বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

"প্রতিশোধ"

"ফ্যান্টাসি" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Oliver Queen(ShuvO) (০ পয়েন্ট)

X আমার গার্লফ্রেন্ড ডায়েট করে, দেখতেও বেশ শুকনা। আমি বলি, “এতো শুকিয়ে কি হবে?” সে উত্তর দেয়, “ফিগার ঠিক রাখতে হবে না?” পাশ দিয়ে একটা কুকুর যাচ্ছে। তা দেখিয়ে বললাম, “দেখো, দেখো, কুকুরটা কত্ত স্লিম! ওর পেটে একটুও চর্বি নাই!” সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে আমার দিকে রক্তচক্ষু দেখিয়ে বললো, “কি বল্লা তুমি! আমাকে কুকুরের সাথে তুলনা করলে, আমি কুকুরের মতো!!!” আমি ঠান্ডাভাবে বললাম, “আরে না না, তুমি কুকুরের মতো হতে যাবা কেন? কুকুরটা তোমার মতো হওয়ার চেষ্টা করছে।” সম্ভবত বড় ধরণের ব্রেকাপ হয়ে গেলো। রিক্সা ডেকে আমার গার্লফ্রেন্ড চলে যেতে আমি মেসেঞ্জারে টেক্সট করলাম, “বাবু, আমি সরি, আমি ওভাবে বলিনি তো!” কোনো রিপ্লে নেই। ফোন দিলাম, কল কেটে ফোন অফ করে দিলো। অগত্যা ফুটপাত দিয়ে হাঁটছি। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। নাহ, আমার এভাবে বলা ঠিক হয় নি, হাজার হোক একটাই গার্লফ্রেন্ড আমার! অনলাইনে থাকাতে বিভিন্ন মেসেজ আসতে লাগলো। একজন লিখলো, “হাই!”  আমি লিখলাম, “রাস্তায় হাঁটছি”  আরেকজন পরিচিতা বান্ধবী লিখলো, “কিরে মেসেজ সিন করিস না কেন? সমস্যা কি তোর?” আমি বললাম, “তুই কি আমার জিএফ? এখন ভাগ, মেজাজ ভালো নাই” বান্ধবী, “দামড়া কোথাকার, তুই ভাগ!”  আমি থাপ্রা দেয়ার স্টিকার দিলাম। সে রাগে জ্বলছে এমন ইমো দিলো। . তার কিছুক্ষণ পর একজন ছেলে লিখলো, “বাল আছেন?”  আমার মেজাজ আরো খারাপ হলো। কথা নাই বার্তা নাই গালি দেবে কেন? বললাম, “ভাই, আপনার সমস্যা কি? আমাকে কি আপনার বাল মনে হয়?”  বললো, “কি ভলেন বাইয়া?”  বুঝলাম ব-ভ জনিত আঞ্চলিক সমস্যা। আমিও লিখলাম, “জ্বী বাইয়া, বাল আছি” সন্ধ্যা হয়ে বেশ অন্ধকার নেমে এলো। খুব পেশাব চেপেছে। ধানমণ্ডি লেকের ভেতরের এদিকে এখন সব জায়গায় লাইট দিয়েছে। আমার একটা চিপা জায়গা দরকার। রবীন্দ্র সরোবরের পশ্চিমে সাত নম্বর রোডের আগের ঝোপের পাশে দাঁড়িয়ে পড়লাম। একটা লোক চিল্লিয়ে বললো, “এই এই এই ভাই, কি করেন!!! ডাইনে হ্যাণ্ডল ঘুরান!” আমার কি দোষ? আলো থেকে অন্ধকারে গেলে কিছু সময়ের জন্য কোনো কিছুই দেখা যায়না, তা, আমি কিভাবে জানবো যে যেখানে পেশাবে দাঁড়িয়েছি সেখানে আগেই একজন বসে আছে? মেসেঞ্জারে টুং করে শব্দ হলো । ভিউ করে দেখলাম গার্লফ্রেন্ড মেসেজ দিছে, “সমস্যা কি তোমার? কল ধরোনা কেন?” আমি বললাম, “সরি বাবু ফোন সাইলেন্ট ছিলো, আর আমি হিস্যু করছিলাম” সে বললো, “মিথ্যা বলার যায়গা পাওনা?? ছোটলোক কোথাকার!!” আমি আর কিছু বললাম না। পেশাব সেরে মেইন রাস্তার ফুটপাত দিয়ে রাস্তায় হাঁটছি। রিপ্লে দেবার জন্য লিখছি, ‘বাবু, তোমাকে কত ভালোবাসি সেটা জানোনা? একটুও মিথ্যে নয় বিশ্বাস করো’ আসলে চাপ লেগে অন্য ট্যাবে অন্য একটা মেয়ে যে আমাকে পছন্দ করে তার চ্যাটবক্সে টাইপ করছিলাম। সেটা না বুঝে সেন্ড বাটনে চাপ দিতেই মেয়েটা অবাক হবার ইমো দিয়ে পরে একটা ভালোবাসার ইমোজি দিয়ে লিখলো, “লাভিউ ঠু” . আমিতো তখনো বুঝছিনা কার সাথে চ্যাট করছি। বললাম, "আমার উপর এখনো অভিমান করে আছো বাবু?" সে বললো, "ছিঃ কি যে বলোনা, তোমার উপর রাগ করতে পারি আমি?" আমি ‘চোখমুখে ভালোবাসা’ ঐ যে কি একটা ইমো আছেনা, ঐটা দিয়ে লিখলাম, ‘জানু, এবার রাখি, হাঁটতে হাঁটতে চ্যাটিং করতে সমস্যা হচ্ছে গো!’ সে আবারো অবাক হবার ইমো দিয়ে বললো, ‘শিওর শিওর যাও!’ এইবার টনক নড়লো, আমার গার্লফ্রেন্ড তো এত বিনয়ী না! খেয়াল করে দেখলাম হায় হায় কাকে কি লিখছি!!!! তটস্থ হয়ে একটা ফুচকাওয়ালার সাথে ধাক্কা খেলাম। ফুচকাওয়ালা বললো, “ঐ মিয়া কানার লাহান হাডেন ক্যা? দেইক্ষা চলতে পারেন না?” ফুচকাওয়ালার ঝাড়ি হজম করে আবারো হাঁটতে থাকলাম। খানিক পরে গার্লফ্রেন্ড ফোন দিয়ে বললো, ‘তুমি এত বেইমান!! ছিহ! আমার সাথে প্রেম করে অন্যকে আই লাভ ইউ বলো! ছিঃ ছিঃ” আমি ভীষণ অবাক হয়েছি দেখিয়ে বললাম, “এইসব কি বলো বাবু! আমি তো তোমাকেই শুধু ভালোবাসি।” কটাশ করে ফোন রেখে দেয়া আগে প্রচণ্ড রেগে বললো, “গো টু ইনবক্স এন্ড গো টু হেল!” সঙ্গে সঙ্গে ইনবক্সে গিয়ে দেখি, দুইটা স্ক্রীনশট যা আমি একটু আগে ঐ মেয়েটাকে দিয়েছিলাম । হায়! এবার ব্রেকাপটা পুরোপুরিই বোধহয় হয়ে গেলো! . আবার মেসেঞ্জারে টুং করলো। ইচ্ছে হলো যে ই মেসেজ দিক, আচ্ছা মতো ঝাড়বো। দেখলাম আমার এক স্যারের মেয়ে মেসেজ করলো, “ভাইয়া, আমার ডেন্টালে চান্স হইছে!” মাথাটা এত গরম যে বড় শব্দ ‘কংগ্রাচুলেশন’ লিখতেও ইচ্ছা করছেনা। সংক্ষেপে ‘গুড’ লিখতে গিয়ে ‘গু’ লেখার পরেই সেন্ড এ চাপ দিয়ে ফেললাম। মেয়েটা জাস্ট সিন করে নির্বাক হয়ে আছে। আবারও হাঁটছি। মন খারাপ নিয়ে ভাবছি, কিভাবে ব্রেকাপটা আটকানো যায়! অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম যেভাবেই হোক আগে কথা শুরু করতে হবে। মেসেঞ্জারে একটা সুন্দর মেসেজ দিলাম, "বাবু, জানো পার্কে এক ফিল্ম পরিচালকের সাথে পরিচয় হলো, কথা বলতে বলতে তোমার ছবি দেখাতে লোকটা লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো।" ব্যস, এটুকু মেসেজ দিয়েই পাঁচ টাকার বাদাম কিনলাম। বাদামওয়ালা দাঁত বের করে বললো, "মামা, এলকা এলকা বাদাম কাইন, মজা লাগবো!" মিনিট দশেক পর গার্লফ্রেন্ড ফোন দিয়ে কড়া ভাষায় বললো, "কই তুমি?"  "পার্কে" "এক্ষুণি তোমার আইডি পাসওয়ার্ড বলো।"  "কিসের আইডি বাবু?"  ঝাড়ি দিয়ে বললো, "ন্যাকামো করো, না? ফেসবুকের" টেনশন বেড়ে গেলো। আমাকে অনেকদিন বলেছিলো, "খবরদার মেয়েদের মেসেজের রিপ্লে দেবেনা।" আমি বলেছিলাম, "যদি কেউ 'হাই' বলে তখন কি 'হাই' বলবো?" . ও বলেছিলো, "তুমি বললা 'যাই'"  "যদি বলে 'কি করেন?'" "তুমি বলবা 'দূরে গিয়া মরেন'" আরেকটু ভেবে বলেছিলাম, "যদি বলে 'ভাইয়া আমি আপনার ফ্যান'" আমার দিকে চোখমুখ শক্ত করে বলেছিলো, "বলবা, 'এতো কথা ক্যান?'" আমি নিরবে বলেছিলাম, "আচ্ছা"। হায় আল্লাহ, আমি তো ফর্মালিটির খাতিরে অনেকের সাথে কথা বলেছি। এখন কি হবে ভেবে শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল স্রোত নামলো। বললাম, "খাতা কলম আছে? লিখো, পাসওয়ার্ড হলো, 'মুরগী চোর' 'এম' বড় হাতের না ছোট হাতের মনে নেই। স্পেলিং এম ইউ আর জি আই সি এইচ ও আর" "ফাইজলামি করো?" "সত্যি বলছি বাবু, এটাই" "ওকে" আমার বুকটা দুরুদুরু কাঁপছিলো। এক মিনিট পর ফোন দিয়ে বললো, "এখন কোথায় আছো ঠিকঠাক বলো।" "ওখানেই" "ওয়েট আমি আসছি। আচ্ছা পরিচালক কি চলে গেছে?" আমি বাদামওয়ালার দিকে চেয়ে বললাম, "না না আছে, ওইতো একটু দূরে উনি দাঁড়িয়ে আছে।" আমি সেটিংস এ গিয়ে দেখলাম অন্য কোনো ডিভাইস লগিন করেনি। রাখে আল্লাহ মারে কে! আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম! সঙ্গে সঙ্গে পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করলাম, 'গরু চোর' গার্লফ্রেন্ড আসলো। এসেই একটু শান্ত মেজাজে বললো, "এবার কাহিনী বলো, আর কাকে কাকে ভালোবাসি বলছো?" আমি জেরা থেকে বাঁচতে বললাম, "পরিচালক বলেছে কি জানো? তোমার ফটো ফেইস নাকি এঞ্জেলিনা জোলির মতো!" মনে হলো তেলটা কাজে লেগেছে। একটু নরম সুরে বললো, "কই তোমার পরিচালক?" আমি বললাম, "এদিকেই তো ছিলো, দাঁড়াও দেখছি।" আমি দু চার পা তাকিতুকি করে বললাম, "চলে গেছে বোধহয়।" মেসেঞ্জার আবার টুং করে উঠলো। আমার দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে বললো, "ফোনটা দাও।" আমি ওর চোখের দিতে তাকাতে পারছিলাম না। বললাম, "কেউ হয়তো মিসড কল দিয়েছে। এমন করো কেন বাবু? আজকে না আমাদের শপিং এ যাওয়ার কথা ছিলো?" . ও বারবার হাতঘড়ি দেখছিলো। রাত হয়ে আসছে দেখে বললো, "শোনো, এখন তোমার সাথে ঝগড়া করারও ইচ্ছা নাই, রিক্সা ডাকো, বাসায় যেতে হবে।" দুজনে রিক্সায় পাশাপাশি বসে যাচ্ছি। ওদের বাসা কাছে নেমে দেখলাম একটা কুকুর বসে আছে। দারোয়ান কুকুরটাকে পাউরুটি ছিঁড়ে খাওয়াচ্ছে। আমার গার্লফ্রেন্ড রিক্সা থামিয়েই বললো, "এই নামো নামো নামো। তুমি কুত্তাটাকে রুটি খাওয়াও আমি একটা ছবি তুলবো।" কি আর করার! ছবি তুলে বিদায় হলাম। ফিরে আসতে আসতে ভাবলাম, তাও ভালো বলেনি যে কুকুরের সাথে সেল্ফি তুলতে! রিক্সায় ফিরতে ফেসবুকে ঢুকেই ট্যাগড অবস্থায় নিজেকে দেখলাম। ক্যাপশনে লিখেছে, "রতনে রতন চেনে..." লেখকঃ- অলিভার কুইন (শুভ)।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১২৩০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • ¤-ইশিকা-¤
    User ৫ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    সুন্দর....!

  • Taharim Tayen
    Golpobuzz ৫ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Wlc...

  • Oliver Queen(ShuvO)
    Author ৫ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ

  • Taharim Tayen
    Golpobuzz ৫ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    HA HA HA HUUUH... GREAT

  • Sayaan islam
    User ৫ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Nice