ খুঁজে পেতাম। যাও আর আমাকে স্পর্শ কর না। একটি লেপ দিয়ে তুমি আমায় আরও দু'দিন ঢেকে রাখা! দুদিন পর তুমি আমার কাছে এসো। রাজকুমার সেই ব্যবস্থা নিল। দুদিন পর ইঁদুর কন্যা রাজরাণী হয়ে উঠল। তারা সুখে শান্তিতে বাস করল। রাজা বুড়ো-বুড়ি দুজনকে ডেকে এনে সংবর্ধনা দিল।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Eihana akter mahi
User ৪ বছর, ৬ মাস পুর্বেIshika
User ৪ বছর, ৭ মাস পুর্বেসঞ্জয় গোস্বামী জ্যোর্তিময়
Golpobuzz ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বেMehedi Hasan Shakil
User ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বেসঞ্জয় গোস্বামী জ্যোর্তিময়
Golpobuzz ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বেJustin Hafiz
User ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বেসঞ্জয় গোস্বামী জ্যোর্তিময়
Golpobuzz ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বেMostain Rahaman
User ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বে