বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

#পিচ্চি_বর

"স্মৃতির পাতা" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Achena Pakhi Sulaiman (০ পয়েন্ট)

X গল্পঃ #পিচ্চি_বর লেখকঃ #Achena_Pakhi --মিষ্টি বউ,এই মিষ্টি বউ ওঠ কলেজ যাবিনা?? -ধুর শান তুই যাবি??ঘুমাতে দে। -না,না,না,তুই ওঠ। -উঠবোনা। কি করবি রে পিচ্চি শয়তান? -তুই না উঠলে আমি বড় হয়ে তোকে বিয়ে করবোনা।এত অলস মেয়েকে কেও বিয়ে করবেনা। -কিইইইই, আমি অলস??দাড়া শয়তান পিচ্চি তোরে দেখাচ্ছি। মুখ টা বাঁকিয়ে জিহ্বা দেখিয়ে দিলো দৌড় পিচ্চি শয়তান। ওহ, আপনাদের বলিনাই ই তো। এই পিচ্চি শয়তান এর নাম ইশরাক আদিল শান। বদমাইশের হাড্ডি। মাত্র ৫ বছর বয়স। এই বদমাইশের জন্যে আমার ঘুম টা শেষ। যাই হোক বদ টা গেছে।কিন্তু লাভ হলো না।এখন আবার আম্মু শুরু করলো। -মিষ্টি তুই উঠলি?? আমি লাফিয়ে কোনো রকমে বিছানা থেকে ঊঠে গোসল দিয়ে ফ্রেস হলাম।কারণ একবার আম্মুর বক বক শুরু হলে আমি শেষ। , , ব্রেকফাস্ট করে কলেজ এর জন্য বের হচ্ছি। কিন্তু একটু লুকিয়ে।মানে পিচ্চিটার নজর এড়িয়ে। -এই পচা বউ দাড়া। -ওই পিচ্চি শয়তান।আমি পড়ি অনার্স এ।আর তুই স্কুলেও যাওয়া শুরু করিস নাই আমি তোর বউ কেমনে রে দুষ্টু?? খিলখিল করে হেসে দিলো পিচ্চিটা। আমি ওর হাসির প্রতি ক্রাশড। কোলে তুলে নিয়ে বললাম,তা আজ আমার পিচ্চি বর এর জন্য কি নিয়ে আসবো?? -বাহ, আমার বউটা খুব ভালো হয়ে গেছে আজ। -হইছে হইছে।পাম না মাইরা বল বদমাইশ।তোর কি লাগবে? -আজ ক্যাডবেরি সিল্ক নিয়ে আসবি। -ওরে দুষ্টু। চোখে দেখছিস? -হুম তুই তো প্রতিদিন এটাই বলিস।যা লাগবেনা। - আচ্ছা আচ্ছা নিয়ে আসবো। তার আগে আমার কিছু চাই যে। -উম্মাহ। এবার আনবি তো? -এবার না এনে তাই পারি? পিচ্চিটাকে সিমি আন্টির কাছে রেখে এলাম (শানের আম্মু হলেন সিমি আন্টি) , এখন পুরো পরিচয় দেই, আমি জান্নাতুল মিষ্টি। অনার্স ২য় ইয়ার্স এর স্টুডেন্ট। ঢাকা মিরপুর ১৩ তে থাকি আমি মা বাবার সাথে। আর শান হচ্ছে আমাদের ফ্লাট এর নিচ তলায় থাকে। শান যখন মাত্র ৬ মাসের শিশুতখন সিমি আন্টি এর রোহান আঙ্কেল আমাদের বাসায় রেন্ট এ আসেন। আমি আবার ছোট পিচ্চি খুব পছন্দ করি।কিন্তু কে জানতো এই বদমাইশ পিচ্চি আমারে নিজের বউ বানাতে যাবে। যাই হোক কলেজ এ গিয়ে সবার প্রথমে আমি যাকে খুঁজি সে হলো অয়ন।আমার দুই মাত্র বয়ফ্রেন্ড। দুই মাত্র কেন আশা করি বুঝেছেন। প্রথম বয়ফ্রেন্ড আর বর তো ওই পিচ্চি বদমাইশ। আমায় দেখেই ছুটে এলো অয়ন। বলল চলো লেকের ধারে ঘুরে আসি। ধুর,আমার ক্লাস আছে।আমি আর তুমি দুজনেই একসাথে ক্লাস করবো। -না, আমি রোজ তোমার কথা শুনি। আজ যদি আমার কথা না শোনো তাহলে আর একমাসের মধ্যে যে আমার বাবা মা তোমায় আমাদের বাড়ির বউ করে নিয়ে আসবে সেইটা বলব না তোমায়। বলেই হেসে দিল।আমি অবাক হয়ে দেখছি ওকে।কতটা পাগোল বয়ফ্রেন্ড পাইছি। একটু লজ্জা পেয়ে ওর মাথায় চর দিয়ে বললাম আপনার হাসি শেষ হলে চলুন ঘুরে আসি। পুরো কলেজ টাইম অয়নের সাথে ঘুরলাম। আজ একটু বেশিই ভালবাসা দেখাচ্ছে। বাসায় যাব এখন।কিন্তু রিক্সা ডাকতে যাবে অয়ন এমন সময় মনে পড়লো শানের চকলেট এর কথা।আমি অয়ন কে বলতেই নিয়ে এসে দিলো। তারপর অয়ন আর আমি একসাথে বাসায় ফিরলাম। দেখি পিচ্চিটা গেট এর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অয়নকে দেখে একটু রেগে গেল। বলল,আমার বউ এর সাথে কি করছ তুমি? অয়ন আর আমি হেসে ফেললাম। তারপর আমি পিচ্চিটাকে কোলে নিয়ে চকলেট দিতেই ওর হাসি মুখ টা দেখতে পেলাম। অয়ন আমার বাসায় এসে আম্মুকে স সব বললো।যে ও আমায় ভালবাসে আর বিয়ে করতে চায়। আব্বু আম্মু আগে থেকেই অয়নকে অনেক ভালো একটা ছেলে হিসেবে চিনতো। তাই তারাও আপত্তি করলোনা। আমি পিচ্চিটাকে রেখে রুমে গেলাম ফ্রেস হতে। হঠাত অয়ন পেছন থেকে জরিয়ে ধরে বললো আমি চমকে ঊঠে ওকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে বললাম, এখন না। তারপর অয়ন মন খারাপ করায় আমি জরিয়ে ধরলাম।কিন্তু হঠাত একটা ছোট্ট হাতের মার এর স্পর্শ পেলাম। অয়নকে ছেড়ে দিয়ে নিচে তাকিয়ে দেখি পিচ্চি শয়তান টা রাগি রাগি চোখ করে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম আম্মুকে বলিস না পিচ্চি।তাইলে তোকে এক বক্স চকলেট দেবো। শান বললো মিষ্টি বউ তুই না আমার বউ।ওই ছেলে কে জরিয়ে ধরলি কেন? সরি, আমার ভুল হয়ে গেছে পিচ্চি বর।আর ধরবোনা। অয়ন চলে গেলে আমি বললাম। পিচ্চি আমার ঘুম পাচ্ছে।তুই ও ঘুমা। শান চুপ করে এসে আমার কাছে আমার কোলের মধ্যে এসে শুয়ে পড়লো। কেমন যেন চুপ চাপ হয়ে গেছে। আমি বললাম, কি হয়েছে গো পিচ্চি বর? শান হঠাত কেঁদে দিয়ে বললো, তুই আমায় ছেড়ে যাস না রে মিষ্টি বউ। তাহলে আমি মরে যাবো। আমি বকা দিয়ে বললাম, আর মরার কথা একদম বলবিনা বুঝলি দুষ্টু? আর কিছু না বলে ওকে ঘুম পারিয়ে দিলাম। পিচ্চিটা দিন রাত আমার কাছে থাকে।শুধু কলেজ আর প্রাইভেট টাইম গুলোতে সিমি আন্টির কাছে। এছাড়া রাতেও আমার কাছেই ঘুমায়। আমার ও অভ্যাস হয়ে গেছে।ওকে ছাড়া ভালো লাগেনা। দুদিন পর অয়নের মা বাবা আমায় দেখে গেলেন।বিয়ের তারিখ ও ঠিক হয়ে গেলো। আমি কয়েকদিন ধরে পিচ্চিটাকে একটু বেশিই আদর করছি।কিন্তু পিচ্চিটা মন মরা হয়ে গেছে কেমন যেন। ধিরে ধিরে আমার বিয়ের দিন চলে এলো।পিচ্চিটাকে দু তিন দিন হলো একটু কাছেও নিতে পারিনি। সিমি আন্টির কাছে ঘুমিয়েছিল শুনলাম। পরদিন আমার বিয়ে হয়ে গেলো অয়নের সাথে। পিচ্চিটা মন মরা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার হঠাত করেই কেমন যেন একটা কষ্ট হতে লাগলো।মা বাবাকে ছেড়ে পিচ্চিটাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলাম। শান ও কান্না শুরু করলো।বললো যাস না মিষ্টি বউ।আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবোনা। সিমি আন্টি আমায় তুলে চোখ মুছিয়ে বললো এবার আর দেরি করিস না সোনা।তুই যা।শানকে আমি সামলাচ্ছি। আমি শান কে বললাম, তিন দিন পর আসছি রে দুষ্টু, তোর জন্য অনেএএক চকলেট নিয়ে আসবো। এর পর আমি অয়নদের বাসায় এলাম। এলাম। সারাদিন লোক জনের ভির আর ব্যাস্ততার পিচ্চিটাকে খুব একটা মিস করছিলাম না। কিন্তু রাতে বাসর ঘরে আমায় মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে অয়ন জিজ্ঞাস করতেই আমি কেঁদে ফেললাম। বললাম শান কে খুব মিস করছি।আমি ওকে দেখবো। অয়ন বললো এখন না সোনা।শান হয়তো ঘুমাচ্ছে।কাল ভিডিও কলে কথা বলে নিও। আমি সারা রাত অয়নের বুকে মাথা রেখে কান্না করছিলাম শানের জন্য।খালি ওর মুখটা ভেসে আসছিলো।আর ওর কথা গুলো।যাসনা মিষ্টি বউ। পর দিন দুপুরবেলা আম্মুর ফোন পেলাম। আম্মু বললো, মিষ্টি তুই অয়নকে নিয়ে হসপিটালে চলে আয়। আমি বললাম কেন কি হয়েছে? আমার মুখ থেকে ই বেরিয়ে গেলো শান ঠিক আছে তো? আম্মু কেঁদে ফেললো। আমি অয়নকে না বলেই যে অবস্থায় ছিলাম ছুটে হসপিটালে গেলাম। আমায় এভাবে ছুটতে দেখে অয়নের বাড়ির লোক গুলোও আমার পেছন পেছন এলো। আমি হসপিটালে ঢুকে দেখলাম সবাই থমথমে মুখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সিমি আন্টি অজ্ঞান।রোহান আঙ্কেল কাঁদছে। আম্মু আমায় দেখে বলতে শুরু করলো, সারা রাত শান কান্না করেছে। তোর সাথে কথা বলতে চেয়েছে। কিন্তু তোর একটা বিশেষ রাত কান্নাকাটি করে নষ্ট হবে ভেবে সিমি ফোন দেয়নি। কাল থেকে কিচ্ছু খেয়েছিলোনা। তোর দেয়া চকলেট এর। পেপার গুলো দেখে কান্না করছিল।তারপর হঠাত দৌরে বাহিরে চলে এলো। মিষ্টি বউ এর কাছে যাব যাব করে,আমরা সবাই বের হয়ার আগেই একটা মাইক্রো এর সাথে ধাক্কা খেয়ে শান ছিটকে পড়ে যায়। সাথে সাথে হসপিটালে এডমিট করানো হয়েছে কিন্তু বলেই আম্মু আরও জোরে কাঁদতে আরম্ভ করলো। আমি শান এর কেবিনে ঢুকলাম। মুখটা ঢাকা। আমি ধিরে ধিরে কাপড় টা সরালাম। নিস্পাপ মুখটা তে একটু কষ্টের ছাপ দেখলাম। কিন্তু এখন আর তা মনে হচ্ছে না।মনে হচ্ছে শান আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।আর বলছে,দেখেছিস মিষ্টি বউ বলেছিলাম না?তোকে ছাড়া বাঁচবো না। আমি আমার কথা রেখেছি। ওর নিস্পাপ মুখের ভাষা আমার আর পড়ে ওঠা হয়নি। তার আগেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৭৩৫ জন


এ জাতীয় গল্প

→ গল্প : #পিচ্চি_বর !!!

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Shatu
    User ৪ বছর, ১০ মাস পুর্বে
    Aboro porlam valo laglo

  • Shatu
    User ৪ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Jani sad kkno nice hoy na..but the story is nice

  • Jobayer
    User ৪ বছর, ১২ মাস পুর্বে
    খুব কষ্ট পাইলাম।।।

  • বকুল রায়
    Golpobuzz ৪ বছর, ১২ মাস পুর্বে
    কষ্ট পাইলাম