বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
.SHOHAN
.
ইনবক্সে জমা হয়েছে ৭০+ মেসেজ কিন্তু আজ ১২ সানভির আইডি থেকে একটা মেসেজও আসেনি। নামের পাশে সবুজ বাতির বদলে লিখা আছে Active 11 Days Ago....
যেই ছেলেটা ২ ঘন্টা ফেসবুক ছাড়া থাকতে পারেনা আজ সেই ছেলেটাই ১২ দিন যাবত আনএক্টিভ।
কোথায় খুজবে সে আমাকে?
আর কিভাবেই বা খুজে পাবে নারকেল ফুলের নুপুর।
এসব ভাবে রিহা।
।
চলুন জেনে নেওয়া যাক স্টোরিটা,
স্টোরিটা নিল সাদার দুনিয়া ফেসবুকে।
আজ থেকে ৮ মাস আগে সানভির আইডিতে একটা মেয়ের মেসেজ আসে।
জানেনই তো আমাদের মতো সাধারন ছেলেদের আইডিতে বছরে একটা মেয়ের মেসেজও আসেনা।
আসলে আমরা কি রকম অবাক হই সেটা তো জানেনই।
সানভির ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হয়নি। সানভিও বেশ অবাক হয়ে যায়। কিন্তু পরেই বুঝতে পারে মেসেজটা ভুলে চলে আসছে।
প্রথম মেসেজটাতে লিখা,
- কিরে কেমন আছিস?(রংহীন রংধনু)
সানভি রিপ্লাই দেয়,
- কে আপনি?(সানভি)
- সরি সরি মেসেজটা অন্য কাওকে দিছিলাম ভুলে আপনার কাছে চলে আসছে কিছু মনে করবেন না।(মেয়ে)
- ইটস ওকে প্রবলেম নাই।(সানভি)
।
মনে মনে হতাশ হয় সানভি। আজ একবছর ধরে ফেসবুক চালায় সে কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো মেয়ে তাকে মেসেজ দেয়নি।
আজ একটা মেসেজ আসছে তাও আবার ভুলে।
যাহ সালা এটা কিছু হইলো।
সানভি মেসেনজার থেকে বেরিয়ে যায়।
রাত নয়টায় আবার একটিভ হয়।
তখন একটু বেশিই অবাক হয় কারন মেয়েটার আইডি থেকে আবার মেসেজ আসছে।
.
- আপনি কেমন আছেন?(মেয়ে)
- এইতো ভালো আপনি?(সানভি)
- ভালো। আপনার সাথে পরিচিত হতে পারি?(মেয়েটা)
- হ্যা অবশ্যই।(সানভি)
- আমি সানভি বাসা টাংগাইল অনার্স প্রথম আপনি?(সানভি)
- আমি রিহা বাসা টাংগাইল অনার্স প্রথম।(মেয়ে)
- আপনার বাসা টাংগাইলে কোথায়?(সানভি)
- মির্জাপুর আপনার?(রিহা)
- সদর।(সানভি)
- ফ্রেন্ড হতে পারি?(সানভি)
- অবশ্যই।(রিহা)
এরপর থেকেই শুরু। কিছুদিন যেতেই তারা ভালো বন্ধু হয়ে যায় তারপর বেস্ট ফ্রেন্ড আর তারপর বুঝতেই তো পারছেন সানভি রিহাকে ভালোবেসে ফেলে।
সানভি দেখেনি রিহাকে তারপরও খুব ভালোলাগে তাকে তার।
রিহাও সানভিকে ভালোবাসে কিন্তু বলেনা।
আজ সানভি ভাবতাছে বলে দিবে যার জন্য সারারাত ধরে একটা প্রোপোস লেটারর লিখছে।
কিন্তু তার প্রচন্ড ভয় লাগতাছে যদি রিহা এক্সেপ্ট না করে তাহলে তো তাদের মধ্যে একটা দুরত্বের সৃষ্টি হবে হোক সেটা ফেসবুক কিন্তু সানভি রিহাকে অনেক ভালোবাসে।
আর রিহাকে ছাড়া সে থাকতে পারবে না।
সকাল হয়ে যায় সানভি রিহাকে মেসেজজ দেয়,
- শুভ সকাল।(সানভি)
- শুভ সকাল।(রিহা)
- কি করিস?(সানভি)
- শুয়ে আছি তুই কি করিস?(রিহা)
- টেনশন"(সানভি)
- কিসের টেনশন?(রিহা)
- কিছুনা তোকে একটা কথা বলার ছিলো?(সানভি)
- হ্যা বল কি বলবি?(রিহা)
- রিহা ইয়ে মানে।(সানভি)
- আরে ভাই কি বলবি বল?(রিহা)
- রাতে বলবো।(সানভি)
- আচ্ছা বলিস এখন বল তোর সেই বেস্ট ফ্রেন্ডের কি খবর?(রিহা)
- কার কথা বলছিস.....আনহা??(সানভি)
- হুম ওই আনহার কি খবর?(রিহা)
- ভালোই।(সানভি)
তারপর অনেকক্ষণ কথা বলে ওরা কিন্তু সানভি বলতে পারেনা ভালোবাসার কথা।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধা নামে সানভি নামাজ পড়ে ফেসবুকে আসে।
এসে দেখে রিহা একটিভ সাথে সাথেই মেসেজ দেয়।
- রিহা এখন বলবো কথাটা?(সানভি)
- হ্যা বল কি বলবি?(রিহা)
সানভির লিখা প্রোপোস টা কপি করে পেস্ট করে দেয়।
রোদ্র যখন খুব কড়া তোর হাত ধরে আমি সেই রোদের মধ্যে হাটতে চাই।
আষাড় মাসে ভাড়ি বৃষ্টিতে তোর হাত ধরে বৃষ্টিকে আপন করে নিতে চাই।
ভরা বর্ষায় তোর সাথে এক নৌকায় একটা রাত হলেও কাটাতে চাই।
শীতের রাতে তোকে নিয়ে ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে যেতে চাই।
তোর সাথে জিবনের বাকি মুহুর্তগুলা কাটাতে চাই।
আমি আমার মধ্যে শুধু তোকেই খুজে পেতে চাই।
এতটা ভালোবাসতে চাই যতটা বাসলে আকাশের চাদেরও হিংসে হবে।
তোর ওই হাতটা ধরে আমি এই জিবনটা পাড়ি দিতে চাই।
দিবি সেই সুযোগ??
ভালোবাসবি আমাকে??
........................................
সানভি ঘেমে চলেছে হাত কাপছে তার। ভয় আর উত্তেজনায় তার মাথা কাজ করতাছে না।
৮ মিনিট পর রিপ্লাই আসে,
- যদি নারকেল ফুলের নুপুর আমাকে পড়িয়ে বলতে পারিস তুই আমাকে ভালোবাসিস তাহলে দিবো সেই সুযোগটা।(রিহা)
- আচ্ছা বাই এরপর ডিরেক্ট তোর সামনে যাবো তার আগে আমি আর ফেসবুকে আসবোনা।(সানভি)
....
রিহা আটকাতে গিয়েও পারেনা তার মধ্যেও কৌতুহল দেখাই যাক কি হয়।
সানভি ফোনটা অফ করে রাখে।।পরের দিন ভার্সিটিতে যায়।
গিয়েই অানহার সাথে সবকিছু শেয়ার করে।
একমাত্র আনহাই তার বন্ধু যার কাছে সে সবকিছু শেয়ার করে।।
তাদের বন্ধুত্বটা ৪ বছরের। আনহা সানভিকে ভালোবাসে কিন্তু বলতে পারেনা ভয়ে। সানভিও আনহাকে ভালোবাসে তবে সে যানেনা ওইটা ভালোবাসা কিনা তবে সে রিহাকে ভালোবাসে এইটা সিওর। কিন্তু আনহার ব্যাপারটাও তার কাছে কেমন যানি লাগে। আনহা অনেক কেয়ার নেয় সানভির। আজ সানভির মুখে এই কথা শুনে সে অনেক কষ্ট পায়। এতো কাছে থেকেও সানভি বুঝলো না আনহা তাকে ভালোবাসে।
আনহা তাকে বলে তুই একটা নারকেল ফুলের নুপুর বানিয়ে ফেল তারপরপর দুজনে মিলে খুজে বের করবো।মির্জাপুর খুব বড় যায়গা না সিওর পেয়ে যাবো।
- লাভ ইউ দোস্ত।(সানভি)
আনহার ভেতরে কেমন যানি করে উঠে ভালোবাসি শুনে।
এতো কাছে থেকেও বুঝলি না আমি তোকে কতটা ভালোবাসি অথচ ফেসবুকের একটা মেয়েকে ভালোবেসে তার জন্য এতোকিছু।
কষ্টে বুকটা ফেটে যায় আনহার।
সেদিনের মতো সানভি বাসায় চলে আসে।
,
তারপর লেগে পড়ে কাজে।
আজ ১২ দিন হয়ে গেছে সানভি ফেসবুকে আসেনি।
ইনবক্সে জমা হয়েছে ৭০+ মেসেজ কিন্তু আজ ১২ সানভির আইডি থেকে একটা মেসেজও আসেনি। নামের পাশে সবুজ বাতির বদলে লিখা আছে Active 11 Days Ago....
যেই ছেলেটা ২ ঘন্টা ফেসবুক ছাড়া থাকতে পারেনা আজ সেই ছেলেটাই ১২ দিন যাবত আনএক্টিভ।
কোথায় খুজবে সে আমাকে?
আর কিভাবেই বা খুজে পাবে নারকেল ফুলের নুপুর।
এসব ভাবে রিহা।
খুব মিস করতে থাকে রিহা সানভিকে।ফোন নাম্বারও নেওয়া হয়নি। কি করবে এখন ভাবতে পারেনা রিহা।
অনেক মিস করে সে সানভিকে।
.
ওদিকে সানভি নুপুর বানানোর কাজে ব্যাস্ত। রিহাকে ভেবেই এতোকিছু ভালোবাসে তাকে এতোটুকু তো করতেই পারে তাইনা।
,
আজ ১৮ তম দিন।
সানভির নুপুর বানানোর কাজ হয়ে গেছে,
সানভি ফোন করে আনহাকে,
- দোস্ত কালকে রেডি হয়ে আসিস দুজনে মিলে বের হবো আমার নুপুর বানানোর কাজ শেষ।আর শোন নিল শাড়ি আর নিল চুড়ি পড়বি ওকে।(সানভি)
- আচ্ছা।(আনহা)
.
আনহা ভাবতেও পারছেনা নিজের ভালোবাসারর মানুষের সাথে সে খুজতে বের হবে তার ভালোবাসারর মানুষকে।
হাসি পায় সাথে অনেক কষ্টও হয়।
।
সানভি ফেসবুকে ঢুকে মেসেজ দেয় রিহাকে।
- কোথায় আসতে হবে বল। আমারর নুপুর বানানো হয়ে গেছে।(সানভি)
- সানভির মেসেজ পাওয়ার সাথে সাথেই রিপ্লাই দেয় এসপি পার্কে আয়।(রিহা)
- আচ্ছা কালকে ১১ টায় যাবো তুইও থাকিস।(সানভি)
- আচ্ছা।
তারপর আবার ফেসবুক থেকে বেরিয়ে যায় সানভি।
,
পরের দিন সানভি ভার্সিটির সামনে গিয়ে থমকে যায় সানভি।
নিল শাড়িতে আনহাকে একদম পরির মতো লাগছে।
খোলা চুলের জন্য আরো বেশি সুন্দর লাগতাছে।
সানভি স্তব্ধ হয়ে দেখতে থাকে।
আনহার ডাকে তার হুশ ফিরে,
- কোথায় হারিয়ে গেছিলি?(আনহা)
- রিহার কথা ভাবছিলাম।(সানভি)
আনহার ইচ্ছা হয় সানভিকে মেরে ভর্তা বানানোর। এতো সুন্দর করে সেজে এসেছে আর সে রিহাকে খুজতাছে।।
ধুররর।
,
আনহা সানভির বাইকে উঠে বসতেই সানভি বাইক স্টার্ট করে। আনহা জড়িয়ে ধরে সানভিকে। সানভি কিছু বলেনা এরকম অনেক হয়েছে আনহা বাইকে উঠলেই সানভিকে জড়িয়ে ধরে। এই হয়তো শেষবার এরপর তো অন্যকেও ধরবে।
,
সানভি এসপি পার্কে এসে থামে।
আনহা প্রশ্ন করে,
- কিরে এখানে কেনো ওকে খুজতে যাবিনা?(আনহা)
- ও এখানে আসবে বলছে।(সানভি)
- আচ্ছা চল।(আনহা)
।
দুজনে ভেতরে ঢুকে একটা ব্রেন্চে বসে।
নিরিবিলি পরিবেশ শুধু পাখিরর ডাক শোনা যাচ্ছে।
সানভি হঠাৎ আনহাকে বলে,
- দোস্ত চোখটা বন্ধ কর।(সানভি)
- কেনো সারপ্রাইজ দিবি নাকি ও আসছে তাইনা?(আনহা)
- বন্ধ করতে বলছি বল আমি না বলা পর্যন্ত চোখ খুলবিনা।(সানভি)
- ওকে।(আনহা)
.
সানভি পকেট থেকে নারকেল ফুলের নুপুরটা বের করে আনহার পায়ে পরিয়ে দেয়।
তারপর হাটু মুরে বসে বলে,
- এইযে মিস রিহা এবার কি সুযোগটা দেওয়া যাবে?(সানভি)
- আনহা চোখ কপালে তুলে বলে তুই কেমনে যানলি?(আনহা)
- রংহীন রংধনু তাইনা।(সানভি)
বলেই আনহাকে জড়িয়ে ধরে।
আনহা সানভির বুকে মুখ লুকিয়ে হেসে উঠে।
নারকেল ফুলের নুপুরটা পায়ে পড়ে এবার কাটিয়ে দিবে সারাজিবন।
রহস্য থেকে গেলো তাইনা?? থাকনা কিছু রহস্য সমস্যা কি তাতে।
সমাপ্ত.....
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...